পরিবার নিয়ে রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়ার অভিজ্ঞতা।

in hive-129948 •  2 years ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত পোস্ট থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন যে আমি পরিবার নিয়ে বাইরে ঘুরতে গিয়েছিলাম। তবে আমি যখনই পরিবার নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাই। সেখানে খাওয়া-দাওয়া একটা পর্ব অবশ্যই থাকে। আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলাম ঘোরাফেরা শেষ হলে খাওয়া-দাওয়া করে তারপর বাড়িতে ফিরবো। তবে সেজন্য চিন্তা করেছিলাম ঘোরাফেরাটা তাড়াতাড়ি শেষ করে তারপর কোন একটা রেস্টুরেন্টে যেতে হবে। অবশ্য কোন রেস্টুরেন্টে যাব সেটা আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম। কিন্তু মেয়ের নৌকায় চড়ার আবদার পূরণ করতে গিয়ে আমাদের ঘোরাফেরা পর্ব শেষ হতে বেশ খানিকটা দেরি হয়ে গেলো।

IMG_20230317_184915.jpg

এদিকে আবার যখন পদ্মার চর থেকে হেঁটে রাস্তার দিকে আসছিলাম। তখন হঠাৎ করে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হলো। যদিও সেটা খুবই সামান্য। তারপরেও মনে মনে কিছুটা ভয় পাচ্ছিলাম মুষলধারে বৃষ্টি শুরু না হয়ে যায় আবার। কারণ এই চরের ভেতরে বৃষ্টি শুরু হলে ভেজা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। অবশ্য সাথে মেয়ে না থাকলে বৃষ্টিতে ভিজতে আমার কোন আপত্তি ছিল না। কিন্তু সাথে আমার মেয়ে থাকার জন্য বেশ চিন্তা হচ্ছিল। অবশ্য বাড়ি থেকে যখন বের হচ্ছিলাম তখনই আকাশে মেঘের ঘনঘটা দেখতে পেয়েছিলাম। তবে মনে হয়নি যে বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। যাই হোক শেষ পর্যন্ত আর বৃষ্টি হয়নি। অল্প কিছুক্ষণ দু চার ফোঁটা বৃষ্টি হয়ে থেমে গিয়েছিলো।

IMG_20230317_180227.jpg

পদ্মার পুরো চর পার হয়ে তারপর আমাদেরকে যেখান থেকে রিক্সা পাওয়া যায় সেখানে আসতে হয়েছিল। তারপর সেখান থেকে একটি রিক্সা নিয়ে আমরা রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যে রেস্টুরেন্টে যাচ্ছিলাম সেটির অবস্থান ছিল আমাদের কলেজের পাশেই। আমরা দুজনে একই কলেজে পড়ালেখা করেছি অনার্স লেভেলে। দীর্ঘদিন হলো পরিবার নিয়ে এই অনার্স শাখার দিকে আসা হয় না। সময় থাকলে চিন্তা করেছিলাম একবার কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ঘুরে আসতাম। কিন্তু এই দিকে প্রায় সন্ধ্যা হয় হয় অবস্থা। যার ফলে কলেজ ক্যাম্পাসে যাওয়ার পরিকল্পনাটা বাতিল করতে হয়েছিলো।

IMG_20230317_183525.jpg

যাই হোক আমরা মোটামুটি দ্রুত আমাদের কাঙ্খিত রেস্টুরেন্টে পৌঁছে গেলাম। এই রেস্টুরেন্টে আমার স্ত্রী এবং কন্যা এর আগে আসেনি। অবশ্য আমি কিছুদিন আগে বন্ধু ফেরদৌসের সাথে এই রেস্টুরেন্টে এসেছিলাম। সেখানকার খাবার এবং পরিবেশ দুটোই আমাদের বেশ পছন্দ হয়েছিলো। তখনই আমি মনে মনে পরিকল্পনা করেছিলাম পরিবার নিয়ে একবার এখানে আসতে হবে। তবে এবার সেই রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কারণ ছিল কিছুটা ভিন্ন। আমরা দুজনেই ইন্ডিয়ান খাবার বেশ পছন্দ করি। ইন্ডিয়ান খাবারের ভেতরে ছোলা বাটোরা আমার অত্যন্ত পছন্দের একটি খাবার। আমার স্ত্রী ও এ খাবারটি পছন্দ করে। এই খাবারটি আমাদের শহরের অন্য রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায় না। সেজন্যই আমরা ওই রেস্টুরেন্টটিতে গিয়েছিলাম।

IMG_20230317_185131.jpg

রেস্টুরেন্টে পৌঁছে আমার পরিবারের সেখানকার পরিবেশ বেশ পছন্দ হলো। সেখানে পৌছে আমরা আমাদের পছন্দ মতো একটি জায়গায় বসে ওয়েটারের কাছে মেনু কার্ড চাইলাম। মূলত মেনু কার্ড চেয়েছিলাম আমার মেয়ের জন্য। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি কি খাবে? সে বলল বার্গার খাবে। কিন্তু আমি ওয়েটারের কাছে যখন বার্গারের অর্ডার দিলাম তখন সে জানালো বার্গার এবং স্যান্ডউইচ এখন অ্যাভেলেবেল নেই। আমার মেয়েকে এ কথা বলতেই সে ঠোঁট ফুলিয়ে বসে রইলো। তারপর তাকে কিছুক্ষণ বোঝানোর পর তার জন্য চিকেন চাওমিন অর্ডার দিলাম। আর আমাদের দুজনের জন্য অর্ডার দিয়েছিলাম ছোলা বাটোরা।

IMG_20230317_184918.jpg

এদিকে খাবার পরিবেশন করতে তাদের বেশ খানিকটা সময় লাগবে সেটা আগেই বলেছিল। এর ভেতরে মাগরিবের আজান হয়ে গেলো। তখন আমি আমার স্ত্রীকে বললাম তোমরা বসো আমি নামাজ পড়ে আসি। আমি নামাজ পড়ে এসে দেখি ততক্ষণে টেবিলে খাবার দিয়ে গিয়েছে। আমার স্ত্রীর কিছুটা খাওয়া হয়েও গিয়েছে। মেয়েকে দেখলাম বেশ মজা করে চিকেন চাওমিন খাচ্ছে। টেবিলে গরম খাবার দেখে আমার আর তর সইলো না। পছন্দের খাবার দেখলে কারোরই দেরি করতে ইচ্ছা করে না। তাই আমি টেবিলে বসেই খেতে শুরু করলাম। এদের খাবার নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। এর আগের বার যখন খেয়েছি তখনই বুঝতে পেরেছি এদের খাবারের সাদ এবং মান যথেষ্ট ভালো। আমাদের সকলেরই খাবারগুলি অনেক পছন্দ হয়েছিল।

খাবার শেষ করে যখন ওয়টারের কাছে বিল চাইলাম। তখন সে বিলের সাথে ছোট্ট একটি কাগজ দিয়েছিল কমেন্টস লেখার জন্য। আমি আগেরবার এসে যে টেবিলে বসে ছিলাম এবারও সেই একই টেবিলে বসে ছিলাম। কারণ এই জায়গাটা আমার কাছে বেশ পছন্দ হয়েছিল। আমাদের টেবিলের পাশেই ছিল এই কমেন্টগুলি লাগানোর জায়গা। সেখানে এর আগের বারের মতো দেখলাম অসংখ্য মানুষ কমেন্টস করেছে। আমিও সেই ছোট্ট চিরকুটে দু এক কথা লিখে দিলাম। তারপর বিলমিটিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ততক্ষণে সন্ধ্যা পেরিয়ে গিয়েছে।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানকমলাপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

পরিবার নিয়ে তাহলে বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছেন। তার আগে যেহেতু রেস্টুরেন্টটাতে বন্ধুসহ গিয়েছেন সে হিসেবে কিছুটা হলেও ধারণা হয়েছে। আপনার আর ভাবির যে ইন্ডিয়ান খাবার পছন্দ তা জেনে ভালোই লাগছে। মেয়ে তো বার্গার খেতে না পেরে রাগ করে বসেছে। যাই হোক এভাবে মাঝে মধ্যে যদি পরিবার নিয়ে ঘুরে আসা যায় তাহলে নিজের তৃপ্তি মেটানো যায় এবং সকলেই খুশি থাকে। যদিও আকাশ মেঘলা তবে মাঝেমধ্যে দেখি গুটি গুটি বৃষ্টি হয়। ঘন কালো মেঘে মনে হতো যেন অনেক ঝড়ো হওয়া হবে কিন্তু খুব বেশি একটা হয় না। আমাদের এদিকেও গতকাল সামান্য বৃষ্টির ফোঁটা পড়েছিল। যাইহোক ভাই খুব ভালো লাগলো আপনাদের এই মুহূর্তগুলো পড়তে পেরে।

কমেন্টস লেখার আইডিয়াটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। সত্যি এরকম আইডিয়া এর আগে কখনো দেখা হয়নি। মনে হচ্ছে ভিন্ন ধরনের একটি আয়োজন ছিল। খাবারের মান নিয়ে সবাই নিজেদের মতো করে মন্তব্য করতে পেরেছে এবং সেগুলো লিখতে পেরেছে। আর অন্য কেউ সেগুলো পড়ার সুযোগ পেয়েছে। যাইহোক অবশেষে মামনির মুখে হাসি ফুটেছে। এখন হঠাৎ করেই একটু একটু বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তাই কোথাও ঘুরতে গেলে অনেকটা ভয় লাগে যে বৃষ্টিতে না আটকা পড়ে যাই। যাইহোক বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই ফিরে এসেছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। আর পছন্দের খাবার খেয়েছেন জেনে অনেক খুশি হলাম। আপু এবং আপনি যেহেতু একই কলেজে পড়েছেন তাহলে তো প্রেমটা বেশ ভালই জমে উঠেছিল। 🤭🤭

আসলে ভাইয়া বাচ্চারা যে খাওয়াটা খেতে চায় সেটা যদি না পাই তাহলে তারা তো একটু ঠোঁট ফুলাবেই। যাহোক ভাইয়া, ভালো লাগলো যে আপনি এর আগে যে টেবিলে বসে খেয়েছেন এবারও আপনি আপনার স্ত্রী এবং কন্যাকে সাথে নিয়ে সেই একই টেবিলে বসে খাবার খেয়েছেন। ভাইয়া আপনার কন্যা এবং আপনার পরিবারের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।