কোলকাতার কালী পুজো - পর্ব ১৪

in hive-129948 •  8 months ago 

IMG_20231114_032449.jpg


"মহেঞ্জোদারো" থিম পুজো প্যান্ডেলের মাত্র ২০০ মিটার দূরে এই পুজো প্যান্ডেলটি ছিল । এটিও একটি ছোটোখাটো পুজো প্যান্ডেল । তবে, এই পুজো প্যান্ডেলেরও থিমটি বেশ আকর্ষণীয় ছিল । এবছরকার থিম ছিল "স্বপ্ন" । পুরো পুজো প্যান্ডেলটা সাজানো হয়েছিল "স্বপ্ন" দিয়ে । মনুষ্য জীবনের একটি খুব বড় রহস্যময় বস্তু হলো এই স্বপ্ন । ঘুমের মধ্যে আমরা স্বপ্ন দেখি । এই স্বপ্নটা আসলে কি জিনিস সেটি সম্পর্কে এখনো সম্পূর্ণ ধারণা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে আধুনিক বিজ্ঞান । তবে বেশ কিছু সর্বজনগ্রাহ্য মতবাদ (hypothesis) চালু রয়েছে মানুষের স্বপ্ন দেখার পেছোনকার রহস্য নিয়ে ।

মানুষের মতো Ape অর্থাৎ, বাঁদর জাতীয় প্রাণীও কিন্তু স্বপ্ন দেখে । স্বপ্ন দেখে তিমি এবং ডলফিন প্রজাতিও । স্তন্যপায়ী প্রাণীদের জীবনে ঘুম একটা অত্যাবশ্যকীয় জিনিস । না ঘুমিয়ে মানুষ বাঁচতে পারে না । ঘুম মানুষের শরীরের বৃদ্ধিসাধন ও ক্ষয়পূরণ করে । আর এই ঘুমের সময় আমাদের চোখের পাতা বন্ধ থাকে । মস্তিষ্কের একটা অংশ কিন্তু সচেতন থাকে ঘুমের মধ্যেও । এই অংশ আমাদের হার্ট, কিডনি, লাংস, লিভার, স্টোমাক প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সচল রাখে । বাকি অংশগুলো আক্ষরিক অর্থেই ঘুমিয়ে পড়ে । কিন্তু, মানব মস্তিষ্কের কোন অংশ আমাদের স্বপ্ন দেখায় ? এর নাম-‘হাইপোথ্যালামাস (Hypothalamus) । এই অংশ গভীর ঘুমের সময় বন্ধ চোখের পাতার দ্রুত সঞ্চালনের মাধ্যমে আমাদের ব্রেইনে ছবি দেখার সংকেত পাঠায় । তাই আমরা স্বপ্ন দেখি । সারাদিনের যাবতীয় কাজকর্ম, চিন্তাভাবনার একটা অংশ আমাদের subconscious mind বা অবচেতন মনে জমা থাকে । গভীর ঘুমের সময় সেই অবচেতন মনের বন্ধ ঘরের জানালা খুলে যায় ।

যেহেতু, ঘুমের সময় আমরা অবচেতন থাকি তাই যুক্তিগ্রাহ্য ঘটনা বা দৃশ্যের বাইরে অবাস্তব, অযৌক্তিক ঘটনাবলী বা দৃশ্যাবলী আমাদের স্বপ্নের মধ্যে ফুটে ওঠে । এখন প্রশ্ন হলো চোখ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও আমরা এতো স্পষ্টভাবে স্বপ্নে ঘটনাবলী বা দৃশ্যাবলী দেখি কি করে ? এর উত্তর লুকিয়ে আছে মানুষের ব্রেইনের কর্মকান্ডের মধ্যে । দেখা বা দর্শন আসলে কি ? এটা জাস্ট আমাদের ব্রেইনে অনেকগুলো ইলেক্ট্রিক ইমপালস ছাড়া আর কিছুই না । চোখ খোলা রাখলে আমাদের চোখের মণির লেন্সের মধ্যে দিয়ে যে কোনো দৃশ্যের ছবির ছায়া পড়ে, এটাই রেটিনায় প্রতিভাত হয় উল্টো করে । এই উল্টো ছবি রেটিনা থেকে স্নায়ুর মাধ্যমে ব্রেইনে কতকগুলো ইলেক্ট্রিক সংকেত হিসেবে পৌঁছায় । ব্রেইন তখন সেই ইলেক্ট্রিক সংকেতগুলো বিশ্লেষণ করে আবার ছবিটি পুনরুদ্ধার করে এবং তাকে উল্টো করে আমাদের ব্রেইনে ইলেক্ট্রিক ইমপালস হিসেবে পরিণত করে । ঠিক তখনই আমরা দৃশ্যটি দেখতে পাই ।

তাই ঘুমের মধ্যে বাইরের দৃশ্যের ছায়া রেটিনায় না পড়লেও, চোখের মণি দ্রুত সঞ্চালন করে কিছু ফেক দৃশ্য দেখার অনুরূপ ইলেক্ট্রিক সংকেত তৈরী করে ব্রেইন এ প্রেরণ করে । ব্রেইন তখন সেটালে বিশ্লেষণ করে দৃশ্যে বদলে আমাদের দেখায় । অর্থাৎ, তখন আমাদের অবচেতন মন চোখের মণির দ্রুত এবং rapid সঞ্চালনের মাধ্যমে ব্রেইনকে একরকম ধোঁকা দিয়ে স্বপ্নের জাল বোনে । আর সেটাই আমরা দেখি ।

আমাদের অধিকাংশ স্বপ্নই মনে থাকে না । একজন মানুষ প্রতিরাতে গড়ে ২০-২৫ টা স্বপ্ন দেখে । মন ভালো থাকলে মধুর স্বপ্ন আর মন বিক্ষিপ্ত থাকলে দুঃস্বপ্ন দেখায় আমাদের ব্রেইন ।

এই প্যান্ডেলে আমাদের সুমধুর স্বপ্নকে বেজ করে একটা রূপকথার রাজ্য গড়ে তুলেছে । প্যান্ডেলটা একটা স্বপ্নপুরী । অপূর্ব আলো আঁধারির ছায়া, তার মাঝে সুন্দর সুন্দর ফুল আর প্রজাপতি, পাখপাখালি আর পরী মূর্তি । অসম্ভব সুন্দর লেগেছে তাই এই পুজো প্যান্ডেলটি ।


স্বপ্নরাজ্যে ঘুমন্ত ফুলপরীর হাস্যমুখ ।
তারিখ : ১৪ নভেম্বর, ২০২৩
সময় : রাত ০১ টা ১৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


দুধসাদা হাতি ।
তারিখ : ১৪ নভেম্বর, ২০২৩
সময় : রাত ০১ টা ১৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


স্বপ্নপুরীর গেটটা দারুন সুন্দর করেছিল ।
তারিখ : ১৪ নভেম্বর, ২০২৩
সময় : রাত ০১ টা ২০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


স্বপ্নপুরীতে তনুজা আর টিনটিনের ফোটোগ্রাফি ।
তারিখ : ১৪ নভেম্বর, ২০২৩
সময় : রাত ০১ টা ২০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


দেবী মূর্তি ।
তারিখ : ১৪ নভেম্বর, ২০২৩
সময় : রাত ০১ টা ৩০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)


তারিখ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

টাস্ক ৫১১ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : 178ed6cf9a51e90e1a507b7cab683bf616710717560e6ff9f4f9f9589c82e676

টাস্ক ৫১১ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

»»——⍟——««

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

God bless you, colleague engineer in computer systems, a big hug.

I used to use dlease to delegate and earn steem but it has shutdown now.

Do you know anything similar bro? Or is there any other alternative to delegate and earn?

You can delegate to abb-curation ti get upvotes to your daily posts.

Thanks for the response but I was looking to earn steem passively by just delegating. I don't think I'll be able to post actively daily.

you can try upvu or nixiee

@upex is much better in terms of ROI I believe

Is there any link to compare options for delegation?

Is this similar to abb-curation? Or is it different than that? Is there anywhere I can get more info on these services?

Dada you are my true inspiration. I am biggest fan pf yours. Give me blessings that I can manage my family.

Posted using SteemPro Mobile

বাহ্! প্যান্ডেলটা দেখে একেবারে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। রূপকথার রাজ্য দেখে চোখ দুটি একেবারে জুড়িয়ে গিয়েছে। স্বপ্ন নামক থিম অনুযায়ী চমৎকার আয়োজন করেছে তারা। আপনি স্বপ্ন নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন দাদা। আমাদের টিনটিন বাবুকে দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। প্রতিটি ফটোগ্রাফি চমৎকার ভাবে ক্যাপচার করেছেন দাদা। স্বপ্নরাজ্যের ঘুমন্ত ফুলপরীর হাস্যমুখ দেখে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। সবমিলিয়ে পোস্টটি বেশ উপভোগ করলাম দাদা। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

দাদা প্যান্ডেলটা এককথায় অসাধারণ।
আর স্বপ্ন থিমে তৈরি করে, এটার একদমই আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।
আর দাদা স্বপ্ন নিয়ে আপনার বিশদ আলোচনা শুনে আমি একেবারে আশ্চর্য হয়ে গেলাম, আপনার জ্ঞানের পরিধি আসলেই অনেক দূর। আমরা প্রতিনিয়ত আপনার কাছ থেকে শিখে চলেছি এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
টিনটিন সোনা আর বৌদিকেও ছবিতে দারুন দেখাচ্ছে।
দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

স্বপ্ন সম্পর্কে এত কিছু ধারনা ছিল না দাদা, সত্যিই অনেক নতুন কিছু জানতে পারলাম, এই জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সাথে টিনটিন বাবু কে ও দেখতে পেয়ে অনেকটাই ভালো লাগলো। মহেঞ্জোদারো থিম নিয়ে স্বপ্নের উপর ভিত্তি করে এই পূজা প্যান্ডেল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে জেনে অনেক ভালো লাগলো দাদা। লাইটিংগুলো অসাধারণ ছিল আপনাকে সর্বোপরি অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

You have shared another interesting post Dada, I love the theme of the puja pandal, "dream".

It is true that we all dream, some believe dreams to be a prophecy while some believe that dreams are as a result of what you thought about last before going to bed.

Thank you so much for sharing this unique post with us ❤️❤️❤️

Posted using SteemPro Mobile

দাদা প্রথমত বলবো যে আপনি স্বপ্ন নিয়ে অনেক কথা বলেছেন ৷ যেগুলো আগে জানতাম না ৷ তবে আজকে এই বিষয়ে জানতে পারলাম ৷
যা হোক পুজোর পুরো থিম টা অসাধারণ ছিল ৷ প্যান্ডেল গেট মূর্তি ওয়াও ৷

স্বপ্নরাজ্যে ঘুমন্ত ফুলপরীর হাস্যমুখ । ফটোগ্রাফি টিও দারুন ছিল ৷ যা হোক বৌদ টিনটিন সহ সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছেন ৷ অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা ভালো থাকবেন এমনটাই প্রত্যাশা করি ৷

Please vote for black-sparrow

দারুন বিশ্লেষণ করেছেন ভাই মানুষের স্বপ্ন দেখা নিয়ে, বেশ ভালই লাগলো, এই ভোর রাতে লেখাটা পড়ে। ছবিগুলো যেমনটা ভালো লেগেছে, তেমনটা যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে তথ্যগুলো।

পুজো প্যান্ডেলের থিমটি অসাধারণ ছিল দাদা। পুজো প্যান্ডেলের থিমটি সাজানো হয়েছিল স্বপ্ন নিয়ে এবং অনেক চমৎকার আয়োজন করা হয়েছিল দেখে বেশ ভালো লাগলো। তবে স্বপ্ন সম্পর্কে এত ধারণা ছিল না আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম দাদা। টিন টিন বাবু ও বৌদিকে খুব সুন্দর লাগছে। প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি মনমুগ্ধ করছিল।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

থিমটা সত্যি দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলেছে সুন্দর ও কালারফুল দৃশ্যগুলোর মাধ্যমে, দৃশ্যগুলো দারুণ লেগেছে। বৌদি এবং টিনটিনকেও দারুণ লাগছে। তবে স্বপ্ন দেখার পেছনে যে এতো কথা সেটা জেনে বেশী ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ।