সিকিম উৎসব,👹ছৌ নাচ👹 (স্পেশাল পর্ব)।। ডিসেম্বর-০৯/১২/২০২২

আজকের পর্বটা অনেকটাই স্পেশাল। এতদিন যতগুলো পর্ব আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি তার ভেতর সবথেকে আমার কাছে ইন্টারেস্টিং লেগেছিল আজকের এই উপস্থাপনাটা। আশা করছি আপনাদেরও অনেক অনেক বেশি ভালো লাগবে, যদি পুরো ভিডিওটা আপনারা দেখেন তাহলে। যারা পুরুলিয়ায় গেছেন বা যারা পুরুলিয়ার ঐতিহ্যবাহী ছৌ নাচ এর কথা শুনেছেন তারা আজকের ভিডিওটার সাথে কিছুটা হলেও ব্যাপারটা কানেক্ট করতে পারবেন। আগে আপনাদের ছৌ নাচ সম্পর্কে কিছু কথা বলি। ছৌ নাচ আসলে পুরুলিয়ার ঐতিহ্যবাহী নাচের মধ্যে একটি। সাধারণত শীতকালে গ্রাম অঞ্চলে প্যান্ডেল করে এই নাচের আয়োজন করা হয়। এবং এই নাচের মাধ্যমে বিভিন্ন বিখ্যাত ইতিহাসের অংশবিশেষ দেখানো হয়। যেমন রামায়ণ, মহাভারত এর বিভিন্ন অংশ বিশেষ, সেটা হতে পারে রাবণ বধ বা সিতা হরণ, রাক্ষসী বদ কিংবা অন্য যেকোনো বিষয়। আমি বছর দুয়েক আগে যখন পুরুলিয়া ঘুরতে গেছিলাম তখনও ওখানে গিয়ে ছৌ নাচ দেখেছিলাম। তবে আসলে তখন ভিডিও করা হয়নি জন্য আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারছি না।

আচ্ছা এইবার আসি আজকের প্রসঙ্গে, এটা আসলে ছৌ নাচ কিনা আমি সঠিক বলতে পারবো না। তবে আমার কাছে পুরোপুরি ওরকমই মনে হয়েছে। সিকিমদের আয়োজিত এই নাচের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছিল সিকিমে বসবাসকারী সাদা বাঘ এবং তাদের সাথে সিকিম আদিবাসীদের সম্পর্ক। তাছাড়া বলতে গেলে যেটা এই নাচের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে সেটা হল বাঘের চরিত্র। তারা একসাথে কিভাবে থাকে, কি রকম ব্যবহার করে এসব আবার কি। এর আগে আমি কখনো এরকম কোন জিনিস দেখিনি। জীবনে প্রথমবার দেখে এতটাই অবাক হয়ে গেছিলাম যে, আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না। সাড়ে ছয় মিনিট ব্যাপী এই নাচ আমাকে পুরো হিপনোটাইজ করে রেখে দিয়েছিল। পুরো ভিডিওটা যদি আপনার খুব মনোযোগ সহকারে দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন কত দক্ষতার সাথে এই নাচ করা হয়েছে।

এবার অনেকের মনেই একটা প্রশ্ন হতে পারে যে, এই বাঘের ভেতরে আসলে কি আছে। কারণ এটা তো একদমই অরিজিনাল না উপরে কম্বল দিয়ে তৈরি করা বাঘের চামড়া মত এবং নিচে তাহলে কি রয়েছে। আসলে এগুলোর প্রত্যেকটার ভিতরে দুটো করে মানুষ রয়েছে একটা সামনের দিকে এবং অন্য একজন পেছনের দিকে। তবে তাদের ব্যালেন্সটা এত সুন্দর করে তৈরি করা যে প্রত্যেকটা মুভমেন্ট একসাথে হচ্ছে এবং কোন ধরনের কোন ফল্ট দেখা যায়নি। একটা জিনিস চিন্তা করে দেখেন একটা বডিতে দুটো শরীর এবং দুজনের চিন্তাধারা আলাদা তবে তারা কি করে একসাথে সবকিছু মেনটেন করছে। আসলে এই মানুষগুলো এত পরিমান প্র্যাকটিস করে যে আপনার সেটা চিন্তাও করতে পারবেন না। আমি যখন পুরুলিয়া আমার কাকুর বাড়ি ঘুরতে গিয়েছিলাম তখন দেখেছিলাম যে একটা অনুষ্ঠান করার আগে এরা কতদিন ধরে প্র্যাকটিস করে এবং নিজেদের পরিপক্ক করে গড়ে তোলে। যদিও আজ বিশেষ কিছু লিখতে চাইছিলাম না, কারণ আমার মেইন বিষয় ছিল আপনাদের ভিডিওটা দেখানো। আমার লেখাটা না পড়লেও সমস্যা নেই।

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।