মেয়ে আর ভাস্তিকে নিয়ে বাইরে খাওয়ার অভিজ্ঞতা।

in hive-129948 •  3 months ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আজকে অনেকদিন পরে আমার ভাস্তি বাসায় এসেছে আমাদের সাথে থাকার জন্য। আমার ভাই বেশ কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছে। তখন থেকে আমার ভাস্তি তার নানা বাড়িতে থাকে মায়ের সাথে। তবে মাঝে মাঝে আমরা তার সাথে দেখা করি। এবার আমার আম্মা আমেরিকা থেকে ফেরার পরে আমার ভাস্তিকে বলেছিলো এসে আমাদের সাথে থাকতে। সেই কারণে আমি এর আগে একবার তাকে গিয়ে তার নানাবাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু সে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকার পরে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি শুরু করেছিলো। আসলে ছোট মানুষ তো সেজন্য মা ছাড়া থাকতে তার কষ্ট হচ্ছিলো। যাই হোক তার কান্নাকাটি দেখে পরে আমি রাত্রেই তার নানা বাড়িতে দিয়ে এসেছিলাম। তবে আমরা সৌদি আরব থেকে আসার পরে সে আমার আম্মাকে ফোন দিয়ে বলতে লাগলো এবার এসে সে আমাদের সাথে থাকবে। তবে আমার কাছে কিছুটা সন্দেহ লাগছিলো।

IMG_20240812_201821.jpg

কারণ এর আগেও একবার তাকে এনে রাতে রাখতে পারিনি। যাই হোক যেহেতু ভাতিজি আসবে সে কারণে আমরা সবাই বেশ খুশি ছিলাম। আমি আজকে সকালে গিয়ে তার নানা বাড়ি থেকে তাকে নিয়ে এসেছিলাম। আসার পর থেকেই আমার মেয়ে আর ভাস্তি দুজনে মিলে সারাদিন খেলা করেছে। তবে খেলার ফাঁকে আমার ভাস্তি বাইরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য আবদার করছিলো। আমি জানি আমার ভাতিঝি বাইরের খাবার খেতে বেশ পছন্দ করে। তাই আমি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম ওদেরকে নিয়ে বিকালে কোনো একটি রেস্টুরেন্ট থেকে হালকা কিছু খেয়ে আসব। তবে বিকালে আমার মেয়ের টিচার আসার কারণে প্ল্যানটা কিছুটা পরিবর্তন করলাম। তাদেরকে বললাম সন্ধ্যার পরে আমরা বাইরে যাবো। যথারীতি আমি মাগরিবের নামাজ পড়ে বাসায় ফিরে আমার মেয়ে আর ভাতিঝিকে নিয়ে রওনা দিলাম একটা রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে। কোন রেস্টুরেন্টে যাবো সেটা আমি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম। যার ফলে বাসা থেকে বের হয়ে আমাদের আর দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হয়নি।


IMG_20240812_195748.jpg

বাসা থেকে বের হয়ে অল্প সময়ে সেই রেস্টুরেন্টে পৌঁছে গেলাম। রিভেইরা লাউঞ্জ নামের এই রেস্টুরেন্টটা আমাদের কাছে বেশ পছন্দের। তবে এবার গিয়ে দেখতে পেলাম তাদের সার্ভিসের মান বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছে। কারণ আমরা প্রথমে যে খাবারটা অর্ডার করলাম তারা বেশ কিছুক্ষণ পরে জানালো সেই খাবারটা হবে না। আমি তখন তাদেরকে পরামর্শ দিলাম যেহেতু এই খাবারটা আপনারা দিতে পারবেন না। তাই এটা মেনু থেকে বাদ দিয়ে দেবেন। কারণ এর আগেও একবার আমি আমার বন্ধু ফেরদৌসকে নিয়ে সেই খাবারটা খেতে গিয়েছিলাম। তখনও তারা বলেছিল সেটা হবে না। যাই হোক পছন্দের খাবার না পেয়ে মেজাজ কিছুটা খারাপ হোলো। তারপর আমরা তিনজনের জন্য সেট মেনু অর্ডার করলাম। আর আমার ভাস্তি তার জন্য একটা ড্রিংকস অর্ডার করলো। সে নিজের জন্য একটা চকলেট মিল্কশেক অর্ডার করেছিলো।


IMG_20240812_195807.jpg

যাইহোক খাবার অর্ডার করে আমরা বসে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছিলাম আর গল্প করছিলাম। কিন্তু এদিকে দীর্ঘক্ষণ পার হয়ে গেলেও দেখি খাবার আসার কোনো নাম নেই। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আমি ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করলাম খাবার দিতে কতো সময় লাগবে? সে আমাকে বলল কাজ চলছে। আমি তখন তাকে কড়া ভাষায় বললাম এসব ফালতু কথা বাদ দিয়ে আমাকে এক্সাক্ট সময় বলুন। তখন সে বললো আর মাত্র পাঁচ মিনিট লাগবে। যদিও তারা খাবার পরিবেশন করেছিল তার আরো প্রায় ১৫ মিনিট পর। অবস্থা এমন হয়েছিলো যে আমি ঠিক করেছিলাম আর দুই তিন মিনিট দেখবো। তার ভিতর খাবার পরিবেশন না করতে পারলে আমরা সেই রেস্টুরেন্ট থেকে অন্য কোন রেস্টুরেন্টে চলে যাবো। যাইহোক এই ঝামেলায় আর যেতে হয়নি। যেহেতু অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিলাম। তাই আমাদের সামনে খাবার পরিবেশন করার পর আমরা আর অপেক্ষা না করে খেতে শুরু করলাম। অবশ্য তাদের খাবারের মানটা বেশ ভাল ছিলো। যদিও পরিমাণ আমার কাছে কিছুটা কম মনে হয়েছে। যেহেতু অনেকক্ষণ হয়ে গিয়েছে বাইরে এসেছি। তাই আমি দ্রুত খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বিলমিটিয়ে আমার মেয়ের আর ভাতিঝিকে নিয়ে বাড়ি চলে আসলাম। রেস্টুরেন্টের সার্ভিসের অবস্থা খারাপ হাওয়াই আমার মেয়ে আর ভাস্তি দুজনে কিছুটা বিরক্ত হয়েছিলো। যাই হোক তারপরেও যেহেতু খাবারটা ভাল ছিলো তাই আর তেমন কোন সমস্যা হয়নি। আর এভাবেই মেয়ে আর ভাস্তিকে নিয়ে বাইরে খাওয়ার অভিজ্ঞতা শেষ হোলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @rupok,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

মেয়ে ও ভাইয়ের মেয়েকে নিয়ে বাইরে খাওয়া-দাওয়া করলেন।যদিও অভিজ্ঞতাটি কিছুটা বিরক্তের ছিল।তবে খাবারের স্বাদ ভালো থাকায় কিছুটা হলে ও স্বস্তি মিলল।এসব রেস্টুরেন্টে গেলে এই এক মুছিবত খাবার দিতে লেট করে।আর একটা সমস্যা যে আইটেম গুলো নেই তাদের সেগুলো ও লেখা থাকে।এটা ভীষণ অড ব্যাপার মনে হয় আমার কাছে।যাক সবাই মিলে খেতে গেলেন এটা ও কিন্তু আনন্দের একটি বিষয় সবকিছুর উর্ধ্বে।

আসলে দাদা রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবারের জন্য যদি অনেক সময় বসে থাকতে হয়, তাহলে সেটা অবশ্যই একটা বিরক্তিকর ব্যাপার। তারপর আবার যদি পছন্দের খাবার আইটেম না পাওয়া যায়, সেটা আরো বেশি যন্ত্রণার। যাই হোক, আপনি যে মেয়ে এবং ভাস্তিকে নিয়ে বাইরে রেস্টুরেন্ট খেতে গিয়েছিলেন, সেটা জেনে খুব ভালো লাগছে। আসলে খাবারের কোয়ালিটি যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে আর খুব বেশি একটা সমস্যা হয় না। অনেক ভালো লাগলো দাদা আপনার এই পোস্ট পড়ে।

এরকমটা কিন্তু অনেক সময় ঘটে থাকে। কোনো খাবার অর্ডার করলে দেখা যায় অনেকক্ষণ পর তারা বলে ওই খাবারটা হবে না। আর এরকম অনেক রেস্টুরেন্ট আছে যেগুলোতে খাবার অর্ডার করার পর প্রচন্ড সময় ধরে অপেক্ষা করা লাগে। এই বিষয়টা আমার কাছে একেবারেই ভালো লাগেনা। খাবার সার্ভ করতে অনেক সময় লাগলেও, খাবারের মানটা ভালো ছিল কথাটা শুনে অনেক ভালো লাগলো। বিরক্ত আপনারা হলেও খাবারের মান ভালো হওয়াতে আর বিরক্ত লাগেনি তাহলে। বাচ্চাদেরকে নিয়ে সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটালেন দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো।

  ·  3 months ago (edited)

ব্যাপারটা শুনে খারাপ লাগলো যে আপনার ভাই মারা গিয়েছে অনেক আগে।আর আপনার ভাতিজি তার নানার বাড়ি থেকে এসে আপনাদের সাথে থাকবে বলেছে। যাইহোক মায়ের সাথে থাকতে থাকতে হয়তো অন্য কোথাও আর একা ভালো লাগেনা। তবে ভাতিজি আর মেয়েকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে খাবার খেয়েছেন এটা শুনে বেশ ভালো লাগলো। তবে পছন্দের রেস্টুরেন্ট গুলোতে খাবার দেয়ার ক্ষেত্রে যদি বেশি দেরি করে তখন বিরক্ত তো লাগবেই। এত বিরক্তির পর খাবারের মান ভালো ছিল এটাই বড় কথা।

আপনার ভাই বেশ কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছে, এটা জানা ছিলো না আমার। যাইহোক আপনার ভাতিজি এবং মেয়েকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছেন,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। তবে রেস্টুরেন্টে গিয়ে যদি পছন্দের আইটেম অর্ডার করা না যায়, তাহলে মেজাজ আসলেই খারাপ হয়ে যায়। তবে খাবারের মান ভালো ছিলো,এটা জেনে বেশ ভালো লাগলো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

ভাইয়া আপনার বড় ভাই মারা গিয়েছে এটা সত্যি অনেক দুঃখজনক। যেহেতু আপনার ভাইয়ের মেয়ে তার মায়ের কাছে সব সময় থাকে তাই তো রাতে কারো কাছে থাকতে চায় না। আপনার মেয়ে এবং আপনার ভাইয়ের মেয়েকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। খাবার পরিবেশন করতে দেরি করলে সত্যিই অনেক বিরক্ত লাগে।