প্রানের শহরে ভালোবাসার মানুষদের কাছে ফিরে আসা।

in hive-129948 •  2 years ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন আমি প্রায় গত একমাস যাবত ঢাকায় অবস্থান করছিলাম। পরিবার পরিজন ছেড়ে দম বন্ধ করা এই শহরে আমার আর মন টিকছিলো না। শুধু মন চাইছিল ছুটে আমার প্রানের শহরে চলে যাই। চলে যায় আমার আপন মানুষদের কাছে। ঢাকা শহর আমার কাছে কখনোই খুব একটা ভালো লাগে না। ঢাকা শহরে বড়জোর দু চার দিন থাকা যায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় ঢাকা শহরে থাকার কথা মনে হলেই এক ধরনের মানসিক চাপ অনুভব করি।

IMG_20220919_055557.jpg

তাই গত কদিন ধরেই চিন্তা করছিলাম একবার সময় করে ফরিদপুর থেকে ঘুরে আসি। কিন্তু চিন্তা করলেই তো আর সেটা বাস্তবায়ন করা যায় না। কারণ আমি ঢাকা এসেছি অত্যন্ত জরুরী একটি কাজ নিয়ে। সেই কাজটি ফেলে রেখে যাওয়া খুবই মুশকিল। তারপরেও আমার আম্মার কাছে অনুমতি নিয়ে আমি ঠিক করলাম ফরিদপুর থেকে ঘুরে আসবো। অনেকদিন হলো পরিবার পরিজনের সাথে দেখা সাক্ষাৎ নেই। শুধু ফোনে কথা হয়। কিন্তু ফোনে কথা বলে মনের তৃপ্তি আসে না।

IMG_20220919_093053.jpg

IMG_20220919_093100.jpg

যাইহোক শেষ পর্যন্ত গত সোমবার একদম ভোরবেলায় ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আমার ইচ্ছা ছিল একদম প্রথম ট্রিপে ফরিদপুর রওনা দেয়া। তাই আমি ফজরের নামাজ পড়ে বাসা থেকে গুলিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আমি জানতাম ঢাকা থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে প্রথম বাস ছেড়ে যায় ৫ঃ৪৫ মিনিটে। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারি বাস ছাড়বে ছটার সময়। যেহেতু আমি কিছুটা সময় আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছি। তাই চিন্তা করলাম বাস ছাড়তে যখন কিছুটা সময় দেরি আছে। তাই নাস্তা করে নেই। নাস্তা করার কিছুক্ষণ পর আমি বাসে উঠে বসলাম।

IMG_20220919_093111.jpg

IMG_20220919_093116.jpg

ঠিক ২ ঘণ্টার মাথায় আমি ফরিদপুর বাস স্ট্যান্ডে এসে পৌঁছায়। আমার আসার কথা আমি পরিবারকে আগে থেকে জানাইনি। কারণ আমার ইচ্ছা ছিল তাদেরকে সারপ্রাইজ দেয়ার। আমি এত সকালে উপস্থিত হওয়াতে আমার পরিবার আসলেই অবাক হয়েছে। দীর্ঘদিন পর নিজের শহরে ফিরতে পেরে এক অন্যরকম আনন্দ অনুভব করছিলাম। যা দেখছিলাম তার সবই ভালো লাগছিল। ঢাকা শহরের সেই কোলাহল পূর্ণ পরিবেশ থেকে এমন নিরিবিলি শহরে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছিল। তাছাড়া আমি যখন ফরিদপুরে পৌঁছলাম তখন কেবল সকাল সাড়ে সাতটা বাজে। যার ফলে শহরের রাস্তাঘাট তখনও বেশ ফাঁকা।

IMG_20220919_093050.jpg

IMG_20220919_093042.jpg

অনেকদিন পর নিজের বাড়িতে ফিরে মনে হচ্ছিল এক অন্যরকম আনন্দ অনুভব করছি। বাইরে যত আরামেই থাকি না কেনো নিজের বাড়িতে থাকার অনুভূতি সম্পূর্ন আলাদা। তাই দীর্ঘ একমাস পরে নিজের ঘরে প্রবেশ করে অনেক ভালো লাগছিলো। দীর্ঘদিন পর বাসায় আসার কারণে এক সময় চিন্তা করলাম ছাদ থেকে ঘুরে আসি। দীর্ঘদিন এই ছাদে আসা হয় না। দীর্ঘদিন পর ছাদে উঠে আমি কিছুটা অবাক হয়ে গিয়েছি। দেখতে পেলাম আমার স্ত্রীর লাগানো বেশ কিছু ফুল গাছে ফুল ফুটে রয়েছে। সেই ফুলগুলো দেখে ছবি তোলার লোভ আর সামলাতে পারলাম না। বেশ কয়েক রকমের ফুল সেখানে ছিল। যদিও ফুল কোনটাই খুব একটা বড় নয়। সবই ছোট ছোট ধরনের ফুল।

IMG_20220919_093143.jpg

IMG_20220919_093218.jpg

ছাদে উঠলে আমি চার পাঁচটা একবার দেখে নেই। ছাদ থেকে আশেপাশের পরিবেশ দেখতে বেশ ভালোই লাগে। একটা সময় ছিল আমাদের বিল্ডিং এর আশেপাশে আর কোন বড় বিল্ডিং ছিল না। তখন আমাদের ছাদ থেকে অনেকটা দূরে দেখতে পেতাম। কিন্তু এখন আমাদের বিল্ডিং এর দু'পাশেই বড় বড় নতুন বিল্ডিং হয়েছে। সেজন্য দৃষ্টির সীমানাও অনেকটা সীমিত হয়ে এসেছে। তারপরেও ছাদে এসে আমার আশেপাশের পরিবেশ দেখতে ভালোই লাগে। চমৎকার ভাবে ফুটে থাকা ফুলগুলো আর আশেপাশের শ্যামল সবুজ পরিবেশ মনটাকে ভালো করে দিয়েছিলো। কিছুটা সময় ছাদে ভালোই কাটালাম। তারপর নিচে নেমে এলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি সত্যি বলেছেন ঢাকা শহরে হয়তো দু চার দিনের জন্য এসে কষ্ট করে থাকা যায় তাও বিশেষ কাজে কিন্তু লাইফ টাইম ঢাকার শহরে থাকাটা বেশ চাপ । এই কোলাহল শহর ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার সময় মনের ভিতর খুবই সুন্দর একটা অনুভূতি কাজ করে। আমার কাছেও ঢাকা শহর মোটেই ভালো লাগেনা দীর্ঘ সময় থাকার জন্য। এখানে থেকে পরিবারকে অনেক মিস করতে হয় যেটা খুবই বেদনাদায়ক। পরিবারের সাথে সময় দিন সুস্থ এবং সুন্দর থাকুন ধন্যবাদ আপনাকে।

এই শহরটা আমার কাছে মোটেই ভালো লাগেনা। প্রথম দু চার দিন কিছুটা ভালো লাগে। তারপর থেকে বাড়ি যাওয়ার জন্য মন অস্থির হয়ে থাকে। যেমন এখন চিন্তা করছি কত দ্রুত কাজটা শেষ করে বাড়ি ফিরতে পারি।

এই শহরটা মোটেই বসবাসের উপযুক্ত না। আমার কাছেও মোটেই ভালো লাগে না এই শহর। এ শহরের প্রবাহিত সকল বায়ু আমার কাছে দূষিত মনে হয়। এ শহরে থাকা মানে, জোর করে মনকে বেঁধে রাখা।

অনেক ভাল লাগলো ভাইয়া, পরিবারের জন্য অনুভূতি পড়ে। এক মাস পর পরিবার, প্রিয় শহর সবকিছুই আপনার ভাল লাগছিল। ভাবীর লাগানো ছাদের গাছগুলো চমৎকার লাগছে। 💜❤️।আপনার আর আপনার পরিবারের সবাই কে নিয়ে ভাল কাটুক সময় এ কামনাই করি। অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

ধন্যবাদ আপনার শুভ কামনার জন্য।

আপনজন ছাড়া দীর্ঘদিন বাইরে সময় কাটানো খুবই কষ্টকর।তাছাড়া নিজের শহর বা গ্রাম হোক তার প্রতি সকলের আলাদা টান থাকবেই।আর অপছন্দের জায়গায় সময় কাটানো তো খুবই বিরক্তিকর।যাইহোক আপনি আপনজনের কাছে ভালোভাবে ফিরে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।আপনার ছাদে ফুলের ছবিগুলো সুন্দর ছিল।ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনজন ছাড়া দূরে থাকতে যে কষ্টটা হয় সেটা বোঝার জন্য হলেও মাঝে মাঝে তাদের থেকে কিছুটা দূরে থাকতে হয়। যেটা আমি এবার খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি।

ঢাকা অপছন্দ হলেও আমরা যারা ঢাকা আছি জীবন এবং জীবিকার জন্য আমাদের থাকতে হয়। তবে যারা রেগুলার থাকে না তাদের জন্য এই যান্ত্রিক শহর খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক। আপনি অনেক দিন পর প্রানের শহরে গিয়েছেন শুনে ভাল লাগলো। ঢাকা থেকে ফরিদপুর খুব অল্প সময়ে চলে গিয়েছেন। আপনাদের ছাদের ফুলগুলো অনেক সুন্দর। ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকে আমাদের যোগাযোগটা অনেক ভালো হয়েছে। খুব অল্প সময়ে এখন বাড়ি যেতে পারি।

নিজ প্রানের শহর বা প্রানের প্রিয় মানুষ ছেড়ে অন্য শহরে থাকাটা সত্যি অনেকটা কষ্টের । কিন্তু ভাই এইটা আমাদের পুরুষ জাতির একটা রীতি বলেই মেনে নিতে হবে ভাইয়া । দীর্ঘদিন সবাইকে ছেড়ে অন্য শহরে বাস করার পর যখন হটাত প্রিয় মানুষদের সাথে মোলাকাত হয় তখন মনে হয় পৃথিবীর পুরো সুখটাই আমার কাছে , এটাই বাস্তবতা ভাই । ভাইয়া সব বলতে গিয়ে একটা কথা কিন্তু ভুলে গেছি ভাবির হাতে লাগানো ফুল গাছটার ফুল কিন্তু অনেক সুন্দর লাগছে দেখতে , মাসা আল্লাহ । ধন্যবাদ ভাইয়া

দীর্ঘদিন পর প্রিয় মানুষদেরকে কাছে পাওয়ার যে অনুভূতি। আসলেই সেটা অন্যরকম।

দাদা আমিও আপনার মত ঢাকার বাহিরে গিয়েছিলাম। জীবনে প্রথম নানা বাড়ী। আসা যাক আপনার পোস্ট নিয়ে আপনি অনেক ভাল ভাবে আপনার বাড়ীর ছাদের ফুলগুলোর ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এছাড়া আপনার বাড়ী যাওয়ার উৎসাহ , একাকিত্ব বোধ প্রতিটি বিষয় আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে।

ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

নিজের বাড়িই সব চেয়ে বড় অট্টালিকা আমাদের প্রত্যেকের কাছেই। টানা বাড়িতে থাকলে তখন মনে হয় বোর হচ্ছি, বাড়িতে ভাল্লাগে না আরো কত কিছু।কিন্তু বাড়ি থেকে বেড়িয়ে কোথাও গেলে তখন মনে হয় ইস্ কতক্ষণএ বাড়ি যাব। নিজের বিছানায় গা এলিয়ে দেব। মায়ের হাতের রান্না খাব।বাড়িই সব চেয়ে প্রিয় জায়গা।

একদম ঠিক বলেছেন। আমারও এমনটাই মনে হয়। অবশ্য আমি কিছুটা ঘরকুনো মানুষ বলতে পারেন।

সত্যি ভাই আমারও ঢাকা শহর খুবই গ্যাঞ্জাম মনে হয়। দুই এক মাস পর পর ঢাকায় যাওয়ার পরে কিন্তু দুই একটি রাত থাকা পরে। তাতেই আমার না বিশ্বাস এসে যায়। আসলেই নিরিবিলি পরিবেশে থেকে অত্যাধিক গ্যাঞ্জাম যুক্ত পরিবেশে খাপ খাইয়ে চলা একটু অসুবিধাই হয়। যাইহোক দীর্ঘ একমাস পর আপনি স্বস্তিতে বাসায় ফিরেছেন। এতে আপনারও স্বস্তি পরিবারেরও স্বস্তি ফিরে এসেছে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মন্তব্যের জন্য।

জ্বী ভাইয়া, নিজের বাড়িতে থাকার মধ্যে সত্যি অফুরন্ত আনন্দ বিদ্যমান রয়েছে। অনেকদিন পরে নিজের বাড়িতে আসার অনুভূতির কথাগুলো অতি চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন আপনি। আপনার স্ত্রীর লাগানো ফুল গাছের ফুলের ফটোগ্রাফিটি দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। অসাধারণ একটি অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ঠিকই বলেছেন। নিজের বাড়ির সাথে আর অন্য কোন জায়গার তুলনা হয় না।