প্রাণিজগতের কিছু অজানা বিস্ময়কর তথ্য

in hive-129948 •  4 years ago  (edited)

সবার আগে মানুষ কুকুরকে পোষ মানায়, বিজ্ঞানীদের মতে কুকুরের সাথে মানুষের বন্ধুত্ব সেই Pleistocene যুগ থেকে; তার মানে আড়াই লক্ষ বছর আগে থেকেই কুকুরের সাথে মানুষের মিতালী । শিকারের কাজে প্রাচীন যুগের মানুষ কুকুরদের ব্যবহার করত । এখনও কিছু কিছু আদিবাসী শ্রেণীর মানুষ কুকুদের শিকারের কাজে লাগায় । এই ২,৫০,০০০ বছর পরেও কুকুরের মানুষের প্রতি প্রভুভক্তি আর বিশ্বস্ততা বিন্দুমাত্র কমেনি ।

কুকুরের পরেই আছে ছাগল জাতীয় প্রাণীরা , প্রায় ১০,০০০ বছর পূর্বে মানুষ এদের গৃহপালিত প্রাণী হিসাবে গ্রহণ করে ।

এর পরে কোন জন্তুর অবস্থান বলতে পারেন ? গরু? ঘোড়া ? নাকি বিড়াল ? এদের কোনোটাই নয় । চিতা । হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন, প্রায় ৫,০০০ বছর পূর্বে মানুষ চিতা পুষত শিকারের কাজে লাগানোর জন্য ।

মানুষ সব চাইতে বুদ্ধিমান প্রাণী, কিন্তু আপনি জানেন কি মানুষের প্রায় কাছাকাছি বুদ্ধিমান প্রাণী কী ? বানর জাতীয় প্রাণী ভাবছেন ? যেহেতু মানুষের উৎপত্তি বানর থেকেই তাই বানর জাতীয় প্রাণীই মানুষের পরে সব চাইতে বুদ্ধিমান প্রাণী হবে; কি ঠিক তো ? কিন্তু, দুঃখের বিষয় এটা সম্পূর্ণ ভুল । মানুষের পরে বুদ্ধিমত্তায় শীর্ষে অবস্থানকে করছে কোনো বাঁদর জাতীয় জীব নয়, কোনো স্থলচর জীব-ই নয়, জলচর জীব । জলচর , কিন্তু তারাও স্তন্যপায়ী জীব । হ্যাঁ , তারা আর কেউ নয় , তারা হলো ডলফিন বা শুশুক জাতীয় প্রাণী।এদের মধ্যে আবার কিছু প্রজাতি তিমি জাতীয় , যেমন Killer Whale বা খুনে তিমি । ডলফিন আবার মানুষের পরম বন্ধু । সমুদ্রে বিপদগ্রস্ত নাবিকদের এরা হাঙর জাতীয় হিংস্র জলচর প্রাণীদের হতে রক্ষা করে ।

আপনি জানেন কি কুমির, ঘড়িয়াল, কচ্ছপ, তিমি, ডলফিন, জলার সাপ এই সব জলচর প্রাণীও কিন্তু আমাদের মত স্থলচর প্রাণীদের মত জলে ডুবে মারা যেতে পারে । কি অবাক হচ্ছেন তো ? আসলে এই সব প্রাণীগুলো জলচর হলেও মৎস্য জাতীয় প্রাণী নয় , অর্থাৎ এরা কেউই Pisces শ্রেণীভুক্ত নয়, এদের কেউ mammalia শ্রেণীর (যেমন - তিমি, ডলফিন), কেউ reptiles (যেমন - কুমির, কচ্ছপ) বা কেউ amphibians (যেমন - অ্যানাকোন্ডা) ।এরা দীর্ঘক্ষণ জলে থাকতে পারে ঠিকই , কিন্তু জলে ডুবে মরার সম্ভাবনাও থাকে । যেমন তিমি , তিমি একটানা ৪০ মিনিট জলের নিচে ডুবে থাকতে পারে কিন্তু তারও বাতাস থেকে নিশ্বাস নেয়া লাগে, তাই কোনো কারণে বাতাস থেকে নিশ্বাস নিতে না পারলে তিমির ঘটে সলিল সমাধি । তাই তো তিমি বাচ্চা জন্ম দেয়ার পরে থেকে থেকে পাখনা দিয়ে বাচ্চা কে জলে উপরে তুলে দেয় যাতে সদ্যজাত বাচ্চা বাতাস থেকে টাটকা অক্সিজেন নিতে পারে ।

বাঘের গায়ে যে কালো কালো ডোরা কাটা দাগ থাকে সেটা কি শুধুই তাদের গায়ের লোমের উপরে থাকে ? না ! আসলে বাঘের গায়ের এই রাজকীয় ডোরা কাটা দাগ তাদের চামড়ার উপরেও থাকে । যদি বাঘের লোম কামিয়ে দেয়া হয় তবে ওই ডোরা গুলো দৃশ্যমান হবে । আশ্চর্য !!! তাই না ?

জেব্রা র চামড়া হলো পুরোপুরি কালো । আর চামড়ার উপরের কোট টা হলো কালোর উপরে সাদা ডোরা । একটা জেব্রা'র সাদা-কালো ডোরার প্যাটার্ন এর সাথে পৃথিবীর আর কোনো জেব্রা'র ডোরা'র প্যাটার্নের মিল নেই; পুরোপুরি ভিন্ন প্যাটার্ন । ঠিক যেমন আমাদের হাতের আঙুলের ছাপ, বাঘের গায়ের ডোরা, কুকুরের নাকের ছাপ ইত্যাদি একেবারে ইউনিক, একটার সাথে আরেকটার কোনও মিল নেই ।

আজ আর বেশি কিছু লিখলাম না । এই পর্যন্তই থাক, কাল আবার চেষ্টা করবো কিছু লিখতে । শুভ রাত্রি ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সুন্দর কিছু তথ্য দিয়েছেন ভালো লাগলো প্রাণী জগত সম্পর্কে জানতে পেরে । বিশেষ করে তিমির বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

অনেক ধন্যবাদ ।
বাঘের ছবি যখন দিয়েছি তখন বাঘ সম্বন্ধেও একটা তথ্য যোগ করে দেই -

বাঘের গায়ে যে কালো কালো ডোরা কাটা দাগ থাকে সেটা কি শুধুই তাদের গায়ের লোমের উপরে থাকে ? না ! আসলে বাঘের গায়ের এই রাজকীয় ডোরা কাটা দাগ তাদের চামড়ার উপরেও থাকে । যদি বাঘের লোম কামিয়ে দেয়া হয় তবে ওই ডোরা গুলো দৃশ্যমান হবে । আশ্চর্য !!! তাই না ?

ভাইয়া, জেব্রার গায়ের চামড়ার বৈশিষ্টও তো একই রকম। তাই নয় কি?🙃

জেব্রা র চামড়া হলো পুরোপুরি কালো । আর চামড়ার উপরের কোট টা হলো কালোর উপরে সাদা ডোরা । একটা জেব্রা'র সাদা-কালো ডোরার প্যাটার্ন এর সাথে পৃথিবীর আর কোনো জেব্রা'র ডোরা'র প্যাটার্নের মিল নেই; পুরোপুরি ভিন্ন প্যাটার্ন । ঠিক যেমন আমাদের হাতের আঙুলের ছাপ, বাঘের গায়ের ডোরা, কুকুরের নাকের ছাপ ইত্যাদি একেবারে ইউনিক, একটার সাথে আরেকটার কোনও মিল নেই ।

এইটাও জানা ছিল না আমার । ভালো তথ্য দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

মানুষের পরে সবচেয়ে কাছাকাছি প্রাণীটি সত্যিই ডলফিন। আর ডলফিন এর মস্তিস্ক মানুষের মস্তিস্কের চেয়ে আকারে বড়। এদের জটিল আচরণের জন্যই প্রাণী বিজ্ঞনীদের কাছে প্রমাণিত হয়েছে । ধন্যবাদ ভাইয়া, এই ইনফোরমেটিভ লেখাটির জন্য। 😀😀😀

একেবারে সঠিক

  ·  4 years ago (edited)

খুবই জানা অজানা তথ্য নির্ভর পোস্ট।ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

প্রাণীজগৎ সম্পর্কে অনেক সুন্দর একটি বর্ণনা দিয়েছেন। অনেক অজানা কিছু বিষয় জানতে পারলাম। অনেক ধন্যবাদ প্রাণী সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য তুলে ধরার জন্য।