আমার বাংলা ব্লগ। ফেলে আসা ২৭ শে রমজান। ১০% পে-আউট লাজুক খ্যাক এর জন্য।

in hive-129948 •  3 years ago 
আমার বাংলা ব্লগের সকল সহযোগী এবং সহযোদ্ধাদের জানাই আসসালামুয়ালাইকুম। আশাকরি সকলেই এই কঠিন পরিস্থিতিতে আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর অশেষ কৃপায় ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে চলে এলাম ফেলে আসা ২৭ শে রমজান নিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে, আশা করি সকলেরই ভালো লাগবে।

চলো যাওয়া যাক মূল পর্বে।

ফেলে আসা ২৭ শে রমজান।

ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে অনেক ফটোগ্রাফি করেছি। অনেক গল্প মনে পড়ে গেছে, আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারেনি আমার বাড়িতে নেটওয়ার্কের খুব সমস্যা, নেট থাকে না বললেই চলে। তাই এখন আমি চেষ্টা করব আস্তে আস্তে আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

20220501_174848.jpg

আমার বাংলা ব্লগের আমার প্রিয় বন্ধুরা আপনারা সকলেই জানেন, সাতাশে রমজানের দিন আমি আমার এক চাচাতো বোনকে কিছু টাকা দিতে গিয়েছিলাম। এবং দুপুরবেলা প্রচন্ড খরতাপের মধ্যে আমি আবার রওনা দিলাম। কিন্তু আমি আসতে পারিনি, মাঝখানে বিরতি দিতে হলো। জোহরের নামাজ আদায় করে আমি মসজিদ থেকে আর বেরোতে পারেনি। মসজিদ এই দুই ঘণ্টার মত রেষ্ট নিয়ে ছিলাম। এতটাই খারাপ লাগছিল যে, আমার ছলা প্রায় অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল। যাই হোক তবে আমার যত কষ্ট হোক যেতে হবে। কারণে আমার সমাজের মসজিদে আমার দাওয়াত ছিল, মাগরিবের নামাজের আগে আমাকে সেখানে উপস্থিত হতে হবে।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


মসজিদে ঘুম থেকে উঠে আসরের নামাজ শেষ করে মোটামুটি পাঁচটা বেজে গেছিল, রওনা দিলাম আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে। বাড়িতে আসতে আসতে প্রায় ছয়টা বেজে গিয়েছিলো। তাড়াহুড়ো করে গোসল দিয়ে বের হব মসজিদে যেতে হবে। আমাকে ইফতারের আগ মুহূর্তে এর ভিতরে অনেকগুলো ফোন এসেছে। আমি সবাইকে বলছি আসতেছি, বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় এই সেলফিটা নিয়েছিলাম। আর গায়ের যে পাঞ্জাবিটা দেখতে পাচ্ছেন জানিনা কার কাছে কেমন লাগবে এই পাঞ্জাবীটা আমার শালিকা ঈদ উপলক্ষে গিফট পাঠিয়েছে। কতটুকু ম্যাচিং হয়েছে সেটা জানি না, তবে কাল আমার খুব পছন্দ, তাই পাঞ্জাবীটা পরলাম।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


20220501_181449.jpg

মসজিদে গিয়ে মসজিদের বারান্দায় অনেকের সাথে কুশল বিনিময় হলো। যেহেতু ২৭ শে রমজান বলতে গেলে এটা ছিল আমরা যারা শহরবাসী আছি আমাদের সবার মিলনমেলা। ইফতার পার্টির আয়োজন বেশ বড়ই ছিল। বড় মসজিদের ভিতরে গিয়ে বসলাম এবং বয়ান শুনছি। আর ২৭ শে রমজান আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। যদিও আমাদের বাংলাদেশের শে রমজান কে একটু বেশি গুরুত্ব দেয়, তবে সঠিক নিয়ম হচ্ছে 20 রমজানের পর থেকে বেজোড় পাঁচটি রাত্রি মুসলমানকে লাইলাতুল কদরের নামাজ পড়তে হবে। এবং লাইলাতুল কদর এই বেজোড় পাঁচটি রাত্রির মধ্যে যেকোনো একটি রাত্রী হতে পারে। এর নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই। তাই আল্লাহর কোরআন হাদীসে লিখা আছে রমজানের শেষ দশ দিন বেশী বেশী আমল করার জন্য। আর সেই উদ্দেশ্যেই আজকের এই মিলাদ মাহফিল।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


20220501_181426.jpg

এখানে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন একজন হুজুর দাঁড়িয়ে আছে এবং অন্য জনকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য মাইক্রোফোন টা এগিয়ে দিচ্ছেন। যিনি দাঁড়িয়ে আছে উনি হচ্ছে আমাদের মসজিদের ইমাম। আর যিনি বসে আছে উনি হচ্ছে আমাদের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম। অনেক বড় একজন আলেম এবং আল্লাহর প্রিয় বান্দা। এবং কি সবচেয়ে বড় কথা হল মোঃ আব্দুল কাদের স্যার উনি আমার প্রিয় একজন শিক্ষক। বক্তব্য পেশ করার পর মিলাদ মাহফিল শেষ হওয়ার পর স্যারের সাথে কুশল বিনিময় হলো, আমি অনেক খুশি ছিলাম ওনাকে কাছে পেয়ে। আর স্যার জানতোই না যে এটা আমাদের সমাজের মসজিদ, যদিও স্যারের সাথে সকাল-বিকেল বাজারে গেলেই দেখা হয়।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


20220501_181628.jpg

এখানে সবাই দাঁড়িয়ে মিলাদ-কিয়াম করছে। আমরা মুসলমানেরা মুসলমানরা একটা কথা জানি। সেটা হচ্ছে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন ঘোষণা দিয়েছেন আমাকে পেতে হলে আমার রাসূল কে খুশি করতে হবে। আর মিলাদ কিয়াম করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রাসুলের শানে জিকির করা। তবে কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী এবং কি অসাধু এই জিনিসটাকে নিয়ে একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে। আর বিভিন্ন ধরনের তর্ক বিতর্ক জড়িয়ে পড়ে যাবে। সেদিকে যাচ্ছিনা, তবে আমার ফটোগ্রাফ এগুলো নেয়ার মূল উদ্দেশ্য একটাই, যে এমন একটা ফযিলতের মাসে এবং কি গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন আমার হৃদয়ে গেঁথে রাখার জন্য ফটোগ্রাফি গুলো নেওয়া।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


20220501_182629.jpg

ওনি আমার শ্রদ্ধেয় চাচাতো ভাই। উনি একজন বড় ব্যবসায়ী, আর বাবুকে নিয়ে এসেছে তাই পিতা-পুত্রের একটা ফটোগ্রাফি নিলাম, এটা একটা স্মৃতি হয়ে থাকল।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


20220501_182703.jpg

ইফতার মাহফিল শেষে ইফতারের সময় ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে বিরানি এবং শরবত সাথে খেজুর এবং সালাত। যদি আপনারা ভাবছেন এত অল্প কিছু দিয়ে কিভাবে ইফতার করবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে পেট ভরে খাওয়া বড় কথা নয়, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আপনি আপনার এবাদত করতে এসেছেন, সেটাই হচ্ছে মূল কথা। তবে এই আয়োজন ছিল প্রায় 200 জন মানুষের অ্যারেঞ্জমেন্ট।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


20220501_182551.jpg

সবাইকে সারিবদ্ধ ভাবে বসানো হয়েছে এবং যার যার সামনে বিরানি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এবং সাথে শরবতের গ্লাস যোগ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং প্রতিজনকে দুটি করে ক্লাস দেয়া হয়েছে একটা শরবত খাওয়ার জন্য আরেকটা সাদা পানি খাওয়ার জন্য। যাই হোক তবে আমার কাছে দিনটি ছিল সত্যিই স্পেশাল একটা দিন। তাই আমার বাংলা ব্লগার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করা।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


বন্ধুরা কেমন লেগেছে আমার মনের ভাবগুলো আপনাদের কাছে গল্প আকারে শেয়ার করলাম। ভালো মন্দ কমেন্টে জানাবেন। সাপোর্ট দিয়ে পাশে থাকবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ। এবং আপনাদের উৎসাহ পেলে আবারো নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব ইনশাআল্লাহ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সে 27 রমজানে খুব সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছিলেন। আমার তো সেই রমজান মাসের কথা মনে পড়ে গেল।আবার যে কবে আসবে !!আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার সেই দিনের সুন্দর মুহুর্ত টুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

আপনি সেই রমজান বলছেন, আমার এখনো চোখের উপরে বাসছে। রমজান মনে হয় যে এই তো দুই দিন হল গেলো। যাই হোক অসাধারণ মন্তব্য করে উৎসাহ দেয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

ভাই 27 শে রমজানে আপনি ঘুম থেকে উঠে বাড়িতে গিয়েছেন সেখান থেকে তাড়াহুড়া করে আবার মসজিদের উদ্দেশ্যে চলে এসেছেন সেখানে এসে সবার সাথে সারিবদ্ধ ভাবে ইফতারি করেছেন বিশেষ করে ইফতারির সময় যে দুটি গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে এই বিষয়টি আমার কাছে ভালো লেগেছে । এছাড়া আপনাকে কালো পাঞ্জাবিতে বেশ মানিয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

কাঙ্খিত মন্তব্য করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য এবং আপনার মনের ভাব প্রকাশ করে সাথে থাকার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

পাঞ্জাবি টা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। কালো রঙের যেকোন জিনিস আমার অনেক পছন্দের। গ্রামে নেটওয়ার্কের অবস্থা সত্যি অনেক খারাপ। আমি থাকি তো আমি জানি। আপনাদের মসজিদে সবাই একসঙ্গে ইফতার করেছিলেন বিষয়টি দেখে বেশ দারুণ লাগল। অনেক সুন্দর ব‍্যবস্থা ছিল।

বলতে পারেন এটা আমাদের একটা মিলন মেলা ছিল। কারণ গ্রামের মানুষ বেশিরভাগই শহরে-বন্দরে পড়ে থাকে। বৎসরের দুই ঈদের দেখা-সাক্ষাৎ হয়, তখন আনন্দ-ফুর্তি একটু বেশি হয়। আপনার মন্তব্য প্রকাশ করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

রমজান মাস চলে গিয়েছে আমাদের ছেড়ে অনেক দিন আগে। আজ এই পোস্ট দেখে অনেক কিছু আবার মনে পড়ে গেল। সবাই মিলে ইফতারি করেছেন দেখে ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন যদিও রমজান মাস চলে গেছে অনেক দিন। কিন্তু স্মৃতির পাতা থেকে তো আর চলে যাইনি। তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করা, শুভেচ্ছা নিবেন ভাইয়া।

২৭ রমজান আমাদের জন্য খুবই বরকতময় একটি রাত। ২৭ রমজান আপনারা মসজিদে সবাই একসাথে ইফতার করেছেন এটা দেখে খুব ভালো লাগলো। ২৭ রমজান, আপনি আপনার দিনটি কিভাবে অতিবাহিত করেছিলেন তা আমাদের সাথে শেয়ার করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আর আপনার পাঞ্জাবিটা অনেক সুন্দর।

মনমুগ্ধকর একটি মন্তব্য প্রকাশ করেছেন। মন্তব্য প্রকাশ করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল।