আমার জীবনের কিছু প্যারানরমাল অভিজ্ঞতা : ঘটনা ০৩

in hive-129948 •  2 years ago 


Copyright Free Image Source: PixaBay


২০১৪ সালের জুনের ঘটনা এটি । আমার মায়ের মা, অর্থাৎ আমার দিদিমা-কে নিয়ে এই ঘটনাটি । আমার দিদিমা গ্রামে আমার মামার বাড়িতেই থাকতো । কোনোদিনই তাকে গ্রাম ছাড়া করে শহরে আমাদের কাছে আনা যায়নি । গ্রাম ছেড়ে কোত্থাও যেতোও না । শুধুমাত্র একই গ্রামে নিজের বাপের বাড়িতে মাঝে মাঝে যেত । বয়স তখন নব্বই পার করে ফেলেছে । তাও দিদিমার বাপের বাড়ি মানে আমার মায়ের মামাবাড়ির প্রতি ছিল অসম্ভব টান ।

দিদিমা বয়সের তুলনায় যথেষ্ঠ কর্মক্ষম ছিলো । একা একাই ঘরের কাজ করতো সব । বাসন মাজা, কাপড় কাঁচা, গোয়ালে গরু বাছুরের পরিচর্যা এবং রান্না বান্না । বাড়িতে রান্নার জন্য একজন মহিলা আর বাইরের কাজের জন্য একজন চাকর রাখা হয়েছিল । কিন্তু, বুড়ির আর কারো কাজ পছন্দ হতো না ।

আমার দিদিমা ছিল আমাদের তিন ভাইয়ের প্রাণ । দিদিমার একটিই মেয়ে । আমার মা । আমার মামা কিশোর বয়সে এক দিনের জ্বরে মারা যান । অন্য শরিকে মামাতো ভাই-বোনেরা আছে আমাদের । তারাই বুড়িকে দেখা শোনা করতো । যেমন এক জনের কথা না বললেই নয় । তার নাম হলো শিশির বোস । আমার এক মামাতো ভাই । মামাবাড়িতে আমার এই ভাই-ই দেখাশোনা করে সব কিছু । মামাবাড়িতে মায়ের প্রচুর জমিজমা আছে । সেগুলোও আমার এই মামাতো ভাই শিশির কুমার বোস ওরফে মদনদা দেখাশোনা করে থাকে ।

তো, এবার আসা যাক মূল ঘটনায় ।

২০১৪ সালের জুনের ১৩ তারিখে আমার দিদিমা ৯৪ বছর বয়সে হঠাৎ ব্রেন স্ট্রোক করে । ডাক্তার কন্ফার্ম করেন যে খুব লো ব্লাড প্রেশারের কারণে এই স্ট্রোক । আসলে, দিদিমার খাওয়া দাওয়াতে বেজায় অনিয়ম ছিল । আর খেতো শুধু ভাত, আলু ভর্তা আর তেঁতুল-কাঁচা লঙ্কা । মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, সবজি কিছুই খেতে চাইতো না । মাঝে মাঝে একটু ডাল খেতো শুধু ।

তো গ্রামের বাড়ি থেকে ফোন করে আমাদের জানালো যে দিদিমা স্ট্রোক করেছে হঠাৎ । তবে, এখন ভালো আছে । বাঁ সাইড কিছুটা প্যারালাইজড । কিন্তু, কথা বলতে পারছে আর ভাত চিবিয়েও খেতে পারছে । শুনে, বেশ কিছুটা স্বস্তি পেলাম মনে । বাবা আর গেলো না, কিন্তু মা গেলো মামাবাড়িতে ।

ধীরে ধীরে দিন যেতে লাগলো । এন্টি-স্ট্রোকের ওষুধ নিয়মিত খাচ্ছিলো দিদিমা, ম্যাসাজ আর খাবারে আস্তে আস্তে বেশ সুস্থ হয়ে উঠলো । একদিন কথাও হলো ফোনে আমাদের সাথে । কথা তখনও ছিলো কিছুটা জড়ানো । হাউ মাউ করে কাঁদছিলো বুড়ি । তার প্রাণের নাতিদের দেখার জন্য । দাদা সব কাজ ফেলে মামাবাড়িতে গেলো । দাদা নিজেই একজন ডাক্তার । তো দিদিমাকে পরীক্ষা করে আমাদের জানালো যে যদি আর স্ট্রোক না করে মাস খানেকের মধ্যে তাহলে আর ভয়ের কিছু নেই । কিন্তু, বয়সটা আর অপুষ্টি বিষয়টি ভাবাচ্ছে খুব । এত বয়স ! ৯৪ বছর । এই বয়সে স্ট্রোকের ধকল সহ্য করা বড় সহজ কথা নয় ।

১৯ তারিখে রাতে যথারীতি খেয়েদেয়ে শুতে গেলাম সকাল সকাল । কেন জানি মনটা সেদিন খুব একটা ভালো ছিল না । শেষ রাতে এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলাম । দেখলাম আমি মামাবাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে রয়েছি । দিদিমাকে জোরে জোরে ডাকছি । কিন্তু দিদিমা আসছে না । একটু পরে মা বেরিয়ে এলো । দেখি মা কাঁদছে । এরপরে দাদা, তারপরে আমার ভাই । দেখি সবাই খুব কাঁদছে । আমি বলছি - "কী হয়েছে ? তোমরা কাঁদছো কেন ?"

কিন্তু, কেউ কোনো উত্তর দিচ্ছে না । সব কিছু কেমন ধোঁয়া ধোঁয়া ধূসর লাগছে । এমন সময় নিজেকে আবিষ্কার করলাম মামাবাড়ির দক্ষিণ দিকের পুকুর পাড়ে । দেখি দিদিমা বাসন মাজছে । আমাকে দেখে বাসন মাজা ফেলে আস্তে আস্তে কুঁজো হয়ে লাঠি ভর দিয়ে ঠুক ঠুক করে আমার কাছে এলো । দেখি দিদিমাও কাঁদছে ।

আমি বললাম - "কি হলো ? তোমরা সবাই কাঁদছো কেন ?"

দিদিমা বললো - "ভাইদা, আমি মরে গিয়েছি । মরার আগে তোকে কত দেখতে ইচ্ছে করছিলো । তুই এলি না । বড় ভাইদা এলো দেখতে । তুই এলি না ।"

এখানে বলে রাখি দিদিমা তার তিন নাতির মধ্যে আমাকে বেশি ভালোবাসতো । সেই আমিই পাঁচ বছরে এক বারও মামাবাড়ি যাইনি । কারণ, ব্যস্ততা । বুড়ি তাই খুব কাঁদতো । যখনি ফোন করতো আসতে বলতো তার কাছে ।

স্বপ্নটা এই পর্যন্ত দেখেই প্রচন্ড কষ্টে বুক শুকিয়ে গেলো । ধড়মড়িয়ে জেগে উঠলাম । দেখি কেবল ভোর হচ্ছে । বেসিনে গিয়ে চোখে মুখে জল দিলাম । তারপরে বেশ কিছুক্ষন থম মেরে বসে থাকলাম । এ কী বাজে স্বপ্ন দেখলাম আমি । ইচ্ছে করছিলো তখনি মা'কে ফোন দেই । পাঁচটা বাজে । তাই ভাবলাম এখন থাক । আরেকটু বেলার দিকে ফোন দেব ।

সকাল আটটায় আমি ফোন দেয়ার আগেই মদনদা ফোন দিলো । আমি সবার আগে দিদিমার কথা জিজ্ঞেস করলাম । মদনদা জানালো সব ঠিকঠাক আছে । দিদিমা ঘুম থেকে উঠে এখন দুধ-মুড়ি খাচ্ছে ।

শুনে কি যে স্বস্তি পেলাম মনে তা বলে বোঝাতে পারবো না । দশটার দিকে আমি মা'কে ফোন দিলাম । শুনলাম দিদিমা ভাত খেয়ে এখন পান চিবুচ্ছে । বুড়ির খুব পানের নেশা ছিল । স্ট্রোক করার ৭ দিন পরে আজ প্রথম পান খাচ্ছে । কথা টথাও নাকি আগের থেকে অনেক ক্লিয়ার বলছে । শুনে একেবারেই মনটা ফুরফুরে হয়ে গেলো ।

এরপরে নিজের কাজে ডুবে গেলাম । ঠিক দুপুর ২ টোর দিকে দাদা ফোন দিলো আমাকে । ফোন দিয়েই শুধু বলতে পারলো - "দিদিমা ! ......" এরপরে হাউ মাউ করে কান্না ।

আমি জমে একদম পাথর হয়ে গেলাম । দেড়টার একটু পরে দ্বিতীয় স্ট্রোকটা হয় । ডাক্তার ডাকা হয়েছিলো । কিন্তু, তিনি এসে আর নাড়ি খুঁজে পাননি ।

পরে, মায়ের মুখে শুনেছিলাম বুড়ি চলে যাওয়ার আগে তার প্রাণাধিক তিন নাতিকে উদ্ভ্রান্তের মতো চারিদিক খুঁজেছিলো । আর শেষ মুহূর্তে হাত তুলে আমাদের তিন ভাইকে আশীর্বাদ করে গিয়েছিলো ।

[নেক্সট প্যারানরমাল ঘটনা ০৪.....]


***বি: দ্রঃ উপরে বর্ণিত ঘটনাটি শতভাগ সত্য । তারপরেও কাউকে আমার ঘটনাটি বিশ্বাস করার জন্য অনুরোধ-উপরোধ বা চাপ প্রয়োগ করছি না ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দাদা সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগলো যে শেষবার আপনিও আর দিদিমাকে দেখতে পেলেন না, দিদিমাও আর পেল না কাউকে দেখতে। এই কষ্টটা আমি বুঝি দাদা। আমিও আমার দিদিমা কে দেখতে পাই নি শেষ বেলা। সবটা পড়ে একটা কথা বলি দাদা, বছর দেড়েক আগে আমিও এমন একটা বাজে স্বপ্ন দেখি আমার জেঠুকে নিয়ে। আমি তখন বাড়ির বাইরে ঢাকাতে। পরদিন রাতের বেলা খবর পাই জেঠু ভীষণ অসুস্থ। হসপিটালে নিয়ে গেছে। তার কিছু দিনের মাঝেই জেঠু আমাদের ছেড়ে চলে যান। আমার মনে হয় পরিচিত কাউকে না কাউকে ভগবান কিছু ইশারা আগে থেকেই দিয়ে দেন।

দিদিমা যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক।🙏

god bless you

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



ঘটনা টা হৃদয় টাকে নাড়া দিয়ে গেল দাদা। আপনার দিদিমা যে আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতো তার প্রমাণ ছিল ঐ স্বপ্নটা। উনি কিন্তু ঠিকই আপনাকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন। হতে পারে এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব‍্যাখা নেই। সবকিছুর ব‍্যাখ‍্যাও বিজ্ঞানের কাছে নেয়। যাইহোক ভালো ছিল লাগল আপনার জীবনের প‍্যারানরমাল -৩ ঘটনাটা।।

ইস দাদা স্বপ্নটা দেখার পরপরই আপনার মনটা কেমন কেমন যেন করছিল সকালে উঠে যদি চলে যেতেন শেষ দেখাটা হয়তো দেখতে পারতেন। ফোনটা না দিয়ে হয়তোবা হুট করে চলে গেলে শেষ দেখাটা হতো। শেষবারের মতো আপনাদের দেখার জন্য ছটফট করেছে আবার দোয়াও করে গিয়েছে। সত্যিই এই ধরনের ঘটনাগুলো ঘটলে বুকের ভেতরটা কেমন যেন মোচড় দিয়ে ওঠে। আপনার এই ঘটনাটা আমার কাছে একেবারে শতভাগ বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে। কিছু কিছু মানুষের স্বপ্ন সব সময় সত্যি হয় আমি অনেক শুনেছি।

শেষটা পড়ে খুব খারাপ লাগলো দাদা। দিদিমা আপনাদের তিন নাতির মধ্যে আপনাকে অনেক ভালোবাসত। আর মারা যাওয়ার আগে শেষবারের মতো আপনাদের দেখতে চেয়েছিল। কি মীরকল! আপনি রাতে স্বপ্ন দেখলেনও তাহলে। অবাক হয়ে গেলাম দাদা। যদি আপনি দিদিমার কাছে উপস্থিত থাকতেন তাহলে কেমন হতো ব্যাপারটা!

ইশ,দাদা সকালে যদি চলে যেতেন,তাহলে আপনি ও শেষ দেখা করতে পারতেন।আসলে কেউ বা জানতো স্বপ্ন সত্যি হয়ে যাবে।মানুষ যাকে বেশি পছন্দ করে মরার সময় তাকে দেখতে পায়।বেশ খারাপ লাগলো।

দাদা এ ধরনের ঘটনার ব্যাখ্যা করে আমার জানা নেই। তবে এমন ঘটনা অনেক পড়েছি পত্রিকা আর বইতে। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি নিজের মৃত্যুর ঘটনা নিজেই স্বপ্নে দেখেছেন এমন ঘটনাও ভুরি ভুরি আছে। তবে কি জন্য এই স্বপ্নগুলো মানুষ দেখে বা এর পেছনে কি ব্যাখ্যা আছে সে ব্যাপারটা খুব জানতে ইচ্ছে করে। পরবর্তী ঘটনা জানার অপেক্ষায় রইলাম। আর আপনি যে এদিক দিয়ে বেশ ভাগ্যবান তাতে কোন সন্দেহ নেই কারণ যে কয়টি প্যারানরমাল ঘটনার কথা আপনি লিখেছেন এমন একটা ঘটনাও আমার জীবনে ঘটেনি। এমনকি আমার আশেপাশের কারো এমন ঘটনা ঘটেছে বলে শুনিনি।

আমি আপনার পোস্ট বেশিরভাগ পছন্দ করেছি। আমি অনলাইনে, লাইব্রেরিতে এবং বইয়ে এমন অনেক ঘটনা পড়েছি। বিশ্বের অনেক বিখ্যাত মানুষ নিজের মৃত্যুর স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু মানুষ জানতে চায় কেন এসব স্বপ্ন দেখা হয় বা এর পেছনের ব্যাখ্যা কী। পরের ঘটনা জানার অপেক্ষায় আছি।

অনুগ্রহ করে আমাদের বাড়াতে সাহায্য করুন: আমাদের অনুসরণ করুন, আমাদের ভোট দিন, আমাদের সমর্থন করুন

ধন্যবাদ

ইশ দাদা আপনার স্বপ্ন সম্পর্কে তেমন কোন ব্যাখা আমি দিতে চাইনা ,তবে বছর খানেক আগে আমার নানী স্ট্রোক করেই মারা গেছে ,যদিও আগের রাতে আমি হ্যাংআউট শো করেছিলাম সেই রাতেও বেশ অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগছিলাম আমি । তবে একটা জিনিস একটু হলেও আন্দাজ করতে পারি , সেটা মনেহয় নিজের কারো কিছু হলে আগে থেকেই বুকটা ধরফর করে ।

যাইহোক মদনদা কে সম্ভবত দেখেছিলাম , আপনাদের সঙ্গে বই মেলাতে গিয়েছিল।

সত্যি অনেক কষ্ট দায়ক ঘটনা, এরকম ঘটনা খুব বেশি যদিও ঘটেনা, কিন্তু যেগুলো ঘটে যায় সেগুলো সবাইকে একেবারে কাঁদিয়ে দিয়ে যায়, সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে খাওয়া দাওয়া, এত বয়স্ক একজন মানুষ তারপর আবার অনিয়মিত খাওয়া দাওয়া, যার কারনে শরীর আরো বেশি দুর্বল হয়ে রোগটা আরো শক্তিশালী হয়ে গেছে।

  ·  2 years ago (edited)

দাদা আপনার প্যারা নরমাল থ্রি লেখাটি পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমাদের এদিকে মায়ের মাকে নানি বলে। আর নারীরা মেয়ের ঘরের সন্তানদের খুব আদর করে। আসলে এই বুড়ো মানুষগুলো তাদের শেষ জীবনে আমাদের কত মিস করে তা আপনার লেখাটি পড়ে আমার হৃদয়কে আবার নতুন করে নাড়া দিল। আমার নানী আমাকে অনেক ভালোবাসি তাই চিন্তা করছি সামনের বন্ধে বাড়িতে আসলে নানির সাথে দেখা করব।

কাহিনীটা খুবই মর্মান্তিক ।খুব খারাপ লাগলো ।কাছের মানুষের এভাবে চলে যাওয়াটা সত্যি সহ্য করা যায় না। যেহেতু আপনি খারাপ স্বপ্ন দেখেছিলেন আপনার উচিত ছিল সকাল সকালই চলে যাওয়া। গেলে ভালো হতো তাহলে হয়তো মৃত্যুর আগে একবার কথা হতো, দেখা হতো ।

Hi @rme,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

কাজ তো সারা জীবনই করা যাবে। এই যে কাছের মানুষ গুলো চলে গেলে আর ফিরে পাওয়া যায় না। তাই আমার মনে হয় যে কাজের মধ্য থেকে সময় বের করে হলেও কাছের মানুষের কাছে যাওয়া উচিৎ। আর যেহেতু আপনার স্বপ্ন এর আগেও সত্যি হয়েছে তাই আপনার সকাল বেলায় চলে যাওয়া উচিত ছিলো। এই বিষয়টি মনে হলে আপনার নিশ্চয়ই একটা আফসোস লাগে। ইস যদি সকালে যেতাম। শেষ দেখাটা হত। খুব কষ্টের ব্যাপারটি।
এর পরের বার এমন কোন স্বপ্ন দেখলে অবশ্যই সব কাজ ফেলে আগে যাবেন।

উফ! এসব শুনলে এমনিতেই আমার শরীরের লোমগুলো খাড়া হয়ে যায়, গা শির শির করে উঠে, ভয় ধরে যায় শরীরে।

হ্যা, এটা একবার আপনার মুখে শুনেছিলাম দাদা, সত্যি দুঃখময় হলেও একটা অদ্ভুত শিহরন এবং ভয়ও লাগছে। জানিনা আপনি এই রকম ঘটনা কিভাবে সালাম দেন কিন্তু সত্যি বলছি আমার পক্ষে জীবনেও সম্ভব ছিলো না। ওরে বাবা! ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

দাদা ঘটনাটি আমি একেবারে ১০০ পার্সেন্ট বিশ্বাস করেছি। কারণ আসলেই এমন হয়ে থাকে, খুব কাছের ভালোবাসার মানুষগুলোর স্বপ্নে এভাবেই অনেক কিছু ধরা পরে।

দাদা আপনার আফসোস হয়না আপনার দিদিমাকে দেখতে না যাওয়ার জন্য? আমি নিশ্চিত আপনার অনেক আফসোস হয় সেদিনের জন্য। আপনার এই অভিজ্ঞতাটা পড়ে খুব খারাপ লাগলো। সৃষ্টিকর্তা বোধহয় আপনার ভেতরে কোন বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছেন ভবিষ্যৎ বোঝার জন্য।

উনি আপনাকে অনেক ভালবাসতো দাদা নিঃসন্দেহে। এই জন্যই তো স্বপ্নে এসে আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেছেন। তবে দাদা আমার সত্যিই মায়া লাগছে গল্পটি পড়ে। তবে যেহেতু উনার সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন আপনি, আপনার ভাল মনুষ্যত্ব দেখে হয়ত মনে তৃপ্তি পাচ্ছেন ওপারে বসেই।

Loading...

শুরুর দিকটা আমার বেশ লাগছিলো। দিদা নাতির অন্তরঙ্গ সম্পর্ক যেমন হয় আরকি! শেষে এসে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। স্বপ্নেই শেষ দেখা। 😥

ঘটনাটি হৃদয় টাকে নাড়া দিয়ে গেল দাদা। সবথেকে বেশি খারাপ লাগলো দিদিমাকে শেষ দেখা দেখতে পারলেন না। কাছের মানুষের এভাবে চলে যাওয়াটা সত্যি সহ্য করা যায় না। দিদিমা যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক এটাই কামনা করি।

দাদা প্রথমে খুব খারাপ লাগলো জেনে যে আপনি একদম শেষ মুহূর্তেও একবারও দিদিমাকে দেখতে পেলেন না। স্বপ্নে দেখার পর আপনি দ্রুত গ্রামে চলে গেলে হয়তো দেখতে পেতেন। যাইহোক প্যারানরমাল ঘটনা হলেও এগুলি মাঝে মাঝে একদম সত্যি হয়ে যায়। আমার নানা গ্রামের পার্শ্ববর্তী এক গরীব মেধাবী ছাত্রকে পড়াশোনার খরচ ছাড়াও আর্থিকভাবে অনেক সহযোগিতা করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি অ্যাডিশনাল চিফ জাস্টিস হয়েছিলেন। কিন্তু উনি আমার নানাকে খুব ভালবাসতেন। যেদিন আমার নানা মারা যান সেদিন ভোর বেলা আপনার মতো করে স্বপ্নে দেখেছিলেন। আসলে দাদা অতিরিক্ত ভালোবাসা থেকে আমার মনে হয় এরকমটা হয়।
ধন্যবাদ আপনাকে ঘটনাটি শেয়ার করার জন্য।

দাদা আপনার এই অভিজ্ঞতা পড়তে পড়তে চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো।এতটা রহস্য সবসময় একটা বাঁচা মরার উত্তেজনা কাজ করছিল মনে।প্রথমে কিছুটা ভালো, তারপর কিছুটা মন খারাপ হলো তারপর আবার ভালো তারপর আবার খারাপ হয়ে গেল মনটা।বাকি অংশ পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।পরশুদিন আমার দিদিমার সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তিনি ও কাঁদছিলেন।ছয় বছর হয়ে গেল সামনাসামনি দিদিমাকে দেখি না, আমি বুঝতে পারছি কিছুটা আপনার অনুভূতিটা দাদা।😢

দাদা এরকমটা হতেই পারে। শুনেছি যার প্রতি অনেক ভালোবাসা থাকে, তার ব্যাপারে এরকম যে কোন ঘটনা আগে থেকে আন্দাজ বা জানতে পারা যায়। ধন্যবাদ দাদা আপনার জীবনের প্যারা নরমাল ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

কোন কিছু নিয়ে খুব বেশি চিন্তা ভাবনা মনের ভিতরে থাকলে তার আগাম খবর আমদের অবচেতন মন হয়তো পেয়ে যায় । আমি আমার জীবনে এর প্রমাণ পেয়েছি । আগে সপ্নে দেখেছি পরে বাস্তবতায় ঘটতেও দেখেছি ।