কালীপুজোর দুইদিন আগে "কর্নাটকের কোটিলিঙ্গেশ্বর শিব মন্দির" তৈরির কাজ দেখতে যাওয়া।

in hive-129948 •  2 years ago 

বন্ধুরা ,

তোমরা সবাই কেমন আছো ? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও অনেক অনেক ভালো আছি।

আজকের নতুন একটি ব্লগে প্রথমেই সবাইকে স্বাগতম জানাই। আজকের ব্লগে আমি কালীপুজোর দুইদিন আগে, একটি পুজো প্যান্ডেলের প্রস্তুতি দেখতে যাওয়া নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করব। নবপল্লী বয়েজ স্কুলের মাঠে তৈরি করা হয়েছিল এই পুজো প্যান্ডেলটি। পুজো প্যান্ডেলটির এবছরের থিম ছিল কর্নাটকের কোটিলিঙ্গেশ্বর মন্দির। পুজো প্যান্ডেলটির আয়োজক ছিল আমরা সবাই ক্লাব। এই পুজো প্যান্ডেলটি তৈরি করতে তিন মাস সময় লেগেছিল । তিন মাস ধরেই লোক মুখে শোনা যাচ্ছিল খুব বড় করে এবার প্যান্ডেল করছে এই ক্লাবটি কিন্তু পুজোর দুই দিন আগে ছাড়া এখানে আমরা আর যাওয়া হয়নি।

20221021_161843.jpg

পুজোর দুইদিন আগে গিয়ে ভেবেছিলাম হয়তো প্যান্ডেল তৈরির সম্পূর্ণ কাজই শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আমি গিয়ে তো অবাক তখনো প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছে দেখে। বারাসাতের পুজো প্যান্ডেল গুলোতে পুজোর দুই দিন আগে থেকেই ভিড় শুরু হয়ে যায় কিন্তু তখনও সেখানে কাজ চলছে এবং পুজো প্যান্ডেলের ভিতরে ঢোকার কোন অনুমতি নেই তাই দূর থেকে দাঁড়িয়েই দেখলাম । সত্যি কথা বলতে গেলে প্যান্ডেলটি আমার দেখা এই বছরের শ্রেষ্ঠ পুজো প্যান্ডেল ছিল। যাইহোক প্রথম গিয়েই আমি অবাক হয়ে গেছিলাম তাদের এই বিশাল আয়োজন দেখে। তারা কর্ণাটকের কোটিলিঙ্গেশ্বর মন্দিরের আদলে এখানে তৈরি করেছে বিশাল বড় শিবলিঙ্গ ।

20221021_161900.jpg

আমার বাড়ি থেকে পাঁচ থেকে সাত মিনিটের দূরত্বে অথচ এতদিন হয়ে গেছে আমি এখানে আসিনি প্রথমে নিজের কাছে একটু আফসোস লাগছিল এই ভেবে। আমি সেখানে গিয়ে ওয়ার্কারদের সাথে কথা বলি, তারা জানায় পুজোর দিন পর্যন্ত কাজ চলবে। আসলে পুজো প্যান্ডেলটি এত বড় করে করা হচ্ছিল কাজ শেষ হয়ে পারছিল না তারা। সেইখানের ওয়ার্কাররা এটাও আমাকে জানিয়েছিল পুজোর দিন পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা করে কাজ করা লাগবে না হলে সম্পূর্ণভাবে প্যান্ডেলটি তৈরি করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা যাবে না। কালী পুজোর জন্য আমাদের বারাসাত ফেমাস হওয়ার কারণে সব জায়গার পুজো প্যান্ডেল দেখার প্রচন্ড ভিড়ের সম্মুখীন হতে হয় সবাইকে । পুজোর দুইদিন আগে থেকে সবাই পুজো প্যান্ডেল গুলো ঘুরে দেখার জন্য যায় অথচ এই পুজো প্যান্ডেলটি তখনও কমপ্লিট হয়নি, দেখে একটু হতাশ হলাম কারণ এটি অনেক বড় করে করেছিল আর এইখানে ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি।

20221021_161838.jpg

আমি সেদিন বিকালের দিকে গেছিলাম, গিয়ে প্যান্ডেল প্রস্তুতির বিভিন্ন কাজ দেখছিলাম। শিবলিঙ্গগুলোকে রং করছিল সেগুলো দেখছিলাম, সাপ তৈরি করে শিবলিঙ্গের উপর দেখছিলাম । তাছাড়াও সেদিন সেখানে বিশাল বড় শিবলিঙ্গের পাশে ছোট ছোট মন্দির তৈরির কাজও চলছিল । বাকি সবকিছু সম্পর্কে বিস্তারিত বাইরে থেকে তখন জানতে পারিনি আমি কারণ ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছিল না কাউকেই। দূর থেকে অবাক হয়ে অনেক সময় দেখলাম ,অনেক ফটোগ্রাফিও করলাম। আমি সেখানে প্রায় কুড়ি মিনিটের মতো দাঁড়িয়ে তাদের এই কাজগুলোকে দেখছিলাম। তারা খুবই নিখুঁতভাবে প্রত্যেকটা কাজ করে যাচ্ছিল। কুড়ি মিনিটের মত সেখানে দাঁড়িয়ে আমি অন্য একটি পুজো প্যান্ডেল দেখার জন্য চলে যাই। সেই সম্পর্কে পরের কোন ব্লগে তোমাদের সাথে শেয়ার করব।

20221021_161851.jpg

ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: বারাসাত ,নর্থ ২৪ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।

20221021_161716.jpg

20221021_161737.jpg
কাজে ব্যাস্ত সবাই।

20221021_161742.jpg
ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: বারাসাত ,নর্থ ২৪ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।

20221021_161748.jpg
ছোট ছোট মন্দির তৈরির কাজ চলছে।

20221021_161708.jpg

20221021_161704.jpg
কেউবা কাজের ফাঁকে একটু রেস্ট নিয়ে নিচ্ছে।

20221021_161645.jpg

বন্ধুরা, কালীপুজোর প্রস্তুতি নিয়ে শেয়ার করা আজকের ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

🟡🔴🟠ধন্যবাদ সবাইকে🟡🔴🟠

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

কালীপুজো শুরু হওয়ার দু'দিন আগেই আপনি চলে গিয়েছেন কর্নাটকের কোটিলিঙ্গেশ্বর শিব মন্দির তৈরির কাজ দেখতে। হয়তো কাজ শেষ হয়নি বলে আপনাকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি কিন্তু আপনি দূরে থেকেও খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। এরসাথে আপনি খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন যা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ।

আরো আগে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু সময় করে উঠতে পারিনি তাই পুজোর দুইদিন আগেই গেছিলাম আপু। এই পুজো প্যান্ডেলটি আমাদের বারাসাতের মধ্যে সবথেকে বড় করে করেছিল । পুজোর দুই দিন আগে গিয়েও অনেক ইনজয় করেছিলাম তাছাড়া পুজোর পরও আবার দুইদিন এখানে দেখতে গেছিলাম এত ভালো লেগেছিল আমার।

ওরে বাপরে বাপ বিশাল আয়োজন চলছিল তো দেখি 😳😳। আপনাদের ওখানকার পুজোর এই আয়োজন গুলো দেখলে মন ভরে যায় একদম। বারাসাতের কালী পূজার ধুমধাম সম্পর্কে এই বছর বেশ শোনা হয়েছে, বেশ কিছু পোস্টও দেখেছি এই নিয়ে। সত্যিই অনবদ্য এই ব্যাপার গুলো। এবার যেহেতু দূর থেকে ছবিগুলো তুলে নিয়ে এসেছেন, আশা করি পরবর্তী সময়ে প্যান্ডেলের ভেতরে গিয়ে পুরোপুরি ভাবে সব ছবি তুলে আরো সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।

হ্যাঁ ভাই সবাই আগেই পোস্ট করেছে, আমি একটু পরে পোস্ট করা শুরু করলাম । সামনে আরো অনেক পোস্ট শেয়ার করব বারাসাতের কালী পুজোর ঘোরাঘুরি নিয়ে। সামনের পোস্টগুলোতে প্যান্ডেলের সুন্দর সুন্দর ছবি অবশ্যই দেখতে পারবেন।

দেখছি এক বিশাল আয়োজন। পুজোর এরকম বিশাল আয়োজন আমি কখনোই দেখিনি। আপনার বাড়ি থেকে এত কাছে থাকা সত্বেও আপনি এতদিন পরে গেলেন দেখতে। শিবলিঙ্গ গুলো দেখতে ভীষণ সুন্দর লাগছিল। এতগুলো শিবলিঙ্গ তৈরি ভীষণ কঠিন কাজ। তারপরে অনেকগুলো ছোট ছোট মন্দির তৈরি দেখলাম। আমার কাছে দেখে বেশ ভালই লেগেছে। সত্যিই আপনাদের এখানে পুজোর কোন তুলনা হয় না।

আমাদের বারাসাতের কালী পুজোতে এরকম বিশাল আয়োজন প্রতিবছরই দেখা যায়। সত্যিই খুব বড় করে এই পুজো প্যান্ডেলগুলো তৈরি করা হয়। পুজো প্যান্ডেল কমিটি গুলো অনেক অনেক টাকা খরচ করে এই প্যান্ডেলগুলো তৈরি করে, সত্যি তাদের এই আয়োজনের প্রশংসা করতেই হয়।