বন্ধু ফেরদৌসের সাথে সামরিক বাহিনী জাদুঘর দর্শন ( সপ্তম পর্ব)।

in hive-129948 •  10 months ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আজ আপনাদের সামনে সামরিক বাহিনী জাদুঘরের আরো কিছু ছবি নিয়ে হাজির হয়েছি। আসলে সামরিক বাহিনীর জাদুঘরে এত রকমের জিনিসপত্র ছিলো যেটা কয়েকটা পোস্টে শেয়ার করা সম্ভব না। তার পরেও আমি চেষ্টা করছি যে জিনিসগুলো আমার কাছে ভালো লেগেছিল বা যেগুলো আপনারা পছন্দ করতে পারেন সেই সমস্ত জিনিসের ছবি নিয়ে কিছু পোস্ট করতে। আর যাদের সামরিক বাহিনীর ব্যবহার করা সরঞ্জাম বা যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে কিছুটা আগ্রহ আছে। তাদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে যদি কখনো ঢাকা যান তাহলে সময় করে একবার সামরিক বাহিনীর জাদুঘর থেকে ঘুরে আসবেন। আমি নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

অবশ্য এই সমস্ত ব্যাপার নিয়ে বেশি আগ্রহ থাকে ছেলেদের মাঝে। তবে একটা জিনিস মনে রাখবেন সামরিক বাহিনীর জাদুঘরে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনি খোঁজ নিয়ে যাবেন যে জাদুঘর সেদিন বন্ধ আছে কিনা। না হলে হয়তো প্রথম দফায় আমার মতো গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে পারবেন। আর এখন মেট্রো রেল চালু হওয়ায় ঢাকার অনেক জায়গা থেকে সামরিক বাহিনী জাদুঘরে আসা সহজ হয়ে গিয়েছে। যদি আপনার আশপাশের এলাকা থেকে মেট্রোরেলে ওঠার ব্যবস্থা থাকে তাহলে তো আপনি মতিঝিল থেকে শুরু করে উত্তরা যে কোনো জায়গা থেকে খুব অল্প সময়ে সামরিক বাহিনী জাদুঘরের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবেন। যাই হোক আর কথা না বাড়িয়ে চলুন দেখে নেয়া যাক আজকের ছবিগুলো।

IMG_20231202_125004.jpg

প্রথমে যে ছবিটা দেখতে পাচ্ছেন এটা বাংলাদেশের ইতিহাসের সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য। এই দৃশ্যের পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে জন্ম হয় বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের। এখানে আপনারা পাকিস্তান বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করার দৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন। যদিও তারা আত্মসমর্পণ করেছিলো ভারতীয় বাহিনীর কাছে। ভারতীয় বাহিনী এবং ভারতীয় সরকার সেই সময়ে বাংলাদেশের মুক্তি কামী জনতাকে যে সহায়তা করেছিলো সেটা কখনো ভুলবার নয়।

IMG_20231202_124920.jpg

IMG_20231202_124548.jpg

উপরের ছবি দুটিতে দেখতে পাচ্ছেন কয়েকটি রকেট লঞ্চার দেখা যাচ্ছে। পরের ছবিতে রয়েছে সেগুলোর গোলা। এই রকেট লঞ্চার গুলো বাঙ্কার ধ্বংস করার কাজে ট্যাংক বা শত্রুপক্ষের সাজোয়া যান ধ্বংস করার কাজে ব্যবহার করা হোতো। এখনো যুদ্ধক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম রকেট লঞ্চারের ব্যবহার দেখা যায়। যদিও এখনকার রকেট লঞ্চার গুলির আকার অনেকটা ছোট হয়ে এসেছে।

IMG_20231202_125220.jpg

IMG_20231202_125011.jpg

তারপর ছবিটিতে দেখতে পাচ্ছেন বেশ কিছু পুরাতন আমলের রাইফেল। এ রাইফেল গুলো সম্ভবত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হোতো। যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করার জন্য রাইফেল গুলোর মাথায় বেয়নেট সেট করা রয়েছে। মূলত বেয়োনেট সেট করার উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্লোজ কম্বাটে বিপক্ষ দলের সৈন্যদেরকে ঘায়েল করার কাজে ব্যবহার করা।

IMG_20231202_124723.jpg

IMG_20231202_124730.jpg

উপরের ছবি দুটিতে দেখতে পাচ্ছেন বিভিন্ন রকমের বিস্ফোরক। সেখানে রয়েছে হ্যান্ড গ্রেনেড, রাইফেল চালিত গ্রেনেড, এন্টি পার্সোনাল মাইনের মতো ক্ষুদ্রাকৃতির মাইন। এগুলি এই অস্ত্রগুলি সম্ভবত এখন আর যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় না। এগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বা তার সমসাময়িক সময়ের যুদ্ধে ব্যবহার করা হোতো। বর্তমানে এই বিস্ফোরক গুলির মডিফাইড ভার্সন ব্যবহার করে থাকে বিভিন্ন দেশের সৈন্যবাহিনী। তবে এখন সম্ভবত এন্টি পার্সোনাল মাইন ব্যবহার করা নিষেধ রয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে। কারণ এই বিস্ফোরকের কারণে প্রচুর সাধারণ মানুষ হতাহত হয়।

IMG_20231202_124417.jpg

উপরের ছবিতে কয়েক রকমের পিস্তল দেখা যাচ্ছে। সাথে রাইফেল চালিত গ্রেনেড লঞ্চার ব্যবহার করার প্রযুক্তিও দেখা যাচ্ছে। তবে প্রজেকশন পিস্তলটা সম্বন্ধে আমি কিছু জানি না। অবশ্য পিস্তলগুলির চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে এগুলি হয়তো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের হবে।

IMG_20231202_124445.jpg

এখানে আপনারা একটি চাইনিজ রকেট লঞ্চার দেখতে পাচ্ছেন যেটা ৪০ মিলিমিটারের রকেট নিক্ষেপ করতে পারতো। এই ধরনের অস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে খুবই কার্যকর ছিলো। বিশেষ করে শত্রুপক্ষের সাজোয়া যান ধ্বংস করতে এগুলো ছিল খুবই পারদর্শী।

IMG_20231202_124840.jpg

উপরে যে অস্ত্রটি দেখতে পাচ্ছেন এটা নিচে লেখা রয়েছে স্ট্যেন। তবে এই অস্ত্রটা দেখে আমার মনে কিছুটা সন্দেহ তৈরি হয়েছে। কারণ আমি যতদূর জানি এটা হেকলার এন্ড কচ কোম্পানির mp5 সাবমেশিন গান। এটা অত্যন্ত হালকা এবং দ্রুতগুলি ছুড়তে সক্ষম একটা অস্ত্র। যেটা একসময় আগ্নেয়াস্ত্রের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তুলতে সমর্থ্য হয়েছিলো। অবশ্য একই ধরনের দেখতে অস্ত্র বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন নাম দিয়ে তৈরি করে। এক্ষেত্রে সেটাও হতে পারে।


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানঢাকা, আগারগাঁও

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

সামরিক বাহিনী নিয়ে একটি সমৃদ্ধ জাদুঘর এটি। আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া, সামরিক বাহিনী নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে তাদের জাদুঘরটি দেখা উচিত। আমার মনে হয়, সবারই জাদুঘটি দেখা দরকার। ধারাবাহিক ভাবে আপনি অনেক সুন্দর করে বিস্তারিত তুলে ধরছেন। আমার বেশ ভাল লেগেছে। আজ সপ্তম পর্ব শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলেই ভাইয়া আমাদের মুক্তিকামী জনতার জন্যে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত অনেক বড় ভূমিকা রেখেছিল।সেটা ভুলিবার নয়।আপনার আজকের ও বিভিন্ন অস্ত্রের ফটোগ্রাফি এবং অস্ত্র গুলির বর্ণনা একদম বরাবরের মতই মনোযোগ আকর্ষিত ছিল ভাইয়া।রকেট লঞ্চার,রাইফেল,পিস্তল,হ্যান্ড গ্রেনেড,রাইফেল চালিত গ্রেনেড, স্টেন সহ সকল অস্ত্রের বর্ণনা নিখুঁত ছিল ভাইয়া।

ভাই আমি সামরিক বাহিনীর জাদুঘরের সামনে দিয়ে অসংখ্য বার আসা যাওয়া করেছি, কিন্তু কখনো ভিতরে প্রবেশ করিনি। কিন্তু এবার অবশ্যই যাবো ইনশাআল্লাহ। কারণ আপনার এই সিরিজের প্রতিটি পর্ব বেশ উপভোগ করেছি। যাইহোক এই পর্বে শেয়ার করা প্রতিটি ফটোগ্রাফি এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে ভাই। ভারত তখন আমাদেরকে সহযোগিতা না করলে, কি যে হতো সেটা ভাবা যায় না। ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র এবং সবসময়ই আমাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করে বিভিন্ন ভাবে। যাইহোক এতো সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile