বান্দরবান নীলাচল , রুপালি ঝর্ণা, মেঘলা প্রজেক্ট ২৯-০৮-২০২১

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)

1630345139282-01.jpeg

গতকাল কক্সবাজার থেকে আমরা বান্দরবানে এসেছি । বান্দরবানে আজকে আমাদের প্রথম দিন। যেহেতু এটি আমার প্রথম বারের মত বান্দরবনে আসা সেহেতু আমার এক্সাইটমেন্ট একটু বেশিই। সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা প্রথমেই সকালের নাস্তা করেনেই। আমাদের প্লানিংয়ে ছিল প্রথমেই যাব বান্দরবানের নামকরা একটি দর্শনীয় স্থানে, সেটির নাম হলো নীলাচল। নীলাচল ভ্রমন শেষ করে আমাদের দ্বিতীয় গন্তব্য হবে মেঘলা প্রজেক্ট ।এরপর আমরা যাব সোনালি ঝর্না দেখতে। আমাদের প্লান মতো আমরা সকালের খাবার শেষ করে একটি গাড়ি ভাড়া করলাম , যেটি আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।

গাড়ি ভাড়া করার পর আমরা প্রায় সকাল ১১ টার দিকে যাত্রা শুরু করলাম । পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে । পাহাড়ি রাস্তায় এটি ছিল আমার জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা । দুদিকের দৃশ্যগুলো আমাকে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করছিল। যেহেতু আমরা অনেক দেরিতে এসেছি এই জন্য আজকে বেস একটা মেঘ দেখতে পাচ্ছি না । সকালের দিকে আসলে মেঘ দেখাযায় । এছাড়াও আমরা আজকে বেশি উঁচু পর্বতমালায় যাচ্ছি না । এজন্য মেঘ দেখার পসিবিলিটি অনেক কম।

1630342964062-01.jpeg

যাইহোক চাঁদের গাড়িতে বসে আমরা দু'পাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে এগোতে থাকলাম। রাস্তাটা ছিল প্রচুর উঁচু-নিচু। কখনো আমাদের গাড়ি অনেক উপরে উঠে যাচ্ছিল আবার কখনো অনেক নিচে নেমে আসছিল । অভিজ্ঞতাটা অসাধারণ ছিল। প্রায় আধাঘণ্টা পর আমরা নীলাচল পর্বতমালায় পৌঁছে গেলাম। পৌঁছানোর পর চোখ জুড়ানোর মত সৌন্দর্য দেখে আমরা সবাই মুগ্ধ হয়ে গেলাম।

1630343124266-01.jpeg

1630343009650-01.jpeg

নীলাচল পর্বতমালায় দেখার মত অনেকগুলো স্পট ছিল। সব দিকে ঘুরে ঘুরে একে একে আমরা সব গুলো স্পট পরিদর্শন করলাম। প্রথমবারের মত কোনো বড় পাহাড়ের উপর থেকে চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার অনুভূতি টা আসলেই দারুন ছিল। আমরা প্রায় দুই ঘন্টা যাবৎ পাহাড়ের উপরে ছিলাম।

নীলাচল পর্বতমালা দর্শন শেষ করে আমরা রুপালি ঝর্ণা দেখার উদ্দেশ্যে পুনরায় যাত্রা শুরু করলাম। ঝর্ণার কাছে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হল তুমুল বৃষ্টি। এই ঝর্নাটি ততটা বড় ছিল না।আমার বন্ধু আর ছোট ভাইয়েরা সবাই ঝর্নাতে গোসল করতে নেমে পরল। ঠান্ডা লাগার কারণে আমি আর ঝর্নাতে নামলাম না। আমি ফটোগ্রাফার এর ভূমিকায় ছিলাম।

1630343436924-01.jpeg

সবাই ঝর্নাতে গোসল করা শেষ করে চলে আসলো। এরপর আমরা সবাই গাড়িতে উঠে চলে গেলাম মেঘলা প্রজেক্ট এর উদ্দেশ্যে। এই স্থানটি ছিল সুন্দর কিন্তু চলাফেরা করা ছিল অত্যন্ত কষ্টের। কারণ হেঁটে হেঁটে পাহারের উপরে উঠা সত্যিই অনেক কঠিন ছিল। আমরা প্রায় এক কিলোমিটার পথ হেঁটেছিলাম। প্রায় একটি পাহাড় সম্পূর্ণ পায়ে হেঁটে উপরে উঠেছিলাম । অনেক কষ্ট হয়েছিল উঠতে। একটি পাহাড়ের একদম চুড়ায় উঠে একদম ক্লান্ত হয়ে কিছুক্ষণ বসে ছিলাম । সেখানে ছিল ছোট্ট একটা দোকান । দোকান থেকে পানি আর কলা কিনে খেয়েছিলাম। যদিও এত উচ্চতায় পানির দাম আকাশছোঁয়া।

1630343572613-01.jpeg

1630343622384-01.jpeg

কিছুক্ষণ রেস্ট করার পর আমরা ধীরে ধীরে নেমে আসলাম। আরও কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করার পর আমরা মেঘলা প্রজেক্ট থেকে বেরিয়ে আসলাম। এরপর আমাদের গাড়িতে উঠে বসলাম । ঐখানে আর অপেক্ষা না করে সোজা আমাদের রুমে চলে আসলাম । রুমে এসে ফ্রেস হয়ে বিছানায় শুয়ে পরলাম । আজ সারাদিন অনেক পরিশ্রম হয়েছে। আজকে সারাদিনে অনেকগুলো ভিডিওগ্রাফি করেছি , যেগুলো পরে আপনাদের সাথে শেয়ার করব । আজ এ পর্যন্তই । আমি টুর অবস্থায় থাকার কারণে বেশি একটা সময় দিয়ে ব্লগ গুলো লিখতে পারছিনা। তবুও যতটুকু পারি চেষ্টা করছি। সবাই ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন । ধন্যবাদ।


Device : Redmi Note 9 Pro Max
What's 3 Word Location :https://w3w.co/searching.backup.juicy


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

Support @amarbanglablog by delegating STEEM POWER.
100 SP250 SP500 SP1000 SP2000 SP

-cover_copy.png

Follow @amarbanglablog for last updates

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সত্যি নৈসর্গিক পরিবেশ ।এই রকম পরিবেশে সময় কাটালে ক্লান্তি নামক কোনো কিছুই থাকে না চারিদিকে শুধু সবুজ আর অফুরন্ত ভালোলাগা ।আপনার ভ্রমণ অনেক উপভোগ্য ছিল সেটা স্পষ্ট ।

আসলেই দাদা। এমন নৈসর্গিক পরিবেশে ক্লান্তি তো দূরের কথা, জীবনের সমস্ত না পাওয়া মুহূর্ত গুলোও যেন ভুলে থাকা যায় । তাছাড়া এমন বিশুদ্ধ অক্সিজেন ও খুব কমই গ্রহণ করা হয়।

প্রথমত বান্দরবান সম্পর্কে আমার সঠিক ধারণা নেই ।তবে আপনার ছবিগুলো ও ভ্রমণকাহিনী দেখে বেশ উপভোগ করছিলাম এবং মনে মনে ভাবছিলাম যে, আমি হয়তো আপনার সঙ্গেই ঘুরছি। ধন্যবাদ আপনার ভ্রমণের এপিসোড আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।

আরো একটা এপিসোড আপলোড করেছি। ঘুরে আসেন।

আপনার পোস্টটি পড়ে আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আমার বাবা যেহেতু একজন সেনা কর্মকর্তা ছিলেন তাই আমার বাবার কর্মসূত্রে আমার বাবার সাথে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। আমার বাবা যখন চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এদিকে কর্মরত ছিলেন তখন আমি খুব একটা বড় ছিলামনা। তবুও কিছু কিছু স্মৃতি আমার মনে আজও রয়ে গেছে। আজ আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার পুরনো দিনের স্মৃতি গুলো মনে পড়ে যাচ্ছে। আবারো ইচ্ছে করছে সেই অপরূপ পাহাড়ের সৌন্দর্য কাছ থেকে উপলব্ধি করতে। ধন্যবাদ আপনাকে।

ঘুরে আসুন আবারও। মনটা অনেক ফ্রেশ হয়ে যাবে।

বাহ্ , জায়গা গুলো অনেক সুন্দর। আমার সেখানে যাওয়ার খুব ইচ্ছা। অনেক সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। তবে আপনাটা ছবিতেও আপনার চেহেরা দেখা গেলো না। নীলাচল পর্বতমালা ও রুপালি ঝর্ণা দর্শনের কথাগুলো খুব সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।

অনেক সুন্দর প্রকৃতি দেখেই মন ভরে যায়, বান্দরবান কখনো যাওয়া হয়নি। আশা করি কোন একদিন যাব। আপনার এই ভ্রমণ সত্যিই খুবই উপভোগ করছি।

পোস্টটা পড়তে পড়তে আমিই যেনো ভ্রমণে ডুবে গেলাম ! নীলাচল পর্বতমালায় তোলা ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে বিশেষ করে আকাশ ও গাছপালাগুলোর সৌন্দর্য এক কথায় অস্থির। ধন্যবাদ !

নীলাচল কে মেঘের রাজ্য বলা হয়ে থাকে।এবং আপনি যতগুলো জায়গায় ভ্রমণ করেছেন সব গুলো অসাধারণ চির সবুজের সমারোহ।চারিদিকে খুবই সুন্দর লাগছে দেখে। তবে আপনিও ঝর্ণাতে গোসলটা করতে পারতেন। আবার কবে সুযোগ হবে কী হবেনা। mrrahul ভাইয়ের পোস্টে আমি আপনাকে খুজছিলাম কিন্তু পাইনি। এখন বুঝলাম কেন পাইনি।

ভাই ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনারা যে জায়গাটায় গিয়েছেন। সে জায়গাটা বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর একটি জায়গা। আমার এখনো যাওয়া হয়নি। খুব ইচ্ছা আছে ওখানে যাওয়ার। পাহাড়ি এলাকায় ঘুরতে গেলে একটু শারীরিক পরিশ্রম বেশী হয়। যদিও আপনি মজার একটা ইভেন্ট মিস করেছেন ঝরনায় গোসল করা। আশা করি আপনার শরীর এখন ভালো আছে। ধন্যবাদ ভাই।

ঝর্ণা আমার তেমন একটা ভালো লাগে না। সমুদ্র আর পাহাড় আমার বেশি ভালো লাগে।

ফটোগ্রাফি গুলো খুবই ভালো লেগেছে ভাই সাথে আপনার উপস্থাপনাও বেশ সুন্দর,মেঘ আর পাহারের মাঝে হারিয়ে গেছেন। সত্যিই অসাধারণ মনোমুগ্ধকর একটি দৃশ্য

আপনার ছবিগুলো দেখে আমার ওখানে যেতে ইচ্ছে করছে। চারদিকে সবুজ আর সবুজ দেখতে অপরূপ লাগছে।প্রথম ছবিটা অসাধারণ হয়েছে ভাইয়া। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর সুন্দর ছবির সাথে আপনার সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

আপনাকেও ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

  ·  3 years ago (edited)

প্রকৃতি নিজস্ব মেজাজ আছে। তবুও তাঁর মেজাজে আমরা অনুভূতি সিক্ত হয়ে আমরা খুব অনাবিল সুখ পাই। তাইতো মন ছুটে যাই প্রকৃতির কাছে ছুটতে। আপনি সেই রকম শান্তি ময় পরিবেশে সময় কাটাচ্ছেন।ধন্যবাদ ভাই ।

আপনার নীলাচল ভ্রমণ দেখে মনে হচ্ছে আরো একবার নীলাচলে চলে যাই। যত যাই আসলে ততই ভালো লাগে। ভাই আমাদের কি কি চেহারা দেখাবেন না। রাগ করেছেন নাকি?

ভাই আমাদের কি চেহারা দেখাবেন না।

🤭

ভাইয়া প্রথমে আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই ।জানি না কখনো ওখানে যাওয়ার সময় হবে কী না ।আপনার মাধ্যেমে আমি আমার প্রিয় জায়গায় কিছু ছবি দেখতে পারছি।এত আমার অনেক ভালো লাগছে।আর বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগে কে ।কারন এই ব্লগের মাধ্যেমে আমি আমার প্রিয় স্থানের কিছু অনুভীতি নিতে পারছি।এটি শেয়ার জন্য আবারও আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ !!

কি সুন্দর ভাবে ভ্রমনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন ভাই, দারুন লাগলো। ছবিগুলো এত প্রাণবন্ত ছিল যে মনে হয় আমি ঘুরছি আপনার সাথে। আপনার ভ্রমণ শুভ হোক। ধন্যবাদ ভাই শেয়ার করার জন্য

জায়গাটি অসম্ভব সুন্দর দাদা।শুধু যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই প্রকৃতিতে নীল -সবুজের অফুরন্ত মেলা বসেছে।দেখে ও মন ভরে যায় ।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর ফোটোগ্রাফি ও সুন্দর মুহূর্তগুলি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।

সুন্দরী জীবনের ডাইরি গুলো সব সময়ই সুন্দর হয়ে থাকে। বান্দরবানের যাত্রা শুভ হোক এবং মেঘ দেখার পরবর্তী অবশ্যই শেষ করে নিয়েন।

ছড়িয়ে সকল অঞ্চলে পাহাড়িদের কিছু আতঙ্ক থাকে এগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন অবশ্যই।

ভ্রমণ শুভ হোক

অনেক সুন্দর জায়গাটা সত্যিই অনেক সুন্দর। আমারও ইচ্ছা আছে এই জায়গাতে যাওয়ার। ইচ্ছে হয় প্রকৃতির মধ্যে এভাবে হারিয়ে যেতে। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো 🥀 ভাইয়া

ভাই দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুন্দর হবে দিনগুলো কাটাচ্ছেন। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ধন্যবাদ।

আপনি তো গেলেন না। মিস করলেন।

জায়গাটা সত্যিই অনেক সুন্দর। আমারও ইচ্ছা আছে এই জায়গাতে যাওয়ার। ইচ্ছে হয় প্রকৃতির মধ্যে এভাবে হারিয়ে যেতে।

এই সময়টা পারফেক্ট। এখন যেতে পারেন।