জেনারেল রাইটিং || স্মৃতিচারণ: বর্ষার সময় মাছ ধরার গল্প

in hive-129948 •  last month 

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই ভালো আছো। আমিও ভালো আছি।

river-fish-1164953_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

আজকের নতুন একটি ব্লগে তোমাদের সবাইকে স্বাগতম। আজকের এই ব্লগে অনেকদিন পর তোমাদের সামনে একটি স্মৃতিচারণমূলক পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেছে। আসলে আমাদের সবার জীবনেই পুরনো অনেক স্মৃতি থাকে যেগুলো মনে করলে আমাদের অনেক ভালো লাগে। জীবনের অনেকটা বছর পার করার পর যখন পিছনে ফিরে তাকানো হয় একটা অন্যরকম অনুভূতি হয়। এই অনুভূতিকে সুখেরও বলা যায় না আবার দুঃখের বলা যায় না। এই দুটোর মাঝামাঝি একটা অনুভূতি আর কি! আমি আমার জীবনের কিছুটা সময় গ্রামে কাটিয়েছি ছোটবেলায়। গ্রামে যখন থাকতেন গ্রামীণ সব কিছুর সাথে অনেক পরিচিত ছিলাম। গ্রামে থাকাকালীন সময়ে বর্ষার সময় মাছ ধরা নিয়ে কিছু স্মৃতিচারণ শেয়ার করবো আজকের এই ব্লগে।

প্রতিবছর বর্ষাকাল আসলেই আমার আলাদা একটা মজা লাগতো। ছোটবেলা থেকেই বর্ষা ব্যাপারটা আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লাগতো কারন বর্ষা হলে, বর্ষার জলে ভিজে বাড়াতে পারতাম যা আমার কাছে খুব ভালো লাগতো। আর বর্ষার সময় ফুটবল খেলা আমার অনেক সখের একটা কাজ ছিল। এছাড়াও বর্ষার সময় মাছ ধরার ব্যাপারটা খুব মজা করে করতাম আমরা বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে। অতিরিক্ত বর্ষা হলে আমাদের এলাকার পুকুর খাল বিল তলিয়ে যেত আর এই সময় মাছের সমাগম বেশি দেখা যেত। আমাদের যেখানে বাড়ি ছিল তার একদম পাশ দিয়েই খাল চলে গেছিল। তাছাড়া খালের অন্য একটা সাইডে ছিল আমাদের নিজেদের বড় পুকুর।

বর্ষার সময় এই পুকুর আর খাল ভেসে গিয়ে এক হয়ে যেত এই সময় পুকুরে থাকা মাছ সবখানে চলে যেত আবার দেখা যেত খালের অনেক মাছ পুকুরের মধ্যে চলে এসেছে। এই সময় জ্বাল দিয়ে তাছাড়া গ্রামে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের পাশের তৈরি মাছ ধরার সরঞ্জাম দিয়ে আমরা এই মাছগুলো ধরতাম। অনেক বর্ষা সময় দেখতাম কৈ মাছ হেঁটে আমাদের বাড়ির উঠোন পর্যন্ত চলে এসেছে এই ব্যাপারটা অনেক হয়তো বিশ্বাস করবে না তবে এরকমটা আমি নিজে দেখেছি এবং সেই কৈ মাছগুলো আমরা ধরেছিও। প্রতি বছর বর্ষাকালে অনেক কৈ মাছি খুব সহজে ধরে ফেলতে পারতাম কই মাছগুলো জলাশয় থেকে এতটা উপরে উঠে আসার কারণে।

অনেক বর্ষা হলে আমরা বড় বড় গলদা চিংড়ি, টেংরা মাছ, পুঁটি মাছ, জিওল মাছ, শোল মাছ সহ বিলের অন্যান্য অনেক মাছ ধরার সুযোগ পেতাম। এই কাজগুলো কিন্তু আমরা একা করতাম না পরিবারের সবাই মিলে করতাম আর যখন অনেক মাছ আমরা ধরার সুযোগ পেতাম সবার মুখে একটা আলাদা হাসি দেখা যেত সেই সময়। সেই সময়টাতে এই তাজা তাজা মাছগুলো রান্না করে খেতেও অনেক ভালো লাগতো আমাদের। প্রতিবছরই প্রচুর পরিমাণে মাছ আমরা ধরতাম সবাই মিলে বর্ষার সময়টাতে। এখন বর্ষাকাল চলছে প্রতিদিন বেশ ভালোই বর্ষার দেখা পাওয়া যাচ্ছে । এমন বর্ষা দেখলে অতীতের স্মৃতিগুলো মনে পড়ে যায়। এখন তো ওইভাবে মাছ ধরার আর সুযোগ নেই কোন শহরে বসবাস করার কারণে। তাই বৃষ্টির সময়টাতে এই স্মৃতি গুলো মনে করে নিজের ভেতর একটা অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে।


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আজকের এই ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

ভাইয়া সবার জীবনেই শৈশবে কাটানো খুব সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত রয়েছে। আজ অনেকটা বছর পর যখন সেসব কথা মনে পড়ে তখন খুব ভালো লাগে। এমনকি সবার শৈশবের স্মৃতির গল্প পড়তেও খুব ভালো লাগে। বয়সটা কত তাড়াতাড়ি কত তাড়াতাড়ি বেড়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে সেই সময়টায় ফিরে যেতে। কতই না মধুর ছিল শৈশব। আমরা যতটুকু আনন্দ করেছি বর্তমানের ছেলেমেয়েরা তার অর্ধেক আনন্দটুকুও করতে পারে না। বৃষ্টির সময় আমরা ভাই বোনেরা মিলে ধান ক্ষেতে মাছ ধরতাম। সেই সময় বৃষ্টিতে ভিজে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা ছিল। আপনার লেখাগুলো পড়ে যেনো মনে হলো কল্পনায় শৈশবে ফিরে গিয়েছি। ধন্যবাদ ভাইয়া শৈশবের এত সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

আপনার লেখাগুলো পড়ে যেনো মনে হলো কল্পনায় শৈশবে ফিরে গিয়েছি।

এটা জেনে খুব ভালো লাগলো আপু আমার। এত সুন্দর করে গুছিয়ে কথাগুলো বলার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

ভাই আপনার পোস্ট দেখে সেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আগে তো এরকম বর্ষা হলেই আমাদের খাল বিলে অনেক মাছ হতো। এমনকি ওই সময় আমি নিজেই মাছ ধরতাম। মাছ ধরতে আমার খুবই ভালো লাগে। আর বৃষ্টি হলে আনন্দচিত্তে বর্ষার পানিতে মাছ ধরতাম। আর আপনি ওই সময়ে গলদা চিংড়ি,পুটি ,টেংরা মাছগুলো ধরতেন। আর এটি স্মৃতিচারণ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

আমিও যখন অন্য কারোর এই ধরনের পোস্ট পড়ি তখন আমারও ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায় ভাই। আসলে আমাদের ছোটবেলার স্মৃতিগুলো অনেকেরই একই রকম, এই জন্য এমনটা হয় ভাই।

আসলে বর্ষার সময় মাছ ধরার মজাই আলাদা৷ এই সময় যে মাছ ধরার মুহূর্ত রয়েছে তা বেশ অসাধারণ ছিল৷ এখন সেই কথাগুলো মনে পড়লে অনেক ভালো লাগে৷ কিছুদিন আগেও আমরা মাছ ধরেছিলাম এবং ছোটবেলায় এরকম অনেক মাছ ধরা হতো৷ ধন্যবাদ এই পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, এই মন্তব্যের মাধ্যমে আপনার এই কথাগুলো তুলে ধরার জন্য।

বর্ষাকালে ফুটবল খেলতে আসলেই খুব ভালো লাগতো। তাছাড়া বর্ষাকালে মাছ ধরার মজাই আলাদা। যখন হাইস্কুলে পড়তাম, তখন বন্ধুদের সাথে আমিও বর্ষাকালে মাছ ধরেছিলাম। সেই দিনগুলো আসলেই খুব মিস করি। বেশ ভালো লাগলো আপনার স্মৃতিচারণ পোস্টটি পড়ে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আমার এই স্মৃতিচারণ মূলক পোস্টটি যে আপনার ভালো লেগেছে, সেটা জেনে আমারও অনেক ভালো লাগলো ভাই। আপনার এই মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।