বন্ধুর দিদির বৌভাতে আমরা সবাই (শেষ পর্ব)।। সেপ্টেম্বর-০৮/০৯/২২।।

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন । প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন।সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমিও অনেক অনেক ভালো আছি সুস্থ আছি। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। বিগত এক সপ্তাহ ধরে বিয়ে বাড়ির উপর একটা সিরিজ চলছিল। এবং এই বিয়ে বাড়ির শুরু থেকে শেষ অব্দি যাবতীয় অনুষ্ঠান এবং যা যা ঘটেছিল আমার সাথে, সব আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এবং আজকের পর্বের মধ্য দিয়েই বিয়ের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটবে। তবে বিগত পর্বগুলোতে আমরা নিজেদের বাড়ির ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কথা বলেছিলাম। তবে আজকে ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক কোন কথা হবেনা তার বদলে বৌভাতে গিয়ে আমাদের সাথে কি ঘটেছিল সেই গল্প এবং বৌভাতের কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে। যাই হোক আর বেশি কথা না বলে চলুন শুরু করা যাক আজকের পর্ব।

বিয়ের দুদিন পর সাধারণত বৌভাত হয়। ফলে মাঝখানে একটা দিন আমরা কিছুটা রিলাক্স করার জন্য পেয়েছিলাম। যদিও সেটা আমার জন্য কতটা রিলাক্স ছিল সেটা না বললেই ভালো। হা হা হা.. যেহেতু বৌভাতে যেতে হবে সেহেতু মাঝখানের দিনটাতে টুকটাক শপিং করে নিলাম। আমরা ৫৬ সিটের একটা ভলবো গাড়ি ভাড়া করেছিলাম। তবে রওনা দেওয়ার দিন দুপুরে দেখলাম লোকসংখ্যা আরো কিছু বেশি হয়েছে। ও আর একটা কথা আমাদের বৌভাতের নেমন্তন্ন ছিল ঝাড়খালি আর এটা সুন্দরবনের কাছাকাছি সুতরাং এখান থেকে যেতে আমাদের মিনিমাম পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা লাগবে। তাই দাঁড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু সিট সংখ্যা থেকে লোক সংখ্যা অনেক বেশি হওয়াতে আমরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। যাইহোক কোন উপায় না পেয়ে ড্রাইভারের পাশের সিটে গিয়ে বসলাম। যদিও সামনে বসতে আমার খুব বেশি একটা খারাপ লাগে না তবে ইঞ্জিনিয়ার তাপ গায়ে লাগে এই আর কি। যাইহোক নির্দিষ্ট সময়ের আধা ঘন্টা পর আমরা রওনা দিলাম ঝাড়খালীর উদ্দেশ্যে। এবং মোটামুটি ধারণা করেছিলাম রাত আটটার ভিতর আমরা পৌঁছে যাব সেখানে।

কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা কলকাতায় ঢুকতে না ঢুকতেই প্রচন্ড জ্যামে আটকে গেলাম। একে তো ছিল অফিস টাইম তারপর আবার রাস্তার কাজ চলছিল। সব মিলিয়ে এক ভয়ঙ্কর অবস্থা। আমরা প্রায় দু ঘণ্টার মতো আটকে ছিলাম জ্যামে। তারপর আর বিশেষ কোনো সমস্যা হয়নি। তবে আমরা নির্দিষ্ট সময়ের থেকেও দুই ঘন্টা বা আড়াই ঘন্টা পর বিয়ে বাড়িতে গিয়ে পৌঁছলাম। সেখানে গিয়ে হল আর এক ঝামেলা। যেহেতু আমরা গ্রামের লোকদের বৌভাতে নিয়ে গেছিলাম। সুতরাং তার ভিতরে কিছু গ্রামের মাতাল আমাদের গাড়িতে উঠেছিল। এবং তারা রীতিমতো ওখানে গিয়ে ঝামেলা করতে লাগলো। যেহেতু মান সম্মানের প্রশ্ন সুতরাং অনেক কষ্ট করে তাদের ম্যানেজ করতে হলো। যাইহোক সবকিছু ঠিকঠাক করে আমরা বিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেলাম।

তবে সমস্যার শুরু হলো আসলে সেখান থেকেই। টানা ছয় ঘন্টা জার্নি করে আমরা যখন বিয়ে বাড়িতে ঢুকলাম এবং সেখানকার পরিবেশ আমাদের যথেষ্ট হতাশ করেছিল। কারণ বিয়ে বাড়িটি নতুন বানানো হয়েছিল এবং চারিদিক কাচের জালনা দিয়ে আটকানো। যেহেতু এয়ারকন্ডিশন সিস্টেম ছিলনা সেখানে এবং বাতাস চলাচলের জন্য তেমন কোন বিশেষ ব্যবস্থা ছিল না ফলে ভেতরটা প্রচন্ড গরম এবং বেশ বিচ্ছিরি একটা গন্ধ ছিল। বেশি সময় সেখানে থাকতে পারলাম না হাতে কিছুটা চিকেন পকোড়া এবং কফি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসলাম। তবে এর মাঝখানে দশ মিনিটের মত গিয়ে সেখান থেকে কিছু ফটো তুলে আনি। যেগুলো আসলে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি আজ।তারপর বন্ধুরা তিন চারজন মিলে আশপাশটা ঘুরে দেখার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। মোটামুটি দু-তিন ঘন্টা ঘুরে এসে খেতে চলে গেলাম। যেহেতু প্রচন্ড পরিমাণে গরম ছিল সুতরাং বিশেষ কিছু খেতে পারিনি টুকটাক খাবার দাবার খেয়েই বেরিয়ে পড়লাম ওখান থেকে। কারণ আবার ছয় ঘন্টার মত জার্নি হবে সুতরাং এত রাতে যদি বেশি খায় তাহলে বমিও হতে পারে। ইচ্ছা ছিল আরো কিছু সময় থাকা। যেহেতু গ্রাম থেকে কিছু বাচ্চাদের এসেছিল সুতরাং বেশি রাত থাকা গেল না। মোটামুটি খেয়েই বেরিয়ে পড়তে হয়েছিল আমাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে। এবং ওখান থেকে বাড়ি ফিরতে ফিরতে আমাদের সকাল আটটার মতো বেজে যায়। প্রচন্ড টায়ার্ড থাকার কারণে হালকা ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এবং সেই ঘুম ভাঙ্গে দুপুর দুটোয়

যাইহোক আজকের পর্বের মধ্য দিয়ে বিয়ে বাড়ির সমস্ত পর্ব শেষ হয়ে গেলো। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে । আগামীকাল থেকে নতুন কোনো টপিকস নিয়ে হাজির হব। ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।