"বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর" ভ্রমণ - পর্ব ০৯steemCreated with Sketch.

in hive-129948 •  2 years ago 


গত পর্বে বলেছিলুম নেক্সট পর্বেও বেশ কিছু পাখির ছবি শেয়ার করবো । তাই আজকের এপিসোডের পুরোটাই জুড়ে থাকবে বাংলার হরেক পাখি । এর পরের পর্বে শুরু হবে বাংলাদেশের বিভিন্ন অরণ্যে পাওয়া বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর ফোটোগ্রাফি । বাংলাদেশে বর্তমানে অরণ্যের আয়তন বিপুল পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে । এর প্রধান কারণই হলো ক্রমবর্ধমান বিপুল জনসংখ্যার চাপ ।

একটি দেশের তার আয়তনের মোট ভূমির ২৫ শতাংশ অরণ্যভূমি না থাকলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় । বাংলাদেশে এই মুহূর্তে তার মোট আয়তনের মাত্র ৩ শতাংশ অরণ্যভূমি রয়েছে । তাই বন্যপ্রাণী বিশেষ করে পক্ষীকুল বিলুপ্তির পথে । অদূর ভবিষ্যতে আর গ্রাম বাংলার মানুষদের ঘুম ভাঙবেনা দোয়েলের মিষ্টি শীষে, বসন্তে আর কোকিল তার সুমধুর স্বরে কুহু কুহু ডাক শোনাবেনা, চড়ুই পাখি এসে ধান খেয়ে যাবে না, কাকের কর্কশ ডাকে আর পড়ন্ত বেলা মুখরিত হবে না, ফিঙের নাচ, টিয়ার ঝাঁক আর পুকুরের ধারে গাছের ডালে প্রতীক্ষারত মাছরাঙা আর খুঁজে পাওয়া যাবে না ।

এখনও হয়তো কিছুটা সময় অবশিষ্ট আছে সচেতনভাবে এদেরকে রক্ষা করার । আমরা শুধু ভুলে যাই যে এই পৃথিবী আমাদের বাপের কেনা সম্পত্তি নয়, এই পৃথিবী যেমন আমাদের বাসভূমি তেমনই অসংখ্য প্রাণীরও বাসভূমি । আমাদের এই আগ্রাসন আমাদেরকেই ঠেকাতে হবে নতুবা এক সময় সমগ্র পৃথিবী থেকে সব প্রাণীকুল বিদায় নেবে চিরতরে ।

একটা জ্বলন্ত প্রমাণ কিন্তু আমরা সবাই ভুলে যাই । চীনের স্বৈরাচারী শাসক মাও সে তুং সে দেশ থেকে চড়ুই পাখি পুরোপুরিভাবে বিলুপ্ত করে দেয়ার জন্য অনেকগুলি অভিযান সম্পন্ন করেছিল । ১৯৫৮-১৯৬০ সালের মধ্যে চীনে দুর্ভিক্ষে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৮ মিলিয়ন অর্থাৎ ৭ কোটি ৮০ লক্ষ । এই ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ ছিল চীনে ৬৫৯ মিলিয়ন চড়ুই পাখি হত্যা ।

কমিউনিস্ট পার্টির স্বৈরাচারী শাসক মাও সেতুং ও তার চামচাদের মাথায় একদিন একটা অভিনব আইডিয়া এলো । চড়ুই দল শস্য খেয়ে যায় । একটা চড়ুই এক বৎসরে প্রায় ৩-৪ কেজি শস্য খায় । তাহলে যদি সমগ্র চীনের আনুমানিক ১০০ কোটি চড়ুই হত্যা করা যায় তবে শস্য বেঁচে যাবে লক্ষ লক্ষ টন । কিন্তু, মাও সে তুং ছিল একজন মাথামোটা শাসক । তার প্রাণীদের সম্পর্কে বিন্দুমাত্র কোনো ধারণা ছিল না । সে যা সিদ্ধান্ত নিতো তা কারো সাথে আলোচনা না করেই নিতো । কারো মতামতের ধার ধরতো না ।

ফল হলো মারাত্মক । শুরু হলো "দ্য গ্রেট স্প্যারো ক্যাম্পেইন" । সমগ্র চীনের প্রতিটি নাগরিককে নির্দেশ দেওয়া হলো যে করেই হোক সাবাড় করে ফেলো চড়ুই পাখি । পাখি না মারলে গুলি করে মেরে ফেলার ভয়ও দেখানো হয়েছিল । একজন স্বৈরাচারী শাসকের বন্দুকের নলের মুখে সবাই অসহায় ।

শুরু হলো চড়ুই পাখি নিধন যজ্ঞ । প্রতিদিনই লক্ষ লক্ষ চড়ুই পাখি নির্বিচারে হত্যা করা হতে লাগলো । ফলাফল হলো মারাত্মক । প্রকৃতি থেকে চড়ুই বিলুপ্ত হতেই ক্ষতিকর পোকামাকড়ের ভয়াবহ উৎপাত শুরু হলো । শস্যে মড়ক লাগলো । যে শস্য বাঁচানোর জন্য এই গণহারে চড়ুই হত্যা সেই শস্যের অভাবে দেশে এলো দুর্ভিক্ষ । পরবর্তী দু'বছরে প্রায় ৭৮ মিলিয়ন মানুষ খ্যাদাভাবে প্রাণ হারালো । ‘দ্য গ্রেট ফেমিন’, এটাই প্রকৃতির প্রতিশোধ ।


প্রথম ফোটোতে কোকিল, দ্বিতীয়টিতে ইষ্টি কুটুম, তৃতীয়টিতে মাছরাঙা ও মৌটুসী ।

তারিখ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩

সময় : বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিট

স্থান : ঢাকা, বাংলাদেশ


প্রথম ফোটোতে বালি ও রাজঁহাস, দ্বিতীয়টিতে দাঁড়কাক ও চিল, তৃতীয়টিতে বিভিন্ন প্রজাতির হাঁসপাখি ।

তারিখ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩

সময় : বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিট

স্থান : ঢাকা, বাংলাদেশ


***সব গুলিই বিভিন্ন প্রজাতির হাঁসপাখি - বালি, ব্রম্ম, উত্তরাঞ্চলীয় শাভালার, রাজঁহাস, বিগড়ি, সার্ফ স্কোটার প্রভৃতি ***

তারিখ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩

সময় : বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিট

স্থান : ঢাকা, বাংলাদেশ


প্রথম ফোটোতে শালিক, দ্বিতীয়টিতে বাজপাখি, তৃতীয়টিতে বদ্রি

তারিখ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩

সময় : বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিট

স্থান : ঢাকা, বাংলাদেশ


প্রথম বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল, দ্বিতীয়টিতে টুনটুনি, তৃতীয়টিতে শকুন

তারিখ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩

সময় : বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিট

স্থান : ঢাকা, বাংলাদেশ


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


✡ ধন্যবাদ ✡


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫০০ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 500 trx)


তারিখ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

টাস্ক ১৮৯ : ৫০০ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫০০ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : 39e1378bf90dda71f0ddab393ae58794f36e1523c1dd94a453d1c565bec0787d

টাস্ক ১৮৯ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

আপনি বাংলাদেশ জাতীয় মিউজিয়ামে অনেক সুন্দর ঘোরাফেরা করেছেন। পাখির ফটোগ্রাফি গুলো দারুণ ছিল আমার কাছে প্রত্যেক টি ফটোগ্রাফি অনেক ভাল লেগেছে। আপনি ঠিক বলছেন প্রতিদিন হাজার হাজার পাখি হত্যা করা হচ্ছে যা পরিবেশের জন্য অনেক ক্ষতিকর। অনেক ভাল লেগেছে দাদা আপনার মূল্যবান কথা গুলো।

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



বাংলাদেশে যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে তাতে ভূমির ২৫ শতাংশ অরণ্যভূমি কিভাবে থাকবে,কয়েকদিন পর ৩ শতাংশ ও থাকবে না।পরবর্তী প্রজন্ম কোন পাখি দেখবে কিনা সন্দেহ।লক্ষ্য লক্ষ্য চড়ুই পাখি মেরে ফেললো,আসলেই প্রকৃতি সবটুকুই ফিরিয়ে দেয়।যাই গত কালের এপিসোড দেখেছি,আজকের এপিসোড ও বেশ,ভালো লেগেছে আমার কাছে।প্রতিটি পাখি বেশ সুন্দর। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ

চীনে ৬৫৯ মিলিয়ন চড়ুই পাখি হত্যা করা হয়েছিল জেনে সত্যিই খারাপ লাগলো দাদা।মাও সে তুং সত্যিই একজন স্বৈরাচারী শাসক ছিলেন এবং সেই সাথে মাথামোটা একজন শাসক ছিলেন। তাইতো এভাবে চড়ুই পাখি হত্যার পরিকল্পনা করেন। যাই হোক দাদা বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ভেতর থেকে তোলা এই পাখির ফটোগ্রাফি গুলো দারুন হয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে পেলাম। এখন অনেক পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

This is very usefull knowledge to know real Bangladesh (বাংলাদেশ). great and usefull for everyone thanks 😇

প্রকৃতি কখনো কাউকে ছাড় দেয় না। মাও সেতুং এর শাসনের সময়টাই যেন তার প্রমাণ! কতটা মাথামোটা হলে এমন চিন্তা আসে মাথায় আমি সেটাই ভাবছি! চড়ুই পাখি শস্য খেয়ে কিন্তু আমাদের উপকারই করে! কিন্তু মাও সেতুং এর মাথায় বুদ্ধি এলো শস্য খেয়ে ক্ষতি করে। খাদ্যের সংকট হবে না! চিত্রটা পুরো উল্টে গেল যখন চড়ুই পাখি নিধন করলো! আমাদের বাংলাদেশের অবস্থাও এখন তেমন ভালো নেই। বনভূমির ২৫% নেই এখন, ১৭% আছে সম্ভবত! এমন হলে কোকিলের কুহু কুহু ডাকও হয়তো শুনতে পাবো না

Your post has been rewarded by the Seven Team.

Support partner witnesses

@seven.wit
@cotina
@bangla.witness
@xpilar.witness

We are the hope!

দাদা আজকের এক পোষ্টে পক্ষীকুল সমূহের অনেক তথ্য জানতে পারলাম। বিশেষ করে আমাদের দেশের আয়তনের তুলনায় ২৫ শতাংশের এর জাগায় মাত্র ৩ শতাংশ অরণ্য ভূমি আছে। কি ঝুকির মধ্যে আছে বাংলাদেশের মানুষ। তাছাড়া চীনের কমিউনিস্ট পার্টির স্বৈরাচারী শাসক মাও সেতুং চড়ই পাখি হত্যার বিষয়টিও জানতাম না। ধন্যবাদ দাদা।

দাদা প্রকৃতিকে বাবার কেনা সম্পত্তি ভাবলেও তো একটু ভালো হতো।তাও একটু যত্ন করা হতো,এখন তো তাও নয়।আর তাই প্রকৃতি নিজের প্রতিশোধ নিজেই নেয়।পাখিগুলো দেখলেই বুঝা যাচ্ছে এসব বিলুপ্তির পথে কারণ কখনো তেমন চোখেই পরেনি।

সত্যিই জনসংখ্যার চাপের জন্য প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।ফলে প্রাণীরা ঠিকমতো থাকার জায়গা পাচ্ছে না। সবকিছু হারিয়ে যাচ্ছে চোখের নিমিষেই।চড়ুই পাখির সম্পর্কে এমন তথ্য পুরোপুরি জেনে ভালো লাগলো দাদা।তবে এতগুলো চড়ুই পাখির প্রাণ কেড়ে নেওয়ার ফল খুবই খারাপ হয়েছিল সেইসময়।জাদুঘরের ছবিগুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে।

পাখি আজ বিলুপ্তির পথে।এখন পাখি আর বেশি দেখা যায় না।জনসংখ্যার চাপে বনজ সম্পদ আজ ধ্বংসের মুখে। পাখিদের আবাসস্থল আমরাই ধ্বংস করে ফেলছি।আপনার করা ফটোগ্রাফি থেকে বেশকিছু পাখির ছবি দেখতে পেলাম।ধন্যবাদ দাদা শেয়ার করার জন্য।

Nice photography please upvote me

জি দাদা এটা যথার্থ বলেছেন ৷ দিন দিন আমাদের দেশে ক্রমশ সব পাখি বিলুপ্তির পথে ৷ সত্যি বলতে এখন অনেক পাখি চোখে পড়ে না ৷ আর এর বড় কারন জনসংখ্যা ৷ যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ৷ তাতে সব বনজ সম্পদ ধংশ ৷ আর এর ফলে সমস্ত পক্ষি কূল বিনাশের পথে ৷ এটা সত্য যে সামনে হয়তো বা আরও ভয়াবহ রূপ দেখতে হবে ৷ গ্রামের প্রকৃতি ধংশের পথে ৷ আপনি অনেক কিছু পাখির ফটোগ্রাফ শেয়ার করেছেন ৷ দেখে অনেক ভালো লাগলো দাদা ৷