স্বপ্নের পদ্মা সেতু ভ্রমণ

in hive-129948 •  2 years ago 

নমষ্কার,,

ভীষণ খুশি একটা মন নিয়ে আজকের লেখা শুরু করছি। কারণ আজ স্বপ্নের পদ্মা সেতু থেকে ঘুরে আসলাম হঠাৎ করেই। বেশ ভালো একটা মুহূর্ত ছিল বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত। সেই গল্প আজ সবার সাথে ভাগ করে নিচ্ছি।

ঢাকাতে আমি যেখানে থাকি তার পাশেই আমার মামাতো বোন থাকে ফ্যামিলি নিয়ে। আমার দিদি আর দিদির হাসব্যান্ড দুজনই ডক্টর। প্রতি বৃহস্পতিবার জামাইবাবু বগুড়া চলে যান এলাকার চেম্বারে রোগী দেখতে। আর দিদির ছোট ছোট দুই বাচ্চাকে নিয়ে একা থাকতে হয় দুই দিন। তাই আমি ঢাকাতে থাকলে বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার এই দুই দিন দিদির বাড়িতেই থাকি। তো আজ সকালে যখন জামাইবাবু বাড়ি চলে আসলো আমাকে জিজ্ঞেস করলো কোন কাজ কিনা। আমি বললাম অমন কোন কাজ নেই। তখন বলল তাহলে বিকালে তিন টার দিকে সবাই রেডি থেকো। আজ পদ্মা সেতু দেখতে যাব। বেশ ভালই লাগলো শুনে। আসলে পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অহংকার। আর দেশের এত বড় একটা অর্জনকে সামনে থেকে দেখতে কার না ভালো লাগবে!

IMG20220730183455.jpg
Location

IMG20220730183448.jpg

Location

আমাদের বের হতে হতে সাড়ে তিন টা বেজে গেল। আসলে ছোট বাচ্চাদের সব জিনিস গুছিয়ে নিয়ে বের হওয়া সত্যিই অনেক কঠিন ব্যাপার। যাই হোক সব ঠিক মত করেই বেড়িয়ে গেলাম। কিন্তু ধানমন্ডির বিরক্তিকর জ্যাম অনেক সময় নষ্ট করে দিল। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে যেতেই এক ঘণ্টার বেশি সময় শেষ। এক পর্যায়ে যখন মাওয়া এক্সপ্রেস হাইওয়ে তে উঠলাম নিজেকে যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে বাংলাদেশের কোন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। দৃষ্টিনন্দনভাবে বাহারি রকম ফুলের গাছ দিয়ে সাজানো রাস্তার দুইপাশ। মন ভরে যাচ্ছিল চোখ দিয়ে দেখে।

IMG20220730183239.jpg
Location

IMG20220730183434.jpg

Location

মোটামুটি ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট পর আমাদের গাড়ি পৌঁছে গেল স্বপ্নের পদ্মা সেতুর টোল প্লাজাতে। নিজের ভিতরে এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছিল। দেশের এত বড় অর্জনের সাক্ষী হতে আজকে আমিও পেরেছি। আমাদের গাড়িটা ব্রিজের উপরে খুব আস্তে আস্তে চলেছে। দুই চোখ ভরে উপভোগ করেছি দুই পাশে সৌন্দর্য। এক কথায় অপূর্ব লাগছিল। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছিল গোধূলি লগ্নের ঐ আকাশটা। যতটা সম্ভব ছবি তুলেছি দুই পাশের। ব্রিজের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য কিছু দূর পরপরই দেখলাম সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। ব্যাপারটা খুব ভালো লেগেছে। পদ্মা সেতু পার হয়ে একটু দূরে গিয়ে আমরা গাড়িটা দাঁড় করিয়ে কিছু ছবি তুলতে নিলাম এমন সময় হঠাৎ করেই আর্মির গাড়ি এসে আমাদেরকে নিষেধ করল ছবি তুলতে এবং তাড়াতাড়ি জায়গাটা ত্যাগ করতে বলল। আমরা আর কথা না বাড়িয়ে রওনা দিয়ে দিলাম।

IMG20220730184159.jpg

Location

IMG20220730184211.jpg
Location

IMG20220730184412.jpg
Location

IMG20220730154517.jpg
Location

IMG20220730191951.jpg

Location

কিছুদূর দিয়ে ইউট্রান দেখে গাড়িটা ঘুড়িয়ে নিয়ে রওনা দিলাম। । রাতের পদ্মা সেতু তখন আলোতে তে চক চক করছে। এটা এক অন্যরকম ব্যাপার। আসলে ছবি তুলে ঐ মুহূর্তগুলো সৌন্দর্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়। স্বচক্ষে যে একবার দেখবে সে পুরো পাগল হয়ে যাবে। যাই হোক এভাবে ধীরে ধীরে আমরা পদ্মা সেতুর পার করে মাওয়া ঘাটের দিকে চলে আসলাম। মাওয়া ঘাটের কথা না হয় সামনের দিনের পোস্টে লিখব। সত্যি বলতে আজকে শরীর এত ক্লান্ত লাগছে যে ঘুমে চোখ বুজে আসছে বার বার।

তাই কথা না বাড়িয়ে আজকে এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সব কিছুর বর্ণনা শুনে আমার ও যেতে ইচ্ছে করছে।ছবি গুলো ও বেশ সুন্দর। ভালো ছিলো।সাথে একটা গার্লফ্রেন্ড থাকলে আরো ভালো হত,তাই না বলেন😜😜।

গার্ল ফ্রেন্ড একটা ঝামেলা ছাড়া আর কিছু না 🤪। বোন , জামাই আর ভাগ্নেকে নিয়ে গেছি, বিন্দাস মজা করে ফিরেছি।

আমাদের বাসা ঐদিকে অথচ এখন পর্যন্ত আমারই পদ্মা সেতু দেখা হয়নি। আর আমাকে তো খুব বলেন ঘুরতে গেলে বলার জন্য। আজকে তো ঠিকই নিজেই বোন দুলাভাই এর সঙ্গে একা একা ঘুরতে চলে গেলেন । একবার বললেন না। যাই হোক পদ্মা সেতুর ছবিগুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। অনেক ভালো একটি সময় কাটিয়েছেন মনে হচ্ছে।

আপুর বাড়ি কি বরিশাল নাকি? 🤔
আমি তো আপনাকে জানানোর সময় টাও পাই নি আপু। হঠাৎ করেই সব কিছু হয়ে গেছে। এরপর একসাথে গিয়ে আপনার বাড়ি থেকেও ঘুরে আসবো কেমন 🥰

এবার বাড়িতে গিয়েছিলাম তখন প্রথম পদ্মা সেতু দিয়ে গিয়েছি আসলেই অনুভূতিটা ছিল অন্যরকম। খুবই ভালো লাগছিল এবং আসার সময় পদ্মা সেতু দিয়েই ঢাকায় এসেছি ভালই লাগছিল। আজকে আপনি পদ্মাসেতু ঘুরতে গেছেন সে অনুভুতি প্রকাশ করেছেন শুনে আবার যেতে ইচ্ছে করছে ভালো লাগছে আপনার পোস্টটি।

আসলেই অন্যরকম একটা অনুভূতি। বেশ ভালো লাগছিল । অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন পর্যন্ত স্বপ্নই থেকে গেল নিজ চোখে আর দেখা হলো না। যাহোক আপনার ফটোগ্রাফি গুলা দেখে কিছুটা হলেও প্রশান্তি পাচ্ছি যে ভার্চুয়ালি পদ্মা সেতু দেখতে পেলাম।

স্বপ্ন কেন থাকবে ভাই, একবার একটু সুযোগ করে ঘুরে আসবেন। খুব ভালো লাগবে। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এটা সম্ভব হবে।

আসলেই ভাই এ এক আনন্দের ব‍্যাপার। সেই বহু কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু ভ্রমণ। আপনার সঙ্গে আমিও ভ্রমণ করে ফেললাম হি হি। দারুণ ছিল কিন্তু আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা টা। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

অনেক দিন পর বেশ ফুর্তি নিয়েই একটু ঘোরাঘুরি হলো ভাই। ভালো লেগেছে আমার নিজেরও। অনেক ভালো থাকবেন ।

পদ্মা সেতু দেখার জন্য আমারও যাওয়ার খুব ইচ্ছে রয়েছে। আমরা সামনে একটি উদ্যোগ নিয়ে যাওয়ার খুবি ইচ্ছে রয়েছে। আপনি গিয়েছেন দেখে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই।

সময় সুযোগ করে একদিন যাবেন অবশ্যই। খুব ভালো লাগবে ভাই। অনেক ভালো থাকবেন।

একাকী জীবনে আশেপাশে কোন আপনজন থাকলে তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগে। পদ্মা সেতু এলাকায় ভালো সময় কাটাতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। আমারও ইচ্ছে আছে কয়েকদিনের মধ্যেই দেখতে যাব। আসলে আমাদের দেশের এত বড় একটা অর্জন চোখে না দেখে থাকাটা মুশকিল।

সত্যিই তাই। এত বড় একটা অর্জনের সাক্ষী হওয়া টাও বেশ বড় একটা ব্যাপার। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একবার ঘুরে আসবেন ভাই। অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

বা আপনি তো দেখছি পদ্মা সেতু জয় করে ফেলেছেন। আমারও খুব ইচ্ছে পদ্মা সেতুতে একটিবারের জন্য হলেও যাওয়া। কিন্তু আমার বাড়ি থেকে পদ্মা সেতু অনেক দূর তাই যাওয়া হচ্ছে না। তবে আপনি বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন দেখে অনেক ভালই লাগছে। খুবই চমৎকার হয়েছে প্রতিটি ফটোগ্রাফি।

বাংলাদেশের ভেতর আর দূর কি আপু,, সময় সুযোগ করে একটু গুছিয়ে উঠে চলে আসবেন একদিন। পদ্মা সেতু দেখা হবে আর তার সাথে মাওয়া ঘাটে ইলিশটাও খেয়ে যাবেন।