ছোটবেলায় দাদুর মুখে শোনা একটা ভূতের গল্প।। জুলাই -১০/০৭/২০২৩।।

in hive-129948 •  2 years ago 

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

💠প্রথম পর্ব💠


আজ থেকে প্রায় তিন চার মাস আগে বা তারও বেশি হবে শেষবারের মতো এই কমিউনিটিতে ভূতের গল্প শেয়ার করেছিলাম। আসলে ছোটবেলায় ঠাকুর মা, ঠাকুর দাদা বা দাদুর মুখে এত পরিমাণে ভূতের গল্প শুনেছি যে সেটা যদি শেয়ার করি তাহলে কতদিন যে লেগে যাবে তার কোন শেষ নেই। তবে সমস্যা হল যে সব সময় আসলে মনে পড়ে না গল্পগুলো। হঠাৎ হঠাৎ করেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই ছোট ছোট গল্পগুলো যেগুলো ছোটবেলা শুনতে অনেক ভালো লাগতো। তবে একদম ছোটবেলায় যে গল্পগুলো বলত সেগুলো অতটা ভয়ের না হলেও একটু বড় হওয়ার পরে দাদুর মুখে এবং ঠাকুর মার মুখে অনেক ভূতের গল্প শুনেছি যেগুলো তাদের নিজেদের সাথে ঘটে যাওয়া। অনেকেই হয়তো বলবেন যে হয়তো তাদের হ্যালোসিনেশন হয়েছে বা এমন কিছু দেখেছে যেটা হয়তো চোখের ভুল। এই কথাগুলোর সাথে আমিও একমত, তবে কিছু কিছু ঘটনা রয়েছে আসলে যেগুলোর কোন ব্যাখ্যা হয় না বা কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা সেগুলো ঠিকঠাক করে প্রমাণ দিতে পারে না। সেখান থেকেই আসলে ভয়ের উৎপত্তি এবং সেখান থেকেই ভূতের গল্পের শুরু। গতকাল রাতেই আসলে গল্পটা মাথায় আসলো এজন্য ভাবলাম যে আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক।

gothic-1378352_1280.webp
সোর্স

আজ থেকে প্রায় ষাট বছর আগের কথা বলছি যখন আমি হওয়া তো দূরের কথা আমার মায়েরও জন্ম হয়নি। ওই সময়টাতে আমার দাদু প্রথম একটা স্কুলে চাকরি করত এবং সেখান থেকে ধীরে ধীরে হেডমাস্টার হয়ে গেছিল। তবে সেটা বড় ব্যাপার নয় তার থেকেও আমার দাদুর আর একটা শখের কাজ ছিল সেটা হল যে ঝাড়ফুঁক করা। বিশেষ করে যখন গ্রামাঞ্চলে মানুষের অসুখ হতে বা ভূতে ধরত তখন আমার দাদু সেখানে চলে যেত ঝাড়ফুঁক করার জন্য। যদিও তখন দাদুর নতুন বিয়ে হয়েছিল এজন্য আমার দিদিমা তেমন কিছু বলতে পারত না। তবে তারপরও মাঝেমধ্যে বলতো যে তুমি এই কাজ ছেড়ে দাও না হলে তোমার ভবিষ্যতে কিন্তু বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। কারণ তুমি যাদের ঘাড় থেকে বা শরীর থেকে এই অপদেবতা বা অশরীরীগুলোকে নামাচ্ছো তাদের হয়তো উপকার হচ্ছে কিন্তু যারা তাদের ঘাড়ে ভর করছে তাদের কিন্তু তোমার উপর একটা রাগ থেকেই যাবে। সেই রাগ যে কিভাবে তারা মেটাবে এটা কিন্তু তুমি পরবর্তীতে টের পাবে।

forest-3737107_1280.jpg
সোর্স

তবে আমার দাদু প্রচন্ড সাহসী মানুষ ছিলেন তাই এই সবে তিনি কখনোই ভয় পেতেন না। তার বদলে তিনি আরো আটোসাটো হয়ে ব্যাপারটাকে বিস্তৃতি করানোর কাজে নেমে যেত। মোটামুটি গ্রামে বা গ্রামের বাইরে যেখানেই মানুষকে ভূতে ধরত সেখানেই নাকি দাদু চলে যেত তাকে ঝাড়ফুঁক করার জন্য এবং যখন বাড়ি ফিরত তখন কোন একজন মানুষকে সাথে নিয়ে ফিরত। কারণ যাকে ঝাড়ফুঁক করা হতো এবং যার শরীর থেকে অপশক্তি বের করে দেয়া হতো সেই অপশক্তি নাকি দাদুর পিছনে পিছনে আসতো। এজন্য একজন বা দুজন লোক সাথে করে বাড়ি পর্যন্ত দিয়ে যেত যাতে কোন ক্ষতি না হয়। একদিন হঠাৎ করেই নাকি আমার দাদুদের পাশের গ্রামে একটা কুড়ি বছরের মেয়েকে ভুতে ধরে। সেই মেয়ে নাকি অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। তাই গভীর রাতে আমার দাদুকে দুজন লোক হ্যারিকেন নিয়ে ডাকতে চলে আসলো। দাদু তখন খেয়ে-দেয়ে সবে মাত্র বিছানায় শুয়েছে। যাইহোক লোকগুলোর আকুতি মিনতি শুনে দাদু আর ঘরে বসে থাকতে পারলো না, দাদুর ঝাড়ফুঁক করার প্রয়োজনের জিনিসপত্র নিয়ে সেই গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিল।

background-914404_1280.webp
সোর্স

মেয়েটার নাকি খুব খারাপ অবস্থা হয়ে গেছিল তার হাত-পা চোখ সব উল্টে বেঁকে গেছিল। ওই মেয়ে নাকি সন্ধ্যার সময় ওদের পাশের একটা বাগানে পাতা কুড়াতে গেছিল তখন নাকি হঠাৎ করে একটা কবরে পা পড়ে সেটা ভেঙে কবরের ভেতর পড়ে যায়। তারপর থেকেই সেই রকম অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। যাই হোক দাদু থাকে ঝাড়ফুঁক করে মোটামুটি সুস্থ করে দিল। কিন্তু এত তাড়াহুড়ো করার জন্য দাদুর একটা জিনিস খুব বড় ভুল হয়ে গেছিলো ওইদিন। সেটা হলো যে উনি ঝাড়ফুঁক করার আগে নিজের শরীরটাকে মন্ত্র দিয়ে বেঁধে নিতেন। সেটা ঐদিন কোন কারনে করতে তিনি ভুলে গেছিলেন এবং পরবর্তীতে এই ব্যাপার তার মনেও পড়েনি। যাইহোক গ্রামের লোক সিদ্ধান্ত নিল যে দাদুকে আবার বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে যাবে। কিন্তু দাদু বলল তোমাদের মেয়েকে সামলাও। আমাকে আর এত কষ্ট করে বাড়ি পর্যন্ত দিতে যেতে হবে না, আমি একটা হেরিকেট নিয়েই বাড়ি চলে যাব কোন সমস্যা হবে না। গ্রামের লোকজন এত জোরাজোরি করার পরেও আসলে দাদু একা একাই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল।

চলবে....👉❤️👉.....


শ্রেণীভূতের গল্প।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

এ ধরনের গল্প গুলো পড়তে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আমার অনেক ভয়ও লাগে। আপনার দাদা অনেক সাহসী ছিল এজন্যই এই ধরনের কাজগুলো তিনি করতেন। আসলে ঝাড়ফুঁক করা লোকদের অনেক সাহস থাকা লাগে।সব সময় আপনার দাদু নিজের শরীরটাকে মন্ত্র পড়ে বেঁধে নিতেন। ঐদিন উনার শরীরটাকে মন্ত্র পড়ে বেঁধে নিতে মনে না থাকায় তার সাথে কি হয়েছিল তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

ছোটবেলায় যখন দাদুর মুখে এই গল্পগুলো শুনতাম তখন আমারও খুব ভয় লাগতো। তবে এখন আর এসব নিয়ে কোন ভয় লাগে না। গল্পটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম আপু।

এই ধরনের ভুতের গল্প গুলো সব সময় আমার খুব ভালো লাগে। গ্রামাঞ্চলে সাধারণত তোমার দাদুর মতন এরকম সাহসী খুব কম পাওয়া যায় আজকাল। এই পর্বে তো ভূতের তেমন কিছু বুঝতে পারলাম না। আশা করি পরবর্তী পর্ব খুব ইন্টারেস্টিং হবে। অপেক্ষায় রইলাম।

আমার লেখা ভূতের গল্পটা তোমার ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম। আশা করি পরবর্তী পর্ব অবশ্যই পড়বে।

ছোটবেলায় আমিও অনেক অনেক ভূতের গল্প শুনেছিলাম। তবে এখন তেমন একটা মনে পড়ে না। আপনার দাদু তো খুবই সাহসী ছিলেন এবং ওনার ঝাড়ফুঁক তো বেশ কার্যকরীও ছিলো। এতো রাতে আপনার দাদু একা একা বাসায় ঠিকমতো আসতে পেরেছিল কিনা,সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

পরবর্তী পর্ব দিয়ে দিয়েছি ভাই। তবে এটা সত্যি কথা যে আমার দাদু খুবই সাহসী একজন মানুষ ছিলেন, সেই তুলনায় আমি অনেক বেশি ভীতু। হা হা হা...