আবদার

in hive-129948 •  last year 
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও মোটামুটি ঠিক আছি।আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম।

অবসর সময় বসে শৈশবের আবদার গুলো ভাবলে বেশ ভালো লাগে । বড়দের কাছে ছোট ছোট আবদার রাখতাম চকলেট কিনে দেয়ার জন্য, চিপস কিনে দেওয়ার জন্য, আইসক্রিম কিনে দেওয়ার জন্য। এই ছোট আবদার গুলো পূরণ হলে আলাদা রকম একটা শান্তি লাগতো। সেই শান্তি এখন হাজার হাজার টাকা দিয়ে কোন জিনিস কিনে দিলেও পাওয়া সম্ভব না। শৈশবের মুহূর্তগুলো কতই না অদ্ভুত ছিল! বন্ধুকে একটা চকলেট খেতে দেখলে বাড়িতে এসে আবদার করতাম, আমাকে ওই চকলেট কিনে দিতে হবে। কত কান্নাকাটি করতে হতো দুই টাকার একটা চকলেট এর জন্য। অবশেষে যখন বাড়ির লোককে রাজি করানো যেত এবং দোকানে নিয়ে চকলেট টা কিনে দিতো তখন সেটা খেয়ে অমৃতের মত অনুভব হতো।

20210911_132416.jpg

20210911_132414.jpg

শৈশবের এই ছোট ছোট আবদার গুলো মেটানোর জন্য বাবা-মা , দাদা, ঠাকুরদা-ঠাকুমাকে অনেক কষ্ট করতে হতো তা নয়, তবে তাদের সেই সময়টুকুর এটেনশনের দরকার পড়ত। তারাও বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতো আর আমি যদি হুট করে একটা আবদার করি সেই মুহূর্তে তাহলে হয়তো তারা পূরণ করতে পারত না কাজের ব্যস্ততার কারণে। কিন্তু তাই নিয়ে কত মন খারাপ করে বসে থাকতাম , তাদের বুঝতে চাইতাম না। এই ব্যাপারগুলো এখন পুরোপুরি ভাবে বুঝতে পারি কারণ ছোট ছোট বাচ্চারা যখন আবদার করে কাজের ব্যস্ততার মধ্যে তখন সেই মুহূর্তে সেই আবদার পূরণ করা সম্ভব হয় না। হয়তো কিছুটা সময় দরকার পড়ে সেই আবদার পূরণ করার জন্য কিন্তু ততটুক সময় সেই বাচ্চারাও মন খারাপ করে বসে থাকে। আমার এক কাকুর ছেলের কয়েক বছর আগের কয়েকটি ফটো দেখে এই ব্যাপারগুলো আরো গভীরভাবে মনে পড়ে গেল।

20210911_132405(0).jpg

20210911_132356.jpg

সেইবার গেছিলাম পুরুলিয়াতে ঘুরতে আমার এক কাকু বাড়িতে। পুরুলিয়া জায়গাটা পাহাড়ি এলাকা দিয়ে ভরা, সেখানে গিয়ে সুন্দর পাহাড় দেখার সুযোগ হয়। সেখানে গিয়ে কাকুদের পরিবারের সাথে আমরা একদিন পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে ঘোরার জন্য গেছিলাম। সেই দিন সাথে কাকুর ছেলে কৃত্বিকও ছিল। তার বয়স তখন চার এর মত হবে। বয়সের হিসাবটা আমি সঠিকভাবে বলতে পারছি না, ফটোতে যে বাচ্চাটি দেখা যাচ্ছে সেই বাচ্চার কথাই বলছি। আমরা যখন অযোধ্যা পাহাড়ের উপর এসে পৌঁছায় তখন আমাদের ঘুরতে যাওয়ার ব্যস্ততা ছিল ঠিক সেই মুহূর্তেই আমার এই কাকুর ছেলের আবদারের শেষ নেই । হঠাৎ করেই চিপস, বিস্কুট আর ম্যাংগো জুসের জন্য আবদার শুরু করে দেয় ।

20210911_132401.jpg

20210911_132409.jpg

এদিকে আমাদের প্রচন্ড ব্যস্ততা কারণ হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়ে যাচ্ছিল তাই আমরা খুব তাড়াতাড়ি সব জায়গা গুলো ঘুরে দেখার প্লান করছিলাম। কিন্তু তার এই আবদারের জন্য আমাদের হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে তারে আবদার পূরণ করতে হচ্ছিল। যখন তার এই ছোট ছোট আবদার গুলো পূরণ করা হচ্ছিল তখন তার খুশি দেখে আমার খুব ভালো লাগছিল। এই ছোট ছোট আবদারের মধ্যে খুশি লুকিয়ে আছে যা একমাত্র ছোট বাচ্চাদের আবদার পূরণ করেই দেখা যায়। বড়দের হাজারো আবদার পূরণ করেও মুখে সেই হাসি আনা সম্ভব না যা বাচ্চাদের ছোট ছোট আবদার পূরণ করে দেখা সম্ভব হয়।

20210911_132413.jpg



ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: অযোধ্যা পাহাড়, পুরুলিয়া, ওয়েস্ট বেঙ্গল।



বন্ধুরা, আজকের ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আপনার লিখাটি পড়ে আমারও শৈশবের কথা মনে পরে গেল ভাই।আসলে আপনার মতো শৈশবে এ ধরনের আবদার সকলের জীবনেই কম থাকবে বলে আমার মনে হয়।বড়রাও ছোটদের আবদার পূরন করার চেষ্টা করে। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারনে অনেক সময় সম্ভব না ও হতে পারে।শৈশবে সময় হয়তোবা আমরা অনেকেই তা বুঝতাম না।অবশ্য এখন ছোটরা যখন আমাদের কাছে আবদার করে আর সময়ের কারনে তাদের চাওয়া টুকু পূরন করতে না পারলে তাদের কষ্ট দেখলে আমাদের শৈশবের সেই কষ্টটুকু মনে পরে যায়।যাইহোক,খুবই সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

এত সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে আপনার মন্তব্যটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।

আপনার কাকুর বাসায় বেশ আনন্দে কাটছিল মনে হচ্ছে। বাচ্চাদের ছোট ছোট আবদার পূরণ করলে ওরা অনেকটাই খুশি হয়। আর ওদের মুখে হাসি দেখলে নিজের ভেতরে কেমন যেন একটি শান্তি অনুভব করা যায়। আপনার পোস্টটি অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

হ্যাঁ, আপু ছোট বাচ্চাদের মুখের হাসি দেখলে নিজের মধ্যে আলাদা রকম একটা শান্তি লাগে। আপনার মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া শৈশবের এমন আবদার সবারই থাকে অনেক। সত্যি শৈশব মতো আনন্দ আর কখনো ফিরে পাওয়া যায় না। শৈশবের এই ছোট ছোট আবদার গুলো অনেক বেশি ভালো লাগত।যাইহোক ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে ছোট বেলায় ফিরে গিয়েছিলাম কিছু সময়ের জন্য। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর লিখেছেন।

শৈশবে আমরা সবাই কম বেশি আবদার করেছি আপু। এই ছোট ছোট আবদার পূরণ হওয়ার পর আলাদা রকমের একটা আনন্দ পেতাম আমরা। পোস্ট টি পড়ে আপনার মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

ভাই ছোটবেলায় তো আমরা এগুলো বুঝতে পারতাম না। আর তখন তো বুঝার কথা ই না। তবে এখন যদি বাচ্চাদেরকে কিছু কিনে দিতে পারি, তাহলে খুব ভালো লাগে। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বুঝা যাচ্ছে বাচ্চাটি আসলেই বেশ খুশি হয়েছে। বাচ্চাটির আবদার পূরণ করার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

হ্যাঁ ভাই এখন বাচ্চাদের কোন কিছু কিনে দিলে আমাদেরও ভালো লাগে তাদের এই খুশি দেখে।