মাস্টারমাইন্ড - দ্বিতীয় কিস্তি।

in hive-129948 •  3 years ago 

IMG_20220306_093717.png
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY

হ্যালো আমার প্রিয় বন্ধুরা।

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আমি গত দিন একটি মুভি রিভিউ আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। কিন্তু সেই মুভিটির সম্পূর্ণ রিভিউ শেয়ার করিনি। দুটি ভাগে ভাগ করেছিলাম। প্রথমভাগের অংশটি সেদিন শেয়ার করেছি। আর বাকিটা আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। প্রথম অংশটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

Masterminds_(2016_film).png
Poster Collected From wikipedia

মুভি সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ-

নাম: মাস্টারমাইন্ড
পরিচালক: জারেড হেস
প্রযোজক: জন গোল্ডউইন, লর্ন মাইকেলস
মুক্তি: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ (যুক্তরাষ্ট্র)
ভাষা: ইংরেজি
নির্মাণব্যয়: $২৫ মিলিয়ন
আয়: $২৯.৭ মিলিয়ন

তথ্যগুলো উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে

কাস্ট-

নংবাস্তব নামচরিত্রে
জ্যাক গ্যালিফিয়ানাকিসডেভিড
ক্রিস্টেন উইগকেলি
জেসন সুডেকিসমাইক
কেট ম্যাককিননজেন্ডিস
লেসলি জোন্সএফ.বি.আই এজেন্ট
রোস কিম্বালইরিক

প্লট/ স্টোরিলাইনঃ-

গত পর্বে আমরা দেখেছিলাম ডেভিড এবং কেলির গ্রুপ টাকা লুট করতে সফল হয়েছে। টাকা লুট করার আগে কেলি ডেভিডকে কথা দিয়েছিল ম্যাক্সিকোতে পাঠিয়ে দেবে। তো এখন সময় এসেছে ডেভিডকে মেক্সিকোতে পাঠিয়ে দেওয়ার। কেলি ডেভিডকে কিছু টাকা দেয় আর নতুন একটা আইডেন্টিটি বানিয়ে দেয়। নতুন আইডেন্টিটি তে ডেভিডের নাম দেয়া হয় মিকাইল মেকানি । এরপর ডেভিড কে ম্যাক্সিকোতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু কথা ছিল ডেভিডের সাথে কেলি ও ম্যাক্সিকোতে যাবে এবং তারা ওখানে একসাথে থাকবে। এখন এসে কেলি ডেভিডকে বলে তুমি আগে ম্যাক্সিকোতে যাও পরে আমিও চলে আসব। কিন্তু কেলির কথা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা। কেলি ডেভিডকে ম্যাক্সিকোতে পাঠিয়ে দিয়ে এখানে আরাম-আয়েশে দিন যাপন করবে। এটাই ছিল কেলির প্লান।

এরপর ডেভিড মেক্সিকোতে পৌঁছে যায়। আর ওখানে যেয়ে খুব আরাম আয়েশে দিন কাটাতে থাকে। সে তার জীবন টাকে খুব ভালোভাবে এনজয় করছিলো। আর এদিকে কেলির বন্ধু বাড়িতে বসে টিভি দেখছিল। ঠিক সেই সময়ে নিউজে ডেভিডকে দেখায়। কারণ ডেভিড একটা সিসি ক্যামেরা ভাঙতে ভুলে গিয়েছিলো। এই কারণে পুলিশ ডেভিডকে চিনে ফেলে। এই নিউজ দেখার পর কেলির বন্ধু এবং কেলি সিদ্ধান্ত নেয় ডেভিডের বর্তমান লোকেশন পুলিশকে জানিয়ে দেবে। তাহলে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন করতে করতে তাদের পর্যন্ত আসবেনা। ডেভিডকে ধরে ফেললেই কেস খতম হয়ে যাবে । এমন চিন্তা থেকে তারা পুলিশকে ফোন দেয় এবং ডেভিডের লোকেশন বলে দেয়। তখন পুলিশ মেক্সিকোতে চলে যায়। এরপর ডেভিড যেই হোটেলে ছিল সেই হোটেলে পুলিশ ঢুকে পড়ে। কিছুক্ষণ বাদেই ডেভিড বিষয়টি বুঝতে পারে এবং জোরে দৌড় লাগায়। পুলিশ তাকে দেখে ফেলে তখন তাদের মধ্যে অনেক সময় চোর-পুলিশ খেলা চলে। কিন্তু শেষমেশ ডেভিড পালাতে সক্ষম হয়। পুলিশ তাকে ধরতে পারে না।

আর এদিকে কেলি এবং তার বন্ধুরা খুব আরাম আয়েশে দিন যাপন করেছিল। তারা প্রচুর প্রচুর খরচ করছিল বিলাসিতার জন্য। তারা অনেক বড় একটি বাড়ি কিনেছিল, গাড়ি কিনেছিল এবং ইচ্ছামতো শপিং করত। এরই মাঝে তারা খবর শুনতে পায় যে পুলিশ ডেভিডকে ধরতে পারেনি। তখন কেলির বন্ধু স্টিফেন সিদ্ধান্ত নেয় তারা একটা কিলারকে ভাড়া করবে ডেভিডকে হত্যা করার জন্য। তাহলেই আর কোনো প্রমাণ থাকবে না। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। একটা কিলারকে ভাড়া করে ম্যাক্সিকোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিলার মেক্সিকোতে পৌঁছানোর পর ডেভিডকে কে হত্যা করার জন্য বন্দুক তাক করে। কিন্তু গুলি করার পর দেখা যায় বন্দুকটি ফেটে গেছে। বিষয়টি হাস্যকর ছিল। এটা দেখে ডেভিড বুঝে যায় তাকে হত্যা করার জন্য কেউ একজন পিছু নিয়েছে। এরপর সে উদাস মনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। ঠিক সেই সময় আবারও কিলার চলে আসে আর ডেভিডকে অজ্ঞান করে নিজ বাসায় নিয়ে যায়। ডেভিডকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার পর ডেভিডের আইডেন্টিটি চেক করতে গিয়ে দেখে ডেভিডের নাম মিকাইল মেকানি। আমরা কিন্তু জানি এই নামটা কেলি তাকে বানিয়ে দিয়েছে পরিচয় গোপন রাখতে। কিন্তু কিলার তো সেটা জানেনা। কিলার এটি দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে যায়। কারণ কিলারের নাম ও একই। তখন আমরা দেখতে পাই ডেভিডকে হত্যা না করে দুইজন আরো অনেক ভালো বন্ধু হয়ে যায়।

এদিকে কেলি ডেভিডকে প্রতি অনেকটা সফট মাইন্ডের হয়ে যায়। কারণ ডেভিড কেলি দের জন্যই এই বিপদে পড়েছে। ডেভিডকে প্রতি কেলির ভালো লাগা তৈরি হয়ে যায়। তখন কেলি ডেভিডকে ফোন দিয়ে সব সত্য কথা বলে দেয়। আর কেলি সিদ্ধান্ত নেয় সে ডেভিডের কাছে চলে যাবে। কেলির কিছু আচরনে কেলির বন্ধু স্টিফেন সন্দেহ করে যে সে ডেভিডের কাছে যেতে যাচ্ছে এবং ডেভিড কেলিকে পছন্দ করে। এজন্য স্টিফেন কেলি কে বেঁধে রাখে আর ডেবিট কে ফোন দিয়ে বলে তুমি যদি পুলিশকে আমাদের বিষয়ে বলে দাও তাহলে আমি কেলিকে মেরে ফেলবো। এটা শুনে ডেভিড খুবই ভয় পেয়ে যায়। ডেভিড তখন সিদ্ধান্ত নেয় সে তারার দেশে ফিরে যাবে।

আর এদিকে তার দেশে স্টিফেন তার কেনা অনেক দামি বাড়িতে শহরের সব নামিদামি লোকদের ইনভাইট করে আর বিশাল একটা পার্টির আয়োজন করে। স্টিফেনের এত দ্রুত ধনী হওয়ার কারণে এফ.বি.আইয়ের সন্দেহ স্টিফেন এর উপর। এজন্য এফ.বি.আইয়ের কিছু গোয়েন্দা স্টিফেনের সেই পার্টিতে যায়। ঠিক তখন আমরা দেখতে পাই ডেভিড ও ওই পার্টিতে চলে এসেছে। ডেভিড পার্টিতে এসেই কেলিকে কোনরকম উদ্ধার করে সেখান থেকে নিয়ে পালাতে যায়। যাওয়ার সময় স্টিফেনের দামি গাড়িটা ডেভিড চুরি করে নিয়ে পালাতে যায়। ডেভিড অনেক জোরে গাড়ি চালিয়ে স্টিফেনের বাড়ির গেটে ধাক্কা দেয়। ডেভিড চিন্তা করেছিল অনেক জোরে গাড়ি চালিয়ে এসে স্টিফেনের বাড়ির গেট ভেঙে দেবে। কিন্তু সেটা হয় না। আপনারা ট্রেইলারে দেখতে পারবেন অনেক জোরে গাড়ি চালিয়ে গেটে ধাক্কা দেয় কিন্তু গাড়িটা ভেঙে যায়। গেটের কিছুই হয় না। ঠিক তখনই ওইখানে স্টিফেন চলে আসে আর ডেভিডের সাথে গ্যাঞ্জাম লেগে যায়।

তাদের দুজনের মধ্যে যখন লড়াই চলছিল তখন ওই খানে থাকা একটি গাড়ির মধ্যে এফবিআই টিম ছিল। তারা স্টিফেন এবং ডেভিডের সব কথা শুনে ফেলে। স্টিফেন তার সমস্ত প্লানের ব্যাপার ওই গ্যাঞ্জামের মধ্যেই বলতে থাকে তখন এফবিআই টিম সবকিছু জেনে যায়। এরপর তাদেরকে অ্যারেস্ট করা হয়। স্টিফেনকে ১১ বছরের জেল দেওয়া হয়, কেলিকে তিন বছরের জেল দেয়া হয় এবং ডেভিড কে সাত বছরের জেল দেওয়া হয়। ডেভিডকে কেলি কথা দেয় তুমি জেল থেকে ছাড়া না পাওয়া পর্যন্ত আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো। এরপর সাত বছর পর দেখানো হয়। ডেভিড ছাড়া পেয়ে গেছে। জেল থেকে ছাড়া পাবার পরেই সেই পুরনো বন্ধু যার সাথে মেক্সিকোতে দেখা হয়েছিল, ডেভিডকে খুন করার জন্য যাকে ভাড়া করা হয়েছিল সে অপেক্ষা করছে ডেভিড এর জন্য। এরপর তারা দুইজন মিলে কেলির সাথে দেখা করার জন্য চলে যায়। আর এভাবেই মুভিটি শেষ হয়।

এই মুভিটির শেষে বাস্তব জীবনে যারা এই ঘটনাগুলো সত্যিসত্যিই করেছিল তাদেরকে দেখানো হয়। এটা বাস্তব একটি কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা। এটি একটি কমেডি সিনেমা। সিনেমা না দেখলে শুধুমাত্র রিভিউ পড়ে কখনোই এর মজার অংশগুলো বোঝা পসিবল না। এইজন্য বিনোদন নিতে মুভিটি আপনারা দেখতে পারেন। অভারঅল দিক চিন্তা করে আমি মুভিটিকে ১০ এ ৭ রেটিং দিব।

মুভি ট্রেইলারঃ-



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
ডেবিটকে গুলি করার সময় বন্দুক ফেটে যায় এটা সত্যি অনেল হাস্যকর ছিলো। সত্যি বলতে ইংলিশ মুভিগুলোতে এমন দৃশ্য অনেক বিনোদন দেয়। হাহাহা ডেবিটের নাম অন্য নাম দেওয়ার কারণে ডেভিট যে ভিলেনের হাত থেকে বেঁচে যায় এটাও ভালো ছিলো। তবে কেলী যে তার ভুল বুঝতে পারে এটা অনেক ভালো লাগে। ছবির শেষটাও আমার কাছে ভালো লেগেছে।
সত্যি বলতে দ্বিতীয় পার্টের অপেক্ষায় ছিলাম। আজকে দ্বিতীয় পার্ট পড়ে ভালো লাগলো৷ আর ভাই আপনি ব্যাংক ডাকাতির আরো মুভি রিভিউ করতে চাইছেন, আমি কিন্তু অপেক্ষায় থাকবো। ভালোবাসা অবিরাম ❣️🤟❣️

মুভি ট্রেইলার দেখলাম দেখার পর দারুন লেগেছে আমার কাছে আর এইজন্যই আপনার পোস্টটি আর পড়া হলো না আমার 😍। কারণ পোস্টটি পড়লে স্পয়েল হয়ে যাবে আমার কাছে আর মুভিটি দেখে সে রকম কোনো মজা পাবোনা। তবে ট্রেইলার দেখে যতটুকু ধারনা হলো আরকি মুভিটি দুর্দান্ত হবে কোন সন্দেহ নেই।

সিনেমা না দেখলে শুধুমাত্র রিভিউ পড়ে কখনোই এর মজার অংশগুলো বোঝা পসিবল না

আর হ্যাঁ এটাই সত্য মুভি না দেখলে রিভিউ পড়ে কোনো মজা নেই। আর আমি রিভিউ পড়ি শুধুমাত্র মুভি দেখার জন্য তবে স্পয়লার থাকলে পড়ি না,কারণ পরবর্তীতে মুভিটি দেখার সময় এক্সাইটমেন্ট টা নষ্ট হয়ে যায়😍🖤🖤🤟

আমি এই মুভিটি দেখিনি এখনো, তবে আজকে দেখে নেবো, রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো। মনে হচ্ছে বেস্ট একটা মুভি হবে .

একদম ঠিক বলেছেন,না দেখে জাস্ট গল্প পড়লে সে ব্যাপারটি ঠিক একেবারে ১০০% অনুভব করা যায়না।তবে দারুণ ই লেগেছে আমার কাছে।

মাস্টারমাইন্ড মুভির রিভিউ দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে এই ছবিটির বিস্তারিত আমাদের মাঝে আলোচনা করলেন।আমি এখনো মুভিটি দেখিনি। কিন্তু আপনি এর আজকের বর্ণনা দেখে মুভিটা দেখতে খুব ইচ্ছা হচ্ছে।আমি এই কিছুদিনের মধ্যেই মুভিটা দেখার চেষ্টা করব।

ভাইয়া মাস্টারমাইন্ড মুভিটা আমি ২ থেকে ৩ বার দেখেছি।আমার কাছে অসম্ভব অসম্ভব ভালো লাগে। আপনি মাস্টারমাইন্ড মুভির রিভিউ দিয়েছেন আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে ভাইয়া।রিভিউ টা পড়ে মুভি টা খুব সুন্দর করে বুঝতে পারলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার জন্য অনেক দুআ ও শুভকামনা রইল ভাইয়া।

সুমন ভাই গত পর্বের আপনার পোস্টটি পড়া শুরু করেছিলাম কিন্তু কেন যেন শেষ করতে পারিনি। পোস্টটি একটু বড় হয়ে গিয়েছিল সে সঙ্গে আমার কাছে কাহিনীটিও খুব বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়নি। যাইহোক আজ সম্পুর্ণ পোস্টটি পড়লাম। এখন আবার আগের পোস্টটি পড়তে হবে। অনেক সময়ে সত্যি কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত ছবিগুলো কল্পনাকেও হার মানায়।