কালের বিবর্তনে প্রিয় মৃৎশিল্প বিলুপ্তির পথে

in hive-129948 •  12 days ago 

আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
মঙ্গলবার, ১২ ই নভেম্বর ২০২৪ ইং

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে মৃৎশিল্প নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।


premium_photo-1661380954234-13d98a83577c.jpeg

সোর্স

মৃৎশিল্প এখন এপার বাংলা এবং ওপার বাংলায় প্রায় বিলুপ্তির পথে।এক সময় মাটির তৈরি করা জিনিস পত্র ব্যবহার করে সব ধরনের কাজ করা হতো। কিন্তু এখন আর তেমন নেই। এখন মাটির জিনিস পত্র গুলো কে আর তেমন একটা ব্যবহার করা হয় না। এখন মানুষ আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়ে প্রাচীন কালের মাটির তৈরি করা জিনিস পত্র গুলো কে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। এখনকার মানুষেরা মাটির তৈরি করা তৈজসপত্র গুলো কে ভুলিয়ে গিয়েছে। বর্তমান সময়ের মানুষেরা এ্যালুমিনিয়াম ও পাস্টিকের তৈরি তৈজসপত্র ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।আর মাটির তৈরি করা তৈজসপত্র গুলোর স্থান দখল করে নিয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যালুমিনিয়াম এবং প্লাষ্টিক। এছাড়াও কাঁচের তৈরি করা জিনিস পত্রে ও মানুষ একটু বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।

প্রাচীন কালের প্রতিটি মানুষ মাটির তৈরি করা তৈজসপত্র ব্যবহার করতো। বিশেষ করে প্রাচীন কালে গ্ৰাম এলাকা গুলোর মধ্যে এই মাটির তৈরি করা তৈজসপত্র গুলো গ্ৰামের প্রতিটি বাড়ির মানুষ ব্যবহার করতো।আর গ্ৰামের মানুষ গুলো এসব তৈজসপত্র গুলো তৈরি করতে বেশি পারদর্শী ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে মৃৎশিল্পের কারিগর তেমন একটা নেই। যেহেতু মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে, তাই এখন মানুষ আর মৃৎশিল্পের কাজ শিখতে আগ্রহী নন। তবে, বর্তমান সময়ে মাটির তৈরি করা জিনিস পত্রের তুলনায় অ্যালুমিনিয়াম এবং প্লাষ্টিকের তৈরি করা জিনিস পত্র দামে একটু বেশি। তবু ও মানুষ বর্তমান সময়ে অ্যালুমিনিয়াম এবং প্লাষ্টিক জাতীয় জিনিস পত্র ব্যবহার করতে একটু বেশি আগ্রহী।

এখন শহর এলাকা গুলোর মধ্যে মাটির তৈরি করা তৈজসপত্র গুলো খুঁজে ও বের করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের দেশের কিছু কিছু গ্ৰামের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাটির তৈরি করা তৈজসপত্র গুলো ব্যবহার করছে। এখন পর্যন্ত আমাদের গ্ৰামের বেশ কিছু মানুষ প্রায় সব সময় মাটির পাতিল ব্যবহার করে। এখন পর্যন্ত আমাদের নিজ বাড়িতে মাটির তৈরি করা হাঁড়িতে ভাত রান্না করে এবং মাটির তৈরি করা বাসনে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। তবে, অতীতে ভাত খাওয়ার জন্য মাটির তৈরি করা প্লেট ও ব্যবহার করা হতো, এমনটাই শুনেছিলাম আমার বাবার কাছে থেকে। আমার পরিবার এখন পর্যন্ত মাটির তৈরি করা পাতিলের মধ্যে বেশ কিছু কাজ করে, এটা আসলেই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে।

তবে, শহরের মানুষ গুলো মাটির তৈরি করা পাতিল ব্যবহার করতে তেমন একটা অভ্যস্ত না। তারা সব সময় ভিন্নধর্মী পদ্ধতির জিনিস পত্র ব্যবহার করতে অভ্যস্ত।এক সময় বাংলার প্রতিটি গ্ৰামের মধ্যে মৃৎশিল্পের কারিগর পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমান সময়ে এই সব কারিগর কালক্রমে হারিয়ে গিয়েছে। এখন এপার বাংলা এবং ওপার বাংলায় তেমন একটা কুমার পাড়া দেখতে পাওয়া যায় না। কেননা, তারা বর্তমান সময়ে তাদের তৈরি করা জিনিস পত্র গুলো সেল করতে পারছেন না।তাই তারা এই পেশা থেকে বেরিয়ে এসেছে। যারা এক সময় মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত ছিল, তারা আজ ভিন্নধর্মী কিছু পেশা বেছে নিয়েছে।

আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন আমাদের এলাকার পাশেই বেশ কয়েকটি কুমার পাড়া ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে তাঁরা এই পেশা থেকে বেরিয়ে এসেছে। তারা এখন বিভিন্ন জন বিভিন্ন ধরনের পেশায় নিয়োজিত।আমি নিজেই তাদের একটি বড় ধরনের পরিবর্তন দেখেছি। যাইহোক, মৃৎশিল্প হয়তো আর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের বাংলা থেকে একদম বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আমরা আমাদের একটি প্রাচীনতম ঐতিহ্য কে হারিয়ে ফেলবো। আপনাদের বাসায় যদি এখন পর্যন্ত মাটির তৈরি করা তৈজসপত্র ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

P1nnPUkSmoNUKb4TPeqQKoypeKJsLYTRBqQF72wfANTunXi5ykaNXfcHUD5j7ywn2sYMuAaxVCSF7KarjeyDXMWkShcYXof5pJzL811JLa...YvwmTf667voc7rj2rYhzUHtRoZiaMkZcfUbRkBUaWAQK1RbzHq4ZuAeSzwZkJT3X35hRevJH2MzMkLrvzNgcWgEXUASxmti5ast1AiY1XuTx9R8CHrKDjR9fYA.png

Vote@bangla.witness as witness

54TLbcUcnRm3sWQK3HKkuAMedF1JSX7yKgEqYjnyTKPwrcNLMcZnLnFrW5PDaQKxbWWqwrRezSAe39S7RTiEk7NCzgzD1reVavwZGUMbjasjujy1CQqSedvtuVGKXod3vcdSqiXp2.png

Or

Set@rme as your proxy

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WEX4nZPQpSChVhr5YUqUeT6qhYr1L6PMHKqtRnepY2a8e1tqsDtWfr4V8KDGvJtydqvz4V68PMUyu9EWpez2.png


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

1728830339945~3.jpg

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

ভাইয়া আপনি আজকে দারুণ একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন। আসলে মাটির তৈরি জিনিস গুলো এখন খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আর আগের মানুষ এই মাটির তৈরি জিনিস গুলো প্রচুর ব্যবহার করতো।কালের বিবর্তনে আমাদের পুরনো ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সবার উচিত পুরনো ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা।ধন্যবাদ ভাই পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

জি ভাই আপনি ঠিক বলেছেন কালের বিবর্তনে প্রিয় মৃৎশিল্প আজকে বিলুপ্তির পথে। এক সময় এগুলোর ভালো প্রচলন ছিল। কিন্তু প্লাস্টিক সিলভার বের হয়ে মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তবে মাঝে মাঝে দু এক জাগায় এখনো দেখা যায়। খুব সুন্দর একটি ব্লগ শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ।

আমাদের ঐতিহ্যবাহী শিল্প গুলো এখন হারিয়ে যাচ্ছে। তবে এগুলোকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। বর্তমানে প্লাস্টিক, এলমনিয়াম এবং কাঁচের জিনিসপত্র গুলো আসার কারণে এই মৃৎশিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। খুব সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে পোস্ট লিখেছেন। পড়ে ভালো লাগলো।

যদিও আগেরকার সময় এই ধরনের মৃৎশিল্পের অনেক বেশি প্রচলন ছিল। কিন্তু মানুষ এখন প্লাস্টিক জিনিসের প্রতি বেশি ঝুঁকে যাচ্ছে। এতে করে কিন্তু পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। তাইতো আমাদের পুনরায় এই শিল্পে আবার ফিরে যাওয়া উচিত।

একদমই ঠিক বলেছেন৷ আসলে এখন আধুনিক যুগে প্রতিনিয়ত আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে আধুনিক বিষয় নিয়ে চিন্তা করা হয় এবং নতুন কিছু উদ্ভাবন করার জন্য সবাই মেতে থাকে৷ তবে যে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প রয়েছে সেটি এখন আর কেউই মূল্য দেয় না৷ তার উন্নয়নের ক্ষেত্রেও কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না৷ আজকে আপনার এই পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো৷ ধন্যবাদ আপনাকে৷