কলকাতার চায়না টাউনে ঘুরতে যাওয়া (পর্ব -০৩)

in hive-129948 •  last year 

বন্ধুরা,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও বেশ ভালো আছি।

আজকের নতুন একটি ব্লগে প্রথমেই সবাইকে স্বাগতম জানাই। বেশ কিছুদিন আগে বন্ধুদের সাথে নিয়ে কলকাতার চায়না টাউনে ঘুরতে গেছিলাম তাই নিয়ে আজকের ব্লগে কিছু কথা শেয়ার করব।

কলকাতার চায়না টাউনে ঘুরাঘুরি নিয়ে আজকে তোমাদের সাথে তৃতীয় পর্বটি শেয়ার করব। চায়না টাউনে গিয়ে অনেক বেশি চাইনিজ লোকজন দেখতে পেয়েছিলাম তা কিন্তু নয়। অল্প কিছু চাইনিজ লোকজন দেখার সুযোগ হয়েছিল । আমরা যেদিন গেছিলাম সেই দিনে অন্য কোন ব্যাপার ছিল কিনা জানিনা তবে বেশি লোকজন দেখা যাচ্ছিল না। আমাদের সেখানে যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য চাইনিজ খাবার খাওয়া ছিল এবং সেই সাথে চাইনিজ লোকজন কিভাবে থাকে, তাদের কালচার এইগুলো দেখার অপরচুনিটি পাব সেজন্যই গেছিলাম। তবে আমাদের এক্সপেক্টেশনে জল ঢালার মত অবস্থা হয়ে গেছিল ।

20230625_142857.jpg

20230625_143318.jpg

আমরা সেভাবে কোন কিছু দেখতে পাইনি। তাই আমরা ঠিক করি এইখানে যতটুক জায়গা রয়েছে আমরা বন্ধুরা মিলে ঘুরে ঘুরে দেখব তা করতে আমাদের যতই কষ্ট হোক। সেই দিন বৃষ্টি হয়েছিল। বৃষ্টি হওয়ার কারণে রাস্তাঘাটের অনেক জায়গায় জল জমে ছিল। আমরা অলিগলি করে সব জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। এখানে বেশ কয়েকটি মন্দির দেখারও সুযোগ হয়েছিল আমাদের যদিও সেগুলো বাইরে থেকে দেখেছিলাম। এইখানে গিয়ে আমরা একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার করেছিলাম । আমরা একটি অ্যাপার্টমেন্টের নিচ তলায় গিয়ে একজন চাইনিজ গার্ড এর সাথে কথা বলেছিলাম এবং তার কাছ থেকে চায়না টাউন জায়গাটি সম্পর্কে একটু জানার চেষ্টা করেছিলাম । তার কাছ থেকে আমরা কয়েকটি ভালো রেস্টুরেন্টের নামও শুনে নিয়েছিলাম। তবে যেহেতু আমাদের আগে খাওয়া হয়ে গেছিল সেই জন্য আমরা রেস্টুরেন্ট না গিয়ে পুনরায় ঘুরতে থাকি। জায়গাটি বেশ বড় ছিল তাই আমাদের ঘুরে দেখতে একটু কষ্ট হচ্ছিল।

20230625_143344.jpg

20230625_163121.jpg

আমরা সেখানে যাওয়ার আগে একটু বৃষ্টি হয়েছিল কিন্তু আমরা যে সময় ঘুরছিলাম তখন অনেকটা রোদ বেরিয়ে গেছিল। সেজন্য রোদের মধ্যে ঘুরতে আমাদের কষ্ট হচ্ছিল। আমাদের এই ঘোরাঘুরির মাঝে আমরা একটি কেকের দোকানেও গেছিলাম। যেখানে চাইনিজ কেকের দেখা পেয়েছিলাম তবে সেখানে গিয়ে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ফটো তোলার কথাই ভুলে গেছিলাম। এই জায়গাতে যে বড় বড় রেস্টুরেন্টগুলো ছিল তার সাথে বারের ব্যবস্থাও ছিল অর্থাৎ কেউ যদি চায় রেস্টুরেন্টে গিয়ে অ্যালকোহল পান করা তাহলে সে সেখানে বসে করতে পারবে এরকম ব্যবস্থা ছিল। আমরা যেহেতু কেউ অ্যালকোহল সেবন করি না সেই জন্য এই নিয়ে মাথাব্যথা আমাদের ছিল না । আমরা যে কয়েকটি রেস্টুরেন্টের মধ্যে ঢুকে ছিলাম সেখানে গিয়ে সবাইকে বসে অ্যালকোহল সেবন করতে দেখেছিলাম যা আমাদের কাছে একটু অকওয়ার্ড লেগেছিল।

20230625_163128.jpg

20230625_150418.jpg

আমাদের সাথে আমার এক বন্ধু ছিল তার নাম সৌরভ। সে একটু ইন্টারেস্টিং প্রকৃতির লোক । সে সেখানে গিয়ে ব্যাঙের মাংস পাওয়া যায় কিনা তাই খোঁজ করে বেড়াচ্ছিল। এই নিয়ে অনেক হাসাহাসিও করেছিলাম আমরা । ব্যাঙের মাংস খুঁজে বেড়ানোর বিষয়টা আমাদের অনেক আনন্দ দিয়েছিল। সে যখন কয়েকটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে অদ্ভুত খাবার যেমন ব্যাঙ, সাপ, টিকটিকি এইসব পাওয়া যায় কিনা জিজ্ঞেস করছিল ,আমরা লজ্জায় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না। আমরা বন্ধুরা মিলে এসব নিয়ে অনেক মজা করছিলাম। বিভিন্ন ভিডিওতে চাইনিজদের এরকম খাবার খেতে আমরা দেখেছি সেই জন্য হয়তো সে এগুলো জিজ্ঞেস করছিল। যাইহোক এরকম আড্ডা মজা অনেক হয় আমাদের। আমাদের ঘোরাঘুরির প্রায় দুই ঘন্টা পরে আমরা একটি রিজনেবল রেস্টুরেন্টে যাই। যেখান থেকে আমরা পুনরায় বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়েছিলাম। সেই রেস্টুরেন্ট গিয়ে খাওয়ার গল্প অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং। সেটা আজকে আর শেয়ার করলাম না, পরের পর্বে শেয়ার করব।

20230625_152011.jpg



ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: চায়না টাউন, কলকাতা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।



বন্ধুদের সাথে চায়না টাউন ঘুরতে যাওয়া নিয়ে শেয়ার করা আজকের তৃতীয় পর্বের ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

চায়না টাউন সাধারণত অনেক বড় হয় এবং চাইনিজদের ঐতিহ্যগত অনেক কিছুই থাকে। সাউথ কোরিয়ার ইনছনে থাকা চায়না টাউনে আমি বেশ কয়েকবার ঘুরেছিলাম। সেই হিসেবে এই ব্যাপারে আমার বেশ ভালোই অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে চাইনিজ খাবার আমার একটুও ভালো লাগে না খেতে। কোনো স্বাদ পাই না খেয়ে। তবে কোরিয়ান খাবারের টেস্ট খুবই ভালো। কিন্তু ব্যাঙ,সাপ, টিকটিকি রেস্টুরেন্টে আছে কিনা এটা জিজ্ঞেস করাটা বেশ ফানি ছিলো। যাইহোক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

চাইনিজ খাবার আমার কাছেও খুব একটা বেশি ভালো লাগে না, নতুন কিছু টেস্ট করার সুযোগ পাবো সেই জন্যই গেছিলাম চায়না টাউনে। ভাই , কোরিয়ান খাবার কখনো খাওয়ার সুযোগ হয়নি তাই এর টেস্ট সম্পর্কে আমার জানা নেই। আপনার কাছ থেকেই জানতে পারলাম কোরিয়ান খাবারের টেস্ট খুব ভালো হয়। কখনো সুযোগ হলে কোরিয়ান খাবার টেস্ট করে দেখব ভাই।