অসাধারণ একটি বিকেল।steemCreated with Sketch.

in hive-129948 •  2 years ago 

1682777424352-01.jpeg

হ্যালো বন্ধুরা। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। ঈদের পাঁচ-ছয় দিন পেরিয়ে গেল আজ আমি ইফতারের সুন্দর একটা মোমেন্ট এর গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করব। শুধু ইফতার নয় অনেক সুন্দর একটি বিকেল ছিল সেদিন। ঈদের চার পাঁচ দিন আগে সবাই আস্তে আস্তে বাড়িতে আসতে শুরু করে। আর সেই চার পাঁচ দিন আমাদের অনেক অনেক প্রোগ্রাম থাকে। বিশেষ করে ইফতারের প্রোগ্রাম বেশি থাকে। আর একদিন মাস্ট থাকে শপিংয়ের জন্য। একদিন নির্ধারিত থাকে তালের রস খেতে যাওয়ার জন্য কিন্তু এবার কোন কারনে সেটা মিস হয়ে গেছে। পরপর গত দুইটি বছর আমরা রমজান মাসে শেষের দিকে এরকম তালের রস খেতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এবার আর যাওয়া হয়নি তালের রস ও খাওয়া হয়নি।

যাইহোক এ রকমই একটা দিন আমাদের প্রত্যেক বছরই ফিক্সড থাকে যেদিন আমরা কয়েকজন চরের মধ্যে যাই একসাথে ইফতার করতে। সকলেই তো জানেন ঈদের পূর্বে সপ্তাহখানেক কি পরিমাণ গরম পড়েছে। চরের খোলা পরিবেশে অসম্ভব বাতাস ছিল সেদিন। এক মুহূর্তের জন্যও চলে আসার ইচ্ছে হচ্ছিল না কখনোই। সেদিন ইফতার করার জন্য বেশ কিছু জিনিসপত্র কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম আগেভাগেই। খুব বেশি কিছু না, সময়ের অভাব ছিল। এজন্য অল্প কিছু তাড়াহুড়া করে যেটা পেরেছি সেটাই নিয়ে গিয়েছে।

1682777346194-01.jpeg

1682777360171-01.jpeg

1682777380092-01.jpeg

সময়ের অভাবের কারণে তরমুজ নিয়েছিলাম তা সেটা ফ্রিজে রাখা হয়নি। ইফতারের প্রায় ২০ মিনিট আগে আমরা চরে গিয়েছিলাম। আমরা যে জায়গাটাতে গিয়ে বসি সেখানে গিয়ে দেখি একটি স্যালো মেশিন থেকে পানি উঠিয়ে মাঠে দেয়া হচ্ছে। মনটা একদম জুড়িয়ে গেল দেখেই। যাওয়ার সময় আমরা শরবত বানানোর জন্য যে ফ্রিজের পানি নিয়েছিলাম তার থেকে বেশি ঠান্ডা ওই পানি। তারপর আবার ইফতারের সময় আসতে আসতে ফ্রিজের ও পানি আরো গরম হয়ে যাবে। ক্যানাল দিয়ে যখন পানি গড়িয়ে যাচ্ছিল আমরা সবাই এখানে পা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ। অনেক প্রশান্তি কাজ করছিল।

1682777396670-01.jpeg

1682777494198-01.jpeg

1682777458776-01.jpeg

আমাদের সাথে করে নিয়ে যাওয়া সব ফলমূল গুলো পানির মধ্যে ডুবিয়ে রেখেছিলাম। এই বুদ্ধিটা সত্যি কাজ করছিল। হালকা ঠান্ডা হয়েছিল সব। ফলগুলো ওখান থেকেই পানি নিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিলাম আর ইফতারি রেডি করলাম ওখানে বসেই। মনে হচ্ছিল অফুরন্ত সুপেয় ঠান্ডা পানির ভান্ডার পাশেই। আমাদের সাথে করে নিয়ে আসে অল্প পানির উপর ভরসা করতে হচ্ছে না, প্রচুর পানি রয়েছে এখন। যাইহোক ইফতারের দুধ চার মিনিট আগেই সবকিছু রেডি কর আমাদের কমপ্লিট। প্রত্যেক বছর যে আমরা ঈদের দু একদিন আগে এখানে ইফতার করি এটা আমাদের খুবই ভালো লাগে। সবাই একসাথে এরকম মনোরম পরিবেশে বসে ইফতার করা আর আড্ডা দেওয়ার মধ্যে আলাদা একটা মজা আছে। এটা প্রত্যেক বছরেই আমরা নিতে চাই। কোন বছর মিস দিতে চাইনা।

1682777424352-01.jpeg

1682777478119-01.jpeg

1682777513010-01.jpeg

কিছুক্ষণের মধ্যেই সময় হয়ে যায়, আমরা ইফতার করে নেই। সবকিছু অল্প অল্প নিয়েছিলাম, খেয়ে খুব মজা পেয়েছি। অতিরিক্ত খেলে ইফতারের পরে আর ভালো লাগেনা। যাই হোক সবাই গল্প করতে করতে ইফতার শেষ করলাম। এরপর আসলো নামাজের সময়। আমরা ছিলাম মোট নয় দশজন। আমরাই ওখানে জামাত করেছিলাম। কি যে একটা প্রশান্তি কাজ করছিল নামাজে দাঁড়িয়ে। একদম খোলামেলা পরিবেশে আমরা দাঁড়িয়ে আছি নামাজের জন্য, প্রচন্ড বাতাস বয়ে যাচ্ছে। এমন পরিবেশে দাঁড়িয়ে থাকলে সব ক্লান্তি এক নিমিষেই দূর হয়ে যেতে বাধ্য। পুরো রমজান মাসে আমার বেস্ট একটি ইফতার ছিল এটা। শুধুমাত্র বেস্ট ইফতারি ছিল না, বেস্ট একটি বিকেল সন্ধ্যা কাটিয়েছি।

আমরা বহুক্ষণ ওখানে বসে ছিলাম। আসতে মন চাচ্ছিল না একদমই। কিন্তু সময় পেরিয়ে যাচ্ছিল কি আর করার আসতেই হবে। আমাদের সাথে গাড়ি ছিল কিন্তু গাড়িতে আর আসতে ইচ্ছা করছিল না। কয়েকজনের কাছে গাড়ি দিয়ে আমরা বাকিরা হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিলাম। এমন পরিবেশের মাঝখান দিয়ে এভাবে হেঁটে যেতও ভালো লাগছিল। এমন সময় তো বারবার আসে না এজন্য যতটুকু সময় এখানে কাটানো যায় আর কি। এরপর আস্তে আস্তে আমরা সবাই বাজারে চলে আসলাম।

সামনের একটি রোজাই ছিল। চাঁদ রাত্রির ওই ইফতার তো আর বাহিরে করা যাবে না এজন্য আমরা একদিন আগেই এখানে প্ল্যান করেছিলাম। চাঁদ রাত্রের ওই শেষ ইফতারটা ফ্যামিলির সাথে করাই ভালো। এজন্য আমরা একদিন আগেই শেষ করলাম। তাছাড়া চাঁদ রাত্রিতে এখানে ইফতার করলে এই ইফতার শেষে বসে থাকার মুহূর্তটা আর থাকা হতো না, দ্রুত চলে যেতে হতো। যাইহোক সবমিলিয়ে এই বছরের ইফতারের মোমেন্ট টা দুর্দান্ত ছিল। মহান আল্লাহ্ তা'আলা বাঁচিয়ে রাখলে আর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ইনশা আল্লাহ্ পরবর্তী বছরেও ইফতার করব আবার। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ্ হাফেজ।



IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ভাইয়া প্রথমে তরমুজের ফটোগ্রাফি দেখে ভেবেছিলাম ঘুরতে গিয়ে এই সুন্দর তরমুজটি পেয়েছেন।🫣দেখি না, আপনারা ইফতারের জন্য কিনে নিয়ে গেছেন।রুপক ভাইয়ার পোস্টে ও দেখলাম খোলা আকাশের নীচে বন্ধুদের নিয়ে ইফতার করে।আপনাদের এই ইফতারের অনুভূতি পড়ে বড্ড লোভ লাগলো আমার।যদিও কখনো হবে না তা পূরন।খুব ভাল লেগেছে পড়ে। পরে কাটা তরমুজ দেখে খেতে ভীষণ লোভ হলো। 😂 খুব সুন্দর গুছিয়ে কথাগুলো লিখে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

ঘুরতে গিয়ে এত সুন্দর তরমুজ পেলে সাথে করে নিয়ে চলে আসতে মন চাইতো। 😄

ভাই রে ভাই তরমুজের তরতাজা রং টি দেখে মন ভরে গেলো ৷ ইফতার করছেন চরে তাও আবার প্রকৃতির সাথে ৷ সত্যি অসাধারণ লাগছিল রাস্তার পাশে সেলো মেশিন আর সেখানে ফলমুল ধুয়ে এরপর ইফতার পার্টি বেশ সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন ৷

অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

তরমুজ আমার খুব প্রিয় একটি ফল। আর তরমুজি দিয়ে খোলা ময়দানে ইফতার করার আইডিয়াটা কিন্তু মন্দ নয়। এরকম খোলা আকাশের নীচে বসে ইফতার করার মজাই আলাদা। তবে তরমুজটির রং কিন্তু বেশ । দেখেই মনে হচ্ছে খেয়েনি। তবে আপনাদের তরমুজটি কিন্তু বেশ বড় ছিল।

আসলেও তরমুজটি অনেক ভাল ছিল।

আমিও প্রতিবছর চেষ্টা করি বন্ধুদের সাথে অন্তত একদিন এইভাবে বাইরে ইফতার করতে। তবে আপনারা সৌভাগ্যবান যে আপনাদের বাড়ির আশেপাশেই এমন চমৎকার জায়গা রয়েছে। আমাদের বাসার কাছাকাছি এত সুন্দর পরিবেশ নেই। তারপরও আমি চেষ্টা করি নদীর পাড়ের খোলা জায়গায় ইফতার করতে। সে এক দারুণ অনুভূতি। সময়টা যে দারুন কাটিয়েছেন তা আপনার পোস্ট পড়েই বোঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

এবার শীতের সময় আমাদের এলাকায় চলে আসবেন। ঘুরে বেড়াবো আপনাকে নিয়ে।

ইস্ তরমুজের ফটোগ্রাফিটা যা সুন্দর হয়েছে! কত সুন্দর একটি পরিবেশে ।এমন সুন্দর পরিবেশ কার না ভালো লাগে ?ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।ছোটবেলায় আমরা গ্রামের বাড়িতে গেলে এভাবে পানির মধ্যে কত দাঁড়িয়ে থেকেছি। বাড়ি ফিরতেই মন চাইতো না।

সত্যিই আপু অনেক সুন্দর একটা বিকেল পার করেছি। ওই জায়গাটার পরিবেশ দারুন। বিশেষ করে বিকেল টাইমে ওখানে গিয়ে বসে থাকতে ইচ্ছা করে।

ভাই ইফতারের মজাই কিন্তুু তরমুজ। এবার শেষের দিকে রোজায় এত পরিমাণ গরম পড়েছিল যার কারণে ইফতারিতে তরমুজ থাকাই চাই। তালের রস খেতে খুবই ভালো লাগে এবং এই রসটি খুবই মিষ্টি। পানির মধ্যে তরমুজ রেখে দিয়েছিলেন ভাই খুবই সুন্দর একটি উপস্থিত বুদ্ধি। আসলে না রেখে তো উপায় ছিলনা। আমরাও রমজান মাসের ২৯ রোজায় এ ধরনের ইফতার করে থাকি ভাই সবাই একত্রিত হয়ে। ইফতারের সুন্দর মুহূর্ত গুলো খুব সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।

ভাইয়া আপনার এ পোষ্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার পোষ্টের সকল ফটোগ্রাফি গুলো সত্যিই অসাধারণ । স্যালো মেশিনের অফুরন্ত পানি ব্যবহার করে ইফতার করার বিষয়টা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আর এটা সত্য যে ইফতারিতে অল্প হওয়াটাই ভালো।। আসলে ভাইয়া প্রচন্ড গরমের মধ্যে স্যালো মেশিনের ঠান্ডা পানি পান করতে খুবই ভালো লাগে। আর ইফতারের পরে ঠান্ডা বাতাসে নামাজ আদায় করার মধ্যে নিশ্চয় এক ধরনের স্বর্গীয় সুখ অনুভব করেছিলেন। দারুন একটি পরিবেশে ইফতার করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

একদম ঠিক বলেছেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।

খোলা আকাশের নিচে সবার সাথে ইফতার করার আনন্দটা হয়তো অন্যরকম হবে।যদিও এভাবে সুযোগ হয়নি কখনও।আপনাদের চাঁদ রাতের আগের ইফতার ৯-১০ জন মিলে করেছিলেন বাইরে যাতে করে রোজার শেষ ইফতার সবাই পরিবারের সাথে করতে পারেন। স্যালো মেশিনের পানি তো এমনিতেই ঠান্ডা।আপনাদের তরমুজের জন্য ফ্রিজের বিকল্প সুন্দর একটি ব্যবস্থা হয়েছিল তাহলে বলা যায়।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

এবছর বন্ধুরা মিলে একসাথে তালের রস না খাওয়া হলেও সকলে মিলে দেখছি দারুণ একটি বিকেল কাটিয়েছেন। আসলেই সকলে মিলে একসাথে হলে অনেক মজা হয়। তার মধ্যে এত মনোরম একটা পরিবেশ যেখানে স্যালো মেশিনের দারুণ ঠান্ডা জল ,আপনারা উপভোগ করেছেন তার মধ্যে খোলা মাঠ কিছু মিলিয়ে একটা অসাধারণ ব্যাপার। ভালোই হয়েছে তরমুজটা ফ্রিজে রাখা হয়নি, শেষ পর্যন্ত ঠান্ডা করার ব্যবস্থা তো হয়েই গেল। আপনারা যে খুব মজা করেছেন তা আপনার পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম।