দীর্ঘদিন পর তিন বন্ধুর আড্ডা অতঃপর নদীতে গোসল করা।( প্রথম পর্ব)

in hive-129948 •  last year 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন আমি ঘোরাফেরা করতে বেশ ভালোবাসি। তবে বেশিরভাগ সময় শহরের আশপাশ দিয়ে ঘোরাফেরা করা হয়। ঘোরাফেরা ছাড়া আমি আড্ডা দিতেও অনেক পছন্দ করি। যদিও এখন বন্ধু-বান্ধবের অভাবে আড্ডাটা আর সেভাবে দেয়া হয় না। তবে মাঝে মাঝে এক বন্ধুর সাথে আমাদের আড্ডা দেয়া হয়। আমি আর ফেরদৌস দুজন মিলে সেই বন্ধুর এলাকায় যাই। তারপর তিনজনে মিলে চুটিয়ে আড্ডা দেই। আমি আমার পোস্টে সেই বন্ধুর নাম অনেকবার উল্লেখ করেছি। তার নাম রাফসান।

IMG_20230604_075831.jpg

শহর থেকে কিছুটা দূরে সে তার এলাকাতেই ব্যবসা করে। রাফসানের দোকান হচ্ছে আমাদের আড্ডার জায়গা। ফেরদৌস ফরিদপুরে থাকলে আমরা সপ্তাহে অন্তত একবার বা দুবার রাফসানের দোকানে গিয়ে আড্ডা দেই। ফেরদৌস দীর্ঘদিন ফরিদপুর না থাকায় এর ভিতরে আর আমার রাফসানের দোকানে তেমন একটা যাওয়া হয়নি। শুধু একবার গিয়েছিলাম গত এক মাসের ভেতরে। ফেরদৌস ফরিদপুর ফিরেছে বেশ কয়েকদিন হোলো। এর ভেতরে আমরা দুই বন্ধু মিলে ঘোরাফেরা শুরু করেছি। যেহেতু এখন পর্যন্ত আমাদের সাথে রাফসানের দেখা হয়েছিলো না। তাই গতকাল দুজন মিলে ঠিক করলাম রাফসানের দোকানে যাব আড্ডা দিতে। যদিও আমরা বের হয়েছিলাম অন্য উদ্দেশ্য নিয়ে। সেই গল্প পরে বলছি।

IMG_20230604_075637.jpg

সকাল ১১ টার দিকে হঠাৎ করে ফেরদৌসের ফোন পেলাম। সে আমাকে ফোন দিয়ে বলল বাড়ি বসে কি করো? চলো দু'জন ঘুরতে বের হই। আমি বললাম ঠিক আছে আমি আধা ঘন্টার ভিতরে আসছি। এর ভিতর আমি হঠাৎ করে বাইরে তাকিয়ে দেখি আকাশে অনেক মেঘ করেছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল নদীতে গোসল করতে যাওয়ার। আকাশে মেঘ দেখে আমি ফেরদৌসকে বললাম এখন তো মনে হচ্ছে বৃষ্টি শুরু হবে। এর ভেতরে গোসল করব কিভাবে? তখন ফেরদৌস বললো আগে তো বের হও গোসল করতে না পারলে দুইজন মোটরসাইকেলে বৃষ্টির ভিতরে ঘুরে বেড়াবো। আমি আর কথা না বাড়িয়ে বললাম আমি কিছুক্ষণের ভিতরে আসছি। আমি তড়িঘড়ি করে তৈরি হয়ে যেখানে আমাদের দুজনের দেখা করার কথা সেখানে সময় মতো গিয়ে উপস্থিত হলাম।

IMG_20230604_075840.jpg

আমি গিয়ে দেখি তখনও ফেরদৌস এসে পৌঁছায়নি। অবশ্য মিনিট দু'তিনের ভিতর ফেরদৌস সেখানে এসে হাজির হলো। তখন আমরা চিন্তা করতে লাগলাম এখন কি করবো? বৃষ্টির ভিতর গোসল করা খুবই ঝুঁকিপূর্ন এখনকার দিনে। কারণ প্রায়ই বজ্রপাতে মানুষ মারা যাওয়ার খবর পাচ্ছি। আমার কথা শুনে ফেরদৌস আমার সাথে সহমত পোষণ করলো। তখন সে বলল তাহলে চলো রাফসানের এলাকা থেকে ঘুরে আসি। অনেকদিন হলো রাফসানের সাথে আড্ডা দেয়া হয় না। তখনও কিন্তু বাইরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। আমি সাথে সাথে ফেরদৌসের মোটরসাইকেলে উঠে বসলাম। বললাম চলো রাফসানের দোকানে যাই। তারপর দুই বন্ধু গল্প করতে করতে রাফসানের এলাকার দিকে যেতে লাগলাম। বৃষ্টির পরিমাণ ছিল খুবই সামান্য। তাই সেটা আমাদের জন্য কোন সমস্যা করতে পারেনি।

IMG_20230612_131531.jpg

যাই হোক রাফসানের শোরুমে পৌঁছে দেখি সে একা একা বসে রয়েছে। যদিও এখন তার ব্যবসার পিক সিজন। কারণ প্রচন্ড এই গরমে ইলেকট্রনিক্সের দোকানের বিক্রি বেড়েছে অনেক বেশি। তবে ইদানিং গরম কিছুটা কমে যাওয়ায় সেই বিক্রিতে অবশ্য ভাটা পড়েছে। রাফসান আমাদেরকে হঠাৎ করে দেখে অবাক হল। সে জিজ্ঞেস করল কি ব্যাপার তোরা এই সময়ে এখানে? আমরা সাধারণত রাফসানের দোকানে যাই সন্ধ্যার দিকে। কিন্তু এই ভর দুপুরে আমাদেরকে দেখে রাফসান বুঝতে পারছিল না আমরা কি উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়েছি। যাইহোক আমি আর ফেরদৌস রাফসানের শোরুমে বসে ওর সাথে গল্প করতে লাগলাম। দীর্ঘদিন পর তিন বন্ধু এক জায়গায় বসে নানা রকম গল্পে মেতে উঠলাম। অবশ্য গল্পের মূল প্রসঙ্গ ছিল ফেরদৌসের কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা। ফেরদৌস বেশ কিছুদিন উত্তরাঞ্চলে কাটিয়ে এসেছে। সে সেখানকার বিভিন্ন জিনিস নিয়ে আমাদের সাথে গল্প করছিলো।

IMG_20230612_131552.jpg

গল্প করতে করতে হঠাৎ করে রাফসান বলল কি খাবি বল? আমরা তেমন কিছু বললাম না। তখন ও নিজে থেকে উঠে গিয়ে কিছু সিঙ্গারা, সমুচা, পুড়ি এগুলো কিনে নিয়ে এলো। বাইরে তখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। এই ধরনের আবহাওয়ায় এরকম মজাদার ভাজাপোড়া হলে আর কি লাগে। ও খাবারগুলো টেবিলে এনে রাখতেই তিনজনে খাওয়া শুরু করলাম। এর ভেতরে আমি ফেরদৌসকে বললাম ঠান্ডা কিছু একটা কিনে নিয়ে আসো। ফেরদৌস দিয়ে একটা মেরিন্ডা নিয়ে এলো। গরম গরম ভাজাপোড়া খাওয়ার পর ঠাণ্ডা মেরিন্ডার বোতলে চুমুক দিতে বেশ ভালোই লাগছিলো। অবশ্য আমরা তখনও রাফসানকে বলিনি যে কি উদ্দেশ্যে আমরা সেখানে গিয়েছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাফসানকে সাথে নিয়ে গোসল করতে যাওয়া। কারণ নদীতে গোসল করতে যাওয়ার এ ধরনের প্রোগ্রামে যত বেশি লোক হয় তত মজা হয়।

আমরা গল্প করার মাঝে হঠাৎ করে কয়েকটা কোম্পানির লোক এসে উপস্থিত হলো। তারা এসে রাফসানের কাছে বিভিন্ন রকম মালপত্র ব্যক্তির জন্য জোরাজোরি করতে লাগলো। রাফসান কিছুটা বিরক্ত হয়ে তাদেরকে জানিয়ে দিল আজকে কোন কিছুর দরকার নেই। এই ফাঁকে আমরা রাফসানকে বললাম যে আমরা কি উদ্দেশ্যে সেখানে এসেছি। রাফসান শোনার সাথে সাথে রাজি হয়ে গেলো। আমরা রাফানকে বললাম তাহলে চল এখনই যেতে হবে। এই কথা বলার সাথেই রাফসান বলল তোরা বাইরে দাঁড়া। আমি শোরুমের শাটার বন্ধ করে আসছি। তার কিছুক্ষণ পরে রাফসান তার শোরুমের শাটার বন্ধ করে আমাদের সাথে রওনা দিলো নদীর উদ্দেশ্যে। আমরা তিনজনে দুটি মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলাম। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানগজারিয়া বাজার

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

  ·  last year (edited)

আপনার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া এবং নদীতে গোসল করার পোস্টগুলো আমি প্রায় পড়ে থাকি। আসলে আপনার এ ধরনের পোস্টগুলো পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে। আর বন্ধুদের সাথে সিঙ্গারা, সমুচা ও অন্যান্য খাবার খাওয়ার মজাই আলাদা। যাহোক ভাইয়া, আপনার দ্বিতীয় পর্বের পোস্টটি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

আপনি বন্ধুদের সাথে গল্প আর নদীতে গোসল করতে পছন্দ করেন তা আপনার পোস্ট পড়ে জেনেছি।আপনার বন্ধু ফেরদৌস ভাইয়ার গল্প এতো পড়েছি যে তা বলার বাইরে।ভাইয়া দীর্ঘদিন উত্তরাঞ্চলে কাজের জন্য ছিল। তাই এতো দিন পর ভাইয়াকে পেয়ে আপনি যেনো সঙ্গী খুঁজে পেলেন।তিন বন্ধু মিলে নদীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আপনাদের বন্ধুত্ত্ব অটুট থাকুক এই প্রত্যাশাই করি।ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

আপনার পোস্ট নিয়মিত পড়া হয়,আর সেজন্যই খুব ভালো ভাবে জানি যে, আপনি ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে ঘুরাঘুরি করতে বেশ পছন্দ করেন। এর আগেও রাফসান ভাইয়ের শোরুমে গিয়ে আড্ডা দিয়েছেন, সেই পোস্ট আমি পড়েছিলাম। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে বাইকে চড়তে খুব ভালো লাগে আমার। রাফসান ভাই আপনাদের কথা শুনে শোরুম বন্ধ করে, নদীতে গোসল করতে যাওয়ার জন্য রাজি হয়েছে। এই ব্যাপারটা খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। আপনারা একে অপরের প্রতি বেশ আন্তরিক। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।