উন্নয়ন ও ভোগান্তি পরস্পরের সমানুপাতিক

in hive-129948 •  last year 

নমস্কার,,

আজ পর্যন্ত যখনই আমি কোন সরকারি উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলতে দেখেছি তার পাশাপাশি এটাও লক্ষ্য করেছি সেই কর্মযজ্ঞের জন্য কি পরিমান ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ জনকে। সেদিক থেকে বলতে গেলে উন্নয়ন আর ভোগান্তি যেন মানুষের জীবনে সমানুপাতিক হারে লেগে থাকে। কোন লক্ষ্য অর্জন করতে গেলে যেমন কিছু জিনিস বিসর্জন দিতে হয় এটা ঠিক তেমন। তবে সব কিছুর একটা নির্দিষ্ট সময় বা লক্ষ্যমাত্রা থাকা উচিত। দীর্ঘ সময় ধরে যখন ভোগান্তি পোহাতে হয় মানুষকে তখন সেই উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ অনেকটাই হিতে বিপরীত হওয়ার মতো।

IMG20230323193355.jpg
Location

আমাদের দেশে মোটামুটি সারা বছর ধরেই কোথাও না কোথাও হাইওয়ে রাস্তার কাজ অথবা ড্রেনের সংস্কার কাজের জন্য খোরাখুরি চলছেই। বাংলাদেশের মানুষ এ ব্যাপার গুলো দেখতে দেখতে অনেকটা অভ্যস্ত। আর ভোগান্তি গুলো কাঁধে চেপে নিয়েই আমরা বাঁচতে শিখে গেছি অনেকটা এমন। সত্যি বলতে বলার কোন ভাষা নেই এবং প্রতিবাদ করারও তেমন কোন জায়গা নেই।

এটা সত্যি যে এই কাজগুলো করা হয় সাধারণ জনগণের জন্যই। তবে সেই কাজগুলো যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা যেত তাহলে সাধারণ মানুষের খুশির কোন অন্ত থাকত না। আর এর সুফলও খুব ভালোভাবে সবাই উপভোগ করতো।

IMG20230323193441.jpg
Location

ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের রাস্তাগুলোতে চার লেন করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে বেশ কয়েক বছর হল। আর আমার বাড়ি যেহেতু উত্তরবঙ্গে তাই আমিও এই কর্মযজ্ঞের প্রতিদিনের একজন দর্শক বলা যায়। সেদিন সন্ধ্যার পর যখন হাইওয়েতে গিয়েছিলাম কিছু প্রয়োজনীয় কাজের জন্য, লক্ষ্য করলাম রাস্তায় তীব্র যানজট। এর কারণ একটাই, রাস্তার নির্মাণ কাজ চলছে। তাই এক পাশ দিয়ে শুধু গাড়ি যাচ্ছে, অপর পাশ বন্ধ। আর ওই এক পাশেই ছোট বড় সব ধরনের যানবাহন থেকে শুরু করে রিক্সা, ভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল সবকিছু যাতায়াত করছে।

তার মাঝ দিয়ে আবার মানুষও হাঁটাচলা করছে। দু এক জায়গায় আবার ফুটপাতের মত ছোট দোকান বসে গেছে। আর সেজন্যই যানজটের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে। হঠাৎ চোখে পড়লো অ্যাম্বুলেন্স এর মধ্যে একটা ইমারজেন্সি রোগী কিভাবে আর্তনাদ করছে। কিন্তু সামনে আর এগোতে পারছে না। খুব খারাপ লাগছিল চোখের সামনে এসব দেখে। কিন্তু করার নেই কিছু সেখানে, অনেকটাই নিরুপায়।

তবে একথা সত্যি যে এই কাজগুলো যেদিন সম্পন্ন হয়ে যাবে, সাধারণ যাত্রীর জন্য দূরের যাত্রা গুলো অনেকটা ক্লান্তিবিহীন হবে এবং নিরাপদ হবে।

IMG20230323193746.jpg
Location

যাই হোক, যে রাস্তাটুকু অতিক্রম করতে ২ মিনিট সময় লাগে না সেখানে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগছে। কি আর বলবো! আমাদের নিত্য সঙ্গী গুলো। সঠিক তদারকি যদি থাকতো এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ঠিকঠাক মতো তাদের দায়িত্ব পালন করত, তাহলে হয়তো এতটাও ভোগান্তি পোহাতে হতো না মানুষজনকে এত দীর্ঘ সময় ধরে।

আমরা সবাই সবকিছু বুঝি, তারপরেও চোখে একটা কালো চশমা আর মুখটা কাপড় দিয়ে বাধা।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার পোস্ট পড়ে অনেক খারাপ লাগল, আসলে আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্হা এ রকম। সত্যি এভাবে একজন ইমারজেন্সি রোগী দেখে কার ভালো লাগে, তারপরে ও আমাদের কিছু করার নেই। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজেকে সত্যিই অনেক অসহায় লাগে আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

ঠিক দাদা এইরকম কাজগুলোর তদারকি ঠিকমতো হয় না। সেজন্য আমাদের মতো সাধারন মানুষদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। একটা কাজ করতে এতটা সময় লাগিয়ে দেয় কী বলব। আর সবচাইতে বড় কথা এদের পরিকল্পনা গুলো দীর্ঘমেয়াদী না। সেজন্য একই রাস্তা বার বার করতে হয় বিভিন্ন কারণে।।

সব জায়গায় দুর্নীতি দিয়ে ভরা। এজন্যই তো পিছিয়ে যাচ্ছি আমরা প্রতিদিন। সবাই আখের গোছাতেই ব্যাস্ত। এভাবেই চলছে দেশ ভাই।

একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই টাইটেলটা একদম মনের মত হয়েছে।বর্তমান সময়ে উন্নয়নের পাশাপাশি যে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে তার শিকার আমরা সকলেই। কারণ আমাদের এদিকে হাইওয়ে রোড একটাতে নির্মাণ কাজ চলছিল। কিন্তু সেই কবে যে শুরু হয়েছে এখনো পর্যন্ত শেষ করতে পারেনি। সেজন্যই এক রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করে যা আসলেই অনেক ভোগান্তির। ছোট রাস্তার মধ্যেও জ্যাম লেগে অনেকক্ষণ সময় লাগে গন্তব্যে পৌঁছাতে। এমন ভোগান্তির শিকার আমরা সবাই। যাই হোক বিষয়টা দারুন করে উপস্থাপন করেছেন ভাই।

সারাদেশেই এমন অবস্থা ভাই। সবাই যদি দায়িত্ব নিয়ে কাজ গুলো সঠিক সময়ে শেষ করতো তাহলে সাধারণ মানুষের কত উপকার হতো! এগুলো কয়জন ভাবে আর !! যাই হোক খুব ভালো লাগলো ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্য পেয়ে। ভালো থাকবেন।

ঠিক বলেছেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে খুব চমৎকার ও সাবলীল ভাষায় একটি ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য।

সুবিধা ভোগ করার আগে অসুবিধা তো ভোগ করতেই হবে দাদা। এসব কর্মযজ্ঞ বিশাল তাই একটু অসুবিধা হয়।তবে চিন্তা করুন কাজ শেষ হলে কতটা সুবিধা। সেই সুবিধার স্বপ্ন দেখতে দেখতে বর্তমান সমস্যা ভুলে যাওয়াই শ্রেয়।

সুবিধা যে হবে এটা সবাই জানি ভাই, কিন্তু সমস্যা টা হলো পরিকল্পনা আর দায়িত্বশীলতার অভাব। যার জন্যই এসব অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ভোগ।