নববর্ষের মেলার স্মৃতি

in hive-129948 •  10 months ago 

1200px-ঐতিহ্যবাহী_বৈশাখী_মেলার_একটি_স্টল.jpg
Creative Commons License, Under Fair Usage Policy: Source Wikimedia


ছোটবেলায় নববর্ষের মেলার বেশ কিছু মধুর স্মৃতি রয়েছে আমার । আমাদের গ্রামে চৈত্র মাস যাওয়ার দিনে চড়ক পূজা বা নীল ষষ্ঠী পুজো হতো । আর এই চড়ক পুজো উপলক্ষে প্রায় এক সপ্তাহ ব্যাপী বিশাল এক মেলা বসতো । নববর্ষের মেলা তাই আর আলাদা করে হতো না । চড়ক পুজো আর নববর্ষ দুটি উৎসব উপলক্ষে এই মেলা বসতো ।

আমাদের গ্রামের পশ্চিম দিকে ছিল বিশাল একটা বহু পুরাতন মিষ্টি জলের দীঘি । এই দীঘির নাম ছিল ঠাকুরানী দীঘি । দীঘির উত্তর পাড়ে শতাব্দী প্রাচীন এক বুড়ো বটগাছের তলে ছিল এক বহু পুরোনো শিব মন্দির । এই শিব মন্দিরেই হতো নীল পুজো বা চড়ক পুজো । আর পুজোর দিনে এবং পরের দিন নববর্ষ উপলক্ষে বিশাল এক মেলা বসতো দীঘির উত্তর-পশ্চিম পাড় জুড়ে । দীঘির পাড় ছিল যেমন উঁচু তেমনি প্রকান্ড । আর দিঘীটাও ছিল অনেক বড় । পায়ে হেঁটে দীঘির চারটে পাড় ঘুরে আসতে সময় লেগে যায় প্রায় ১৫-২০ মিনিট ।

খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে একবার আমরা দীঘির পাড়ে ঘুরে আসতাম । এই সময়টাতে মেলার প্রায় সব দোকানই বন্ধ থাকতো, খোলা থাকতো শুধুমাত্র মিষ্টির দোকান । গরম গরম জিলিপি ভাজা হতো তখন । আমরাও ছোটরা ভোরবেলা জিলিপির লোভেই যেতুম মেলায় ।

এরপরে বেলা পড়ে এলে সেজেগুজে দলবেঁধে মেলায় হাজির হতুম আমরা সবাই বন্ধুবান্ধব মিলে । ততক্ষণে মেলা ভীষণ জমে গিয়েছে । হাজার হাজার মানুষ মেলায় গিজগিজ করছে । একদম ছোটবেলায় বাবা-মায়ের সাথেই মেলায় যেতুম । একটু বড় হয়ে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে যেতুম । আমার এখনো মনে আছে শিব মন্দিরের পেছন দিকটাতে দীঘির পুরো উত্তর-পূর্ব পাড় জুড়ে মাটির বিভিন্ন জিনিসের মেলা বসতো । মাটির হাঁড়ি-পাতিল-কলসি থেকে শুরু করে বিভিন্ন আকার ও আকৃতির হরেক রঙের মাটির খেলনা পুতুল উঠতো মেলায় । মাটির কত যে পুতুল উঠতো মেলায় তার ইয়ত্তা নেই । আমি কিনতাম মাটির বাঘ, সিংহ, হাতি, গরু, ঘোড়া, বৌ, স্প্রিং আঁটা ঘাড় নাড়া বুড়ো, মাটির রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, পেঙ্গুইন, ময়ূর আর কত কী !

একবার তো মাটির একটা নৌকা কিনেছিলাম, আর সেটা জলে ভাসাতে গিয়ে টুপ্ করে ডুবে গিয়েছিলো । একবার মাটির একটা ইলিশ মাছ কিনেছিলাম । বেশ বড় সাইজের ইলিশ । মাথার উপরে একটা চ্যাপ্টা ছিদ্র । ওই ছিদ্র দিয়ে পয়সা ঢোকাতে হতো । ইলিশটা আসলে ছিল টাকা জমানোর ঘট ।

বৈশাখী এই মেলায় প্রচুর তালের পাখা বিক্রি হতো । গাঁয়ে তো তখন বিদ্যুৎ ছিল না, তাই গরমে তালের পাখাই ছিল গ্রামের মানুষের নিত্যসঙ্গী । খাবারের দোকানের মধ্যে বেশি ছিল বাদাম, ছোলা-ঘুগনি, তেলেভাজা আর পাঁপরের দোকান । আর ছিল ঘষা বরফ, আইসক্রিম, লেমোনেড আর পানের দোকান । এছাড়া প্রচুর মিষ্টির দোকান আসতো মেলায় । পাওয়া যেত জিলিপি, রসগোল্লা, পান্তুয়া, লেডিকেনি, ছানার জিলিপি, সাদা জিলিপি, রাজভোগ, গজা, বোঁদে, সন্দেশ প্রভৃতি ।

খেলনা আর ছবির দোকানও আসতো প্রচুর পরিমাণে । আমার প্রিয় ছিল খেলনা বন্দুক-পিস্তল । কিনতামও প্রচুর । এছাড়াও প্লাস্টিকের গাড়ি, স্প্রিঙের দম দেওয়া খেলনা গাড়ি আর পুতুলও কেনা হতো । মেলায় সব চাইতে বেশি যে দোকানগুলো আসতো তা হলো মেয়েদের কসমেটিক্স এর দোকান । মেলার বারো আনা ঐসব জিনিসের দোকানেই ভর্তি হতো । আমরা অবশ্য ওদিকপানে যেতুম না কখনো ।

মেলায় নাগরদোলাও আসতো । কিন্তু, আমি জীবনেও কোনোদিন নাগরদোলায় উঠিনি । কারণ, ভয় করতো আমার ।


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

»»——⍟——««

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এই যুগ আর সেই যুগ বর্তমান পার্থক্য কতটা তাহলে উপলব্ধি করলেই বুঝতে পারা যায়। যখন ছোট্ট সময় আমরা মেলায় যেতাম মাটির তৈরি বিভিন্ন ঘোড়া আপনার বর্ণনায় সেই ইলিশ মাছ কি সুন্দর রং করে ডিজাইন করা হয়েছে। সেগুলো দেখলেই মনে হতো যেন সব বাড়িতে নিয়ে যাই। দুই একটা কিনতাম সেই অনুভূতি সেই আনন্দটা খুবই মিস করি । সেই উৎসব মুখর পরিবেশ কম বেশি এখনো আছে কিন্তু আধুনিক হয়ে গিয়েছে ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

বেশ ভালো লাগলো দাদা আপনার আজকের ছেলেবেলার মেলার স্মৃতিচারন। আসলে আমার কাছে মনে হয় ছেলেবেলার মেলা ‍গুলোই যেন সুন্দর ছিল। আর এখনকার মেলা গুলো তে আর তেমন স্বাদ নেই। তবে সত্যি বলতে কি দাদা আপনার পোস্ট পড়ে কিছু সময় হারিয়ে গিয়েছিলাম সেই ছেলেবেলায়। ধন্যবাদ দাদা এমন সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 100 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

দাদা, আপনার নববর্ষের মেলার স্মৃতি পড়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লাম। চট্রগ্রামের লালদীঘির পাড়ের ঐতিহাসিক বৈশাখী মেলা ও জব্বরের বলি খেলা। কত স্মৃতি সেই মেলা ঘিরে। ছোটতে বাবার হাত ধরে মেলায় যেতাম! কত স্মৃতি। এখনো চট্রগামে বৈশাখী মেলা ও জব্বরের বলি খেলা হয় কিন্তু কতদিন যাওয়া হয়না!! আপনার লেখাটি খুব ভালো লেগেছে দাদা। আমাদের দেশেও বিভিন্ন জায়গায় চৈত্রসংক্রান্তিতে মেলা ও বৈশাখী মেলা হয়। তবে আগের মত আর জৌলুস নেই। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করে পড়বার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।

মেলার স্মৃতি পড়ে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পরে গেলো।আগে আমিও মেলায় যেতাম বাবার সাথে তখন মাটির ফলগুলো কিনতাম।আর একটু বুঝ হওয়ার পর মেলায় যাওয়া হয়নি অনেক ভীড় হয় তাই।আসলে ছোট বেলার স্মৃতি ভুলার নয়। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ

Posted using SteemPro Mobile

কিন্তু, আমি জীবনেও কোনোদিন নাগরদোলায় উঠিনি । কারণ, ভয় করতো আমার ।

বলেন কি দাদা,নাগরদোলায় চড়তে তো আমার অনেক ভালো লাগে। ছোটবেলায় প্রচুর নাগরদোলায় চড়েছি এবং কয়েকমাস আগেও নাগরদোলায় চড়েছিলাম। যাইহোক আমাদের বাসার পাশে বছরে বেশ কয়েকবার মেলা বসতো এবং ছোটবেলায় মেলা থেকে আমরাও অনেক পিস্তল-বন্দুক কিনতাম ও পুঁতির গুলি মারতাম অন্য মানুষের শরীরে। সপ্তাহ ব্যাপী বিশাল মেলায় তো আপনারা বেশ মজা করতেন দেখছি। মাটির তৈরি জিনিসপত্র গুলো দেখতে আসলেই খুব ভালো লাগতো দাদা। পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। যাইহোক এতো চমৎকার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

হাহাহাহা নাগর দোলায় ভয় করতেন দাদা। আপনার নববর্ষের মেলায় যাওয়া ঘোরাঘুরি কেনাকাটার গল্পগুো খুব ভালো লাগলো।মাটির নৌকা কিনে তা জলে দেয়ার কারণে টুপ করে জলে ডুবে গেছে জেনে হাসি পেলো।ধন্যবাদ দাদা ছোটবেলায় মেলার স্মৃতিচারণ করে সুন্দর পোস্ট টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

This is a nice post you have made, this post contains so many memories that you have shared.

Thanks for sharing with us Dada ☺️❤️❤️❤️

দাদা মেলা থেকে মাটির বউ কিনে আনতেন,তাহলে প্রত্যেক বছর একটি করে আপনার নতুন মাটির বউ হতো, হা,হা,হা। এতগুলো বউকে কিভাবে সময় দিতেন দাদা....। নাগরদোলায় আমিও জীবনে উঠি নাই, আমিও এই জিনিসটা খুব ভয় পাই। ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

নৌকা কিনে আর লাভ কি,যদি ডুবিয়েই ফেলেন!হাহাহা।
মেলায় আসলে মেয়েদের জিনিষপত্র ই উঠে বেশিরভাগ।

দাদা আপনার মেলার পোস্ট পড়ে মেলার কথা মনে পড়ে গেল।তবে আপনি কখনো নাগরদোলায় চড়েননি সত্যি অবাক করার বিষয়।আর মেলা থেকে মাটির জিনিস গুলোর ভিতরে টাকা রাখা যেত এখনো যায়
আর এগুলো বাচ্চাদের বেশি পছন্দ। ধন্যবাদ দাদা আপনার অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

দাদা ভালো লাগলো আপনার সেই শৈশব জীবনে কাটানো নববর্ষ মেলার বিভিন্ন খেলনা সাথে খাবারের দোকান ৷ তবে দাদা বর্তমান সময়ে তাগিদে অনেক কিছু বদলে গেছে ৷ দাদা আপনি নাগড় দোলার কথা বলতেছেন ৷ আমি ভয়ে উঠি না ৷ কারন আমার মাথা ঘোরে আর বুক কাপে
যা হোক চড়ক পুজো আপনাদের দেশে দারুন হয় সেটা জানি ৷ ভালো লাগলো দাদা আপনার শৈশব জীবনে কাটানো নববর্ষ ঘটনা গুলো পড়ে ৷

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দীঘির চারিপাশ ঘুরে আসতেই ২০-২৫ মিনিট লাগে! বাবারে,কতো বড় দীঘি এটা ছিল দাদা। তবে ছোটবেলার মেলার স্মৃতিগুলো এখন চোখের সামনে ভাসছে। আহ! বিকেল হলেই ৪০ টাকা নিয়ে চলে যাওয়া মেলায়। তারপর গরম গরম জিলাপি, আর একটা প্লাস্টিকের বন্ধুক কেনা! টাকা বাকি থাকলে লেমনড শরবত খাওয়া হয়ে যেত। তবে দাদা আপনি তো নাগরদোলা মিস করে ফেললেন 🙆‍♂️। নাগরদোলায় কিন্তু মজা ছিল দাদা

দাদা এই বৈশাখ এবং পূজা উপলক্ষে হওয়া মেলা টাকে কী অনেক জায়গাই চড়কের মেলা বলে নাকী? আমিও আপনার মতো ভয় করে বলে কখনো নাগরদোলায় উঠিনি। আপনার মুখে শৈশবের মেলার গল্প শুনে বেশ ভালো লাগল। কিন্তু একটু খারাপও লাগল। এখন সেসব বিলুপ্ত বলা যায়। ফ‍্যান এসির এই যুগে এখন আর তালের পাখাও দেখা যায় না।।

Posted using SteemPro Mobile

ছোট বেলার সেই বৈশাখী মেলার অনেক সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করলেন দাদা। সত্যি বলতে গ্রামের বৈশাখী মেলা গুলো আলাদা আনন্দের হয়। বিশেষ করে আমাদের গ্রামে যখন বৈশাখী মেলা হত তখন বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন বৈশাখী সিজনের ফল পাওয়া যেত। তাছাড়াও অনেক ধরনের খেলাধুলার দোকান বসে। বেশ ভালোই লাগে সেই দিনের কথা মনে করলে। আপনি ঠিক বলছেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মিষ্টি জাতীয় দোকান বেশি বসে মেলাতে। তবে আপনি যে মাটির একটি নৌকা কিনে পানিতে ভাসাতে গেলেন সেই মুহূর্তটা খুবই হাসি পেল। যেহেতু মাটির নৌকা পানিতে তো ডুবে যাবে হি হি হি। আপনি মিষ্টি খাওয়ার অনেক সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করলেন। সেই সোনালী দিন গুলো এখন নেই বললেই চলে।

চড়ক পুজোর জন্যেও আমাদের এই দিকে বিশাল বড় মেলা না হলেও মোটামোটি মেলা প্রায় প্রতিবারই বসে। সেই ছোট বেলা থেকেই দেখি। পিঠেতে সূচ ফুটিয়ে মানুষ ঘোরানোর দৃশ্যটা আমার কাছে আকর্ষনীয় আবার একটু ভয় লাগে।

আপনি আপনার স্মৃতিচারণ খুব সুন্দরভাবেই করেছেন দাদা। আহা, এগুলো মনে পড়লে নিমিষেই খারাপ মন, ভালো হয়ে যায়।

এইতো বাংলা নববর্ষ চলে এসেছে আর কিছুদিন বাকি। বাংলা নববর্ষকে ঘিরে অতীতের স্মৃতিগুলো অনেক চমৎকার ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন দাদা। তবে আমিও আপনার মত কখনো নাগর দোলায় ওঠেনি। একবার ও উঠতে যেয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে নাগরদোলার লোককে বলে নেমে পরেছিলাম। নববর্ষকে ঘিরে আমাদের এখানেও আগে মেলা হতো। সেই মেলার যে কত স্মৃতি রয়েছে, দাদা। আপনার পোস্টটি পড়ে সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল। একদিন সেই স্মৃতিগুলো নিয়ে পোস্ট করব ভাবছি, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

দিলেন তো ভাই, এই ভোর রাতে একদম ছোটবেলা কে মনে করিয়ে। শৈশবের এমন বহু সুখকর স্মৃতি, জড়িয়ে আছে আমার সঙ্গেও । একবার প্রাইমারি স্কুলের বন্ধুরা মিলে , নববর্ষের মেলাতে গিয়ে নাগরদোলাতে উঠেছিলাম, আমার এক বাল্যবন্ধু সে কি যে অবস্থা করে ফেলেছিল,সে কথা বলা বড্ড লজ্জাজনক। ভিজিয়ে দিয়েছিল তার নীল রঙের হাফপ্যান্ট।

আহারে শৈশব, শুধু স্মৃতিই রয়ে গিয়েছে।

দারুণ উপভোগ করলাম লেখাটি ভাই।

ওয়াও, মাটির ইলিশ!!

মাটির ইলিশের প্রথম লাইন পড়েই আমার মনে হলো আরে ছোটবেলায় তো মেলা থেকে বড় সাইজের সোনালী রংয়ের মাটির ইলিশ কিনে নিয়ে আসতাম টাকা জমাবো বলে। ওগুলো ছিলো মাছের আকৃতির মাটির ব্যাংক। ছোটবেলায় তো আমরা এক একটা ব্যাংকের মালিক ছিলাম। হাহাহা।

ছোটবেলার সেই রঙিন সময়ের গল্প পড়তেও ভালো লাগে। দারুন ছিলো আপনার ছোটবেলা।

দাদা আপনার পোস্ট পড়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আসলে ছোটবেলায় মেলায় গেলে কত বায়না ধরতাম এটা কিনব এটা কিনব।মেলায় মাটির জিনিস গুলো দেখতে
আসলেই অনেক ভালো লাগে। তবে এই মাটির জিনিস গুলো এখনো পাওয়া যায়। আপনি নৌকা কিনেছিলেন আর সেই নৌকা জলে ভাসাতে গিয়ে পানিতে ডুবে গিয়েছিল। আসলেই দাদা গ্রামে তো কারেন্ট থাকে না তাই তালের পাকা তাদের নিত্য সঙ্গী। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো দাদা এবং ছোটবেলার স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছিলাম।

দীঘির পাড় ঘুরতে ১৫-২০ মিনিট লেগে যেতো। দীঘি তো বিশাল মাপের। এতো বড়ো দীঘি আজকাল দেখাই যায় না। এখন কি সেটা আছে দাদা?

মেলায় মাটির পুতুল সেই কতদিন আগে দেখেছিলাম। এখন তো সবই প্লাস্টিকের।

পড়ছি আর মাধ্যমিকে বটতলায় বৈশাখী মেলায় যাওয়ার স্মৃতি কেবল মনে করছি।

আমার আকর্ষণ ছিল বাঁশি, মাটির বিভিন্ন খেলনা যেমনটি বললেন, নানান সস্তা বন্দুক ও পিস্তল, জীবনে প্রথম দেখা অনেক রকমের খেলনা, টিউবে জল এবং জরি সম্বলিত খেলনা আর নানাবিধ খাবার যেমন চমচম, মুরালি, কইটা, জিলাপি ইত্যাদি।

আমি কিনতাম মাটির বাঘ, সিংহ, হাতি, গরু, ঘোড়া, বৌ, স্প্রিং আঁটা ঘাড় নাড়া বুড়ো, মাটির রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, পেঙ্গুইন, ময়ূর আর কত কী !

দাদা, এই গুলোর মধ্যে আমার কাছে স্পেশাল লাগলো মাটির তৈরি বউ। হা হা হা...🤭🤭 তবে দাদা আমি যতবার বৈশাখী মেলায় গেছি, বাড়িতে ফেরার সময় তাল পাতার পাখা অবশ্যই কিনে নিয়ে আসতাম। কারণ তখন আমাদের গ্রামে কারেন্ট ছিল না। তাছাড়া বিভিন্ন রকম খেলনা বন্দুক বা পিস্তল এগুলো তো ছিলই। সেই কথাগুলোই আসলে মনে পড়ে গেল তোমার এই পোস্ট পড়তে পড়তে।