শহরের কোলাহল থেকে বেরিয়ে গ্রামে কাটানো কিছু মুহূর্ত

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)

কিছুদিন আগের কথা। শহরের কোলাহলপূর্ণ জীবন থেকে কিছুটা মুক্তির নিঃশ্বাস পেতে বেরিয়ে গিয়েছিলাম গ্রামের দিকে। কোনরকম পরিকল্পনা ছিল না। হঠাৎ করেই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনে হল গ্রামের দিকে গিয়ে ঘুরে আসি। একসাথে দুই কাজ হয়ে যাবে। আমার এক আত্মীয়ের বাড়ি আছে গ্রামের দিকে। অনেকদিন হলো যাওয়া হয়না। এই সুযোগে ঘোরাঘুরি হবে এবং তাদের সাথেও দেখা হবে।

IMG_20220612_174151.jpg

কি যেন কথা ভাবতে ভাবতে চলে গেছি রিক্সা করে। যাত্রাপথে গ্রামের যে ছবি তুলব একদম মনে ছিল না। সত্যি বলতে গ্রামের এই ব্যাপারটা নিয়ে যে একটা পোস্ট করব এটা ভাবিও নি সে সময়। তো যাই হোক চল্লিশ মিনিট পর পৌঁছে গেলাম আমার কাঙ্খিত লক্ষ্যে। সকালের দিকটায় বৃষ্টি হয়েছিল বেশ সেদিন। গ্রামের রাস্তা বেশ কর্দমাক্ত ছিল। আবার পিচ্ছিল ছিল। অনেকদিন এমন রাস্তায় হাঁটা হয় না। এক দিক দিয়ে ভালই লাগছিল।

IMG20220604111814.jpg

যাওয়ার সাথে সাথে আমার পরিচিত মুখগুলোকে দেখে খুব ভালো লাগলো। অনেকদিন পর তাদের সাথে দেখা। উনারাও ভীষণ খুশি। হঠাৎ করেই গিয়েছিলাম। তাই আনন্দে আরো বেশি আত্মহারা হয়ে গিয়েছিল। তো ঘরের ভেতরে না বসে আমি বাইরের উঠোনে চেয়ার টা নিয়ে বসে পড়ি। এত চমৎকার হাওয়া দিচ্ছিল বলে বোঝাতে পারবো না। এই মুক্ত বাতাসটা নিতেই হয় তো গ্রামে যাওয়া।

IMG20220604125201.jpg

IMG20220604123726.jpg

IMG20220604131119.jpg

গ্রামে যেখানে গিয়েছিলাম ওদের বাড়ির সামনে নিজস্ব একটা বাগান আছে। আম কাঁঠাল লিচু বেদেনা জাম্বুরা ডাব এসব নানান ফলের গাছ আছে। লিচু পেড়ে খেয়ে সব শেষ করে ফেলেছে। একদম টাটকা গাছ পাকা আম পেড়ে খেতে দিল আমাকে। আর বাড়ির জন্য ব্যাগভর্তি আম দিল। কচুর শাক, কলার কান্দাল, কলার মোচা, কলা, আরো কি সব দিয়ে মোটামুটি দুই ব্যাগ ভর্তি করে দিয়েছিল।

IMG20220604131010.jpg

IMG20220604131015.jpg

IMG20220604131024.jpg

IMG20220604123939.jpg

নিজেদের জমির করা শাক সবজি দিয়ে রান্না করা তরকারি দিয়ে দুপুরবেলা খাওয়া-দাওয়া করালো আমাকে। খেয়ে এত তৃপ্তি পেয়েছি বলে বোঝাতে পারবো না। শহরে খাঁটি গরুর দুধ পাওয়া বেশ মুশকিল এর একটা ব্যাপার। গ্রামে গিয়ে বাটি ভরা দুধ খেলে অমৃতের মত লাগে। এভাবেই সকলের সাথে বেশ কিছুক্ষণ গল্পগুজব করে দুই ব্যাগ ভর্তি শাকসবজি আর ফল নিয়ে বাড়ি ফিরে আসলাম। খালি হাতে গিয়েছিলাম আর ফিরলাম টাটকা সব বাজার নিয়ে। বাড়িতে নিয়ে আসার সাথে সাথে সবাই খুব অবাক হলো। আমার মা ভীষণ খুশি হয়েছিল।

IMG20220604173738.jpg

IMG20220604174815.jpg

মাঝেমধ্যে গ্রামের পথে হারিয়ে গেলে খারাপ হয় না দেখি। অনেক চমৎকার ছিল দিনটা। ঢাকাতে এসে বড় বড় বিল্ডিং এর মাঝে যখন নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায় না তখন বড্ড মনে পড়ে গ্রাম বাংলার অপার সৌন্দর্যের কথা। মুহূর্তেই যেন নিজেকে প্রকৃতির সাথে মিশিয়ে ফেলা যায়।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

গ্রামে ঘোরা হলো, অনেকদিন পর গ্রামের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা হলো, গ্রামের টাটকা শাক সবজি দিয়ে খাবার দাবার করা হলো, আবার শাকসবজি ও ফলমূল ব্যাগ ভর্তি করে বাসায় নিয়ে আসলেন। আমার এসব কিছু নিয়ে একটি পোস্ট ও করে ফেললেন। ফাইভ ইন ওয়ান।😛
আসলে মাঝে মাঝে এভাবে গ্রামীণ পরিবেশে হারিয়ে গেলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। আপনার গ্রামে ঘুরতে যাওয়ার অনুভূতি গুলো পড়ে বেশ লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার আনন্দের মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

সত্যি বলতে এক ঢিলে অনেক পাখি মারা হয়ে গেছে। হিহিহি। খুব মজা পেলাম আপনার মন্তব্য পেয়ে আপু।

শহরের কোলাহল ছেড়ে গ্রামে এসে আপনি এত চমৎকার সব ফটোগ্রাফি করেছেন আসলেই অনেক দুর্দান্ত হয়েছে। প্রতিটি ফটোগ্রাফি একেবারে হৃদয় ছুয়ে যাওয়ার মত। আসলেই গ্রামের রাস্তাঘাট এমনই হয় বর্ষার দিনে বেশি খারাপ হয়ে যায়। সবগুলো ফটোগ্রাফি আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে আপনার।

অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

  ·  3 years ago (edited)

শহরের কোলাহল ছেড়ে গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কিছু সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আপনি আজকে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যি গ্রাম আমারও খুব ভালো লাগে। কিন্তু এখন আর তেমন একটা গ্রামে যাওয়া হয় না। কারণ আমাদের সবাই এখন শহরেই থাকে। আপনার গ্রামের বাড়ির ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমার খুব ইচ্ছে করছে গ্রামে যেতে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রইল।

গ্রাম আমাদের অস্তিত্ব কে এখনও বাঁচিয়ে রেখেছে আপু। সময় পেলে চলে যাই। তবে আমারও যাওয়া হয় না খুব একটা।

ভাই বেশ চমৎকার ভাবে গ্রামের খোলা বাতাস ও এর প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্যে ভরা গ্রামটিকে নিয়ে এত সুন্দর ভাবে লিখেছেন পড়ে ভাই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আর তাছাড়া গ্রামের আশেপাশে যে ফটোগ্রাফি গুলো আপনি দিয়েছেন এবং সেগুলো দেখে আরো ভালো লাগেনা। আপনি ঠিকই বলেছেন শহরের দালানকোঠার মাঝে নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায় না তখন এই গ্রামের রূপ বৈচিত্র কথা খুব মনে পড়ে। গেলেন খালি হাতে নিয়ে এলেন দুই ব্যাগ ভর্তি তরতাজা ফল শাকসবজি। আসলে শহরে এগুলো কোথায় পাবো আমি হচ্ছে এর আসল জায়গা। বেশ ভালো লাগলো আজকের গ্রাম ঘুরে আপনার আনন্দঘন মুহূর্ত গুলো পড়ে।ও এগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

বাহ্ চমৎকার মন্তব্য করেছেন তো ভাই। অনেক ভালো লাগলো। ব্যাগ ভরে সব আনতে বেশ মজাই লাগছিল 😊

শহরের কোলাহল থেকে বেরিয়ে গ্রামে কাটানো কিছু মুহূর্ত শেয়ার করেছেন দারুন হয়েছে। গাছ পাকা আমের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খেতে ইচ্ছা করছে। অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে উপস্থাপনা। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দাদা। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।

অনেক ধন্যবাদ ভাই। পাশে থাকবেন।

মাঝে মাঝে গ্রামের পথে হারিয়ে গেলে খারাপ হয় না আপনি ঠিকই বলেছেন ভাইয়া। গ্রামের সবুজ প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে আমারও বেশ ভালই লাগে। তবে বৃষ্টির দিনে গ্রামের রাস্তায় কর্দমাক্ত দেখলে আমার কাছে খুবই বিরক্ত লাগে। তবে বৃষ্টির পরে পরিষ্কার পরিবেশটা দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। ভাই আত্মীয়র গ্রামে গিয়ে খুবই সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি ধারণ করেছেন এবং সেইসাথে আত্মীয়র নিজের জমির শাক সবজি রান্না করে খাইয়েছে। আবার বাড়ি ফেরার সময় ব্যাগ ভর্তি করে আম, কচু শাক কলার কান্দাল, কলা, কলার মোচা আরো কত কিছুই না নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। ভাই ঘোরাফেরার সাথে সাথে সুন্দর ফটোগ্রাফি, সবমিলিয়ে দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

পুরো লেখাটা এত সুন্দর করে পড়ে গুছিয়ে নিজের মতো করে সব সময় আপনার অনুভুতি গুলো ব্যক্ত করেন ভাই। আমি কৃতজ্ঞ ভাই আপনার প্রতি ❤️🙏

ঢাকাতে ভাল লাগে না ভাই। গ্রামে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে। গ্রামের মুক্ত হাওয়ার বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয়ার মধ্যে যে কি আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। অনেক খুশি হয়েছিল আপনার সেই আত্মীয়। বেশ খাতির যত্ন খেয়েছেন। ব্যাগ ভরে টাটকা শাক সবজি বাসায় নিয়ে গিয়ে ভালই করেছেন। টাটকা জিনিস এর খুব অভাব এখন। যাইহোক ভাল লাগলো আপনার লেখা পড়ে। ভাল থাকবেন।

ঢাকায় কি আর মানুষ ইচ্ছে করে থাকে ভাই। ঠেলায় পড়ে থাকতে হচ্ছে। যাইহোক অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে।

এ বাবা একেবারে প্যারি কাদা। দারুন হয় যদি এই কাদায় আছার খাওয়া যায়। হা হা। আমি কখনই দুধ খালি খাই না। সবরি কলা চটকিয়ে দুধের সাথে খেতে ভাল লাগে সাথে যদি আম হয় তবে তো কথাই নেই। কচুর শাক দিয়ে ভালই রান্না হবে চিংড়ি । মোটামুটি সব কিছুই নিয়ে এসেছো। দেখে খুবি ভাল লাগলো। বিচি কলার মোচা কিনা জানি না। তবে হলে দারুন স্বাদ পাবে। আর কলার থোরের তো কথাই হয় না। প্রকৃতির মাঝে ব্যাগ ভর্তি করে ফেরা ।

দাদা সবসময় অনেক মজা করে কথা বলেন। আপনার মন্তব্যগুলো পড়তে মুখে হাসি চলে আসে সব সময়। অনেক ভালো থাকবেন।

সত্যি বলতে ভাইয়া শহরের চার দেয়ালের মাঝে বন্দী থাকাটা আমার কাছে একদম জেলখানার মতো মনে হয়। তাই আমি মনে করি যারা শহরে বসবাস করে তাদের কিছুদিনের জন্য হলেও গ্রামের আলো-বাতাস পূর্ণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের মাঝে সময় কাটানো উচিত তাহলে শরীরের সজীবতা ফিরে পাওয়া যাবে। ধন্যবাদ আপনার মুহুর্ত শেয়ার করার জন্য।

একদম মনের কথা গুলো গুছিয়ে বলেছেন ভাই। খুব ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য। ভালোবাসা রইলো

শহরের কোলাহল ছেড়ে গ্রাম্য পরিবেশে খুবই সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন আপনার ফটোগ্রাফি গুলা দেখে খুবই ভালো লাগলো। আসলে গ্রাম্য পরিবেশে বসবাস করার মজাটাই অন্যরকম বিশুদ্ধ অক্সিজেন কার্বন-ডাই-অক্সাইড মুক্ত বাতাস। আমিও অনেকদিন হলো গ্রামের বাড়িতে যাই না তবে ভেবেছি এবার ঈদে গিয়ে খুব সুন্দর সময় পার করব বন্ধুদের সাথে ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য

বিশুদ্ধ একটু নিঃশ্বাস নিতে হয়তো সেখানে যাওয়া। বেশ ভালো মুহূর্ত ছিল আমারও। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে।

গ্রামে থাকতে আমার সব সময় ভালো লাগে। কেননা গ্রামের এই প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখতে আসলে অনেক বেশি সুন্দর হয়। তবে যে জিনিসটা সবথেকে বেশি বিরক্ত লাগে সেটা হলো গ্রামের এই কাচা রাস্তাগুলোতে বর্ষার দিনে খুবই কাদা হয়।

সত্যি বলতে কাদার রাস্তাতেও একটা আলাদা মজা আছে কিন্তু। হিহিহিহি।