শৈশবের চাঁদরাত্রি।

in hive-129948 •  8 months ago 

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা।
কেমন আছেন সবাই? দেখতে দেখতে ৩০ টি রোজা পার করে ফেললাম আমরা। একদিকে ঈদ আগমনের আনন্দ অপরদিকে পবিত্র মাহে রমজানের বিদায়ের বেদনা। এ বছর আমরা যারা ৩০ টি রোজা রেখেছি জানিনা আগামী বছরে পবিত্র এ মাস আমাদের ভাগ্যে থাকবে কিনা।

আমাদের মাঝে অনেক মানুষ ছিলো গত রমজানে যারা এখন আর নেই। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেকেই জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন সমস্ত ভুলত্রুটি ক্ষমা করে। আপনি তো ক্ষমা করতে খুবই ভালোবাসেন। আমাদের সকলকেই ক্ষমা করুন। ৩০ টি রোজা রাখার পর আগামীকালকে হতে যাচ্ছে আমাদের খুশির ঈদুল ফিতর। ঈদের আগের দিন রাত অর্থাৎ আজকে হলো চাঁদ রাত। এই চাঁদ রাতে ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বড়দের আনন্দের শেষ নেই।

যারা ছুটিতে বাড়িতে এসেছে তাদের কাছেও এই রাতটাই সবচেয়ে আনন্দের। ঈদের দিন সময়টা ফুরিয়ে যায় সামনে আর আনন্দের কোন বড় কারণ থাকে না। যাদের ছুটি হয়েছিল তাদের ছুটি ফুরিয়ে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসে। চাঁদ রাত হলো এমন একটি সময় যখন আগামীকালকে ঈদ আছে সেই আনন্দ আর প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আমেজ এ সময় কাটানোর মুহূর্ত।

আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমরা ছোটরা সবাই এই চাঁদ রাত্রে বাজি ফাটাইতাম প্রচুর পরিমাণে। আমি যখন নড়াইল যেতাম আসার সময় কালি পটকা, তারাবাজি ইত্যাদি নিয়ে আসতাম অনেক করে। সেগুলো আগে নষ্ট করতাম না। সবগুলো জমিয়ে রাখতাম চাঁদ রাত্রে সবাই একসাথে ফাঠাবো বলে। ভীষণ আনন্দে মেতে উঠতাম আমরা। আমাদের গ্রামের সবচেয়ে ফেমাস জায়গা হলো আমাদের বাড়ির পাশের একটি মোড়। সেখানে একটা ব্রিজ আছে আর তার নিচেই একটি বড় খাল আছে যেখানে ওই সময় পানি থাকতো না। ওই জায়গাটা ছিলো আমাদের বাজি ফাটানোর মেইন কেন্দ্রবিন্দু। আমরা যখন বাজি ফাঠাতাম তখন পুরো এলাকা মাতোয়ারা হয়ে যেত এক কথায়। চারিদিকে উৎসব মুখর একটি পরিবেশ তৈরি হয়ে যেত।

এখনকার সেই ছোট জেনারেশনের মধ্যে সেই রকম আনন্দ আর দেখি না। তারা ফোন নিয়ে আড্ডা দেয়। কোথায় যেন হারিয়ে গেছে সেই সোনালী শৈশব। এখনকার বাচ্চাদের মধ্যে নিজেদের শৈশব খুঁজে পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই কারণ তারা আমাদের মতো করে কখনোই আনন্দটা উপভোগ করতে পারবে না।

আমরা এখন বড় হয়ে গেছি, আমাদের আনন্দটা এখন অনেকটাই সংকীর্ণ। বন্ধুবান্ধব ছুটিতে বাড়িতে আসে। খুব অল্প সময়ের জন্য তাদেরকে আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব এবং পাড়া প্রতিবেশী সবার সাথে সময় কাটাতে হয়। সর্বোচ্চ দুই-এক দিন একসাথে আড্ডা দেওয়া ঘুরে বেড়ানো পসিবল হয়। মাঝেমধ্যে মন চায় বয়স বেড়ে যাওয়ার সব বাধা-বিপত্তি ভেঙে ছোটদের মতো বিভিন্ন আতশবাজি কিনে আনন্দে উৎসবে মেতে থাকি সবসময়।

এই চাঁদ রাত্রে কত পিকনিক করেছি তার হিসাব নেই। এখন সবাই বড় হয়ে গেছে। মাত্র চার পাঁচ দিনের ছুটিতে এসে মন ভরে আর আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব হয় না। সবারই একটা পরিকল্পনা থাকে আত্মীয়-স্বজন সবার সাথে একটু হলেও সময় কাটানো। এত শিডিউলের মধ্যে থেকে মন খুলে আনন্দটা আর হয়ে ওঠে কই। ইশ.. যদি ফিরে পেতাম সেই শৈশব আবার.....

EID MUBARAK

crescent-4875339_1280.jpg



IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy


20240320_225328_0000.png



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

20230619_2107145.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ছোট্ট সময় চাঁদ দেখার জন্য পাগল হয়ে যেতাম । ফাঁকা স্থানে গিয়ে অপেক্ষায় থাকতাম কখন চাঁদ দেখতে পাব। অনেকে মজা করে বলতো ওই যে চাঁদ দেখা যাচ্ছে। এই ধরনের মজা গুলো এখন খুবই কম দেখা যায়। আসলেই মিস করি ছোট্টবেলার সেই দিনগুলো । সেই অনুভূতিগুলো সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই পাল্টে গিয়েছে । সেই চাঁদ দেখার স্মৃতি আজকে গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরলেন ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

আপনি তো ক্ষমা করতে খুবই ভালোবাসেন। আমাদের সকলকেই ক্ষমা করুন।

আমিন। ছোটবেলায় চাঁদরাতে কতো আনন্দ করতাম,বিভিন্ন ধরনের বাজি ফুটাইতাম। আর এখন ঈদের সময় তেমন আনন্দ লাগেই না। ঈদের সময় এখনকার বাচ্চাদের মধ্যেও তেমন আনন্দ দেখা যায় না। যদিও আমাদের এখানে ইতিমধ্যেই বাজি ফুটানো শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে শৈশবের চাঁদ রাত আসলেই খুব মিস করি। এই পোস্টটি পড়ে কিছুক্ষণের জন্য শৈশবের স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক একেবারে সময়োপযোগী একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

চাইলেও শৈশব আর ফিরে পাওয়া যাবে না। আমাদের সবারই মন কাঁদে সেই শৈশবের হারানো দিনের জন্য, যাইহোক খালের মধ্যে আপনারা বাজি ফাটাতেন বেশ মজার ছিল।তাছাড়া এখন বাচ্চারা ঘরবন্দি হয়ে থাকতেই বেশি পছন্দ করে, ঈদ আপনাদের বড় উৎসব।আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা রইলো,ধন্যবাদ দাদা।

কথাটা একেবারে ঠিক বলেছেন ভাই। ঈদের আসল আনন্দ টা পাওয়া ঈদের আগের দিন এবং চাঁদ রাতে। ঈদের দিন আসলেই মনে হয় ঈদ তো শেষ। তারপর একে একে সবাই তার কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করে। আমারও মনে আগে আগে প্রতিটা ঈদে পিকনিক করতাম। বন্ধুরা মিলে রাতে এলাকার মধ্যে ঘুরতাম আড্ডা দিতাম অনেক সময় অনেকের গাছের আম ডাব হারিয়ে যেত হা হা। কিন্তু এখনকার জেনারেশনের মধ্যে এই ব‍্যাপার টাই নেই।

Posted using SteemPro Mobile

সত্যিই একদিকে ঈদের আনন্দ আর অন্যদিকে রমজানের বিদায় কষ্ট। যাই হোক যদি ছোটবেলায় সেই চাঁদ রাতের কথা মনে করি তাহলে আমরা সেই সময় যা করতাম বাজি ফোটা তাম আবার রাস্তায় ঈদ মোবারক তারপর নিজের নাম এগুলো লিখতাম। তবে সব থেকে ভালো লাগতো অন্যদিন বাসা থেকে বাইরে যেতে না দিলেও সেদিন বাইরে যেতে কোন বাঁধা থাকতো না। সত্যি সব মিলিয়ে সেই সময় বেশ ভালোই আনন্দ করতাম। যাইহোক আশা করি সেই শৈশবের মতো আনন্দ না করতে পারলেও এখন এখনকার মত আনন্দ করতে পারবো। কারণ দেখা যাবে এই সময়টা একসময় স্মৃতির পাতায় চলে যাব। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আপনার শৈশবের চাঁদ রাতের অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।