শুভর কলেজের গেটের সামনে শুধু চটপটি ফুচকা এই ধরনের খাবার পাওয়া যেতো। ভারী খাবার কেউ বিক্রি করে না। এজন্য প্রথম দিন থেকেই শুভর ফুড কার্টে বেশ ভালো বেচাকেনা হয়। শুভকে খাবার বিক্রি করতে দেখে তার বন্ধু-বান্ধবদের ভেতর অনেকেই তাকে উৎসাহ দেয়। আবার কেউ কেউ নেতিবাচক কথাও বলে। তবে শুভ এগুলো একেবারেই গায়ে লাগায়না। প্রথম দিনের বেচাকেনা শেষে শুভ যখন অনেকগুলো টাকা নিয়ে বাড়িতে ফেরে তার মা খুশিতে কান্না শুরু করে দেয়। আর সবকিছু দেখে শুভর বাবা অবাক হয়ে যায়। কারণ মা ছেলে মিলে কখন পরামর্শ করে এই কাজ শুরু করেছে তাকে কেউ কিছু জানায়নি।
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
শুভ বাড়িতে ফেরার আগে তার মায়ের জন্য একটা শাড়ি এবং বাবার জন্য একটা শার্ট কিনে নিয়ে আসে। তবে প্রথম দিনের টাকা থেকে এইভাবে উপহার কেনার জন্য শুভর মা-বাবা দুজনেই শুভকে রাগ করে। শুভ তখন তাদেরকে বলে তোমরা আর চিন্তা কোরো না। এখন থেকে সংসারের দায়িত্ব আমি সামলাবো। তোমরা দেখো আমার এই ব্যবসা ইনশাল্লাহ অনেক ভালো হবে। আজকে সবাই খাবারগুলো খেয়ে খুব প্রশংসা করেছে। এমনিতেও শুভর রান্নার হাত বেশ ভালো। তাই অল্প সময়েই শুভর ফুডকার্টের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। দেখতে দেখতে শুভর বেচাকেনা বেড়ে যায় অনেক। শুধু যে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা তার ফুড কার্টে খেতে আসে তা নয়। বরং আশেপাশের এলাকা থেকে অনেক ছেলেমেয়েরা তার খাবার টেস্ট করতে আসে।
শুভর খাবারের টেস্টের কারণে তার ব্যবসা খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। মাত্র তিন মাসের মাথায় শুভ ফুডকার্ট থেকে রীতিমতো একটি হোটেল দিয়ে তার ব্যবসা শুরু করে। যেদিন শুভ তার হোটেল শুরু করে। সেদিন হোটেলটা উদ্বোধন করার জন্য সে তার মা-বাবাকে নিয়ে আসে। ফিতা কেটে যখন তার মা-বাবা হোটেল ঢুকে তখন শুভ তার পকেট থেকে একটি সোনার চেইন বের করে তার মাকে পড়িয়ে দেয়। তার মা অবাক হয়ে লক্ষ্য করে সে যেই চেইনটা বিক্রি করেছিলো সেই চেইনটা আবার শুভ কিনে এনেছে। বাড়ি ফিরে শুভর মা শুভকে জিজ্ঞেস করে এই চেন তুই কোথায় পেলি। তখন শুভ বলে তুমি সেদিন চেইন বিক্রি করেছিলে। সেদিনই আমি স্বর্ণকারের দোকানে গিয়ে তাকে বলে এসেছিলাম এই চেইনটা তার কাছে রাখতে। তাকে বলেছিলাম আমি দু এক মাসের ভেতরে চেইনটা নিয়ে নেবো।
সেই স্বর্ণকার শুভর পরিচিত হওয়ায় সে তার কথাটা রেখেছিলো। এভাবেই দেখতে দেখতে অনার্স পড়ুয়া শুভ শহরে কয়েকটি হোটেলের মালিক হয়ে যায়। ব্যবসার সুবাদে তাদের বাড়ি হয় গাড়ি হয় তাদের দুঃখের দিন শেষ হয়ে সুখের দিন আসে। এর ভেতরে শুভ তার বাবাকেও চাকরি থেকে ছাড়িয়ে এনেছে। এভাবেই ছাত্র থেকে শুভ একজন সফল ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়। (শেষ)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
এমন সফলতার গল্প শুনতে বেশ ভালোই লাগে। শুভর সফলতা দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। শুভর মায়ের স্বর্ণের চেইন বিক্রি করে তাদের পরিবার আজ ঘুরে দাড়িয়েছে। আসলে ব্যবসা জিনিসটাই এমন। যখন ব্যবসায় উন্নতি হওয়া শুরু করে, তখন আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না। যাইহোক এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার গল্পটির প্রথম পর্ব থেকে শেষ পর্ব পর্যন্ত পড়েছি। খুবই সুন্দর একটি গল্প আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন আপনি। এমন সফলতার গল্প পড়তে সবারই ভালো লাগে। ব্যবসায়ের শুরুতে শুভকে অনেকে ট্রল করলেও সে তা গায়ে না লাগিয়ে এগিয়ে গিয়েছে, এটিই তার সবচেয়ে বড় সফলতা। এ সফলতার কারণে তিন মাসের মধ্যে সে একটি হোটেল দিতে পেরেছে। রান্নার কোয়ালিটি থাকার কারণে চারদিকে তার হোটেলের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ এমন একটি ধারাবাহিক পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit