ছোটবেলার স্মৃতি : বড়শি দিয়ে মাছ ধরা

in hive-129948 •  9 months ago 

desert-6215513_1920.jpg
Copyright Free Image Source: PixaBay


গত কয়েকদিন ধরে কলকাতার আকাশ কালো করে বৃষ্টি নেমেছিল । চৈত্র মাস মনেই হচ্ছিলো না, শ্রাবণ মাসের সাথেই বরং মিল ছিল বেশি । জানালা দিয়ে বাইরের অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়তে দেখে ছোটবেলার কিছু মধুর স্মৃতি মনে পড়ে গেলো । গ্রামের ছেলে, তাই খুব ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরা শিখেছিলাম । তবে, জাল দিয়ে ধরতে পারতাম না, ওটা শেখা হয়নি । আমি মাছ ধরতুম বড়শি দিয়ে ।

আমার বেশ কয়েকটা মাছ ধরার ছিপ ছিল । বড়শিও ছিল বেশ ক'রকমের । গ্রামের মুদিদোকানে মাছ ধরার বড়শি পাওয়া যেত । টিফিনের পয়সা জমিয়ে কিনতাম আমরা । তারপরে নাইলনের শক্ত সুতো দিয়ে বড়শির গোড়া শক্ত করে বেঁধে অপর প্রান্ত ছিপের মাথায় বাঁধতাম বেশ করে । ছিপ বানাতাম বাঁশের কঞ্চি চেঁছে ।

পুঁটি মাছ ধরার জন্য সব চাইতে খুদে সাইজের বড়শি লাগতো । তেলাপিয়া, ট্যাংরা, সরপুঁটি, খলসে, কৈ, ল্যাটা মাছের জন্য মাঝারি আকারের বড়শি আর রুই, কাতলা, শোল, মাগুর, ভেটকি, বেলে মাছের জন্য বড় সাইজের বড়শি । তাই তিন রকমের ছিপ ছিল আমার । গ্রামে মাছ ধরার সব চাইতে প্রকৃষ্ট সময় ছিল আষাঢ়-শ্রাবণ মাস । এই সময় পুকুর-ডোবা, খাল-বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত । সহজেই বড়শি দিয়ে ধরা যেত ।

বর্ষাকালে স্কুলে খুব কম যেতাম আমি । পড়তামই তো খুব নিচু ক্লাসে । তার ওপর গ্রামের যে স্কুলে পড়তাম সেই স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিল আমার বাবা । তাই স্কুল কামাই করলেও কোনো টীচার জীবনেও কোনো কিছু বলেনি আমাকে । আমিও মনের সুখে স্কুল কামাই করতাম । বিশেষ করে বর্ষাকালে । এই সময়টাতে গ্রামে এমনিতেই জল কাদা থাকে প্রচুর, তাই বাড়ি থেকেও স্কুলে না যাওয়ার জন্য কিছু বলতো না ।

সকাল ঘুম থেকে উঠেই হাত মুখ ধুয়ে আগে পড়তে বসতাম । সকালের খাওয়া অব্দি বিশাল পড়াশোনা চলতো, কিন্তু যে খাওয়া হয়ে যেত সেই আর পড়তে বসতাম না । খাওয়া শেষ হতে না হতেই সঙ্গী সাথীরা এক এক করে এসে জুটতো আমাদের বাড়ি । আমি খাওয়া শেষ করে মুখ ধুয়েই অমনি সঙ্গী সাথী নিয়ে হৈ হুল্লোড় করে পুকুর পাড়ে চলে আসতুম ।

এক জনকে পাঠাতাম কেঁচো খুঁড়তে । ভাত, আটার দলা, চিংড়ি মাছ এসব দিয়েও টোপ হতো, তবে সব চাইতে বেস্ট টোপ ছিল কেঁচো । কেঁচো দিয়ে খুব সহজে মাছ ধরা যেত । পুঁটি মাছ অবশ্য কেঁচো গিলতো না । পুঁটি মাছ ধরার জন্য ভাত বা আটার দলার টোপ থাকতো । আর ভেটকি মাছের জন্য বেস্ট টোপ ছিল চিংড়ি মাছের টোপ । বাকি সব মাছ চোখ বুজে কেঁচোর টোপ গিলতো ।

একটা বড় সাইজের নারকোলের মালায় মাটির সাথে কেঁচো রাখতাম । এরপরে সঙ্গীদের কেউ এক জন কেঁচো বঁড়শিতে গেঁথে দিলে তারপরে পুকুরপাড়ে একটা সুবিধাজনক স্থানে বড়শি পেতে মাছের জন্য wait করতুম । পুকুরে প্রচুর মাছ থাকার কারণে জলে ছিপ ফেলার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই বড়শি ঠোকরানো শুরু হতো ।

হাঁসের পালকের গোড়ার অংশ বা শোলা অথবা কলমি শাকের ডগা দিয়ে ফাৎনা তৈরী করতুম । ফাৎনাটা বড়শির সুতোর মাঝামাঝি স্থানে বেঁধে দিতাম । বড়শি জলে তলিয়ে গেলেও ফাৎনা জলের ওপর স্থির হয়ে ভেসে থাকতো । মাছ এসে টোপ ঠোকরালে ফাৎনা নড়তো । আমিও বুঝতে পেতাম যে মাছ এসে টোপে ঠোকর মারছে । আর যেই মাছ টোপ গিলে ফেলতো সেই ফাৎনাটা জলের নিচে তলিয়ে যেতো । আমিও বুঝে যেতুম যে মাছে টোপ গিলেছে, এইবার এক হ্যাঁচকা টান মারলেই বড়শি বিঁধে যাবে মাছের গলায় বা ঠোঁটে ।

বড়শি মাছ ধরার মধ্যে অন্যরকম একটা বাড়তি উত্তেজনা আছে যেটা জাল দিয়ে মাছ ধরায় নেই । কী হয় ! কী হয় ! এমন একটা উদ্বেগ থাকে সারাক্ষণ । আর তারপরে বড়শিতে মাছ গেঁথে গেলে জল থেকে সেটাকে টেনে তোলার মধ্যে দারুন একটা উত্তেজনা থাকে । অদ্ভুত ভালো লাগার একটা অনুভূতি কাজ করে মনের মধ্যে । তবে, যেসব পুকুরে মাছ খুব কম সেখানে বড়শি বাইতে গেলে চূড়ান্ত ধৈর্য্যের পরীক্ষা হয়ে যায় ।

ছোটবেলায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরায় ব্যাপক আনন্দ পেতুম । সারা সকাল থেকে দুপুর অব্দি বসে থাকতাম পুকুর পাড়ে । মাছও পেতুম ভালোই । ট্যাংরা, পুঁটি, তেলাপিয়া, কৈ, বান,মাগুর, শোল, ল্যাটা এসবই ধরতুম । রুই-কাতলাও ধরেছি, তবে সংখ্যায় অতি নগন্য । নিজের হাতে ধরা মাছের ঝোলের কী অপূর্ব স্বাদ ! আহা !


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

»»——⍟——««

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দাদা আপনার তো দেখছি ছোটবেলা বরশি দিয়ে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা ভালই ছিল ।আপনি যে মাছ ধরার স্মৃতি বিজড়িত কথাগুলো শেয়ার করলেন তার সাথে ছোট্টবেলার জীবনের কতটা মিল। আমরাও এভাবে মাছ ধরতাম দারুন মজা যখন মাছ বড়শিতে বাধতো । সেই ফিলিংসটাই অন্যরকম থাকতো অনেক ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 100 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.

Congratulations, your post has been upvoted by @upex with a 41.10% upvote. We invite you to continue producing quality content and join our Discord community here. Keep up the good work! #upex

একেবারে হুবহু শৈশব। ছোটবেলায় ছোট বড়শি যেগুলো এক টাকায় ৫-১০ টি কিনতাম সেগুলো দিয়ে পুটি, ট্যাংরা, বাইলা, ছোট টাকি ধরতাম। টাকি আর বাইলা ধরার টেক্নিক একটু ভিন্ন।
বাবাকে দেখতাম বড় বড়শি দিয়ে কার্ফু, রুই এগুলো ধরতেন, পাশের আমরা শুধু পুটি ধরতাম। জাল ফেলাটা আমারও শেখা হয়নি। বাবা জাল ফেললে সাথে যেতাম। সে এক অন্যরকম শৈশব। এখনকার ছেলেমেয়েরা এগুলো বুঝবে না। পুরা নস্টালজিক করে দিলেন দাদা

You really had a memorable childhood experience.

When I was younger, I wasn't allowed to go fishing and I still look forward to those memories.

Thanks for sharing this with us Dada ❤️❤️❤️

দাদা, আপনার পক্ষে সেই নিষ্পাপ স্মৃতিগুলোকে আবার নতুন করে জাগিয়ে তোলার জন্য সময় ম্যানেজ করা কি সম্ভব নয়? শৈশবের স্মৃতি সবসময় নিষ্পাপ এবং আনন্দে পূর্ণ। এমন স্মৃতির সাথে কোন কিছুর তুলনা করা যায় না।

আমি আশা করি আপনি আবার মাছ ধরার জন্য কিছু সময় পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন।

দাদা যারা গ্রামে থেকেছে বড়শি দিয়ে ছোটবেলায় মাছ ধরার স্মৃতি কতটা যে সুমধুর তারা খুব ভাল করেই জানে। দাদা আপনার শৈশবের জীবনটা গ্রামে কেটেছে আর সেই মধুর শৈশবের স্মৃতিময় গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার মত আমরাও টিফিনের টাকা জমিয়ে মাছ ধরার জন্য বরশি কিনতাম, সীসা কিনতাম আরো ময়ূরের পালক কিনতাম। আমার জীবনেও প্রচুর মাছ ধরার স্মৃতি রয়েছে সত্যি সেগুলো কখনোই ভোলার মতো নয়। ছোটবেলায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরার স্মৃতিময় গল্প আমাদের সাথে অনেক সুন্দর ভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

সত্যি দাদা এখন বসন্ত কাল মনে হয় না। আপনার বড়শি দিয়ে মাছ ধরার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার মতো মজা আর কিছুতেই নেই। তবে আপনি দেখছি অনেক মাছ পেতেন। আসলে এভাবে মাছ পেলে ধরতেও অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ দাদা ছোট বেলার কথা মন করিয়ে দেওয়ার জন্য।

আসলেই দাদা এখনকার ওয়েদার দেখলে মনে হয় যে বর্ষাকাল চলছে। চৈত্র মাসে এতো বৃষ্টি দেখিনি। আমাদের এদিকেও রমজান মাসে ইতিমধ্যে ৫/৬ দিন বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। যদিও বৃষ্টি বেশি হওয়ায় রোজা রাখতে একেবারেই কষ্ট হচ্ছে না। যাইহোক ছোটবেলায় বঁড়শি দিয়ে আমি শুধুমাত্র পুঁটিমাছ ধরতে পারতাম। হাতেগোনা কয়েকবার ধরেছিলাম আটা দিয়ে পুঁটিমাছ। অনেকে দেখতাম কেঁচো দিয়ে কৈ মাছ ধরতো। তাদের কেঁচো ধরা দেখে আমার কাছে কেমন যেনো লাগতো। যাইহোক আপনার সাথে তো সঙ্গীরা ছিলো, তারা কেঁচো বঁড়শিতে গেঁথে দিতো,আর আপনি মাছ ধরতেন। আপনারা যেটাকে ফাৎনা বলেন,আমরা সেটাকে টোম বলে থাকি। আপনার ছোটবেলার স্মৃতি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

দাদা, আপনার ছোটবেলার স্মৃতিতে বরশি দিয়ে মাছ ধরার অনুভূতি পড়তে পড়তে আমি নিজে যেন আমার ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম। আমিও ছোটবেলায় আমার মামাতো চাচাতো ভাইদের সাথে প্রতিযোগিতা করে মাছ ধরতাম। বিশেষ করে যখন নানা বাড়িতে বেড়াতে যেতাম তখন মামাতো ভাইদের সাথে এই প্রতিযোগিতা চলতো তুমুলে। আপনি ঠিকই বলেছেন দাদা, বরশি দিয়ে মাছ মারার মজাটাই আলাদা। এই মাছ ধরবে, এই মাছ ধরবে বলে অপেক্ষা করতে করতে যখন বড়শিতে মাছ আটকে যায়, তখন কি যে ভালো লাগে, সে আনন্দ হয়তো প্রকাশ করার মতো নয়। হ্যাঁ দাদা আপনি ঠিকই বলেছেন, নিজের হাতে বড়শিতে ধরা মাছের রেসিপি খেতে অমৃত মনে হয়। অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা, আপনার সুন্দর অনুভূতিটুকু শেয়ার করার জন্য।

সত্যি বলতে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে কিন্তু অনেক বেশি ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। কারণ অনেক সময় শুরু থেকে মাছ পাওয়া যায় না। আর যারা শুরুর দিকে উঠে চলে আসে তারা হয়তোবা ধৈর্যের পরীক্ষায় ফেল করে যায়। কিন্তু ধৈর্য ধরে বসে যদি বড়শি দিয়ে মাছ ধরা যায় সেটা আসলেই কিন্তু কাজে দেয়। আর যেটা বুঝলাম আপনার মাছ ধরার কাজে অনেক বেশি ধৈর্য রয়েছে। আমাদের পুকুরে যে মাছ চাষ করা হতো সেগুলো ধরতেই আমার কাছে খুব বেশি বিরক্ত লাগতো। কারণ সাথে সাথে যদি মাছ না ধরে তাহলে চাষের পুকুরে মাছ চাষ করে কোন লাভ আছে নাকি হাহাহা। যাইহোক কবে যে বড়শি দিয়ে মাছ ধরেছি তা মনে নেই। তবে আমাদের পুকুরে বড়শি দিয়ে অনেক মাছ ধরেছিলাম। সেই স্মৃতি এখনো মনে পড়ে দাদা। দারুন একটা মুহূর্ত আর অনুভূতি শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ অনেক এত সুন্দর একটা মুহূর্ত গল্প আকারে ফুটিয়ে তোলার জন্য।

আমিও রুই কাতলা ধরেছি বে খুবই কম। আমি সবচাইতে বেশি ধরেছি পুটি। পুটি মাছ ধরতে আলাদা একটা মজা আছে হা হা। আমিও আপনার মতোই দাদা জাল দিয়ে মাছ ধরতে পারি না। কিন্তু বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে পারি আমি। আপনার কথাগুলো শুনে ঐ বর্ষাকালের দিনগুলো যেন আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল। দারুণ ছিল আপনার লেখাটা দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

আমি গ্রামে গেলে মাঝেসাঝে বড়শিতে হাত দিয়েছি।কিন্তু জীবনে কোনো মাছের মুখ দেখিনি।মাঝারি সাইজের মাছ তো দূরের কথা,পুঁটিও না।
তবে কেঁচোর কথা শুনে গা গুলিয়ে উঠলো।মাছ ধরার জন্যে অন্তত এসব এ হাত দিতে পারবোনা।

আসলে দাদা বড়শি দিয়ে মাছ ধরা খুবই ধৈর্যের বিষয়। আর যাদের ধৈর্য রয়েছে তারা এই বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে পারে। নদীর পাড়ে দিয়ে বড়শি নিয়ে বসে থাকে, সারাদিন যেন চুপ করে বসে থাকে। তাদের কি পরিমান ধৈর্য নিয়ে বসে থাকে সেটা আমি তাদের বড়শি দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য দেখে বুঝতে পেরেছি। তারা চুপ করে বসে থাকে এই মাছ ধরার জন্য অপেক্ষা করে। আর যার ধৈর্য নেই সে কখনো বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে পারবে না। আপনি ধৈর্যের পরীক্ষায় দিয়েছেন,যার কারণে ধৈর্য ধরে থাকার কারণে মাছ ধরতে পেরেছেন। আপনার পোস্ট পড়ে আমার বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সেই দিনগুলোর কথা খুবই মনে পরে গেলে।

Posted using SteemPro Mobile

একেবারে সত্য বলেছেন দাদা। বড়শি দিয়ে মাছ ধরায় একটি আলাদা উত্তেজনা কাজ করে। যেটা জাল দিয়ে ধরলে হয় না। আপনার তো দেখি তিন ধরনের ছিপ ছিল। আর ছোট বেলায় তো আপনি কম দুষ্টু ছিলেন না। তবে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে স্কুল কমিউনিটির সভাপতির ছেলে বলে স্কুলে না গেলেও আপনাকে কেউ কিছু বলতো না, সেই বিষয়টি। কেমন একটা ভাব ছিল আপনার। যাই হোক বেশ সুন্দর করে ছেলেবেলার ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ দাদা আপনাকে।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দাদা আপনিও যে এরকমভাবে মাছ ধরেছেন বরশি দিয়ে শুনে বেশ ভালো লাগলো। এখনো গ্রামের দিকে প্রায় সময় আসার শ্রাবণ মাস আসলেই বরশি দিয়ে মাছ ধরার ধুম পড়ে যায়। তবে এই বরশি দিয়ে মাছ ধরার ক্ষেত্রে সর্বাধিক ধৈর্যধারণ করতে হয়। কিন্তু আপনার পোস্ট পড়ে মনে হল যে পুকুরে আপনি মাছ ধরতেন বরশি দিয়ে তাতে মোটামুটি মাছ ছিল। আপনি একই সাথে ৩ আকারের মাছ ধরতেন বরশি দিয়ে যেটার মধ্যে অন্যরকম একটা অনুভূতি থাকে। ধন্যবাদ দাদা পুনরায় আমাদের ছোটবেলার কিছু আনন্দদায়ক মুহূর্ত স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য। আপনার পোস্ট পড়া অবস্থায় আমি যেন মনে হচ্ছিল সেই ছোটবেলায় চলে গিয়েছিলাম।

গ্রামের জীবন টা ছোট বেলায় সৃতি হয়েই থাকে।ছোট বেলায় স্কুল কামাই দিয়ে পুকুরে কিংবা খালে রোদ্র বৃষ্টি মাথায় করে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার মুহুর্ত গুলো কখুনো ভুলার না।মায়ের কাছে কান্না কাটি করে এক টার চারটা বিস্কিট কিনে সেটা দিয়ে আবার আটা বানানো বেশি পরিমান পানি দিয়ে ফেললে সেটা আবার রোদে একটু সুকিয়ে নিতাম সিপের সাথে লাগিয়ে রেখে এই ধরনের আটা পুটি মাছ ধরতে ব্যবহার করতাম।আর কৈ,টাকি, শোল বা বড় মাছ ধরার জন্য কেচো ছিল।আমি আবার একটু চালাক ছিলাম নিজে কখুনো কেচো লাগাতাম না।অন্য কে দিয়েই লাগিয়ে নিতাম।অনেক সৃতি মনে করিয়ে দিলেন দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

শৈশব মোর রইল সোনার খাচায় বন্দি। কিছুক্ষণের জন্য শৈশবে হারিয়ে গিয়েছিলাম। বড়শি দিয়ে আপনার মতো আমার শৈশব স্মৃতির অনেক মিল পেলাম। পুকুরে কতো মাছ ধরেছি। পুটি মাছ ধরার জন্য রুটির টোপ ব্যবহার করতাম দাদা। ফালাইতে দেরি হইতো, নিয়ে দৌড় দিতে দেড়ি হইতো না মাছের। তবে কেঁচো দিয়েও মাছ ধরেছি। বিশেষ করে মাগুর মাছগুলো বেশি ধরতো পুকুরে। যাক, দাদা ধন্যবাদ আপনাকে শৈশবের স্মৃতিটাকে আরেকবার ফিল করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।

এই একটা কাজ আমার ছোটবেলায় খুব একটা করা হয়নি। মাছ ধরাটা আমার কাছে অনেক বেশি ধৈর্যের ব্যাপার মনে হোতো। তবে একটা কথা ঠিক বলেছেন দাদা যখন বড়শিতে মাছ গেথে যায় তখন একটা আলাদা উত্তেজনা কাজ করে। আমি মনে হয় আমার জীবনে একদিন বা দুদিন বরশী দিয়ে মাছ ধরেছি। ছোটবেলাতে শহরে চলে আসার কারণে গ্রামে এই ধরনের কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ খুব একটা হয়নি। আপনার পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে আপনি বেশ পাকা ছিলেন এই কাজে। ধন্যবাদ আপনাকে।

বড়শি মাছ ধরার মধ্যে অন্যরকম একটা বাড়তি উত্তেজনা আছে যেটা জাল দিয়ে মাছ ধরায় নেই । কী হয় ! কী হয় ! এমন একটা উদ্বেগ থাকে সারাক্ষণ

উফ, দাদা ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেলো। কি ছিল না গ্রামবাংলার ছোটবেলায়। আমি অবশ্য স্কুল শেষ করে এসে আমাদের দোকানের পিছনে একটা ছোট পুকুর আছে সেখানে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতাম। আর মাছ ধরার ও কিযে উত্তেজনা, কোন মাছ উঠবে, সেটা কল্পনা করার মজাই আলাদা। 🤭

আহ দাদা ছোট বেলার কথা মনে করিয়ে দিলেন। মনে পড়ে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সেই স্মৃতি । বাড়ির পাশেই আমাদের মুহুড়ি নদী যেটা ভারত থেকে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে ঢুকে বয়ে চলেছে। যখন নদীর পানি একটু কমে আসে গ্রামের অনেক মানুষ কেউ জাল দিয়ে কেউবা বড়শি দিয়ে মাছ ধরার জন্য নদীর পাড়ে পাড়ে বসে থাকে। আমি আমার ভাই এবং বাবা একসাথে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বড়শি নিয়ে বসতাম। বাবার বড়শিটা ছিল বড় , বাজার থেকে কেনা আর আমাদের দুই ভাইয়ের টা ছোট হাতে বানানো । পিপড়ার ডিম ,মেথি আর বনরুটি মিলিয়ে মাছের খাবার বানানো হত ।সেই খাবার বড়শিতে লাগিয়ে অনেক দূরে ফেলা হতো একবারে নদীর মাঝখানে । বড়শি দিয়ে মাছ ধরা একটা আর্ট , অনেক ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয় বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে হলে। কোনো কোনো দিন সারাদিন বসে থেকেও কোনো মাছ পাওয়া যেতনা আবার কোনো কোনো দিন দুই তিন কেজি মাছ পাওয়া যেত আবার কোনো দিন বড় কোনো মাছ উঠে আসতো বড়শি দিয়ে। এটা অনেকটা ভাগ্যের উপর ও ডিপেন্ড করে। এই ক্ষেত্রে আমার লাক ছিলো একেবারেও খারাপ কারন আমার বড়শিতে মাছ লাগতোনা । তবে একবার আমার বড়শিতে একটা মাছ ধরতে পেরেছিলাম আমি সেদিন আমার আনন্দ কেমন হয়েছিল সেটা প্রকাশ করার মত না। এছাড়া পুকুর পাড়ে বসে কেচো অথবা ভাত দিয়ে মাছ ধরেছি বড়শি ফেলে । পুকুরের ক্ষেত্রে আমার আবার বড়শির ভাগ্য ভালো ছিল অনেক পুটি মাছ উঠতো আমার বড়শিতে বাকিদের তুলনায়। আর আমাদের পুকুরে অনেক পুটি মাছ ছিলো । যাই হোক আপনার বড়শি দিয়ে মাছ ধরার গল্প শুনে সেই ছোট বেলাতে চলে গেছি । এখন আর মাছ ধরা হয় না ।বড়শিতো দূরে থাক জাল দিয়েও ধরা হয় না ।

এক নিমিষেই পড়ে ফেললাম ভাই পুরো লেখাটি, মনে হচ্ছিল যেন আমার ছেলেবেলাটাকে, এই লেখার মাঝে হুবহু তুলে ধরেছেন। দারুণ ছিল সেই সময় গুলো।

মাছ ধরা মানে আসলে ধৈর্যের পরীক্ষা, তবে আপনাদের পুকুরে বড়শি ফেলানোর মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই মাছ সারা দিত এটা ইন্টারেস্টিং। যেসব মাছগুলো ধরতেন তার নাম উল্লেখ করেছেন, পুকুরে তো তাহলে সব ধরনের মাছই ছিল।বান মাছ যে বরশিতে পড়তো এটা তো অবাক করা বিষয়।

Posted using SteemPro Mobile

দাদা আপনি আপনার ছোটবেলায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরার স্মৃতির গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। ঠিক বলেছেন দাদা আপনি আসলে গ্রামের ছেলেরা ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরতে শেখে। তবে আপনি জাল দিয়ে মাছ ধরা শিখিয়েছিলেন না আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। ঠিক বলেছেন দাদা আপনি আসলে গ্রামের মুদি দোকানে এখনো বড়শি পাওয়া যায়। আমিও স্কুল কামাই করে মাছ ধরতাম। ধন্যবাদ এত সুন্দর ছোটবেলার স্মৃতিমায় একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

বরশি দিয়ে মাছ ধরার গল্প নয় যেন বসে বসে মাছ ধরা দেখছিলাম।এতো সুন্দর বর্ননা মনে হচ্ছিল যেন দেখতে পারছি সব কিছু। কেঁচো দিয়ে মাছ ধরার কথাটা শুনে একটু কেমন জানি লাগলো। তবে ভাত ও চিংড়ি দিয়ে মাছ ধরাটা ঠিক আছে।অনেক সুস্বাদু দেশি মাছ পেতেন দাদা।রুই কাতলাও পেয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো।সত্যি নিজের ধরা মাছের এক অপূর্ব স্বাদ।

বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে খুব মজা লাগে যদি দ্রুত মাছ বড়শিতে উঠে যায়। কিন্তু পুকুরে মাছ কম থাকলে বড়শিতে মাছ উঠতে এত সময় লাগে যে আর ধৈর্য কুলায় না। আমাদের এখানেও গতকাল রাত্রে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। একেবারে শিলা বৃষ্টি। এরকম বৃষ্টির ওয়েদারে ছোটবেলার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে। ভালো লাগলো দাদা আপনার ছোটবেলার মাছ ধরার গল্প পড়ে।

আপনার ছোটবেলার স্মৃতি বড়শি দিয়ে মাছ ধরার অনুভূতি পড়ে আমার নিজের ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেলো। আমিও বরশি দিয়ে মাছ ধরতাম। তবে আমি এত মাছ পেতাম না। আমি খালে মাছ ধরতাম। পুটি মাছই বেশি পেতাম। আপনার অনুভূতি দারুন ছিল। ধন্যবাদ।

আপনার পোস্ট পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল অন্য কারও জীবনী না, এ যেন আমারই ছোট বেলার ফেলা আসা দিনগুলো।

কেচো দিয়েই মাছ ধরতাম বেশি। রান্নার আগে মা বলত কয়েকটা তেলাপিয়া মাছ ধরে আনো তো! আমাদের নিজেদের পুকুরেই ছিল অনেক বড় বড় তেলাপিয়া মাছ। তেলাপিয়া ধরাই ছিল সবচেয়ে সহজ। আর পুটিমাছ ধরা ছিল বেশ কঠিন!

ধন্যবাদ আপনার ছোটবেলার মাছ ধরার গল্প শোনানোর জন্যে। আমিও ক্ষনিকের জন্যে ফিরে গিয়েছিলাম আমার ছোটবেলায়!

একটা ভিন্ন বিষয়:

স্টিমিটের মোবাইল app টা রিয়েলি outstanding!! Incredible work!

Posted using SteemPro Mobile

যে মানুষের বাবা স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি, তাকে কেউ কিছু বলার সাহস পাবে কি করে দাদা! হা হা হা...🤭🤭 তোমার ছোটবেলার মাছ ধরার গল্পের সাথে আমার ছোটবেলার মাছ ধরার গল্পের অনেকটাই মিল রয়েছে দাদা। বর্ষাকালে আমরাও যে কত কেঁচো দিয়ে মাছ ধরেছি, তার কোনো হিসাব নেই। তাছাড়া স্কুলের টিফিনের টাকা জমিয়ে আমাদের গ্রামের বাজার থেকে বিভিন্ন রকমের বড়শি কিনে আনতাম। তারপর সেগুলো দিয়ে গ্রামের বন্ধুবান্ধব মিলে মাছ ধরতাম। অনেকদিন পরে সেই কথাগুলো মনে পড়ে গেল দাদা, তোমার এই পোস্ট টি পড়ে।

I found a company that distributes airdrops, they give $5 in equivalent of their token for a couple of clicks, they don’t require anything special, most likely it’s some kind of advertising company.
Grab it before it's too late :D

https://karatbao.com

আপনার পোস্ট পড়ে ছোট বেলার অনেক কথা মনে করিয়ে দিলেন দাদা। আমার জন্ম বেড়ে উঠা চট্রগ্রাম শহরে। কিন্তু বছরে ১/২বার গ্রামের বাড়ীতে যেতাম।বাড়ির পাশেই নদী। তখন এই বড়শি দিয়ে মাছ ধরা উপভোগ করতাম। বড়শির টোপ মাছ গিললেই সেকি উত্তেজনা। আপনি একদম ঠিক বলেছেন দাদা,"বড়শি মাছ ধরার মধ্যে অন্যরকম একটা বাড়তি উত্তেজনা আছে যেটা জাল দিয়ে মাছ ধরায় নেই"। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করে ছোটবেলার স্মৃতিকে নাড়া দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ভালো থাকবেন সবসময়।শুভ কামনা আপনার জন্য।