দীপাবলি ও কালীপুজোর রাতে আমাদের ছোটবেলার কিছু মজার স্মৃতিsteemCreated with Sketch.

in hive-129948 •  last year  (edited)

diwali-festival-5069008_1280.jpg
copyright free image source:PixaBay


আমাদের ছোটবেলার দীপাবলি উদযাপন আর এখনকার ছোটদের দীপাবলি উদযাপনের মধ্যে এক আকাশ তফাৎ রয়েছে । আমাদের সময়ে দীপাবলি ও কালীপুজোর রাতে অনেক মজা হতো, কিন্তু এখনকার ছোটরা শুধুমাত্র বাজি পুড়িয়েই দীপাবলির সন্ধ্যাটা উদযাপন করে । বাজি পোড়ানো নিঃসন্দেহে একটি ভীষণই মজার জিনিস, কিন্তু, শুধুমাত্র বাজি পুড়িয়ে আমাদের ছোটবেলায় দীপাবলি হতো না, আরো অনেক মজার মজার কাজে আমাদের দীপাবলি পালিত হতো ।

খুব ছোটবেলায় আমি গ্রামে থাকতাম । আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা গ্রামেই । গ্রামের স্কুলে ক্লাস ফোর অব্দি পড়েছি আমি । আমার মনে আছে দূর্গা পুজো হয়ে যাওয়ার পরেই খালি দিন গুনতাম কবে কালীপুজো আসবে । কারণ কালীপূজোতে দুর্গাপুজোর ডবল মজা ছিল । কালী পুজোর আগের দিন সন্ধ্যায় থাকতো ভূত চতুর্দশী, গ্রামে বলতো "চোদ্দ প্রদীপ" । এই দিনটাও বেশ মজার ছিল । ভূত চতুর্দশীর দিন স্কুলে যেতাম না আমরা । সকালে ঘুম থেকে উঠেই মায়ের প্রদীপ বানানোর জন্য আমরা মাটি আনতে যেতুম গ্রামের শেষ সীমানায় ছোট্ট খালের ধারে ।

সেই মাটি এনে তারপরে ভাত খেয়েই অমনি মা-কাকিমা-জেঠিমাদের সাথে বসে বসে আমরা ভাই-বোনেরাও মাটি দিয়ে প্রদীপ তৈরী করতাম । এই কাঁচা মাটির প্রদীপ রোদে শুকিয়ে সেই দিন সন্ধ্যায় জ্বালানো হতো । মোট ১৪ টা প্রদীপ । সন্ধ্যা হওয়ার আগেই ভিটেতে গিয়ে মা-জেঠিমাদের সাথে গিয়ে চোদ্দ শাক তুলে আনতাম । সন্ধ্যায় পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশ্যে ১৪টা প্রদীপ জ্বেলে আমরা ছোটরা অধীর আগ্রহে চোদ্দ শাক রান্না দেখতাম ।

পরের দিন তো এমনিতেই স্কুল ছুটি । খুব ভোরে উঠেই শুরু হতো আমাদের ব্যস্ততা । প্রত্যেকে নিজেদের বাজির কালেকশন দেখাতো । সেগুলো খুব যত্ন করে শেষবারের মতো রোদে দেওয়া হতো । এরপরে শুরু হতো আমাদের তুমুল ব্যস্ততা । সন্ধ্যা ও রাত্রে আমাদের অনেক প্রোগ্রাম থাকতো । যেমন প্রদীপ জ্বালা, মোমবাতির সজ্জা, বাজি পোড়ানো, পুকুরে প্রদীপ ও মোমবাতি দিয়ে সাজানো কলা গাছের খোল দিয়ে তৈরী নৌকো ও কলা গাছের ভেলা দিয়ে তৈরী জাহাজ ভাসানো হতো । অমাবস্যার রাতে চলাফেরা ও আমোদের জন্য মশাল বানানো হতো অনেকগুলো । তারপরে ছিল মোমবাতি ও নারকোলের মালার তৈরী টর্চ বাতি । মুখোশ পরে খেলনা বন্দুক পিস্তল নিয়ে চোর পুলিশ খেলা । আরো কত ভাবে যে আমাদের আমোদ স্ফূর্তি করা হতো তার ইয়ত্তা ছিল না ।

নিজেদের বাড়িতেই কালী পুজো হতো প্রতি বছর । বেশ বড় করেই হতো, সারা গ্রামের মানুষ পাত পেড়ে ভোজ খেতো । গভীর রাত থেকে রান্না শুরু হতো । বিশাল বিশাল মাছ আসতো রান্নার জন্য । পুজো হয়ে যাওয়ার পরে সকাল বেলা সারা গ্রামের মানুষ কে খাওয়ানো হতো পাত পেড়ে ।

তো যেটা বলছিলাম । দীপাবলির সন্ধ্যাটা প্রথম দিকে একটু গুরু গম্ভীর ছিল । ধর্মীয় রীতি মেনে তুলসী তলায় প্রথম প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রণাম করা হতো । এরপরে বাড়ির চন্ডী মণ্ডপ, কালী মণ্ডপ এবং ঠাকুরঘরে প্রদীপ জ্বালানো হতো । তারপর সকল গুরুজনকে প্রণাম করে পায়ের কাছে মোমবাতি জ্বালানো হতো । ধর্ম কর্মের প্রতি আমার কোনোকালেই ঝোঁক ছিল না । তাই এসব স্টেজ খুব বিরক্তির সাথে পার করতাম । এই সকল রীতি শেষ হলে শুরু হতো আসল উৎসব ।

আমরা ছোটরা ঝাঁপিয়ে পড়াতাম এবার । যত্র তত্র মোমবাতি জ্বালানো হতো । কে কত মোমবাতি জ্বালাতে পারে তার কম্পিটিশন শুরু হতো । কাড়াকাড়ি মারামারিও হতো রীতিমত মোমবাতির ভাগ নিয়ে । মারামারিতে মোমবাতি ভেঙে গেলে আবার আগুন জ্বেলে সেগুলোর মেরামতির কাজ চলতো । এরপরে সবাই বাজি নিয়ে পড়তাম । শব্দ বাজি হিসেবে চকলেট বোম মারা হতো প্রচুর পরিমাণে । আর আতশবাজি তো ছিলই । একটা একটা বাজি পোড়ানো হতো আমরা আমরা সবাই চেঁচিয়ে আকাশ বাতাস তোলপাড় করে তুলতুম ।

অমাবস্যার রাত । গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না তখন । তাই নিকষ কালো আঁধারে এসব জমতো ভালো । বাজি পোড়ানো চলতো রাত আটটা ন'টা অব্দি । মাঝখানে কিছুটা বিরতি ছিল । এই সময় আমরা মশাল জ্বালানো, নারকোলের মালার টর্চ বাতি রেডি করা, কলাগাছের জাহাজ ও নৌকো সাজানোর কাজে ব্যস্ত থাকতাম ।

সন্ধ্যার অনেক আগেই আমরা মশাল, নারকোলের মালার টর্চ, কলাগাছের খোলের নৌকো ও কলাগাছের গুঁড়ির জাহাজ তৈরীর কাজ শেষ করে ফেলতাম । কি করে এগুলো বানানো হতো সে সম্পর্কে একটু আলোকপাত করছি । মশাল বানানোর জন্য আমরা পিঠেগুড়া গাছের ডাল কেটে তার মাথায় পুরো করে পুরোনো ছেঁড়া কাপড় ও ন্যাকড়া জড়াতাম অনেকটা পুরু করে । এরপরে কেরোসিন তেল ঢেলে বেশ করে ভিজিয়ে নিতাম ডালের মাথায় জড়ানো কাপড়ের পুঁটলিটা । ব্যাস মশাল বানানো শেষ ।

এরপরে নারকোলের মালার টর্চ বাতি বানানোর পালা । প্রথমে আমরা নিখুঁত কয়েকটা নারকোলের খোল বা মালা জোগাড় করতাম । আমাদের গ্রামে বলতো আঁচা । এরপরে দা দিয়ে ঘষে ঘষে খোলের উপরটা মসৃন করা হতো । তারপরে একটা বাঁশের কঞ্চির আগাটা ধারালো ছুরি দিয়ে চেঁছে সরু করে ওই নারকোলের মালার ছিদ্র দিয়ে ঢুকিয়ে বেশ আঁটসাঁট করে বেঁধে একটা হ্যান্ডেল তৈরী করা হতো । এবার মালার ভেতরে একটা জায়গায় দা দিয়ে পাতলা করে চেঁছে মসৃন করা হতো । ওই জায়গায় মোমবাতি বসিয়ে দিলে দিব্যি জ্বলতো, আর পেছনের বাঁশের কঞ্চির হাতল ধরে সহজেই চলাফেরা করা যেতো । এটাই ছিল আমাদের নারকোলের মালার টর্চ বাতি ।

সবশেষে বানানো হতো নৌকো ও জাহাজ । এই কাজটা অনেকটা কষ্টসাধ্য ছিল । সময়ও লাগতো ঢের বেশি । তাই দুপুর থেকেই কাজে লেগে যেতে হতো আমাদের । অনেকগুলো কলাগাছ গোড়া থেকে কেটে আনা হতো প্রথমে । এরপরে সেগুলো খন্ড খন্ড করে মাপ মতো কেটে নেওয়া হতো । খন্ড করা কলাগাছের গুঁড়ির গা থেকে খোল ছাড়িয়ে নিয়ে দুই মাথায় হালকা চিরে দুটি চেরা একটা আরেকটার সাথে আড়াআড়িভাবে রেখে সুতো দিয়ে বেঁধে নৌকোর দুই মাথা রেডি করা হতো । এপারে একটা খোলাকে অনেকগুলো ছোট ছোট টুকরো করে সেগুলোকে নৌকোর খোলের মধ্যে বসানো হতো । এরপরে একটা খোলকে ১৮০ ডিগ্রি বেঁকিয়ে ছাউনি বানানো হতো নৌকোর । সব শেষে মোমবাতি ও প্রদীপ দিয়ে নৌকো সাজানো হতো ।

তবে জাহাজ তৈরী ছিল আরো বেশ জটিল । প্রথমে গুঁড়িগুলো পাশাপাশি রেখে তাদের মধ্যে দিয়ে বাঁশের কঞ্চি প্রবেশ করিয়ে ও সুতো দিয়ে মজবুত করে বেঁধে ভেলা তৈরী হতো । এই ভেলার সামনে ও পিছনে সরু করে কেটে অনেকটা জাহাজের ডেকের মতো রূপ দেয়া হতো । এরপরে কলা গাছের খোল পাতলা করে কেটে ডেকের চারিধারে রেলিং দেয়া হতো । তারপরে জাহাজের পেছন দিকে দুটি তলা তৈরী করা হতো কলাগাছের খোল দিয়ে । এখানে প্রদীপ ও মোমবাতির জন্য প্রচুর জায়গা থাকতো । এরপরে জাহাজের সামনে ও পেছনে মশাল লাগানো হতো দুটি বিশাল আকারের । তারপরে বেশ কিছক্ষণ ধরে চলতো জাহাজের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ ।

শেষ হলে প্রচুর প্রদীপ ও মোমবাতি দিয়ে সাজানো হতো জাহাজটি । মশাল দুটি জ্বালিয়ে দেওয়া হতো । সব শেষে পুকুরে ভাসানো হতো । নিকষ কালো জলের বুকে অজস্র আলোকমালায় সজ্জিত জাহাজটি যখন দুলকি চালে ভেসে চলতো তখন অপূর্ব লাগতো দেখতে । চোখ ফেরানো কঠিন ।

কী অপূর্ব ছিল আমাদের ছোটবেলা । এখনকার ধুম ফটাস দীপাবলির চাইতে অনেক বেশি মধুর ছিল আমাদের ছেলেবেলার দীপাবলির রাত ।


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)


তারিখ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

টাস্ক ৩৮১ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : 6bb91937055088a79a0a447d2186fd088dc7a2f620d40918f9b621c2d707b70c

টাস্ক ৩৮১ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার যা আলোচনা পড়লাম দাদা, তাতে নিঃসন্দেহে আপনাদের ছোটবেলার ভূত-চতুর্দশী এবং দীপাবলির দিনগুলো এখনকার দিনের চেয়ে অনেক অনেক বেশি আনন্দের সাথে কাটতো। সেকাল আর একাল তুলনাই করা যায় না। আপনি গ্রামে থাকতেন বলে হয়তো এমন আনন্দ আয়োজন এর সুযোগ টা বেশি পেয়েছেন। আমি একবার গ্রামে ভূত-চতুর্দশী করার সুযোগ পেয়েছিলাম। তখন দেখেছিলাম উঠোনে কলাগাছ কেটে তাতে প্রদীপ দিয়ে সাজানো। সেই একটি বারের স্মৃতিই আবছা আবছা মনে আছে।

Posted using SteemPro Mobile

চমৎকার অনুভূতি শেয়ার করলেন দাদা অনেক ভালো লেগেছে পড়ে। আসলে ছোটবেলার অনুভূতিগুলো বলে শেষ করা যাবে না। আপনি তো দেখছি দীপাবলি এবং কালীপূজার রাতে খুব আনন্দ করতেন। এগুলো আসলে ছোট বয়সের মজা গুলো আলাদা হয়। তাছাড়া গ্রামে থাকলে তো আনন্দটা আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। শহরের পরিবেশে আবদ্ধ জায়গায় তেমন কিছু অনুভব করা যায় না। চমৎকার কিছু আপনার ছোট বেলার আনন্দের কথা পড়তে পেরে অনেক বেশি ভালো লেগেছে।

  ·  last year (edited)

ছোটবেলায় তো দাদা অনেক মজা করতেন দুর্গাপূজায় ও কালী পূজায় । আসলে আগেকার দিনের মজাগুলো ছিল ভিন্ন রকম আর এখনকার দিনের মজা গুলো অন্যরকম । এখনকার বাচ্চারা অনেক কিছুই মিস করে । নারকেলের মালার তৈরি টর্চ কেমন হয় সেটা তো বুঝলাম না দাদা । কিন্তু অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে । আগেকার দিনের মজাটাই ছিল ভিন্ন রকম । একটা খোলকে যে আবার 160 ডিগ্রী বাকিয়ে ছাউনির মত গোল করা যায় সেটাও আজকে প্রথম জানলাম । ভালই ছোট্টবেলার দিনগুলো অনেক মজার ছিল । এখনো মনে পড়লে খুব মিস করি সেদিনগুলোকে ।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আগের সময়ের ছেলেবেলা আসলেই চমৎকার ছিল।খুব বেশি মজা করতেন।আর বিশেষ দিনগুলোতে তো আরো বেশী মজা হতো।আপনার লেখা ছোটবেলার মজার স্মৃতিগুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। তবে দাদা নারকেলের মালার টর্চ বাতি বেশ দারুন তো।কখনও এমন কিছু দেখার সৌভাগ্য হয়নি।পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম। দারুন ছিল আসলে সেই ছেলেবেলা।যা শুধু সুন্দর স্মৃতি হয়েই মনের মাঝে আছে।ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য। অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই আপনাকে দাদা।

দাদা আপনার ছোটবেলা নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত কেটেছে। তবে এটা ঠিক তখন যতোটা আনন্দ করেছেন,এখনকার ছোটরা তেমন কোনো আনন্দ করতে পারে না। আর দিন যত অতিবাহিত হচ্ছে আনন্দ ততই মাটি হয়ে যাচ্ছে। আমরাও ছোটবেলায় শবে বরাতের রাতে বিভিন্ন ধরনের বাজি ফুটাতাম। ঈদের সময় তো চাঁদ রাত থেকে আনন্দ উল্লাস শুরু করে দিতাম। আর এখনকার দিনে ছোটরা সেগুলোর কিছুই করতে পারে না। যাইহোক পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল দাদা। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

চোদ্দো শাক আর চোদ্দো প্রদীপ এই দুটোর চল আমাদের এখন আছে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে বাবার সাথে মাঠে গিয়ে প্রদীপ দিয়ে আসতাম। দারুন মজা হতো। তবে সাপের ভয়ও খুব ছিলো। ছোটবেলার দিনগুলো খুব মিস করি।

দাদা দ্বিপাবলীর এই নিয়মগুলো কিন্তু আমার আগে জানা ছিল না। তবে আজ আপনার পোস্ট পড়ে কিন্তু জানতে পারলাম চৌদ্দ শাক আর চৌদ্দ প্রদীপের কথা। বেশ ভালোই লাগলো আপনাদের ছেলেবেলার এ সমস্ত নিয়ম কাননের কথা জেনে। ধন্যবাদ দাদা আজকের পোস্টের মাধ্যমে অনেক অজানা কিছু তথ্য শেয়ার করার জন্য।

দীপাবলীর দিন চোদ্দ শাক খাওয়া, চোদ্দ প্রদীপ জ্বালানো এই নিয়ম গুলোই আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে ।তোমার লেখাটা দুবার পড়লাম । রূপকথার গল্পের মতো মনে হচ্ছে । মনে হচ্ছে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছি । জীবনে এমন দিন কখন ও হয়তো আসবে না । কিন্তু লেখা গুলো পড়ে একবার গ্রামে গিয়ে এমন দিন গুলো কাটাতে ইচ্ছে করছে ।

আসলেই রুপকথার মতো ছিলো। সে সময়ের দিনগুলো ছিলো নির্ভেজাল আনন্দের। স্বপ্নের মতো ছিলো প্রত্যেকটা দিন।

বিংশ শতাব্দির নব্বইয়ের দশক ছিলো সবচেয়ে প্রাণবন্তর মধুর শৈশবের। একবিংশ শতাব্দির নব্বইয়ের দশক যে কেমন হবে!!!

সেই শৈশবের প্রতিটি মধুর মুহূর্তগুলো শুধুই স্মৃতির পাতায় থেকে যাবে, যতদিন আমরা বেঁচে আছি। তারপর....
সব স্মৃতিগুলোও হারিয়ে যাবে।

শুনেছি জান্নাতে সব ইচ্ছে পূরণ করা হবে। তখন সেই শৈশবে ফিরে যেতে চাইবো আরেকবার। অথবা আবার দেখতে চাইবো সেই উচ্ছ্বসিত বিকেল....

যাইহোক, দাদার লেখাগুলো পড়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম এক মুহুর্তের জন্য।

play-ground-playing-kid.gif

কালো জলের বুকে ভাসমান আলোর সজ্জা বিশিষ্ট জাহাজটি দেখতে ইচ্ছে করছে দাদা। কল্পনায় সেই শৈশবে হারিয়ে গিয়েছিলাম। সত্যি দাদা মাঝে মাঝে শৈশবের দিনগুলোর কথা খুবই মনে পরে। দাদা আপনার শৈশবের দিনগুলোর কথা জেনে অনেক ভালো লাগলো।

শৈশব আসলেই রঙিন ভাই, তবে যত দিন যাচ্ছে সবকিছুই যেন ক্রমাগত অতল গভীরে হারিয়ে যাচ্ছে। বেশ খানিকটা সময় নিয়েই পড়ে ফেললাম পুরো লেখাটি, মনে হচ্ছিল যেন সেই সন্ধ্যে গুলোতে আমিও আশেপাশেই ছিলাম।

এক কথায় দারুন লিখেছেন 🙏

এখনকার সময়ের থেকে আগেকার ছোটবেলা অনেক বেশী চমৎকার ছিলো এটা আমাদের মানতেই হবে দাদা। আপনার ছোটো বেলার মজার স্মৃতি পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমরাও উপভোগ করলাম আপনার আনন্দ। কিন্তু দাদা নারিকেল মালার টর্চ বাতিটি দেখতে মন চাচ্ছে।

আপনার আজকের এই ছোটবেলার দীপাবলি ও কালীপুজোর রাতে কাটানো মুহুর্তের লেখাটা পড়ে যেন মনে হচ্ছে আমি নিজেই এর ভেতরে অবস্থান করছি। লেখার মাধ্যমে আমি যেন হারিয়ে গেলাম আপনার ছোটবেলায়। আসলে সবকিছু যেন চোখের সামনে ভাসছে। এত সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন যেন আমরা নিজেরাও ছিলাম। সত্যি দাদা খুব ভালো লাগলো। তবে দিন দিন পুরনো স্মৃতিগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এখনকার দিনে ছোটরা পূর্বের মতো আনন্দ করতে পারেনা। কারণ তারা জানেই না যে এত মজার কাজগুলো ছোটবেলায় আমরা করেছি। ছোটবেলার স্মৃতি গুলো মনে পড়লে আসলেই খুব কষ্ট লাগে। ভালো লাগলো দাদা হারিয়ে গেলাম আপনার গল্পে।

দাদা আপনাদের দীপাবলি ও কালীপুজো উপলক্ষে আপনারা যে কাজ গুলো করতেন সে গুলো আমাদের করতে কমপক্ষে সাতদিন সময় লাগবে। আর বর্তমান ছেলে পুলেদের হাতে এত সময় নেই যে কষ্ট করে নৌকা,জাহাজ বানিয়ে,মোমবাতি আর প্রদীপ জালিয়ে সময় নষ্ট করবে। এখনকার ছেলেরা ঠুসঠাস কয়েকটা ফটকা ফুটিয়ে পাপজি খেলায় লেগে যাবে,হা হা হা। ধন্যবাদ দাদা।

পোষ্ট টি পড়তে পড়তে আমিও যেন ছোট বেলায় হারিয়ে গেছিলাম কিছুটা সময়ের জন্য। ভূতচতুর্দশী, চৌদ্দ প্রদিপ,চৌদ্দ শাক এগুলো আমরাও মজা করে পালন করতাম এবং এখনো করি তবে ছোট বেলার মতো আনন্দ লাগে না মনে এখন দায়িত্ব মনে হয় এগুলো করাকে।নারকেল মালার টর্চ বাতি বানানোর পদ্ধতি অসাধার ছিলো দাদা।নৌকা তৈরী করা,জাহাজ তৈরী করা সব গুলো কষ্টকর হলেও বানানোর পদ্ধতি গুলো খুব সুন্দর,নিশ্চই প্রদিপ জ্বালানোর পর নৌকাও জাহাজের সাথে পুকুরের সুন্দর্য ছিলো দেখার মতো এতো সৌন্দর্যের মাঝে তো চোখ ফেরানো কঠিন হবেই।

দাদা আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ছোটবেলায় অনেক মজা করতেন দুর্গাপূজায় ও কালীপূজায়। আগের দিনগুলো আসলেই অন্যরকম ছিল আনন্দময়। ফেলে আসা দিনগুলো আমাদের সবার জীবনে স্মৃতি হয়ে রয়। সেই স্মৃতিগুলো ভোলার মতো নয়। দাদা আপনার পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার কথাই মনে পড়ছে কত আনন্দই না হতো ছোটবেলায় আমরা যে আনন্দ করেছি এখনকার বাচ্চারা সেই আনন্দটা করার সুযোগি পায় না। যতদিন যাচ্ছে আনন্দটাও কমে যাচ্ছে। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

ছেলেবেলার স্মৃতি গুলো এমনিই হয় যে হাজার চেষ্টা করলেও মন থেকে মুছে ফেলা যায় না। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে স্মৃতিগুলো জড়িয়ে থাকে সঙ্গী হয়ে। আপনার ছেলেবেলার দীপাবলির স্মৃতিগুলো কিন্তু বেশ দারুন ছিল। আমার মনে হচেছ স্মৃতিগুলো কেমন যেন চোখের সামনে ভাসছে। আসলে সেকাল আর একালের মধ্যে কিন্তু বিস্তর ফারাক। তবে বর্তমানে দীপাবলির অনেক নিয়ম কানুনই যেন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে আজকের পোস্টটি শেয়ার করেছেন।