💐 জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা 💐

---

আশা করছি @amarbanglablog এর সকল মেম্বাররা ভালই আছেন। আমিও আপনাদের দোয়া ও আশীর্বাদে ভালো আছি। সবাইকে আমার সালাম, আদাব এবং নমস্কার জানিয়ে আজকের পোস্টটি লেখা শুরু করছি। আজকে আমি লিখব গ্রাম্য গানের আসর নিয়ে, যা কিনা বর্তমানে একটি বিলুপ্তপ্রায় সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি কে বাঁচাতে আমার মতামতগুলো আজকে আমি তুলে ধরবো। আশা করছি পোস্টটি সবাই মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

প্রথমেই আমি কমিউনিটির সবাইকে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আজ সারাটা দিন অনেক ব্যস্ততায় কেটেছে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আজ উপবাসের ব্রত পালন করেছি। পূজার আয়োজন করতে বাসায় সবাইকে সাহায্য করেছি।সারাদিন পর বিছানায় শুয়ে শুয়ে একটি ধর্মীয় গান খুজতে ছিলাম। পরে নিচের গানটি খুঁজে পেলাম এবং গানটি দেখেই আমার কতগুলো চিন্তাভাবনা মাথায় ঘুরপাক খেলো। সেই চিন্তা ভাবনা গুলোই আপনাদের সাথে আজকে আমি শেয়ার করবো।আগে চলুন শুনে আসি গানটিঃ

---

---

গানঃ আমারে আসিবার কথা কইয়া
মূল শিল্পীঃ রাধারমন দত্ত

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের লীলা বর্ণিত রাধারমনের লেখা খুব সুন্দর একটি গান, জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

গ্রাম্য গানের আসর কি?

---

আগেকার দিনে গ্রামের মানুষজন রা তাদের ক্লান্তি বা অবসাদ দূরীকরণের জন্য সন্ধ্যার পর পুথি পাঠ বা গানের আয়োজন করত। সেখানে দেখা যেত দুই থেকে তিনজন মানুষ গান করছে বা একজন পুঁথি পাঠ করছে আর বাকি সবাই মনোযোগের সহিত শুনছে। এই যে সকল মানুষ মিলে একসাথে মিলে বসে যে আনন্দ আয়োজন করতো সেটা কেই বলা হয় মূলত গ্রাম্য গানের আসর। আবার মাঝে মাঝে এমন হতো যে দূর-দূরান্ত থেকে ভালো শিল্পী ভাড়া করে আনা হতো।

---

শিল্পীর পারিশ্রমিক

---

আগেকার দিনে শুধুমাত্র চাল-ডালের বিনিময়েও অনেক শিল্পী এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে গান গেয়ে বেড়াতো। কেননা কণ্ঠই ছিল তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম। আবার আপনারা আমার গানের ভিডিওতে দেখে থাকবেন যে গান চলাকালীন সময়ে আমার আমার কপালে টাকা ছিটানো হচ্ছিল। এই জিনিসটা গ্রাম্য গানের আসরে রীতিনীতির মধ্যে পড়ে। শিল্পীর পারফরম্যান্সে খুশি হয়ে যেকোনো দর্শক তাকে রিওয়ার্ডস দিতে পারে। আর এটা করলে শিল্পীর আগ্রহ আরো বাড়ে এবং পারফরম্যান্স আরো ভালো হয়। যদিও আমাকে আমার মামা মজা করে দিচ্ছিলেন টাকাগুলো। গ্রামের এসব শিল্পীদের বায়না(বুকিং মানি) খুবই অল্প টাকায় হয়। তাই তারা পারফরম্যান্সের সময় আশায় থাকে যদি কেউ অল্প অল্প করে কিছু টাকা পয়সা দেয়।

---

সুন্দর একটি সংস্কৃতির বিলুপ্তি

---

বর্তমানে মানুষের ব্যস্ততা, অনেক অনেক টাকা ইনকাম করার প্রবণতা এবং ধর্মীয় অনুশাসনের জন্য বর্তমানে এই সংস্কৃতিটি দেখাই যায় না। এখন আর আগের মতো আয়োজন হয়না এই সুন্দর সুন্দর মুহূর্তগুলোর। শিল্পীরা চাইলেও এই সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখাটা প্রায় অসম্ভব বলা চলে। কারণ এমনিতেই একজন শিল্পীর এখান থেকে আয় খুবই কম তারপরে আবার মানুষজন এই প্রফেশনটা কে পছন্দ করেনা।মানুষ এখন বাংলা গান থেকেও ডিজে গান হিন্দি গান এইসব শুনে বেশি অভ্যস্ত সবমিলিয়ে এইসব কারনেই আজ এই সংস্কৃতি বিলুপ্তির পথে।

বি.দ্রঃ এই গানটি আমার দাদুর বাড়িতে একটি বাৎসরিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে করা। প্রতি বছরই দাদুদের মন্দিরে এই আয়োজন করা হয়ে থাকে। আর এটাই ছিল আমার গ্রাম্য গানের আসরে গাওয়া প্রথম গান। এক দারুণ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে সেদিন। তাদের সাথে কোনরকম প্র্যাকটিস ছাড়াই খুব সুন্দর ভাবে মিলে গিয়েছে সুর তাল লয়। যেটা কিনা আমার জন্য একটা বড় সার্থকতা। আশা করছি আমার ব্লগ টি আপনাদের ভাল লেগেছে। এই আশা ব্যক্ত করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি।

---

ধন্যবাদ সবাইকে 🙏💙