প্রচণ্ড গরম পড়লেই আলোচনা ওঠে, গাছ লাগান। বেশি করে গাছ লাগালে গরম কমে আসবে। গরমের সময় এ আলাপ শুরু হলেও বর্ষায় এই গাছ লাগানোর আগ্রহ আর থাকে না। আগ্রহ না থাকার কারণ, শহরে গাছ লাগানোর মতো তেমন কোনো জায়গা অবশিষ্ট নেই। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) ল্যান্ডসেট স্যাটেলাইট বিশ্লেষণ করে এক গবেষণায় বলেছে, ঢাকায় সবুজ এলাকা আছে মাত্র ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। গত ২৮ বছরে ঢাকা থেকে অন্তত ৪৩ শতাংশ সবুজ এলাকা ধ্বংস হয়েছে। একই সময়ে ঢাকা থেকে ৮৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ জলাভূমি হারিয়ে গেছে। এ সময়ে নির্মাণ এলাকা বা স্থাপনা বেড়েছে ৭৫ শতাংশ। ঢাকায় ২০ শতাংশ সবুজ এলাকা থাকা প্রয়োজন, সেখানে আছে মাত্র ৮ শতাংশের কম। এখানে আবার কিন্তু আছে। মহানগরের সীমানা সুবিধাজনকভাবে হিসাব করা হয়, যেন কিছু সবুজ এলাকা হিসাবের মধ্যে আসে।
ম্যানগ্রোভ বন
একটা গাছ লাগালে গাছটা বড় হতে ২০ থেকে ৩০ বছর সময় লাগে। ২০ বা ৩০ বছর ধরে একটা গাছকে রক্ষা করা খুব কঠিন। গাছ অনেকটা মানবশিশুর মতো। ছোটবেলায় প্রচুর যত্নের প্রয়োজন হয়। না, গাছকে মানুষের মতো খাইয়ে দিতে হয় না। অন্য কেউ যেমন ছাগল বা গরু এবং সৌন্দর্যবর্ধনের নামে গাছকে যেন কেউ খেয়ে না ফেলে, খেয়াল রাখতে হয়। গাছ লাগানোর জন্য জায়গার প্রয়োজন তো আছেই। এই জায়গাটুকু তো নেই। ইনডোর প্ল্যান্ট বা ছাদবাগান ছায়া দেয়, গরম কমাতে তেমন ভূমিকা রাখে না। কারণ, এর অক্সিজেন তৈরি বা কার্বন শোষণের সক্ষমতা খুব কম। বলা যায়, অতি সামান্য। গাছ কার্বন জমা করে। কার্বন জমা করার সুন্দর উদাহরণ গাছের গুড়ি বা কাঠ। এখন একটা ইনডোর প্ল্যান্টে তুমি কতটুকু কাঠ দেখতে পাও? এবার বুঝতে পারলে কেন ইনডোর প্ল্যান্ট দিয়ে ভালো লাগার বাইরে গরমে কোনো উপকার হয় না? ঢাকায় এখনো সবুজ গাছপালা কেটে এবং জলাশয় ভরাট করে কংক্রিটের স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। পার্ক, খেলার মাঠসহ খোলা জায়গাগুলো কংক্রিট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। এখন কেউ শিশুপার্ক ও আবাহনী মাঠে গেলে নিজের চোখে এটি দেখতে পারবে।