ছোটগল্প "মানুষ"

in hive-129948 •  2 years ago 


Copyright Free Image Source : Pixabay


অনেক দিন আগের কথা । চব্বিশ পরগণার একেবারে দক্ষিণে বাদা বনের ধার ঘেঁষে একটা গ্রাম । আশেপাশের বেশ ক'খানা গ্রামের এক সময়ের ত্রাস বীরেশ্বরের নিবাস ছিল এই গাঁয়ে । বীরেশ্বর রায় ছিল বিখ্যাত ঠ্যাঙাড়ে । তার বেশ বড় একটা ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ছিল । নির্জন পথে একাকী পথিকদের সর্বস্ব লুঠ করে মাথায় লাঠির বাড়ি মেরে লাশগুলো ফেলে দিতো বড় কোনো দীঘি বা জলাশয়ে ।

সেই সময়ে লালমুখো এক ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট অব্দি বিস্তর চেষ্টা করেও বীরেশ্বরের দলকে পাকড়াও করতে পারেনি । কারণ, বীরেশ্বর কোনো প্রমাণ রাখতো না তার দুস্কর্মের। উল্টে সে ঠ্যাঙাড়েগিরি করে বেশ দু'পয়সা করে তা দিয়ে বাদা অঞ্চলের বেশ কয়েকটি তালুক কিনে ছোটখাট একজন জমিদার বনে গেলো । উচ্চপদস্থ কিছু ইংরেজ সরকারের কর্মচারীদের সাথে ভীষণ দহরম-মহরম ছিল তার ।

তাই তাকে ছোঁয়া অসম্ভব ছিল ।

জমিদার হওয়ার পরেও কিন্তু বীরেশ্বর মাঝে মাঝেই তার ঠ্যাঙাড়েবাহিনীর সাথে মিলে নিজের হাতে খুন করতো হতভাগ্য পথিকদের । কারণ, তার রক্তে ছিল খুনের নেশা । এমনই একটা রাতের কথা বলি। রহিম শেখের কন্যা ও জামাতাকে এই রাতে নির্মমভাবে খুন করলো বীরেশ্বর ও তার ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ।

গ্রামের মোটামুটি অবস্থাপন্ন একটি মুসলিম পরিবার ছিল এই শেখ পরিবার । অঘ্রানে বিয়ে হয়ে গেলো শেখের এক মাত্র কন্যার, কলকাতা নিবাসী এক বিহারি মুসলিম পরিবারে । ফাগুনের এক সন্ধ্যায় নামখানা স্টেশনে এসে দাঁড়ালো লাস্ট ট্রেন । ট্রেন থেকে সস্ত্রীক নেমে যুবকটি আবিষ্কার করলো তাদের জন্য কোনো গরুর গাড়ি আসেনি স্টেশনে । অথচ টেলিগ্রামে বলাই ছিল আজ তারা আসছে ।

যাই হোক তারা একটি গরুর গাড়ি ভাড়া করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো । এই গরুর গাড়িটি ছিল তলে তলে বীরেশ্বর রায়ের-ই । স্টেশনে থাকতো শেষ ট্রেন থেকে আগত ধনী কোনো শিকারকে করায়ত্ত করতে । তো, গাড়ি চলতে চলতে নির্জন বনপথে প্রবেশ করা মাত্রই গাড়ির চারিপাশে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী সবাই ঘিরে ধরলো । প্রচন্ড ভয়ে আধমরা হয়ে গেলো যুবকটি ও তার নবপরিণীতা স্ত্রী । টেনে হিছড়ে বের করা হলো তাদের গরুর গাড়ি থেকে । শেষ মুহূর্তে বাঁচার তাগিদে মেয়েটি পা জড়িয়ে ধরলো খোদ বীরেশ্বরের । ছেলেটি বলির পাঁঠার মতো ঠক ঠক করে কাঁপছে ।

বীরেশ্বর স্বহস্তে লাঠি মাথার উপরে তুলে সর্বশক্তি দিয়ে বসিয়ে দিল ছেলেটির মাথায় । ফিনকি দিয়ে শোণিত ছুটলো । সর্বাঙ্গ ভিজে গেলো মেয়েটির, তারই স্বামীর রুধিরে । এবার মেয়েটির পালা । বীরেশ্বর লাঠি তুললো মাথা তাক করে । সহসা মেঘে ঢাকা চাঁদ উন্মুক্ত হলো । সেই চন্দ্রালোকে মেয়েটি চিনতে পারলো বীরেশ্বরকে । একই গ্রামে বাড়ি তাদের । না চেনার তো কথা নয় ।

মৃত্যুর আগে মেয়েটির সর্বশেষ আর্তনাদ ছিল - "কাকা !!!!!" । এই আর্তনাদে কিন্তু বিচলিত হয়ে পড়েছিল বীরেশ্বরের দস্যু হৃদয় । তার নিজের ভাইয়ের ছোট্ট মেয়েটার মুখ পলকে নিজের মানসপটে ভেসে উঠলো । কিন্তু, হত্যার নেশায় উন্মত্ত বীরেশ্বরের হস্ত শিথিল হলো না । হতভাগ্য মেয়েটির মস্তক বিদীর্ন করলো হাতের লাঠি ।

তারপরে কেটে গিয়েছে অনেকদিন । হাতানিয়া-দোয়ানিয়া দিয়ে বয়ে গিয়েছে কত স্রোত । বীরেশ্বর এখন বৃদ্ধ । ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী আছে তার এখনো । কিন্তু, নিজের হাতে আর কোনো পথিককে সে হত্যা করে না । শুধু দল পরিচালনা করে সে, কিন্তু অকুস্থলে স্বশরীরে বর্তমান থাকে না । সেই রাতের কথা এখনো সে ভুলতে পারেনি । সেই করুন আর্তনাদ - "কাকা !!!", ভুলতে পারেনি সে । ঘুমের মধ্যে এখনো সে দুঃস্বপ্ন দেখে সে দিনের । ঘুম ভেঙে বার বার জল দিয়ে হাত ধোয়, বারবার । কিন্তু, এই দু'হাতে যত রক্তের দাগ লেগে আছে তা কি এক সমুদ্র জলেও মোছা সম্ভব ? ভেবে কুল পায় না বীরেশ্বর ।

আজ বীরেশ্বরের ভাইঝি আসবে । তার করেছে কলকাতা থেকে নতুন জামাই । কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত তার'টি পৌঁছলো না নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে । স্টেশনে নেমে জামাই বাবাজি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো । কেউ নেই । স্টেশন প্রায় জনশূন্য । নিজের স্ত্রীকে বললো - "তোমার কাকা কেন যে এই মুসলিম অধ্যুষিত বাদা অঞ্চলেই তালুক কিনলো !, বোঝো এখন ঠেলা । শুনেছি কাল নাকি মিঞাদের ঈদ । তাই দেখো স্টেশনে কেউ নেই । এখন আমরা যাবো কি ভাবে ?"

এমন সময় এক খানি গরুর গাড়ি দেখা গেলো স্টেশনের বাইরে এই মাত্র রওনা দিয়েছে । হাঁকডাক করে থামানো গেলো সেখানাকে । সেই গরুর গাড়িটি ছিল রহিম শেখের । সদর থেকে ফিরছে সে । ব্যবসার কাজে গিয়েছিলো । বীরেশ্বরের মা-বাপ মরা ভাইঝি-কে দেখে বুকের মধ্যে ঝড় উঠলো যেন শেখের মনে । বীরেশ্বর । নিজের হাতে তার কন্যা-জামাতাকে খুন করেছিল । সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে কিছুই করতে পারেনি সে । প্রতিশোধ নেওয়ার বহু চেষ্টা করেছে । কিন্তু, বীরেশ্বর হলো জমিদার , তার ওপর ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী, লেঠেল বাহিনী আর সর্বোপরি উচ্চপদস্থ ইংরেজ কর্মচারীদের সাথে ঘনিষ্ঠতা । তাই তার টিকিটিও ছুঁতে পারেনি শেখ ।

আজ, কিন্তু সুবর্ণ সুযোগ । বীরেশ্বরের প্রাণাধিক ভাইঝি আর তার জামাতা তার করতলগত । এই নির্জন বনপথে খুন করে পুঁতে ফেললে কেউ জানতেও পারবে না । এই সব ভাবছে শেখ । এমন সময় মেয়েটির কণ্ঠস্বর তাকে চমকে দিলো ।

-"রহিম কাকা, আমি কিন্তু আপনাকে চিনতে পেরেছি । আমার খুব ভয় করছে কাকা । শুনেছি ঠ্যাঙাড়ে আছে এদিকটায় ।"

বীরেশ্বর বহু যত্নে তার ভাইঝিকে নিজের কীর্তিকলাপ জানা থেকে বিরত রেখেছে । তাই, গ্রামের প্রায় সবাই জানলেও মেয়েটি জানে না যে এই ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী চালায় তারই কাকা বীরেশ্বর ।

মেয়েটির কথা শুনে সহসা একটা ঝাঁকি খেলো রহিম শেখ । এসব কি ভাবছে সে !! ছিঃ !

রহিম অভয় দিলো - "মা, আমি বেঁচে থাকতে তোর ভয় নেই জানবি । তুই নিশ্চিন্তে থাক । ঠ্যাঙাড়ে এলেও কিছু করতে পারবে না ।"

শুনে মেয়েটি পরম নিশ্চিন্তে স্বামীর সাথে গল্প করতে লাগলো । প্রায় ঘন্টা দেড়েক চলার পরে বনের মধ্যে একটা মোড় ঘুরতেই সহসা গাড়োয়ান সতর্কসূচক একটা শব্দ করলো ।

কারা যেন এদিকপানে ছুটে আসছে । আবছায়া অন্ধকারে কিছু বোঝা যাচ্ছে না । কিন্তু, পায়ের দুড়দাড় শব্দ শোনা যাচ্ছে ।

ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী !

ভয়ে মুখ শুকিয়ে গেলো জামাই বাবাজীর । ঠক ঠক করে কাঁপছে সে ।

গাড়োয়ান গাড়ি থামিয়ে দ্রুত নেমে পড়লো । গাড়ির পিছন থেকে নামলো দুই জন লাঠি-সড়কি ধারি মুসলিম যুবক । রহিম শেখের ভাইপো তারা । আর রাহিম শেখ দ্রুত গাড়ির মধ্যে থেকে কি একটা লম্বা লাঠির মতো ভারী বস্তু নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো ।

কয়েকটি মুহূর্ত । হঠাৎ, আগুনের ঝলক আর বিকট শব্দ । ধড়াম কেউ পড়ে গেলো মাটিতে । দুর্দম ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী দারুন আতঙ্কে একেবারে জমে গেলো । আবার আগুনের ঝলক আর বিকট শব্দ ।

বন্দুক । রহিম শেখের হাতে দো'নলা আগ্নেয়াস্ত্র । শহরে গিয়ে আজকেই কিনে এনেছে । অনেক আগে থেকেই সে বন্দুক চালাতে পারতো । শুধু নিজের বন্দুক ছিলো না । আজ হয়েছে । ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর শেষ দেখে ছাড়বে সে ।

দারুন আতঙ্কে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী পলায়ন শুরু করলো । তাদের অপসৃয়মান দেহগুলোর উদ্দেশ্যে আরো কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়লো রহিম শেখ ।

গাড়ির কাছে এসে ভিতরে মুখ বাড়িয়ে বললো রহিম শেখ - "আর ভয় নেই মা, তারা পালিয়েছে । চল তোকে রায় বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসি গে ।"

রাতের দ্বিতীয় প্রহর । বীরেশ্বর রায়ের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালো এক খানি গরুর গাড়ি । খবর পেয়ে পাগলের মতো ছুটে এলো বীরেশ্বর । ভাইঝি আর জামাতার মুখে সব শুনে শোকে দুঃখে কাতর হয়ে গেলো বীরেশ্বর । অনুতাপে পুড়ে যাচ্ছে তার ভিতরটা । এই সেই রহিম শেখ । যার একমাত্র কন্যাকে নিজের হাতে খুন করেছে সে । আজ তার প্রতিদান পেলো সে ।

হাউ মাউ করে কেঁদে পা জড়িয়ে ধরলো সে রহিম শেখের । রহিম শেখের খুব ইচ্ছে করছিলো লাথি মেরে দূরে সরিয়ে দেয় এই নরকের কীটকে । কিন্তু, তার অন্তরাত্মা বললো - "ক্ষমা কর, ওরে ক্ষমা কর । অনুতাপের চাইতে বড় সাজা আর কি হতে পারে । বীরেশ্বর তো তার সাজা পেয়েই গিয়েছে । অনুতাপের আগুনে দগ্ধ হচ্ছে প্রতিনিয়ত সে । মরাকে মেরে আর কি হবে ?"

ধীরে ধীরে পা ছাড়িয়ে নিয়ে বীরেশ্বরের ভাইঝি-জামাতাকে নীরবে আশীর্বাদ করে জমিদার বাড়ির প্রাঙ্গন ছাড়িয়ে বাইরে পা রাখলো রহিম শেখ । মেঘ কেটে গিয়ে ঈদের বাঁকা চাঁদ উঁকি মারছে আকাশে । রজত শুভ্র বাঁকা কাস্তের মতো সেই চাঁদের দিকে তাকিয়ে রহিম শেখের মনে হলো সে মানুষ হতে পেরেছে । পশুত্ব থেকে মনুষ্যত্বে উত্তীর্ণ হতে সে পেরেছে । এটাই তার জীবনের চরম সার্থকতা ।

মানুষ হওয়া নয় কো মোটেই সোজা !

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আজকের দিনে এমন একটা গল্প পাবো সত্যিই ভাবতে পারিনি দাদা,বেশ ভালো লেগেছে।অনুতাপ আর ক্ষমা দুটোই বড় অস্ত্র।

সময় নিয়ে পড়ব বলে রেখে দিয়েছিলাম। খুব ভাল লিখেন দাদা। আপনার গল্পগুলো হল সেরা পোস্ট। জানি সময়ের ব্যস্ততায় লিখতে পারেন না। তবে সপ্তাহে অন্তত একদিন লিখার অনুরোধ রইল।

ছাত্রজীবন এর পর গল্প উপন্যাস পড়ার যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে সেটা আপনার গল্প পড়ে কমবে। ভাল লাগে পড়তে। অনেক আগ্রহ নিয়ে খুটিয়ে খুটিয়ে পড়ি আপনার গল্পের পোস্টগুলো। আমি মনে করি অন্যরাও পড়ে।

এভাবে এক সময় দেখবেন বই লিখার মত কন্টেন্ট হয়ে গিয়েছে। তখন ছাপিয়ে দিলেই হবে। কবিতার চেয়ে গল্প আমার বেশি প্রিয়। তাই একজন নিয়মিত পাঠক হিসেবে নিয়মিত গল্প লিখার অনুরোধ করছি @rme দাদা

কি লিখবো ভেবে পাচ্ছি না । শেষ পর্যন্ত মানবিকতা এবং মনুষ্যত্বের জয় হলো। ছোট্ট কথায় বলতে হয় ক্ষমাই পরম ধর্ম । অনুতাপের আগুনের বড়ই জ্বালা । সেই আগুনে যে পড়ছে তাকে আর কি শাস্তি দেবে। সে সারাজীবন এই যন্ত্রনায় ছটফট করে যাবে যত দিন বাচবে। দাদা আজকের গল্প টি ভিন্নধর্মী এবং বেশ কিছু নতুন শব্দের সাথে পরিচিত হলাম। বীরেশ্বর যতই বীর হউক না কেন সে মানুষের কাছে ঘৃণিত এক কীট মাত্র আর রহিম শেখ ক্ষমার মাধ্যমে মনুষ্যত্বের পরিচয় দিয়ে মানুষের মনে সারা জীবন বেচে থাকবে।মন্তব্য শেষ করার আগে একটি কথাই বলবো দাদা অসাধারন গল্প ছিল । ভাল থাকবেন ধন্যবাদ।

দারুন গল্প,বেশ ভালো লাগলো,আসলে প্রতিশোধ নেওয়া সুযোগ পেয়েও রহিম শেক নিলো না। ক্ষমা মহত্বের লক্ষ। আর আসলেই অনুতাপের চেয়ে বড় সাজা কথা হতে পারে।রহিম শেকের মত মানুষ হওয়া বড়ই কঠিন।ধন্যবাদ

হাউ মাউ করে কেঁদে পা জড়িয়ে ধরলো সে রহিম শেখের । রহিম শেখের খুব ইচ্ছে করছিলো লাথি মেরে দূরে সরিয়ে দেয় এই নরকের কীটকে । কিন্তু, তার অন্তরাত্মা বললো - "ক্ষমা কর, ওরে ক্ষমা কর । অনুতাপের চাইতে বড় সাজা আর কি হতে পারে । বীরেশ্বর তো তার সাজা পেয়েই গিয়েছে । অনুতাপের আগুনে দগ্ধ হচ্ছে প্রতিনিয়ত সে । মরাকে মেরে আর কি হবে ?"

আমরা নিজাম ডাকাত থেকে নিজামুদ্দিন আউলিয়া হওয়ার কথা অনেকে জানি বা শুনেছি।
অনুতপ্তের চেয়ে সাজা আর জগতে নাই। ক্ষমার চেয়ে শক্তিশালী মহতি গুনও বিরল।

তার পরও বন্দুকের মত অবলম্বনেরও কখনো কখনো দরকার পড়ে । অর্থাৎ শক্তি হলো ভক্তির আধার। শিক্ষনীয় কিছু।

পশুত্ব থেকে মনুষ্যত্বে উত্তীর্ণ হতে সে পেরেছে । এটাই তার জীবনের চরম সার্থকতা ।

সত্যি অনুতাপের চেয়ে বড় সাজা আর কিছুই হতে পারে না, কিন্তু আমাদের আত্মাগুলো যে শুকিয়ে পাথর হয়ে গিয়েছি, শত ভুলেও আমরা অনুতপ্ত হয় না, আমাদের হৃদয় কাঁপে না!

আমরা ত্যাগ করি, সাধনা করি, কিন্তু দিন শেষে নিজের চরিত্র হতে বের হয়ে আসতে পারি না, দেরীতে হলেও বীরেশ্বরের মাঝে সেটা এসেছিলো, তাই রহিম শেখের সিদ্ধান্তটি ছিলো সঠিক।

দারুণ ছিলো গল্পটা এবং তার ভেতরকার বাণীটা। ধন্যবাদ দাদা। ঈদ মোবারক।

চোখে কোণায় পানি এসে গেছে ভাই । উফ মনে হচ্ছিল যেন ঘটনা গুলো আমার চোখের সামনেই ভাসছিল । যতো পড়ছিলাম ততোই হারিয়ে যাচ্ছিলাম। যে অনুতাপে বীরেশ্বর ভুগছে ,তাতে সে অনেকটাই কয়লা হয়ে গিয়েছে । আসলেই ভাই মানুষ হওয়া অতো সোজা নয় । অনেকদিন পরে তৃপ্তিভরে একটা গল্প পড়লাম। বেশ লিখেছেন ভাই।

এত চমৎকার ভাবে পুরো দৃশ্যপট সাজিয়েছেন দাদা। চোখের সামনে যেন ভেসে উঠছিল যখন গল্পটা পড়ছিলাম। সবশেষ আপনার সাথে আমিও একমত। অনুতাপ এর চেয়ে বড় শাস্তি এই পৃথিবীতে সত্যিই আর নেই। ক্ষমা করাটাও মহৎ গুণ। বীরেশ্বর দেরিতে হলেও যে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করে ক্ষমা চেয়েছে এবং অনুতপ্ত হয়েছে এর চেয়ে বড় আর কি হতে পারে। আবার ক্ষমা করতে পারাটাও অনেক বড় একটা গুণ বলে আমি মনে করি। রহিম শেখ মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

দাদা অনেকদিন পর চমৎকার একটি গল্প পড়লাম। আপনি যে এত ভালো গল্প লেখতে পারেন সে ব্যাপারে আমার কোনো ধারনাই ছিল না। এতদিন জানতাম কবিতা লেখাতেই আপনার দক্ষতা। সত্যি বলছি, অসাধারণ লিখেছেন। এখন থেকে আপনার একটি গল্পমও মিস দিবনা।

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



সেই প্রকৃত বীরপুরুষ যে প্রতিশোধ নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া সত্তেও অন্যায় ভাবে প্রতিশোধ গ্রহণ করে না, বরং শত্রুকে ক্ষমা করে দেয়। আলোচ্য গল্পে রহিম শেখ সে বীরপুরুষের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দাদা চমৎকার একটি গল্প লিখেছেন একটানে শেষ হয়ে গেল।

মান+হুঁশ = মানুষ। প্রতিশোধ স্পৃহা থেকে আমরা দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ি আর সেই মুহূর্তে যারা নিজেদের প্রতিশোধের আগুনকে চেপে রাখতে পারে তারাই তো আসলে মানুষ।

মনুষ্যত্বের জয় সর্বত্র।

দিনশেষে মনুষ্যত্ববোধই সব।প্রতিশোধের আগুন নিজের মাঝে না পুষে ক্ষমা করে দেওয়াই মনুষ্যত্বের পরিচয়।
আপনার শেষ কথাটির সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত পোষন করছি দাদা।মানুষ হয়ে জন্মানো সহজ হলেও মানুষের মতো মানুষ হওয়া খুব কঠিন

Hi @rme,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

অনেকদিন পর সত্যিই দাদা খুব সুন্দর একটি ছোট গল্প পড়লাম । আমি তোমার লেখা এই ছোট গল্পটি পড়তে পড়তে কিছু সময়ের জন্য গল্পের মধ্যে হারিয়ে গেছিলাম। গল্পের স্টোরিটা এত সুন্দর যদি তোমার এই ছোট গল্প টা কে রেটিং দিতে হয় তো দশের মধ্যে দশ ই দিতে হবে ।তোমার এই গল্পটি কলকাতার খুবই বিখ্যাত রেডিও শো "সানডে সাসপেন্স" এর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।আমি পুরোপুরিভাবেই নিশ্চিত তোমার এই ছোটগল্পটি মানুষের মন জয় করে নেবে। আমি তো গল্পটি পড়তে পড়তে "সানডে সাসপেন্স" এর মজা পেয়ে গেছি তোমার এই গল্পের মধ্যে । এক কথায় অসাধারণ সুন্দর । তোমার এই গল্পের মাধ্যমে দুটি বড় ধরনের নিউজ তুমি মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে পেরেছ । প্রথমটি হলো, মানুষের জীবনে মনুষ্যত্বের থেকে বড় কিছু হতে পারে না। দ্বিতীয়টি হলো, মানুষের পাপের শাস্তি অনুতাপের থেকে বড় কোনো কিছু নাই। মানুষের সবথেকে বড় পরিচয় মানুষের মনুষত্ব। মনুষত্ব যদি মানুষের মধ্যে না থাকে তাকে মানুষ বলা যায় না। আমি তোমার সাথে শতভাগ একমত:

মানুষ হওয়া নয় কো মোটেই সোজা !

বিশ্বের লোকেরা যদি এই শেখের মতো হতে পারে, তবে বিশ্ব যুদ্ধ এবং সমস্যা ছাড়াই হত, যেমনটি আমরা এখন দুর্ভাগ্যবশত দেখছি।

দাদা আসলে আপনি অনেক চমৎকার একটি গল্প লিখেছেন।আসলে পৃথিবীতে অনেক ধরনের লোক আছে, কিন্তু সবার মন মনুষ্যত্ব ও ক্ষমাশীল হয় না।শেখ বীরেশ্বর সব কুকাজ জানার শর্ত বীরেশ্বর কিছু না বলার পর তাকে ক্ষমাদৃষ্টি দেখলো।এমন মহৎ ও গুনি লোক কম মানুষই হতে পারে।

🙏ক্ষমা কর, ওরে ক্ষমা কর । অনুতাপের চাইতে বড় সাজা আর কি হতে পারে ।🙏

একটি কথায় বলবে দাদা আপনার গল্পটি খুব চমৎকার ছিলে, আর ভিন্নময়। ধন্যবাদ দাদা এতে সুন্দর গল্প শেয়ার করার জন্য।

কিছু গল্প পড়ার সময় দৃশ্যপট চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আপনার গল্পটি পড়ার সময় যেন প্রতিটা দৃশ্য আমি নিজের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনার মত অনুভব করতে পারছিলাম।

পড়ার প্রথম দিকের অনুভুতি ছিল এর চরম প্রতিশোধ যেন রহিম শেখ নিজ হাতে নিয়ে নেয়।
কিন্তু ক্ষমার সৌন্দর্যের কাছে প্রতিশোধের নেশা হার মেনে গেল।
বড়ো ভালো লাগলো গল্পটা পড়ে।
ধন্যবাদ দাদা এমন একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করে পড়ার সুজগ করে দেওয়ার জন্য।

দারুন। গল্পের শেষে গিয়ে ' মানুষ ' নামকরণটা সার্থক হলো। তাছাড়া একটা আলো-আঁধারি প্লট। টানটান উত্তেজনা। সব মিলিয়ে খুব ভালো লাগলো।

দাদা গল্পটি বেশ ভালো বললে ভুল হবে খুবই ভালো হয়েছে। গ্রামের মুসলিম এক ধনাঢ্য পরিবারের মেয়ে বিয়ে হয় কলকাতায়।সেখান থেকে আসার পথে তার নিজের গ্রামের দস্যু বীরেশ্বর শেখ পরিবারের মেয়ের এর স্বামী এবং শেখ পরিবারের মেয়ের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগ মুহূর্তে আকুতি আমাকে ব্যথিত করেছে। শুভকামনা রইল দাদা।

খুব সুন্দর লিখেছেন দাদা। আসলেই মানুষ হওয়া মোটেই সোজা নয়। পশুত্বের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হয়ে মনুষ্যত্বের স্বাদ পেতে হলে নিজেকে পরীক্ষা দিতে হয় এবং তাতে পাশও করতে হয়। রহিম শেখের মনে প্রতিশোধের আগুন ছিল তাই সে বন্দুক কিনে এনেছিল। নিজের মেয়ে ও জামাতার খুনের বদলা নিতে সে যখন বীরেশ্বরের ভাইঝি-জামাতাকে খুন করার কথা ভাবছিল তখন তাতে ছেদ ঘটায় মেয়েটি এবং তার টনক নড়ে। বীরেশ্বরও তার ভুল শেষে বুঝতে পারে। তবে সব থেকে কষ্টকর ছিল নিজের প্রাণের মেয়ে ও জামাতার খুনীকে ক্ষমা করে দেওয়া। আর এর মাধ্যমেই সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।

নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া সত্তেও অন্যায় ভাবে প্রতিশোধ গ্রহণ করে না, বরং শত্রুকে ক্ষমা করে দেয়।

@ahmadazeez12

🔥

বাহ,গল্পটি খুবই শিক্ষণীয়।ক্ষমা করা মহৎ গুন।ইচ্ছা করলে প্রতিশোধ নিতে পারতো রহিম শেখ কিন্তু সেটা সে করেনি।কারণ তার মধ্যে মানবিকতা ছিল।খুব ভালো লাগলো দাদা গল্পটি পড়ে, ধন্যবাদ আপনাকে।

nice

if you have two minutes please check out my content im new to this platform
would love a review
lets follow for follow who's with me

আপনার লেখা ছোটগল্প মানুষ। পড়ে একদিকে যেমন হয়েছি মর্মাহত অন্যদিকে জানতে পারলাম মানুষের মানুষত্ব। সারা বিশ্বের মানুষ গুলো যদি শেখের মত এরকম মানুষ হতো পারতো তহলে এত হানাহানি থাকত না পৃথিবীতে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল দাদা।