গল্প:- রহস্যময় রাতের ভৌতিক অনুভূতি।

"গল্প:- রহস্যময় রাতের ভৌতিক অনুভূতি"

---

ছবিটি পিক্সাবে থেকে নেয়া

---

আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যদের জানাই শুভ সন্ধ্যা। আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আমার ভুতের গল্প, রহস্যময় গল্প গুলো পড়তে ভীষণ ভালো লাগে। আজকে আমি আপনাদের জন্য "রহস্যময় রাতের ভৌতিক অনুভূতি" নামে একটি গল্প লেখার চেষ্টা করলাম। জানিনা গল্পটি কেমন হয়েছে। আশাকরি আপনাদের কাছে গল্পটি ভাল লাগবে। তো চলুন আজকের গল্প শুরু করা যাক।

---

বাবার চাকুরীর সুবাদে আতিকরা শহরে বসবাস করত। আতিক ছোট বেলা থেকেই খুব ডানপিটে স্বভাবের ছিল। ভয় ডর বলতে তার কিছুই ছিল না। তার বয়সের ছেলেরা যেখানে জ্বিন ভুতের গল্প শুনলে ভয় পেত, সে তখন গল্প গুলো শুনলে খুব মজা পেত।

---

তবে তার জীবনেও একবার এক ভৌতিক ঘটনা ঘটে গিয়েছিল। আজ পর্যন্ত সে এই ঘটনা ভুলতে পারে না। ক্লাস টেন এ পড়ার সময় আতিক একবার তার মায়ের সাথে গ্রামে গিয়েছিল। তাদের গ্রামের জমি গুলো নিয়ে কি একটা সমস্যা হয়েছিল সেজন্য।

---

সকাল দশটায় তারা গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হলো। সন্ধ্যায় তারা গ্রামের বাজারে এসে পৌছালো। বাজার থেকে তাদের বাড়ীতে যেতে বেশি একটা সময় লাগে না। আতিকের দাদা প্রায় প্রতিদিনই তার বন্ধু বান্ধবদের সাথে আড্ডা মেরে বাজার থেকে রাত ১২টা ১টার সময় বাড়িতে ফিরতেন। সেদিন তার দাদা ও তার ছোট কাকা বাজারেই ছিল। তারা হঠাৎ করে গ্রামে যাওয়াতে তাদের কে দেখে তার দাদা খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল। আতিকের মাকে দাঁড় করিয়ে আতিককে নিয়ে মাছ বাজারের দিকে গেল। আতিকের দাদা আতিককে অনেক ভালোবাসতো। মাছ বাজার থেকে মোটামুটি সাইজের একটা বোয়াল মাছ কিনলো। তারপর তার ছোট কাকাকে খুঁজে এনে হাতে মাছ দিয়ে বলল তুই আতিক আর বৌমাকে নিয়ে বাড়িতে যা আমি কাজ শেষ করে আসছি।

---

আতিকের ছোট কাকা তাদের সাথে গল্প করতে করতে বাড়ির পথে রওনা হলো। আতিকের দাদি টর্চ হাতে বাড়িতে ঢুকার পথটাতে কি যেন করছিলেন। হঠাৎ করে তাদেরকে দেখে খুশিতে উনি চিৎকার শুরু করে দিলেন। তার দাদি যেখানটায় দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখান থেকে বাড়িতে যেতে আরো কিছু সময় লাগবে। আতিকের দাদার বাড়িতে অনেক ধরনের গাছ রয়েছে। আতিক দাদির সাথে মজা করার জন্য টর্চটা হাতে নিয়ে এক একটা গাছের মাথায় আলো ফেলছে আর বলছে ঐ দেখো দাদি ঐটা কি ভুত। তার দাদি তাকে বার বার বলছিলো নাতি এমন করিস না খারাপ কিছু হতে পারে। কে শুনে কার কথা আতিক আরো বেশি করে টর্চ মারছে আর দাদিকে ভয় দেখাচ্ছে। এমনটা করতে করতে তারা বাড়িতে এসে ঢুকলো।

---

রাতে আতিকের দাদি বোয়াল মাছটা খুব স্বাদ করে রান্না করলো। তার দাদা বাড়িতে আসার পর তারা সবাই অনেক মজা করে খেলো। তারপর আরো বেশ কিছুক্ষণ গল্প গুজব করে সবাই ঘুমাতে গেলো। আতিক আর তার মা এক সাথে ঘুমাবে।

---

মধ্য রাত বাড়ির সবাই ঘুমে আচ্ছন্ন। আতিক ও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। হঠাৎ আতিক ঘুমের মাঝে টের পেলো কি যেন একটা তার বুকের উপর বসে তার গলা টিপে ধরেছে। আতিকের ঘুম ভেঙ্গে গেলো। সে তাকিয়ে দেখল লোমশ হাত অদ্ভুত চেহারা কিছুটা শিম্পাঞ্জির মতো দেখতে বুকের উপর বসে দুহাতে তার গলা টিপে ধরেছে। তার দম বন্ধ হয়ে আসছে। সে প্রাণপণ চেষ্টা করছে প্রাণীটির হাত দুটো গলা থেকে ছাড়াতে কিন্তু তার শক্তির সাথে পারছে না। আতিক শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করে উঠল। তার চিৎকারে সবাই উঠে গেলো আশপাশের বাড়ির মানুষরাও তাদের বাড়িতে চলে আসলো। আতিক প্রচন্ড ঘামাচ্ছে তার মা তাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। একটু স্থির হলে আতিক পুরো ঘটনাটা সবাইকে বলল। সবাই বলল ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখে সে ভয় পেয়েছে। কিন্তু আতিক জানে সে স্বপ্ন দেখেনি পুরোটাই বাস্তবে ঘটেছে।

---

পরদিন সকালে তার মা কাজ শেষ করে তাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলো। আতিক আজো পর্যন্ত সে রাতের কথা ভুলতে পারে না। ঘটনাটা মনে পড়লে তার শরীর শিউরে উঠে। সেদিন রাতে কি তাকে এভাবে আক্রমন করল তা আজ পর্যন্ত তার কাছে রহস্যই রয়ে গেলো।

---

তো বন্ধুরা, আমার আজকের গল্গ এখানেই শেষ হলো। আমার আজকের "রহস্যময় রাতের ভৌতিক অনুভূতি" গল্পটি কেমন লাগলো জানাবেন। আশা করি ভালো লেগেছে। গল্প লেখায় কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে আশাকরি সবাই তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ইনশাআল্লাহ সামনে আরো ভালো কিছু লেখার চেষ্টা করবো।

আজ এখানেই বিদায় নিলাম। সবাই ভালো থাকবেন।