দীর্ঘদিন পর সকালে হাটাহাটি এবং মাছ কেনার অভিজ্ঞতা (দ্বিতীয় পর্ব)।

in hive-129948 •  last year 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


নাস্তা করে হোটেল থেকে বের হয়ে অটো রিক্সা পাওয়ার জন্য রাস্তা ধরে কিছুটা সামনে আগাতে লাগলাম। অবশ্য বেশিক্ষণ সময় লাগেনি। অল্প কিছুক্ষণের ভেতরে সিএনবি ঘাট যাওয়ার জন্য একটি অটো রিক্সা পেয়ে গেলাম। অটো রিকসাতে সাথে উঠে বসতেই তিনি রওনা দিলেন সিএনবি ঘাটের উদ্দেশ্যে। আমি যেখান থেকে উঠেছি সেখান থেকে সিএনবি ঘাটের দূরত্ব ৪ কিলোমিটার মতো হবে। যার ফলে সেখানে পৌঁছতে আমার খুব একটা বেশি সময় লাগেনি। তবে সেখানে পৌঁছে সেখানকার দৃশ্য দেখে আমি বুঝতে পারলাম আজ আর এখান থেকে মাছ কেনা হবে না। কারণ সেখানে বেশ কিছু লোকজনের সমাগম দেখতে পেলাম যারা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাছ কিনতে এসেছে।

IMG_20230908_070837.jpg

সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকেও দেখতে পেলাম। সম্ভবত আমাদের কোতোয়ালি থানার ওসি ছিলেন সেখানে। মাছ বাজারে গিয়ে ঘুরে ফিরে সব মাছ দেখতে লাগলাম। তবে মাছগুলো দেখে আমার খুব একটা পছন্দ হলো না। আর দাম শুনে তো রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ। আমি যখন সেখানে পৌঁছেছি তখনও সেখান থেকে ফরিদপুর বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা নিলামে নদী থেকে ধরে আনা মাছগুলো কিনছে। আর নিলামের কারণে যেই মাছের দাম ১ হাজার টাকার উপর হওয়া কোনভাবেই সম্ভব না। সেই মাছ ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দাম উঠে যাচ্ছিলো। একটা ঝুড়িতে অল্প কিছু মাছ দেখতে পেলাম সেখানে বড়জোর এক থেকে দেড় কেজি ছোট মাছ হবে। সেগুলোর দাম চাচ্ছিলো আড়াই হাজার টাকা।


IMG_20230908_070755.jpg

খেয়াল করে দেখলাম সব ছোট ছোট মাছ উঠেছে আজকে, মাঝারি বা বড় সাইজের তেমন কোন মাছ নেই। আর আমি ছোট মাছ খুব একটা খাই না যার ফলে ছোট মাছ আমার কেনাও হয় না। যাই হোক আমি মাছ বাজারের ভেতরে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম আর কিভাবে তারা নিলামের মাধ্যমে মাছ বিক্রি করে সেটা দেখছিলাম। মাছের দাম বাড়ার একটা কারণ আমি এখান থেকে বুঝতে পারলাম। প্রথমত নদী থেকে যে সমস্ত জেলেরা মাছ ধরে তারা এনে বিক্রি করে একটা পক্ষের কাছে। সেই সমস্ত লোকের কাছ থেকে আবার আরেক পক্ষ নিলামের মাধ্যমে মাছ কিনে নেয় ফরিদপুর বাজারে গিয়ে বিক্রি করার জন্য। তারা আবার ফরিদপুর বাজারে পৌঁছে সেই মাছ নিলামে উঠায়। সেখান থেকে খুচরা বিক্রেতারা মাছ কিনে নেয় বিক্রি করার জন্য।


IMG_20230908_070830.jpg

এই তিন চার হাত ঘোরার কারণে যে মাছ ৫০০ বা ৭০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে সেই মাছের দাম উঠে যায় বাজারে দুই থেকে তিন হাজার টাকা। একই মাছ তিন চার হাত ঘোরার কারণে তিন চার গুণ দাম বেড়ে যায়। যার ফলে নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজনের পক্ষে আর নদীর মাছ খাওয়া সম্ভব হয় না। অবশ্য দীর্ঘদিন থেকেই নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য নদীর মাছ কেনা অসম্ভব হয়ে গিয়েছে। সেগুলো এখন তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ধনী মানুষ এবং দুর্নীতিবাজ মানুষেরা এখন নদীর মাছের একমাত্র ক্রেতা। যাই হোক সেখানে বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে মাছের অবস্থা দেখে বুঝলাম এখান থেকে আর আজকে মাছ কেনা সম্ভব না। তবে মাছ তো আমাকে কিনতেই হবে। সেই কারণে তখন সিএনবি ঘাট থেকে রওনা দিলাম ফরিদপুর মাছ বাজারের উদ্দেশ্যে। সেই গল্পে পরের পর্বে বলছি। (চলবে)


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দাদা আপনি সকাল সকাল হাঁটতে বেরিয়েছিলেন এবং মাছ কিনেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। আর এই নদীর মাছ গুলা খেতে অনেক স্বাদ লাগে। তবে মাছগুলোর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্তরা সত্যিই এই মাছগুলো কিনার সমার্থ্য থাকে না। ধন্যবাদ দাদা এমন একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া নদীর মাছ এখন বড়লোকের জন্য। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের ধরাছোঁয়ার বাহিরে নদীর মাছ। এখন চাষে মাছই ভরসা। আর এভাবে ৩-৪ হাতে ঘুরে যদি মাছ বিক্রি হয় তাহলে তো মাছে দাম স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। আর যেভাবে সকল জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে ,সাধারন জনগনের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।অনেক ধন্যবাদ মাছ কেনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

নিলামে মাছ বিক্রি হয় বলেই পরবর্তীতে সেই মাছগুলোর দাম অনেক বেড়ে যায়। আসলে মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যখন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মাছগুলো কিনে যখন সাধারণ মানুষদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করা হয়। তখন বেশ চড়া দাম দিয়ে সাধারণ মানুষদেরকে কিনতে হয়। তবে কি আর করার মধ্যবিত্তরা সবচেয়ে বেশি সমস্যার মধ্যে পড়েছে।

নিলামে মাছ বিক্রির জন্য মাছের দাম এতো বেশি হয়।আর এক হাত থেকে মাছ ভিন্ন ভিন্ন হাতে যাওয়ার ফলে আজ নদীর মাছ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। আপনি সিএনবি ঘাটে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখলেন।আর যেহেতু ছোট মাছ পছন্দ নয়। তাই না কিনে ফরিদপুর মাছ বাজারে চলে গেলেন।আসলে ছোট মাছ খাওয়া ভীষণ দরকার।ছেলেবেলা ছোট মাছ খেয়েছি বলে আজ ও চোখ বেশ ভালো আছে,আলহামদুলিল্লাহ। ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

তাহলে শেষ পর্যন্ত সিএনবি বাজার হতে মাছ কিনতে পারলেন না ভাইয়া।আর পারবেনই বা কিভাবে যে দাম মাছের। মানুষ তো এখন মাছ কিনতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। তাও নাকি আবার নদীর মাছ। দেখা যাক সামনে মাছ কিনতে পারেন কিনা?