জেনারেল রাইটিং: বন্ধুত্বের সম্পর্ক কেন এমন হয়

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।

Source

বন্ধু কথা টি দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। তবে, এই দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত বন্ধু কথাটির অর্থ বিশাল। আমরা আমাদের রক্তের সম্পর্কের থেকে ও বেশি বন্ধুর সম্পর্কে একটু বেশি গভীরতা দেখতে পারি। জীবন চলার পথে আমাদের সাথে অনেক মানুষের দেখা হয়ে যায়। কিন্তু তারা সকলেই আমাদের মনের মতো মানুষ হন না। কিন্তু আমরা যখন আমাদের বন্ধু গুলোর দিকে লক্ষ্য করি তাহলে আমরা দেখতে পারবো তারা কোন স্বার্থ ছাড়াই একজন বন্ধু অন্য আরেকজন বন্ধুর বিপদের সময় এগিয়ে আসে। কিন্তু আমরা যদি একজন রক্তের সম্পর্কের কোন মানুষের কাছে গিয়ে যে কোন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা চাই তখন তারা বিভিন্ন ধরনের বাহানা দেখিয়ে আমাদের কে এড়িয়ে চলে।

রক্তের সম্পর্কের মানুষ গুলো সব সময় নিজের স্বার্থ বুঝে কাজ করার চেষ্টা করে। কিন্তু বন্ধুত্বের সম্পর্ক টা পুরোপুরি ভিন্ন। একজন মানুষের জীবনে একজন ভালো বন্ধু পাশে থাকলেই আর কোন ধরনের মানুষের প্রয়োজন পড়ে না। কেননা, সে তার মাধ্যমেই অনেক দূরে এগিয়ে যেতে পারবে।আর একজন ভালো বন্ধু তৈরি করার জন্য নিজেকে সৎ এবং নিষ্ঠা তৈরি করতে হবে। আমাদের জীবনে প্রচুর পরিমাণে বন্ধু বান্ধব আসে। কিন্তু তারা সকলেই কিন্তু বন্ধুত্ব তৈরি করার জন্য আসে না। কিছু কিছু বন্ধু শুধুমাত্র নিজের স্বার্থের জন্য আসে। আবার স্বার্থ শেষ হয়ে গেলে সে নিজের অবস্থানে চলে যায়।

আমি আজকে দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর জীবন কাহিনী শেয়ার করবো। আমার এক চাচাতো ভাইয়ের এক বন্ধু ছিল। তাদের এই বন্ধুত্বের সম্পর্ক প্রায় পঞ্চম শ্রেণী থেকেই। তারা সব সময় একে অপরের বিপদের সময় এগিয়ে আসতো। যেহেতু আমি মাঝে মাঝে আমি ও তাদের সাথে কিছু টা ঘোরাফেরা করছিলাম তাই আমি তাদের ব্যাপারে বেশ ভালো ভাবেই অবগত আছি। তারা একসঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়। আবার তারা দুজন একসাথে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ও দেয়। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়ার পর ছেলেদের যেহেতু পারিবারিক একটা চাপ পড়ে যায়। তখন তারা দুজনেই বাংলাদেশ ডিফেন্স জব গুলো নেয়ার জন্য সব জায়গায় আবেদন করতে থাকে।

প্রথম দুই বছর তাদের দুজনের কারোরই চাকরি হয়নি। বেশ কয়েক বছর ঘোরাঘুরি করার পর আমার চাচাতো ভাইয়ের একটি ফায়ার সার্ভিসের সদস্য পদে জব হয়ে যায়। তখন আমার চাচাতো ভাইয়ের বন্ধু একা হয়ে যায়। তখন সে পুরোপুরি ভাবে ভেঙ্গে পড়ে যায়। কিন্তু বেশ কিছু দিন পরেই ফায়ার সার্ভিসের নতুন একটি সার্কুলার ছাড়ে।এই সার্কুলার এর মধ্যে সে অনেক আশা নিয়ে একটি আবেদন করে এবং আমার চাচাতো ভাইয়ের কাছে থেকে সে সকল ধরনের পরামর্শ নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মাঠ করতে যায়। সেদিন আমি সন্ধ্যায় জানতে পারলাম আমার চাচাতো ভাইয়ের বন্ধুর ও চাকরি হয়েছে।এটা শুনে আমি বেশ খুশি।

তাদের এই অফুরন্ত বন্ধুত্বের সম্পর্কে আমাদের এলাকার বেশিরভাগ মানুষ অবগত আছে। যাইহোক, তারা দুজনই একসাথে সফলতা অর্জন করতে পেরেছে এটা আসলেই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। রক্তের সম্পর্কের মানুষ কোন দিনই এতো বেশি গভীরভাবে সম্পর্কে তৈরি করবে। আশা করছি তাদের দুজনেরই আবার একসঙ্গেই‌ বিবাহ হবে।আমি আমার জায়গা থেকে এমনটাই প্রত্যাশা করছি। জীবনে একজন সঠিক বন্ধু থাকলে আর কোন ধরনের মানুষের প্রয়োজন হয় না। আপনারা সকলেই তাদের জন্য দোয়া করবেন। তারা যেন অনেক দূরে এগিয়ে যেতে পারে।আর আপনাদের কাছে আমার লেখা গল্প টি কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন আমাকে।

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।