কাছের মানুষের প্রতারণার গল্প পর্ব -২

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগন কেমন আছেন ?আমি ভালো আছি । আশা করি আপনারা ও ভালো আছেন ।

দেখতে দেখতে কিছুদিনের মধ্যেই তার ছুটি শেষ হয়ে গেলো। তারপর আবার পারি জমালো বিদেশের মাটি পারি জমালো। যাওয়ায় কিছুদিনের মাথায় তার বড় ভাই বিয়ে করলো।পরিবারের সবাই খুশি। সবাই তার বড় ভাইয়ের বৌ কে ভালোবাসতো।

human-g045c8fe16_1280.png

source



বড় ভাইয়ের বিয়ের ৬ মাস পর সে আবার বাংলাদেশে আসলো। তারপর বাড়ির সবাই চাপ দিলো তাকে বিয়ে করার জন্য। তারেক সাহেব ও রাজি হলো। বিভিন্ন জায়গায় মেয়ে দেখলো ,কিন্তু মেয়ে তার পছন্দ হয় না। এর মাঝে বড় ভাইয়ের বৌ এর চাচার বাসায় তাদের একদিন দাওয়াত পরে। আসলে বড় ভাবি তার চাচার বাসায় বড় হয়েছে ,কারণ তার বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। চাচা চাচী অনেক ভালো ,তাই তাদের বাসায় থাকতো ,এমন কি তারাই তার বিয়ে দিয়েছিলো।

যাই হোক দাওয়াত খেতে এসে ভাবীর চাচাতো বোনকে দেখে তার অনেক পছন্দ হয়। তখন তার ভাবীর মাধ্যমে সরাসরি বিয়ে এর প্রস্তাব দেয় মেয়ের বাবা মায়ের কাছে। মেয়ের বাবা মা প্রথম প্রথম রাজি ছিল না ,পরে তার ভাবি রাজি করায়।
খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিয়ে হয়ে যায় কোন অনুষ্টান ছাড়ায়। কথা হয়েছিল দুই বছর পর অনুষ্ঠান করে বৌ কে তুলে আনবে। এইবার আর বেশি সময় নিয়ে আসেনি ,দেখতে দেখতে যাওয়ার সময় চলে এসেছে তারেক সাহেবের।তারেক সাহেব যেহেতু বৌকে তুলে আনেনি ,সেহেতু বৌ তার বাবার বাড়িতে থাকে। যেহেতু চাচাতো বোনে বোনে জা,সেহেতু ভালোই মিল।

তারেক সাহেব বিদিশে পাড়ি দেওয়ার আগেই ভাই আর ভাবীকে বলেছিলো বৌ এর যেন কোন কিছুর কমতি না হয়। বড় ভাই ও অনেক আশ্বাস দিলো কোন কিছুর কমতি হবে না।তখন ছিল চিঠির যুগ ,এখন কার মত হাতে হাতে মোবাইল ছিল না। হাতেগুনা কয়েক জনের বাসায় ল্যান্ডফোন ছিল।

বড় ভাই চিঠিতে সব সময় বলতো তারেক সাহেবের বৌকে অনেক কিছু কিনে দেয় ,যাবতীয় সব খরচ বহন করে। নিজের বৌ এর জন্য যা কিনে ছোট ভাইয়ের বৌয়ের জন্য তাই কিনে। আসলে কিনে ঠিকই কিন্তু তার বৌয়ের জন্য দামি জিনিস আর তারেক সাহেব এর বৌ এর জন্য কম দামি। চাচাতো বোন আস্তে আস্তে কেমন হয়ে গেলো।

এই দিকে তারেক সাহেব বড় ভাইয়ের কাছে বৌ এর জন্য আলাদা আর সংসার খরচের আলাদা টাকা পাঠাতো। সে তার ভাইকে অন্ধের মত বিশ্বাস করতো।এই দিকে বৌ ও কখনো কিছু বলতো না ,কারণ তার স্বামী যে হারে ভাই কে বিশ্বাস করে ,এখন দূর থেকে কিছু বললেও বিশ্বাস করবে না।

এর মাঝে তারেক সাহেবের ছোট বোনকে বিয়ে দিলো মহা ধুমধাম করে। খরচের কোন কমতি করেনি। পরিবারের জন্য এত কিছু করতো,কিন্তু পরিবারের সবাই সেই বড় ভাইয়ের কথাই বলতো। আসলে তিনি শুধু টাকাই পাঠাতো ,কিন্তু সকল খরচ গুলো বড় ভাই করতো ,তাই সবাই বড় ভাই ,ও বড় ভাইয়ের বৌ কেই ভালোবাসতো। দীর্ঘ ৮ বছরের সকল ইনকামের টাকা সবই বড় ভাইয়ের কাছে ,একটা টাকাও নিজের জন্য রাখেনি ,কারণ সে জানতো তার বড় ভাই তার জন্য সবই করবে। এই দিকে বড় ভাই বৃদ্ধ মা বাবা কে তাল দিয়ে পৈত্রিক সম্পত্তি তার নিজের নামেই লিখে নিয়েছি। তারেক সাহেবের পাঠানো টাকা দিয়ে বড় ভাইয়ের মেয়ের নামে ঢাকাতে কারখানা দিয়েছে ,যেন কেউ না বুঝতে পারে। তবে তারেক সাহেবের নামে ও জায়গা রেখেছে।
ভেবেছিলাম আজকে গল্পটা শেষ করবো। শেষ করতে হলে অনেক বড় হয়ে যায়। পরবর্তী পর্বে শেষ করার ইচ্ছে আছে।আজ এই অব্দি ,আবার আসবো অন্য কোনো দিন ,অন্য কোন ব্লগ নিয়ে ,সেই অব্দি ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায়।
(চলবে )

ধন্যবাদ সবাইকে

Banner.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

এই তারেক সাহেবের গল্পটা অনেকটা আমার নিজের একজনের সাথে কিছুটা মিলে যায়। তবে পারিবারিক গল্প তো, এজন্য আমার কাছে একটু ঘোরানো প্যাঁচানো মনে হচ্ছে। তবে আপনার উপস্থাপন অনেক সুন্দর ছিল। আপনি অনেক সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন। আমি পুরো পোস্টটাই পড়েছি।

আসলে, আমি এই প্রথম গল্প লেখার দুঃসাহস করেছি। জানি না কেমন হয়েছে, তবে ইচ্ছে আছে সপ্তাহে একটা করে গল্প লিখবো।ধন্যবাদ

বড় ভাইয়ের কথা শুনে খুবই খারাপ লাগলো। গল্প পড়েই বোঝা যাচ্ছে যে বড় ভাই নিজের স্বার্থ উদ্ধার জন্য সব করছে। ছোট ভাইকে হাত রেখে নিজে সবকিছু করে নিচ্ছে। যেমন নিজের মেয়ের নামেও কারখানা খুলেছে। যাই হোক গল্পের পরবর্তী পরপর অপেক্ষায় রইলাম।

আমার এক প্রতিবেশীর সাথে হুবহু মিলে যাচ্ছে।তবে আমার প্রতিবেশীর ভিলেন হচ্ছে তার বাবা।ছোট ছেলের কষ্টের সব তিনি বড় ছেলেকে দিয়েছেন।এরপর ছোট ছেলে ফিরে এসে এটা দেখে প্রায় পাগলের মত অবস্থা।খুব কাছে থেকে দেখা তাই রিলেট করতে পারছি।অনেক সুন্দর হয়েছে গল্পটি। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

তারেক সাহেবের গল্প নয় এটা যেন বাস্তব কাহিনী। আসলে আপু বড় ভাইকে যেহেতু ছোট ভাই অন্ধের মত বিশ্বাস করে আর বড় ভাই সেই সুযোগে ছোট ভাইয়ের সকল কিছু দখল করে নিল।এটা ভাই নামের কলঙ্ক। এধরণের ঘটনা অনেকের সাথেই ঘটে থাকে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।

আসলে কিছু কিছু গল্প বাস্তব কাহিনী থেকেই আসে।হয়ত একটুু ভিন্ন হতে পারে।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মতামত দেওয়ার জন্য

কাছের মানুষের প্রতারণার থেকে দুঃখজনক আর কিছুই হয় না।

দুনিয়াতে কাছের মানুষ গুলোই প্রতারনা করে ভাই। ধন্যবাদ

আসলে অনেক সময় রক্ষকই ভক্ষকের কাজ করে,যেমনটি আপনার গল্প রয়েছে। বিশেষ করে তার স্বামী তার ভাইকে এতই বিশ্বাস করে যেটা বিশ্বাসের জায়গা থেকে অটুট। আর সেজন্যই তার স্বামীকে কিছু বললে সে সহজে জিনিসটা মানতে পারবে না,আর এটাই বাস্তবতা। কারণ একবার বিশ্বাস তৈরি করে নিলে সহজে ঠকানো সম্ভব কিছু কিছু লোকের দ্বারা। যাই হোক অনেক ভালো ছিল আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

একেবারে ঠিক বলেছেন।তবে যাকে বেশি উপকার করবেন সেই মানুষ গুলো আপনার ক্ষতি করবে সুযোগ পেলেই। ধন্যবাদ আপনাকে

যথাযথ বলেছেন খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার একটি ফিডব্যাক দেয়ার জন্য।

তারেক সাহেব এর বড় ভাইয়ের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগলো। যেহেতু বড় ভাই সেই জন্য অন্ধের মত বিশ্বাস করবেই। কিন্তু তার সাথে যে এমন বেইমানি করবে সেটা তো তার জানা ছিল না। এরকম গল্প গুলো খুবই কষ্টকর হয়ে থাকে যেগুলো পড়লে চোখের পানি চলে আসে। পরের পর্বটি দেখার অপেক্ষায় থাকবো। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি নিয়ে আসবেন আমাদের মাঝে পর পরের পর্ব।

আসলে এখন ছোট বড় নেই। সুযোগ পেলে মানুষ নিজের স্বার্থের জন্য অন্যর ক্ষতি অনায়াসে করে ফেলে।ধন্যবাদ

আজকে আপনার প্রতারণার গল্প পড়ে ভালো লাগলো। তবে আপনজনের এমন স্বার্থপরতা সত্যি খুবই মর্মাহত। অনেক সময় আমাদের সমাজে দেখা যায় স্বার্থের জন্য সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

স্বার্থের জন্য সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়ে যায়।আপনাকে ধন্যবাদ শুভেচ্ছা নিবেন।

কাছের মানুষ গুলোর তুলমা হয়না তারা এতো নিখুত অভিনয় করতে পারে যা সব কিছু কেই হার মানায়।আপনি চমৎকার ভাবে উপস্থপনা করেছেন আপু।ধন্যবাদ আপনাকে।