গল্প : জীবনে ঘটে যাওয়া ভৌতিক ঘটনা //by ripon40

in hive-129948 •  8 months ago 

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক


  • নিজের জীবনের ভৌতিক ঘটনা
  • ০২, এপ্রিল ,২০২৪
  • মঙ্গলবার


আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " নিজের জীবনের ভৌতিক ঘটনা " গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।



ghosts-572038_1280.jpg

Source

ছোট্ট বেলার ঘটনা তখন ক্লাস থ্রিতে কিংবা ফোরে পড়ি। ছোটবেলা থেকে গ্রামীন পরিবেশে বেড়ে ওঠা। রাতের বেলা দাদা দাদির কাছ থেকে ভৌতিক গল্প গুলো যখন শুনতাম তখন নিজের মধ্যে অনেকটা ভয় কাজ করতো। একা একা থাকতে যেটা সবার মধ্যেই সেই বয়সে কাজ করে। বর্তমান যুগে ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চারা প্রযুক্তির সান্নিধ্য পেয়ে মোবাইল ল্যাপটপের ছোঁয়ায় সে সকল গল্প হয়তো শোনার সুযোগ নেই। কখনো দাদা-দাদী বাবা-মায়ের কাছ থেকে শুনতে পায় না। আমরা যখন ছোট্ট ছিলাম সেই সময় অনেক ধরনের গল্প শুনেছি। ভূতের গল্প শাস্ত্র যেগুলো শুনতে এতটাই মজা লাগতো বলে বোঝানো যাবে না।

যাইহোক, নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ভৌতিক ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। হঠাৎ করেই মনে পড়লো সেজন্যই শেয়ার করার চেষ্টা করছি। ছোট্ট সময় সন্ধ্যার শেষে বই নিয়ে বসতাম। মা রান্না করতো রান্নাঘরে আর পড়াশোনা করতাম। সেই সময় কারেন্ট ছিল না বাড়িতে বাতি জ্বালিয়ে সন্ধ্যা হলেই বই নিয়ে বসতাম। সেই সময় অনেক জোরে জোরে গলা ফাটিয়ে পড়তাম। আমার একটি ছোট্ট ভাই আছে সে আমার থেকে পাঁচ ছয় বছরের ছোট হবে। আমি যখন বিছানায় বই নিয়ে বসেছি সে আমার পাশে ঘুমিয়ে আছে। হঠাৎ করে ঘুমের মধ্যে সে চিৎকার শুরু করে দিল। ঘরের জানালা খোলা তার পাশে অনেক বড় একটি নারকেল গাছ ছিল। যেটা বিছানায় শুয়ে দেখা যেত। এমনভাবে কান্না শুরু করলো সেই নারকেল গাছের দিকে তাকিয়ে। কান্না করতে করতে বলতে লাগলো ওই যে কি! আমি তার কান্না শুনে ভয় পেয়ে যাই। জানালার দিকে তাকিয়ে শুধু নারকেল গাছ আর অন্ধকার বিষয়টি চোখে পড়ে। যখন হাত দিয়ে দেখাচ্ছে ঐযে কি তবুও আমি কিছু দেখছি না।

তখন তার কান্নার চিৎকার আরও বেড়ে যায় অনেকটা। আমিও ভয় পেয়ে যাই। বই পড়া বাদ দিয়ে ঘর থেকে আমি দৌড়ে বেড়িয়ে যাই । বাড়ির উঠানের মাঝামাঝি জায়গা রান্না ঘর ছিল। সেখানে গিয়ে মাকে বললাম মা দ্রুত ঘরে চলে আসলো। যখন তাকে ঘুম থেকে উঠানো হলো তখন সে কান্না থামিয়ে নীরব। এরকম ঘটনা প্রতিদিন সন্ধ্যা মুহূর্তে আমি যখন বই নিয়ে বসতাম প্রায়ই ঘটতো। সন্ধ্যার মুহূর্তে যখন ছোট ভাই ঘুমিয়ে থাকতো। আমি বই নিয়ে বসার পর শুধু সেই বিষয়টি মাথার মধ্যে কাজ করত। জানালার দিকে আমি বারবার তাকিয়ে থাকতাম কোন ভূত চলে আসছে কিনা? সেই বয়সে যেই অনুভূতি কাজ করে আর কি! এরকম ঘটনা কয়েকবার ঘটলো ততবারই আমি ঘরের ভেতর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যেতাম। সেটাই ছিল আমার সেই ভূতের হাত থেকে বাঁচার উপায়।😜

তখন এরকম কোন ঘটনা ঘটলে কবিরাজের মাধ্যমে তাবিজ, পানি পড়া আরও বিভিন্নভাবে বাড়ি বন্ধ করে দিয়ে যেত। এরকম একজন কবিরাজ আমাদের বাড়িতে আসে। তিনি বলেন আপনার দুই ছেলেকে রাত বারোটার দিকে দুধ দিয়ে গোসল করাতে হবে। একদিন গোসল করানো হলো উঠানের উপর পানির সাথে দুধ মিশিয়ে । কবিরাজ তাবিজও দিয়েছিল যেটা দুজনের গলায় বেধে দেওয়া হল। সেই তাবিজটা আমাকে অনেকটা সাহস যোগিয়েছিল কাজ না করলেও। প্রচন্ড গরমে গ্রামের মানুষ সেই সময় বাড়ির উঠানে পাটি বিছিয়ে শুয়ে থাকতো। আনুমানিক সেই সময় রাত বারোটা বাজে। হঠাৎ আমার ছোট ভাই ঘুম থেকে একাই উঠে বাড়ির প্রবেশ পথ দিয়ে হেঁটে হেঁটে রাস্তার দিকে চলে যাচ্ছে।

গরমের সময় বয়োজ্যেষ্ঠরা রাস্তায় গিয়ে বিভিন্ন গল্প গুজবে মেতে উঠত। আমার কাকা রাত বারোটার সময় রাস্তা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। সেই সময় মাঝপথে দেখে আমার ছোট ভাই পলাশ সে হেঁটে হেঁটে চলে যাচ্ছে। তাকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো কিরে কোথায় যাস? সে কোন কথা বলে না শুধু নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে। তখন আমার কাকা তাকে ধরে বাড়িতে নিয়ে আসে। এদিকে বাড়ির কেউ জানে না সে এভাবে একা একা চলে যাচ্ছে। বিষয়টি সত্যিই অবাক লাগে। যেটা আমার মধ্যে আরো অনেক ভয় ঢুকিয়ে দেয়। আমি গল্পে অনেক শুনেছি জিন পরী এরা নাকি ছোট্ট বাচ্চাদের ধরে তাদের রাজ্য নিয়ে যায়।

যেটা আমার কাছ অন্যরকম ভাবনার জন্ম দেয়। বিষয়টি উপলব্ধি করা সত্যিই অনেক ভয়ের কারণ ছিল। ছোট্টবেলা অনেক গল্প শুনেছি এই ধরনের সেই সময়ে সেটা বিশ্বাস করতাম। আমাদের দুজনকে যে কবিরাজ দেখানো হয়েছিল। সেই কবিরাজ বলেছিল আমার বাবা মা কে পরী তাদেরকে নিয়ে যেতে চায়।এই ধরনের কথা শুনে সেই বয়সে কতটা আতঙ্কে থাকতাম তাহলে বুঝুন। বর্তমান সময়ে যেটা আমার কাছে সত্যিই হাস্যকর লাগে। সেই সময় কবিরাজের এই ধরনের কথা খুবই বিশ্বাস করতাম। সেজন্য রাতের বেলা কোথাও যেতে ভয় পেতাম। এভাবে কয়েক বছর পর সকল সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। রাতের বেলা সেই কান্না আর হতো না। সেই ঘটনা এখনো মনে পড়লে অবাক লাগে। আপনাদের কাছে কেমন লাগবে সেটা আমি জানি না।যেটা নিজের বাস্তব জীবনে্র ঘটনা।

ধন্যবাদ সবাইকে



20211112_012926-01.jpeg

আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।



standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

gPCasciUWmEwHnsXKML7xF4NE4zxEVyvENsPKp9LmDaFuzVwHnY92rponrLLcEknitVG5yvYaPTExVtjfc6Bi4cvC9ppuyLmaATGbhg8UF4suiCxVfuw2YuSWJftJo9C74dQUN2WE1yNJmdtXp.png

💞 আল্লাহ হাফেজ 💞

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার ছোট ভাইয়ের কথাটা শুনে আমার নিজেরই তো অনেক বেশি ভয় লাগছিল। আগের দিন ভৌতিক এরকম ঘটনা গুলো বেশি ঘটে থাকতো। আর আপনার এবং আপনার ভাইয়ের সাথে ও এরকমটাই হয়েছিল। নারিকেল গাছের দিকে তাকিয়ে যখন ঘুমের মধ্যে কান্নাকাটি করছিল বিষয়টা সবথেকে বেশি ভয়ংকর ছিল। আর বারোটার সময় আপনার ভাই একা একাই চলে যাচ্ছিল, এটা তো আরো বেশি ভয় লেগেছে। ভাগ্য ভালো আপনার কাকা দেখেছিল আর নিয়ে এসেছিল। অনেক সুন্দর করে লিখেছেন এই ঘটনাটা।

আপনার মত আমিও সেই ছোট্ট সময় অনেক ভয় পেয়েছিলাম । সবসময় সেই বিষয়টি নিয়ে ভাবতাম। বর্তমান এই বিষয় নিয়ে আর কোন ভয় কাজ করে না ।সত্যিই জীবনে অনেক বড় একটি খারাপ ঘটনা ঘটেছিল।

আগে তো আমরা দাদা দাদুর কাছ থেকে গল্প শোনার জন্য সারা রাত জেগে থাকতাম। যতক্ষণ না গল্প শোনাতো ততক্ষণ ঘুমাতামই না। কিন্তু এখনকার দিনের ছেলেমেয়েরা তো একটু বেশি ডিজিটাল। মোবাইল ছাড়া কিছুই বুঝেনা। গল্পের আনন্দটা কীরকম এটা কেউ বলতেও পারবেনা। যাই হোক এরকম অনেক ঘটনা আমিও শুনেছি। তবে আপনাদের সাথে তো দেখছি বাস্তবেই ঘটেছে। আপনার ভাইয়ের সাথে তো দেখছি ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব কবিরাজ আমি নিজেও বিশ্বাস করি না। আপনার গল্পটা পড়ার সময় কিছুটা ভয়ও পেয়েছি।

হ্যাঁ নিজের ভাইয়ের সাথে ঘটে যাওয়া এই ধরনের ঘটনা যেটা আমিই বড় সাক্ষী‌ বর্তমান সময়ে সেটা খুবই কম শোনা যায় ।আপনার কাছে গল্পটি ভয়ংকর লেগেছে যেটা ভয়ঙ্কর ছিল।

নারিকেল গাছের দিকে তাকিয়ে কাঁদতো জেনে প্রথমে ভাবলাম অন্ধকারে নারিকেল গাছ দেখে হয়তো ভয় পেয়েছে। কিন্তুু পরবর্তী ঘটনাগুলো সত্যি ভয়ংকর ও রহস্যময়। আসলে কবিরাজ আমরা বিশ্বাস করি না তবে কখনো কখনো করতে হয়।ছোট বেলায় তো ভুলতে সবাই খুব বিশ্বাস করে ও ভয় পায়।আপনার ভাই একা একা চলে গেছে এটা তো বেশ ভয়ংকর ঘটনা।গল্পটি পড়ে বেশ অনেক কিছু জানতে পেলাম আপনার ভুতরে ঘটনা গুলো।ধন্যবাদ আপনাকে।

এক সময় ছিল কবিরাজের প্রতি মানুষের অগাধ বিশ্বাস ছিল। বর্তমান আধুনিক যুগে সেটা খুবই কম ।তাদের অদৃশ্য শক্তির প্রয়োগ যেটা সত্যি মানুষকে অবাক করত।

পরী আপনাদের নিয়ে গেলে তো বেশ ভালোই হতো ভাই, তাহলে পরীর রাজ্যে বসবাস করতে পারতেন। হা হা হা.. 🤭🤭মজা করলাম আর কি! তবে এটা কিন্তু সত্যিই ভয়ংকর যে, মাঝ রাতে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অন্যমনস্ক হয়ে কোথাও চলে যাওয়া। এটা নিশ্চয়ই কোন অশুভ শক্তির কারণেই হত। আর কেন জানিনা গ্রাম অঞ্চলে এই ধরনের ব্যাপার গুলো একটু বেশি ঘটে। তবে আপনার ছোট ভাই ঐদিন নারকেল গাছে অবশ্যই কিছু দেখেছিল, না হলে এরকম চিৎকার করার কথা না। গল্পটা পড়তে গিয়ে একটু ভয় লাগছিল ভাই।

হ্যাঁ ভাই এখন সেটাই মনে করি ওই দেশে গেলে তো তাও জগৎটা ঘুরে দেখতে পারতাম।🤩 এখন আফসোস হচ্ছে হাহাহা।

আফসোস করে কোন লাভ নেই ভাই। হিহি..🤭🤭

আসলে এরকম ঘটনা গুলো ছোটবেলায় অনেক শুনেছি ৷ ভাবতাম এগুলো শুধু গল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ৷ তবে আজকে যেভাবে আপনার সাথে এই ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে তা শুনে একেবারে খারাপ লাগছে৷ একইসাথে আপনি এবং আপনার ভাইয়ের সাথে এরকম একটি ঘটনা ঘটে গিয়েছে যা একেবারে দুঃখময় একটি বিষয়৷ নারিকেল গাছের দিকে তাকিয়ে যখন সে ঘুমের মধ্যে কান্নাকাটি করছিল সেই বিষয়টি অনেকটা ভয়ংকর ছিল৷ একইসাথে সে নিজে নিজেই ঘর থেকে বের হয়ে চলে যাচ্ছিল সেটা তো আরো বেশি ভয়ঙ্কর ছিল৷ আপনার কাকা তাকে দেখেছিল এবং নিয়ে এসেছিল যার ফলে সে যেতে পারেনি৷ এর ফলে আপনারা সব বিষয়টি জানতে পেরেছেন৷ ধন্যবাদ এরকম একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷

জীবনে ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনা ভাই। যেগুলো কখনোই ভুলবার নয়। বর্তমান এই ধরনের ঘটনা শোনা যায় না ।ছোটবেলা ঘটেছিল সত্যিই ভয়ঙ্কর ছিল বিষয়টি।

আসলে বাস্তবিক ঘটনাগুলো শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile