ঢাকা থেকে মক্কা যাওয়ার অভিজ্ঞতা।

in hive-129948 •  12 days ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আপনারা জানেন কিছুদিন আগে আমি সৌদি আরব এসেছি। কিন্তু সৌদি আরবের প্রচন্ড গরমের কারণে আমি খুব একটা স্বস্তিতে নেই। কারণ আমি গরম একেবারে সহ্য করতে পারি না। এখানে আমার কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। যাই হোক আজকে সৌদি আরবে আসার গল্প আপনাদেরকে শোনাবো। আমি সৌদি আরবে এসেছি মূলত হজ করার উদ্দেশ্যে। সে কারণে যেদিন আমাদের ফ্লাইট ছিলো সেদিন প্রথমে আমাদের যেতে হয়েছিলো আশকোনা হজ ক্যাম্পে। সেখানে গিয়ে ইমিগ্রেশন এর কাজ সম্পন্ন করতে হয়েছিলো। তারপর সেখান থেকে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো এয়ারপোর্টে। আমাদের ফ্লাইটের সময় ছিল রাত ৩ঃ৫০ মিনিটে। কিন্তু আমাদেরকে এয়ারপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল রাত দশটার দিকে। যার ফলে আমাদেরকে দীর্ঘ সময় এয়ারপোর্ট অপেক্ষা করতে হয়েছিলো।

IMG_20240608_041507.jpg

যাই হোক যথা সময়ে আমাদের ফ্লাইটের অ্যানাউন্সমেন্ট আসলে আমরা ধীরেসুস্থে প্লেনে গিয়ে উঠলাম। যেহেতু এটাই ছিলো আমার প্রথম বিমান ভ্রমণ। তাই আমি কিছুটা একসাইটেড ছিলাম। আমাদেরকে বলা হয়েছিলো আমাদেরকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হবে জেদ্দা। তারপর সেখান থেকে বাসে করে মক্কায় নিয়ে যাওয়া হবে। আমাদের ফ্লাইটের সময় ছিলো সর্বমোট সাড়ে ছয় ঘন্টা। আমরা প্লেনে ওঠার কিছুক্ষণ পরেই নির্ধারিত সময় প্লেন ছেড়ে দিলো। এটা আমার প্রথম বিমান ভ্রমণ হলেও বিমানে কি কি করতে হবে সে বিষয়ে আমার আগে থেকেই ধারণা ছিলো। যার ফলে আমার তেমন কোন সমস্যা হয়নি। তবে বিমান যখন উপরের দিকে উঠছিলো তখন কিছুটা অস্বস্তিতে ভুগেছিলাম। বিমান চলতে শুরু করার কিছুক্ষণের ভেতরে আমাদেরকে এক দফা নাস্তা দেয়া হোলো। নাস্তা গুলো খেতে ছিলো মোটামুটি।


IMG_20240608_052314.jpg

তবে বিমান ভ্রমন আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগেনি। কারণ বিমানের সিটগুলো একেবারেই চাপা। এতটুকু সিটে আরাম করে বসা যায় না। যার ফলে প্লেনে কাটানো সময়টুকু আমার কাছে একেবারেই ভালো লাগে নি। তবে বিমানের একটা জিনিস আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। সেটা হচ্ছে মাত্র সাড়ে ৬ ঘন্টার ফ্লাইট হলেও এখানে তিন দফা খাবার পরিবেশন করা হয়েছিলো। যাই হোক আমরা নির্ধারিত সময়েই জেদ্দা পৌঁছলাম। তারপর সেখান থেকে আরো কিছু আনুষ্ঠানিকতা ছেড়ে আমরা মক্কা গামী বাসে উঠে বসলাম। তবে ততক্ষণে আমার শুধু মনে হচ্ছিল কখন হোটেলে পৌঁছাতে পারবো। কারণ আগের দিন বিকালে বাসা থেকে বের হয়েছি। জেদ্দা যখন পৌঁছেছি তখন বেলা দশটা পার হয়ে গিয়েছিলো। বাসে বসার পরও একটা সমস্যার জন্য বাস ছাড়তে অনেক দেরি হয়েছিলো।


IMG_20240608_103624.jpg

যাই হোক তারপরেও সেই সমস্যার সমাধান হওয়ার পরে আমাদের বাস ছেড়ে দিলো। তবে সৌদি আরবের বাসগুলো আমার কাছে বেশ পছন্দ হয়েছে। বাসগুলো খুবই আরামদায়ক। আমরা বাসে উঠে বসার পর সেখানেও দেখতে পেলাম আমাদের জন্য প্যাকেটের নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূলত খাওয়া দাওয়ার সেখানে কোন কমতি ছিলো না। তবে দীর্ঘ সময় রাস্তায় থাকার ফলে কোন কিছুই আর ভালো লাগছিলো না। শেষ পর্যন্ত আমরা যখন হোটেলে পৌঁছলাম ততক্ষণে বেলা তিনটা পার হয়ে গিয়েছিলো। অর্থাৎ প্রায় ২২ ঘন্টা রাস্তায় ছিলাম। জেদ্দা থেকে মক্কা যাওয়ার পথে মরুভূমির সৌন্দর্য দেখতে দেখতে গিয়েছিলাম। যেটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিলো। আর এভাবেই আমার বাংলাদেশ থেকে মক্কার যাত্রা সম্পন্ন হয়েছিলো।

IMG_20240608_103026.jpg

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসHONOR 90
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানমক্কা, সৌদি আরব

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বিমানের সিটগুলো যদি একটু আরামদায়ক হতো তাহলে বোধহয় জার্নিটা আরো উপভোগ করতে পারতেন। তবে তারা তো বেশ ভালো আপ্যায়ন করেছে ৬ ঘণ্টার মধ্যে যেহেতু তিনবার খাবার দিয়েছে তাহলে আপ্যায়নের ক্ষেত্রে আর কোনো কমতি রাখেনি।

প্রায় চারটার দিকে প্লেন অথচ রাত দশটার মধ্যেই সেখানে পৌঁছাতে হয়েছে। অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। দীর্ঘ ২২ ঘন্টা জার্নি করেছেন বলেই আপনার সবকিছু বিরক্ত লাগছিল। আর নিউজে দেখলাম এখন নাকি গরমের কারণে অনেক হজযাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ভাইয়া আপনার জন্য দোয়া রইলো আপনি যেন সুস্থভাবে বাড়ি ফিরে আসতে পারেন।

আপনার যাত্রাপথ যেভাবে বর্ণনা করলেন তা ভীষণ মনোগ্রাহী হয়েছে। আরবের গরম সত্যিই ভীষণ কষ্টকর। সাবধানে থাকুন এবং আপনার হজ যাত্রা সফল ও পরিপূর্ণ হয়ে উঠুক এই প্রার্থনা করি। কুশলে আবার ফিরে আসুন এবং আপনার সমস্ত দিক থেকে মঙ্গল কামনা করি। তবে বিমানের সিট ছোট হলে তা সত্যিই দীর্ঘ যাত্রার পক্ষে খুব অসুবিধা জনক হয়ে যায়। আমি ঢাকা থেকে কলকাতা সামান্য যাত্রাপথেই এত অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছিলাম যে বলবার নয়। সাবধানে থাকুন।

ভাই প্লেন জার্নি বলেন আর বাস জার্নি, সবচেয়ে মজার জার্নি হচ্ছে ট্রেন জার্নি। আমি তো বিভিন্ন দেশে ট্যুরে গিয়েছিলাম,তো প্লেন জার্নি আমারও তেমন ভালো লাগে না। তবে প্লেন জার্নি ৩/৪ ঘন্টা হলে খারাপ লাগে না। কিন্তু এর বেশি হলেই বিরক্ত লাগে। যাইহোক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সুস্থভাবে মক্কা পৌঁছাতে পেরেছেন, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

সত্যি ভাই বিমানের সীটগুলো মোটেও আরামদায়ক নয়, এখানে আমারও বেশ অস্বস্তি হয়েছিলো কোলকাতা যাওয়ার সময়। আর আমাদের সমস্যা একটাই বিমান বন্দরে ৪ ঘন্টা আগে গিয়ে বসে থাকতে হয়, এটা বেশ কষ্টদায়ক। তবুও আপনি ঠিক ঠাক কাংখিত জায়গায় পৌ্ঁছাতে পেরেছেন এটাই বড় কথা। আর হজ্জ এর পুরো সিরিজ চাই যাতে পরবর্তীতে আমাদের ক্ষেত্রে সেই অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগাতে পারি।

ভাইয়া আপনার ঢাকা থেকে মক্কা যাওয়ার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। বিমান থেকে তুলা ফটোগ্রাফি গুলো দারুন লেগেছে। সেই সাথে জেদ্দা থেকে মক্কায় যাওয়ার সময় রাস্তার ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারন ছিল। বিমান থেকে সৌদিআরবের বাসের সিট গুলো আপনারে কাছে বেশি কম্ফোর্টেবল মনে হয়েছে। যেহেতো হাজী সাহেবগণ এই বাসে যাতায়ত করবে। সেই জন্য তারা খুবই সুন্দর ও আরামদায়ক ভাবে বাসের সিট গুলো তৈরী করেছে। আর যে উদ্যেশ্যে বের হয়েছেন, খাবারের কোন কমতি পাবেন না। অনেক ধরনের খাবার আপনাদের ভাগ্যে আছে। কারন আপনার হলেন আল্লাহর বিশেষ মেহমান। ধন্যবাদ।