রতন চাচার বিদেশ যাত্রা।

in hive-129948 •  last year  (edited)

হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশাকরি ভালো আছেন। আজ আমি একটা মানুষের কথা আপনার সাথে শেয়ার করব যে বয়সে আমাদের থেকে অনেক বড় কিন্তু মন-মানসিকতা একেবারে আমাদের মতই। তিনি হচ্ছেন আমাদের রতন চাচা। যারা আমার ব্লগ রেগুলার পড়ে তারা অনেকেই জানে আমাদের বিভিন্ন পিকনিকের মধ্যে রতন চাচা এই ব্যক্তিটি কমন থাকে।

মন-মানসিকতার দিক থেকে তিনি খুবই সাদাসিধা। তিনি আবার অত্যন্ত মেধাবী। অনেক কিছু একসাথে ম্যানেজ করতে পারে। কিন্তু তার ভাগ্যটাই খারাপ। ইনজুরির কারণে চাকরিহারা হয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। ব্যবসায় ভালোই এগোচ্ছিলেন, কিন্তু ইনজুরি হওয়ার পর প্রচুর দেনা হয়ে যান৷ শেষমেষ আর না পেরে সিদ্ধান্ত নিলেন দেশের বাইরে যাওয়ার। যেভাবেই হোক বিদেশে গিয়ে কাজ করে তার দেনা গুলো পরিশোধ করতেই হবে। তাছাড়া আর উপায় নেই। কারণ ব্যবসায় উনি এগোতে পারছেন না। আর প্রচুর টেনশন থাকে সবসময়।

1702230241105-01.jpeg

1702230227841-01.jpeg

1702230214657-01.jpeg

গত বৃহস্পতিবারে ওনার ফ্লাইট ছিল। বিদায় দিয়ে আসতে হলো সেদিন। বাড়িতে যখন আমি থাকি প্রত্যেকদিন বিকেলে বাজারে যাই। বাজারে গেলে প্রথমে আমাদের সকলেরই একটা স্টেশন হলো রতন চাচার দোকান। রতন চাচার দোকানে বিকেলবেলা না গেলে যেন আমাদের দিনটাই পারফেক্ট হয় না। যাইহোক বাস্তবতা অত্যন্ত কঠিন। বৃহস্পতিবার উনাকে বিদায় জানিয়ে ফেরার সময় মনে হচ্ছিল এবার থেকে বাড়ি গেলে বিকাল বেলা আর বাজারে বসতে ইচ্ছে করবে না হয়তো।

1702230189969-01.jpeg

যেদিন ওনাকে বিদায় দিয়ে আসলাম সেদিন ছিল বৃষ্টি ভেজা ঠান্ডা একটা দিন। আমার সাথে আরও কয়েকটি ছোট ভাই ছিলো। সবাই একসাথে গিয়েছিলাম বিদায় জানাতে। মেট্রোরেলে আগারগাঁ থেকে উত্তরা নর্থ পর্যন্ত গিয়েছিলাম। ওখান থেকে লেগুনা এরপর বাসে চড়ে বিমানবন্দরে যাই। বিমানবন্দরে গিয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষায় বসে ছিলাম তার জন্য। সে অন্য এক জায়গায় কাজে ছিল, সেখান থেকে আসতে একটু দেরি হচ্ছিল।

1702230168580-01.jpeg

1702230157264-01.jpeg

1702230079305-01.jpeg

1702230065493-01.jpeg

1702230053200-01.jpeg

বিমানবন্দরের এক নম্বর টার্মিনালের নিচে বসে বৃষ্টি দেখছিলাম। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি ঠান্ডা পরিবেশ। বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছিল। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর রতন চাচা আসলেন। টার্মিনালের উপরে গেলাম আমরা। সেখানে গিয়ে তার সাথে দেখা হলো। মানুষটা অনেক চাপা মনের। যাওয়ার সময় যে তার মন খারাপ, কষ্ট হচ্ছে সেটা যেন বুঝতেই দিতে চাচ্ছে না। একসাথে দু একটা সেলফি উঠলাম। ভেবেছিলাম তাকে একবার বুকে জড়িয়ে ধরবো। কিন্তু কেন জানি হয়ে উঠলো না। উনি একটু তাড়াহুড়া করেই ভিতরে ঢুকে গেলেন। একভাবে তাকিয়ে রইলাম। এই মানুষটার সাথে আবার কবে দেখা হবে জানা নেই।
1702230121394-01.jpeg

1702230028669-01.jpeg

যখন ফিরে আসছিলাম তখন শুধু একটা জিনিস মাথার মধ্যে বারবার কল্পনায় আসছিল সেটা হচ্ছে চার পাঁচ বছর পর উনি আবার ফিরে আসবেন, তখন আমরা সবাই অনেক বড় পরিসরে পিকনিক করব। আবার বাজারে আড্ডা হবে নিয়মিত। ছাতা মাথায় দিয়ে বৃষ্টির মধ্যে বিমানবন্দরের পরিচ্ছন্ন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি আর নানান কল্পনায় মগ্ন আছি। বৃষ্টি গুলো মুক্তোর দানার মত ঝরে পড়ছে আমার চারিপাশে।



IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

20230619_2107145.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

কিছুদিন আগে আপনার একটি পোস্টে পড়েছিলাম যে, আপনাদের রতন চাচা বিদেশ চলে যাবে। যাইহোক অবশেষে তাহলে উনি বিদেশ চলেই গেলেন। এয়ারপোর্টে গিয়ে বিদায় দেওয়ার মুহুর্তটা খুব কষ্টের। আপনারা উনাকে বিদায় দিতে এয়ারপোর্টে গিয়েছিলেন,এই ব্যাপারটা খুব ভালো লেগেছে। দোয়া করি রতন চাচা সবসময় সুস্থ থাকবেন এবং উনার ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হবেন। উনার জন্য শুভকামনা রইল। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

অনেক মিস করবো তাকে। আসলে ভাই আপনার মত আমিও জড়িয়ে ধরতে চেয়েছিলাম আমি কখনো তাকে জড়িয়ে ধরিনি। কিন্তু সেই মুহূর্তে আমি হাতটাও মিলাতে পারিনি কেন যেন কেমন লাগছিল। সেও দ্রুত ভিতরে চলে গেল। আবার কবে দেখা হবে আল্লাহ ভালো জানেন

Posted using SteemPro Mobile

একটি পোস্টে পড়া হয়েছিল রতন চাচা বিদেশ চলে যাবে।তবে আজ পোস্ট পড়ে বুঝলাম কেন তিনি বিদেশ গেলেন।কিছু কিছু প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে ভাবনার কোন শেষ থাকেনা।হয়ত আপনি বাড়ি গেলে বাজারে যাবেন।কিন্তু রতন চাচার সেই জায়গাটা ফাঁকাই রয়ে যাবে। আবার যখন আসবে তখন আবার সেই পিকনিক,আনন্দ হবে।অনুভূতি গুলো চমৎকার ছিল।

Posted using SteemPro Mobile

তাকে নিয়ে দেখছি আপনার মনে অনেক আবেগ কেননা একজন মানুষকে ঘিরে যদি আবেগ না থাকে তাহলে এরকম জড়িয়ে ধরে আবেগ প্রকাশ করার ব্যাপারটা আসে না। যাইহোক দোয়া করি পাঁচ বছর পর তিনি আবার ফিরে আসুক আপনাদের মাঝে এবং আপনার যে স্বপ্নগুলো আছে সেগুলো পূরণ হোক।

Posted using SteemPro Mobile

সত্যি কিন্তু রক্তের সম্পর্কের চেয়ে মাঝে মাঝে আত্মার সম্পর্ক গুলো বেশ কাছের হয়ে যায়। এই যেমন আপনাদের রতন চাচা। কি দারুন করে আপনাদের আত্মার সাথে মিশে গেছে। তার বিদেশে যাওয়ার বিদায় কালে আপনি কিন্তু মন থেকে বেশ একটা কষ্ট অনুভব করছিলেন। আর একেই বলে আত্মার সাথে আত্মার প্রেম। দোয়া রইল পাঁচ বছর পর রতন চাচা ফিরে আসলে ধুম ধাম পিকনিক হোক গ্রাম। আর সেই পিকনিকে কিন্তু আমায় দাওয়াত করবেন ভাইয়া।

রতন ভাই অনেক ভালো একজন মানুষ। এইরম একজন মানুষকে কাছে পেয়ে সত্যিই সৌভাগ্যবান মনে করি। মানুষ কখন কোন পরিস্থিতির শিকার হয় সেটা কেউই জানে না। তিনি খুবই ট্যালেন্ট একজন মানুষ কিন্তু কিছু কারণে অনেক টাকা দেনা হয়ে গিয়েছে। সেজন্য আজকে তাকে নিজ দেশ ছেড়ে বিদেশে যেতে হল। সেই দেশে যেন ভালোভাবে কাজ করতে পারে সেটাই কামনা করি। অনেক মিস করবো তাকে।

Posted using SteemPro Mobile

সত্যি বলতে ভাই কিছু লোক আছে যারা মনে জায়গা করে নেয়। আর যেহেতু বাড়িতে গেলে ওনার দোকানে আড্ডা দিতেন সেই হিসেবে রতন চাচার চলে যাওয়াতে খারাপ লাগাটা অনেকটাই স্বাভাবিক। আসলে এলাকায় বা বাজারে কিছু দোকান থাকে যেগুলোতে সবসময় বসা হয়। তাদের ওই জায়গাটায় আড্ডা দিতে একটা সময় নিজের ফ্যামিলির মতোই মনে হয় ওই ব্যক্তিটাকে। যাইহোক অবশেষে উনাকে এয়ারপোর্টে বিদায় দিলেন। তবে তাড়াহুড়ার জন্য বুকে জড়িয়ে ধরতে পারলেন না। হয়তো বুকে জড়িয়ে ধরলে আরেকটু ভালো লাগতো। ধন্যবাদ ভাই এই অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।