কোটা বিরোধী আন্দোলনে আমার অবস্থান।

in hive-129948 •  4 months ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


প্রায় দেড় মাস হোলো দেশের বাইরে এসেছি। আজকে দেশে ফিরছি। তবে ফেরার সময় বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছি। কারন আপনারা সকলেই জানেন দেশের পরিস্থিতি এখন কতটা ভয়াবহ। কোটা বিরোধী আন্দোলনের কারণে ছাত্র সমাজ এখন সরকারের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গিয়েছে। শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলনটা এখন রীতিমতো সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রাণহানি খবর পেয়েছি। যেটা আসলে খুবই দুঃখজনক। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে প্রত্যেকেই এই আন্দোলনের পক্ষে-বিপক্ষে তাদের অবস্থান নিচ্ছে। তাই আমি চিন্তা করলাম আমিও আমার অবস্থানটা আপনাদের কাছে তুলে ধরি। প্রথমত কোটা সিস্টেমের প্রতি আমার নিজেরও খুব একটা ইতিবাচক মনোভাব নেই।

1000009224.png

ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

শুধু পিছিয়ে পড়া সমাজের জন্য অল্প কিছু কোটা রাখা যেতে পারে। এটা নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত ধারণা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে এই বিষয়ে আমি অনেকটা সহমত পোষণ করি। তবে এই আন্দোলনের একটা বিষয় আমার কাছে বেশ খারাপ লেগেছে। সেটা হচ্ছে গিয়ে ছাত্র সমাজের ভেতর অনেকেই আকারে ইঙ্গিতে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে কটাক্ষ করছেন। অথচ মুক্তিযোদ্ধারা এই দেশের সূর্যসন্তান। একাত্তরে এই মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কারণেই আল্লাহ পাক আমাদের স্বাধীনতা দান করেছিলেন। অথচ এখন দেশের একটা শ্রেণি কারণে অকারণে তাদেরকে কটাক্ষ করছেন। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী কথার উপরে ভিত্তি করে ছাত্র সমাজ নিজেদেরকে রাজাকার হিসেবে পরিচয় দিতেও দ্বিধা করছে না। যদিও জানি এটা তারা তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ থেকেই করছেন।

কিন্তু তার পরেও নিজেকে রাজাকারের মতো ঘৃণ্য পরিচয়ে পরিচিত করার মতো রুচি ছাত্র সমাজের কেমন করে হোলো সেটা আমার মনে রীতিমতো বিস্ময় তৈরি করেছে। অবশ্য এই আন্দোলনে স্বাধীনতা বিরোধী একটা পক্ষ তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে জুটে গিয়েছে। যাইহোক তারপরেও এই আন্দোলনটা সহিংসতায় রূপ নেয়ায় আমি রীতিমত মর্মাহত। আর এই দায় অবশ্যই সরকারকে নিতে হবে। সরকার যদি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দিয়ে ছাত্র সমাজের ওপরে হামলা না করাতো। তাহলে হয়তো আজকে আন্দোলনটা এরকম সহিংসতায় রূপ নিতো না। যখন ভিডিও ফুটেজে দেখি আমার দেশের পুলিশ এদেশেরই এক সন্তানের বুকে গুলি করছে। তখন মনে হয় এ দৃশ্য সহ্য করার মতো নয়। আর এই আন্দোলনটা সহিংসতায় রূপ নেয়ার পিছনে আমাদের প্রধানমন্ত্রীরও কিছুটা অবদান রয়েছে।

দেশের অভিভাবক হিসেবে তার যেভাবে কথা বলা উচিত ছিলো তিনি সেভাবে বলেননি। এই বিষয়টা তিনি আরো সুন্দরভাবে সামলাতে পারতেন। তিনি ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিদেরকে ডেকে তাদের সাথে কথা বলতে পারতেন। কিন্তু সেটা না করে তিনি তাদেরকে প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যেটা ছাত্র সমাজের ক্ষোভকে আরো উসকে দিয়েছে। দেখতে দেখতে পরিস্থিতি মনে হচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। গতকালকেও সারা দেশব্যাপী যে রকম ভয়াবহ সহিংসতা হয়েছে তাতে করে মনে হচ্ছে না এই সমস্যা খুব সহজে মিটে যাবে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের বিরোধী দলগুলো ছাত্রসমাজের ক্ষোভের সুযোগটা ভালোভাবেই নিয়েছে। তারা ছাত্রদের একটা ন্যায্য আন্দোলনকে রীতিমতো রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপ দিয়ে ফেলেছে।

এই সমস্যা থেকে বের হতে হলে আমাদের প্রয়োজন এখন ধৈর্য এবং সহনশীলতা। আর সবাইকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনা। তাহলে একটা সুন্দর সমাধান বেরিয়ে আসবে। এখন দেখা যাক সরকারের দায়িত্বরত লোকজন এই বিষয়টাকে কিভাবে সামলায়। দেশের পরবর্তী পরিস্থিতি সেটার উপরেই নির্ভর করছে। পরিশেষে আমি বলতে চাই শিক্ষার্থীদের এই ন্যায্য আন্দোলনে আমি তাদের পক্ষে। সেইসাথে আমি এটা বলতে চাই আপনারা যেটাই করুন না কেনো। মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা হয় এমন কোন কাজ করলে বা কথা বললে তখন আপনারা দেশের বড় একটা অংশের সমর্থন হারাবেন। সর্বশেষে আমি এটাই আশা করি সরকার ছাত্রদের সমস্ত ন্যায় সঙ্গত দাবিগুলো মেনে নেবে। আর এই আন্দোলনটা শেষ পর্যন্ত আর কোন সহিংসতা ছাড়াই শেষ হবে।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!