ক্রিয়াই শক্তি, নেশা থেকে মুক্তি

in hive-129948 •  2 years ago 

নমস্কার,,

শেষ কবে মন থেকে খেলাধুলা করেছি একদমই মনে পড়ছে না। তবে চোখের সামনে যখন ফুটবল বা ক্রিকেট খেলা যখনই দেখি সাথে সাথে কিছুক্ষণের জন্য সেখানে দাঁড়িয়ে যাই। খেলাধুলা ভীষণ পছন্দ করতাম। একটা সময় ছিল যখন রোজ বিকেল বেলা খেলতে না পারলে সন্ধ্যার পরে পড়তেই বসতে চাইতাম না। অথচ এখন সেই পছন্দের ব্যাট বল কিম্বা ফুটবল ছুঁয়েও দেখা হয় না। মাঝেমধ্যে খেলতে ইচ্ছে করে ভীষণ। অন্তত এতোটুকু আমি বিশ্বাস করি যে খেলাধুলার মাঝে থাকলে মানসিক যে চিন্তাগুলো সব সময় গ্রাস করে বেড়ায় কিছুক্ষণের জন্য সেগুলো পালিয়ে যায়।

IMG20230309210534.jpg
Location

বাড়িতে বসে নিজের কিছু কাজ সারছিলাম। হঠাৎ করে শুনতে পেলাম ভীষণ হইহুল্লোড় করছে অনেক ছেলেপেলে। কৌতুহল বসতো বাড়ি থেকে বেরিয়ে হেঁটে চলে গেলাম মাঠের দিকে। আমার বাড়ির সামনেই প্রাইমারি স্কুলের ছোট্ট একটা খেলার মাঠ আছে। সেই স্কুলে অবশ্য আমি পড়িনি তবে রোজ বিকেলে খেলাধুলা করতাম। যাইহোক মাঠে গিয়ে দেখতে পেলাম চারপাশে হ্যালোজেন লাইট জ্বালিয়ে শট পিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে আমার পাড়ারই কিছু ছোট ভাই। আর সেই খেলা নিয়েই এত হইল হচ্ছে। এক কথায় দারুন লাগছিল পুরো ব্যাপারটা।

IMG20230309210534.jpg
Location

তারপর গল্পে গল্পে জানতে পারলাম স্থানীয় কিছু বড় ভাইয়ের উদ্যোগে এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। মূল উদ্দেশ্য হলো খেলাধুলার মাধ্যমে বর্তমান যুবসমাজকে অনুপ্রাণিত করা এবং নেশার কালো ছায়া থেকে এই প্রজন্মকে রক্ষা করা। নিঃসন্দেহে ভালো একটা উদ্যোগ। সত্যি বলতে সবাই হয়তো খেলছে না এটা ঠিক, কিন্তু এই খেলাকে কেন্দ্র করেই অনেক ছেলে বা কিশোর চারপাশে আনন্দ করছে এবং খেলাটা উপভোগ করছে। অন্তত তাদের বাজে আড্ডা বা চিন্তাভাবনা থেকে কিছুটা হলেও তো বেরিয়ে আসছে। এটাই বা কম কিসের!

IMG20230309210350.jpg
Location

একটা কথা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যে অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। আমরা যদি লেখাপড়ার পাশাপাশি কিছু সৃজনশীল কাজের সাথে যুক্ত থাকতে পারি, হতে পারে সেটা গান বাজনা অথবা সমাজের উন্নয়নমূলক কোনো কাজ অথবা খেলাধুলা , তাহলে অন্তত মনটা ভালো থাকবে এবং খারাপ চিন্তা ভাবনা ও মাদকের হাত থেকে রক্ষা পাবো। বর্তমান অভিভাবক যারা আছেন তারা বেশির ভাগই ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার সময় দিতে রাজি নন বা সৃজনশীল কাজের প্রতিও খুব একটা উৎসাহিত করেন না। আমার মনে হয় এতে করে মেধার বিকাশ কখনোই সম্ভব না। বরং আমাদের সন্তানদের ক্ষতিই হবে বেশি।

তাই আসুন আমাদের যুবসমাজকে এবং ছোট শিশু কিশোরদেরকে খেলাধুলার প্রতি উদ্বুদ্ধ করি, তার সাথে সাথে সৃজনশীল কাজের সাথে যুক্ত করে তাদের মেধা বিকাশে উৎসাহিত করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

খেলাধুলার মাধ্যমে বর্তমান যুবসমাজকে অনুপ্রাণিত করা এবং নেশার কালো ছায়া থেকে এই প্রজন্মকে রক্ষা করা সত্যিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর এই উদ্যোগটি অনেক ভালো লেগেছে। বর্তমানের যুব সমাজ নেশার জগতে আসক্ত হয়ে পড়েছে অথবা মোবাইল ফোনে কিংবা ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়েছে। সেগুলো থেকে বেরিয়ে এসে যদি খেলাধুলা করা যায় তাহলে মন যেমন ভালো থাকে তেমনি শরীর ভালো থাকে। অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

একদম গুছিয়ে বলে দিয়েছেন সবটা আপু। খুব ভালো লাগলো এত সুন্দর একটা ফিডব্যাক পেয়ে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

বর্তমান অভিভাবক যারা আছেন তারা বেশির ভাগই ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার সময় দিতে রাজি নন বা সৃজনশীল কাজের প্রতিও খুব একটা উৎসাহিত করেন না।

এই বিষয়টার সাথে আমিও একমত ভাই। আসলে আমরা যদি স্বাভাবিকভাবে খেলাধুলা অথবা মেধাবিকাশ ভিত্তিক বিভিন্ন কাজ কর্মের সাথে সংযুক্ত না থাকি তাহলে নিজেদের মেধা বিকাশ ঘটবে না । আমরা নিজেদের অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেব এবং নিজেদের মেধা প্রকাশ করতে পারব না। ঠিক তেমনি বর্তমান সময়ে শিশুরাও যদি এসব কাজ থেকে বিরত থাকে তাহলে তাদের মানসিক বিকাশ এবং প্রতিভা প্রকাশ করার সুযোগটা হারাবে এবং তারা একটা অন্ধকার পরিবেশের মধ্যেই বসবাস করতে শুরু করবে। একটা সময় বিকেল বেলায় স্কুল থেকে আসার পরপরই খেলার মাঠে দৌড় দিতাম খাওয়া দাওয়া সব ছেড়ে। কিন্তু বর্তমান সময়ে সেই খেলাধুলার সুযোগ পাওয়া হয় না।

খাঁটি কথা বলেছেন ভাই। আসলে সবাই সবটা বুঝি কিন্তু তারপরেও কেন যেন আমাদের বাচ্চাদের সেই সুযোগটা দিতে রাজি না। অনেক চমৎকার ভাবে মনের কথা গুলো বলেছেন ভাই। অনেক ভালো লাগলো। ভালোবাসা রইলো এই ছোট ভাইয়ের পক্ষ থেকে। ❤️

অনেক অনেক শুভকামনা রইলো ভাই। সব সময় পাশে থাকবেন ভালোবাসা অবিরাম।

দাদা ঠিক বলেছেন যুবকদের মাদক থেকে দুরে থাকার জন্য বিনোদন খেলাধুলার বিকল্প নেই ৷ তবে দাদা এখনো তেমন খেলি না তবে মাঝে মধ্যে মাঠে খেলতে যাই বিকেলে করে ৷ আর এও সত্যি খেলাধুলা মনকে সবসময় প্রফুল্ল রাখে অন্য কোনো খারাপ চিন্তা ভর করে না ৷

আরও এসবের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে অভিভাবকদের এগিয়ে আসা ভীষন জরুরী ৷ অনেক ভালো লাগলো দাদা পোষ্ট টি পড়ে৷

মাঝে মাঝে একটু খেলাধুলা করবেন, দেখবেন কতটা হালকা লাগছে মনটা। আমার খুব ইচ্ছে করে কিন্তু সুযোগ হয়ে না রে ভাই। যাই হোক অনেক ধন্যবাদ। আর ভালো থাকবেন সবসময়।

খেলাধুলার মাঝে থাকলে সকলের মন-মানসিকতা একটু হলেও ভিন্ন রকম হয়। বিভিন্ন রকম বাজে অভ্যাস থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাওয়া যায়। খেলাধুলার সময়টাতে মানসিক চিন্তা কোথায় যেন পালিয়ে বেড়ায়। আসলে আমাদের সকলেরই উচিত কিছুটা সময় হলেও প্রতিদিন খেলাধুলা করা। আর আপনাদের বাড়ির পাশেই কিছু বড় ভাইয়ের উদ্যোগে একটা খেলার টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছে। এটা কিন্তু খুব ভাল একটা উদ্যোগ।

আমার তো মনে হয় খেলাধুলার মাধ্যমে একটা শিশুর সম্পূর্ন বিকাশে পরিপূর্ণতা পায়। অথচ আজকাল আমরা এসব থেকেই আমাদের বাচ্চাদের দূরে রাখছি। অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর করে গুছিয়ে কথাগুলো বলার জন্য।