আমাদের গল্প (২)

in hive-129948 •  2 years ago 

নমস্কার,,

book-863418_1280.webp

Source

প্রথম পর্বের পর থেকে

দুই এক কথা হতে হতে যখন সিড়িতে এক পা দু পা ফেলছিল, তখন তপু আবার জিজ্ঞেস করলো,

" তাহলে বললে নাহ্ যে আমাকে কি করে চেনো?"

"আরে বলো না, সে এক মজার কান্ড ঘটেছে। পোস্ট অফিস থেকে অ্যাডমিট কার্ড এর খাম টা বাড়িতে দিয়ে যাওয়ার পর যখন সেটা খুললাম তখন দেখি একসাথে দুটো অ্যাডমিট কার্ড চলে এসেছে। একটা আমার। আরেকটা তোমার।"

" ওরে এই কাহিনী তাহলে!! আর এদিকে আমি পোস্ট অফিসে ঘুরে ঘুরে হয়রান হয়ে গিয়েছি অ্যাডমিট কার্ড এর জন্য।"

"এই তুমি ফেসবুক ইউজ করো নাহ্?"

"হ্যাঁ, করি তো।"

"তোমাকে কত খুঁজেছি জানো?" কোথাও খুঁজে পাই নি"

"ইস্,, কেন যে পেলে নাহ্,!! পরিচয় টা তাহলে আরো দুদিন আগে হয়ে যেত।"

"জানো, আমার আমার বাবা তোমার জন্য কত আফসোস করেছে! বার বার বলেছে ছেলেটা পরীক্ষাটা বোধ হয় দিতে পারবে না আর। বাবা তো শিক্ষা বোর্ডে ফোন করে অ্যাডমিট টা আবার পাঠিয়ে দিয়েছে যেন ঠিকভাবে তোমার কাছে পৌঁছে দেয়।"

"ওরে বাবা! আঙ্কেল এত কিছু করেছে!"

" হ্যাঁ, আমার এক মামাতো ভাই অ্যাডমিট টা পোস্ট অফিসে ফেরত দিয়ে এসেছিল"

"আসলে, আমিও ভেবেছিলাম পরীক্ষা টা বোধ হয় দিতে পারবো না, কিন্ত দু দিন আগে শুনি অনলাইনে অ্যাডমিট সব গুলোই আপলোড করে দিয়েছে। তারপর সেখান থেকে কালেক্ট করি। আর তারপর বাকিটা তো ইতিহাস।"

" তপু জানো, বাইরে আমার মা বাবা দুজনই অপেক্ষা করছে। আমার সাথে তোমাকে দেখলে বাবা ভীষণ খুশি হবে।"

"ওরে বাবা, পুরো ফ্যামিলিকে নিয়ে এসেছো দেখছি! মেয়ে সুন্দরী বলে কি দুপাশ থেকে দুজন চোখে চোখে রাখে!"

" আরে ধুর! মাথায় সব সময় ফাজলামো ঘোরে তোমার? এখানে আমার মামার বাড়ি। তাই পরীক্ষা দিয়ে সবাই এক সাথে মামার বাড়িতে যাব। আর বিকেলে বাণিজ্য মেলার দিকে যাওয়ার কথা আছে।"

" আচ্ছা, তাই বলো। আমি তো ভাবলাম কি নাহ্ কি!"

" হ্যাঁ তোমার মাথায় তো ভালো কথা একটাও ঢোকে নাহ্"

কথাটা বলেই সাথী মিষ্টি করে হেসে উঠলো। ও পাশ থেকে তপু লুকিয়ে আড় চোখে সাথীকে দেখছে বার বার। ভাবছে, এই হাসিটার জন্যই তো দুষ্টুমি করে যাচ্ছে সে। কথায় কথায় সবগুলো সিড়ির ধাপ পার করে রাস্তায় চলে এসেছে দুজন এক সাথে। তপুর দিকে ওর দাদা যেন আগুনের মত ক্ষিপ্রতা নিয়ে এগিয়ে আসছে। দুই ঘণ্টা বসিয়ে রেখেছে ১৫ মিনিটের নাম করে। একি আর যাতা কথা!! কিন্তু তপুর পাশে মেয়েটিকে দেখে একটু শান্ত হয়ে গেল। মুখ থেকে বুলেট, বোমা বের হতে নিয়েও সেটা আটকে গেল সেখানেই। তপু সবটা বুঝতে পেরে নিজে থেকেই তাড়াতাড়ি পুরো ব্যাপারটা বলল। আর ওদিকে সাথী মা বাবার জন্য অপেক্ষা করছে। কথায় কথায় এক সময় সাথী তপুকে বলছে,

"তপু, ঐ যে আমার মা বাবা আসছে।"

মা বাবা কাছে আসতেই সাথীর পাশে তপুকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে রীতিমত হতবাক হয়ে গেল। অ্যাডমিট কার্ডে তপুর ছবি দেওয়া ছিল, তাই চিনতে কোন অসুবিধাই হয় নি তাদের। কাছে আসতেই তপু তাদের নমস্কার দিয়ে কথা শুরু করলো।

"নমস্কার, আঙ্কেল। আমি তপু। চিনতে পেরেছেন?"

"হ্যাঁ বাবা। তোমার কথা আজ সকালেও বলছিলাম সাথীর মাকে। চান্স পাক বা না পাক অন্তত পরীক্ষাটা দিতে পারলে তবুও খুশি হতাম অনেক।"

"আঙ্কেল আপনাদের আশীর্বাদে আমি একদম পরীক্ষা দিয়ে আপনাদের সামনেই দাঁড়িয়ে আছি।"

"আমার অনেক ভালো লাগছে বাবা তোমাকে দেখে।"

আর বেশি কথা না বাড়িয়ে ওখানেই কথা শেষ করে দিয়ে যে যার গন্তব্যে এগোতে নিল। সাথীর মা বাবা যখন সামনে হাঁটতে শুরু করলো, সাথী তপুকে ডেকে বললো,

"আমাদের পরিচয় টা অনেক মজার ছিল তপু। সারা জীবন মনে থাকবে। ভালো থেকো।"

"হ্যাঁ,, এটা কি আর ভোলা যায়!! তুমিও ভালো থেকো। আবার কখনো হয়তো এভাবেই আমাদের আচমকা দেখা হয়ে যাবে। সেদিনের অপেক্ষায় থাকলাম।"

সাথী একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে সামনে এগিয়ে গেল। কয়েক সেকেন্ড সাথীর পেছন পানে তাকিয়ে থাকলো তপু। তারপর দাদা ডাকতেই উল্টো রোড দিয়ে তারাও ছুটলো বাণিজ্য মেলার দিকে।

চলবে .................................

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Nice blog

@tipu curate

Holisss...

--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.

বাহ খুব সুন্দর গল্প লিখেছেন। আমার তো বাকি অংশ পড়ার জন্য মন ব্যাকুল হয়ে রয়েছে। তপু আর সাথীর কি আবারও দেখা হয়েছে খুব জানতে ইচ্ছে করে। তাদের ভালোবাসা মাত্র শুরু হতে যাচ্ছে আর এর মধ্যেই কি শেষ হয়ে যাবে। বাকি পর্বগুলোর অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।

বাহ্ বেশ মজা করে লিখেছেন তো আপু। খুব ভালো লাগলো মন্তব্য টা পেয়ে। দেখা যাক গল্পের শেষ দিকে কি অপেক্ষা করছে তপু আর সাথীর জন্য। অনেক ধন্যবাদ আপু।

ভাই গল্পটা পড়তে না পড়তে শেষ হয়ে গেল, তাই একটু আফসোস হচ্ছে। যদি শেষ পর্যন্ত পড়তে পারতাম তাহলে খুব ভালো লাগতো। সাথী ও তপুর পরিচয় পর্ব টা সত্যিই মজার ছিল। তবে সাথীর মিষ্টি হাসি ও তপুর তাকিয়ে থাকা দুটোই অন্য কিছু ইঙ্গিত করছে। সাথী ও তপুর পরবর্তী সময় কি হলো জানার অধীর আগ্রহে রইলাম।

শেষ টা যে আসলে কি হবে ভাইয়া আমি নিজেও ঠিক বুঝতে পারছি না। দোয়া করবেন আর পাশে থাকবেন সবসময়।

ভাইয়া আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো।সাথী ও তপুর পরিচয়টা দারুণ ছিল। সত্যি দুজনের পরিচয়ের মধ্যে মনে হচ্ছে দুজন দুজনকে ভালোভেসে ফেলেছে। পরবর্তী পর্বে কি হলো তা জানার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

আমি নিজেও অপেক্ষায় আছি আপু ওদের পরের কাহিনীটা জানার জন্য। হিহিহিহি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

সত্যিই খুব অদ্ভুত ভাবে সাথী আর তপুর পরিচয় হয়েছে। তবে তপু যে শেষ পর্যন্ত অনলাইন থেকে অ্যাডমিট নামিয়ে পরীক্ষা দিতে পারলো এটাই ভালো। দেখা যাক, আবারও সাথীর আর তপুর আচমকা দেখা হয় কিনা!

আসলেই ওদের পরিচয় টা বেশ মজার ছিল। আর এজন্যই এই ঘটনা টা সারা জীবন দুজনের মনে থাকবে। তবে গল্পের শেষ টায় কি হয় এটা আমি নিজেও জানি না। হাহাহাহাহা।

তবে গল্পের শেষ টায় কি হয় এটা আমি নিজেও জানি না।

হা হা হা...... এটা কি ছিল 🤣🤣🤣🤣।

এইবার যে ভুল করেননি তা গল্পটা পড়েই বুঝতে পেরেছি। কারণ তপু এবং সাথীর গল্প করার স্টাইল দেখে মনে হচ্ছিল যে তপু আপনি নিজেই। গল্পটা যদিও প্রথম পর্ব পড়া হয়নি কিন্তু দ্বিতীয় পর্বটা পড়ে কাহিনী কিছুটা আন্দাজ করতে পারছি। খুব ভালো লিখেছেন ভাইয়া। ভালোই লাগছে পড়তে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

হিহিহিহি, আপু ওটা তো শুধু একটা অ্যাকসিডেন্ট আর আমার একটা বোকামি ছিল। আর প্রথম পর্বটাও পড়বেন সময় হলে। এখন অবধি যা লিখেছি সবটাই সত্যি। এখানে বানানো কোন গল্প নেই। তবে এরপর ধীরে ধীরে হয়তো বানানো কোন এক দিকে নিয়ে গিয়ে শেষ করব। দোয়া করবেন আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

বেশ সুন্দর একটা মিষ্টি প্রেমের গল্প। যাই হোক অবশেষে নাম জানার কাহিনী এই পর্বে ডিক্লিয়ার করলেন। আশা করি পরবর্তীতে যখন তাদের আবার দেখা হবে তখন একটা মিষ্টি প্রেমের গল্পের সূচনা হবে।

দেখা যাক ভাই, কই থেকে কই যাওয়া যায়। আমিও অপেক্ষায় আছি 😊😊