দীর্ঘদিন পর গুলিস্তানে যাওয়ার অভিজ্ঞতা।

in hive-129948 •  2 years ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত বেশ কয়েকদিন যাবত প্রচন্ড ব্যস্ত রয়েছি। ব্যস্ততার কারণে কোথাও যেতে পারছিনা ঘোরাফেরা করতে। দিন দিন মন অশান্ত হয়ে উঠছে। মনে হচ্ছে নিরিবিলি কোন একটা জায়গা থেকে ঘুরে আসতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু আপাতত মনে হয় সেটা সম্ভব না। তবে নিরিবিলি কোথাও যেতে না পারলেও আজ গিয়েছিলাম প্রচন্ড জনাকীর্ণ একটি জায়গায়। নাম বললে আপনারা সবাই চিনতে পারবেন। একটি বিশেষ কাজে আজ গিয়েছিলাম গুলিস্তান। ঠিক গুলিস্তান বললে সঠিক হবেনা। মূলত গিয়েছিলাম পুরান ঢাকার দিকে।

IMG_20221004_132014.jpg

IMG_20221004_124136.jpg

আমাদের একটি প্রপার্টির নির্মাণ কাজ চলছে। সেই কাজের কিছু জিনিসপত্র কেনার জন্যই মূলত গুলিস্তান গিয়েছিলাম। কারণ গুলিস্তানের পরেই সুরিটোলা নামে একটি জায়গা আছে। সেখানে আমার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি পাইকারি মূল্যে পাওয়া যায়। যেগুলির দাম ঢাকার অন্য যে কোন এলাকায় বেশ খানিকটা বেশি। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন বাংলাদেশের সবচাইতে বড় পাইকারি মার্কেট পুরান ঢাকাতেই অবস্থিত। সেখানে এমন কোন জিনিস নাই যা আপনি পাবেন না। সমস্ত বাংলাদেশে ওই সমস্ত মালপত্র পুরান ঢাকা থেকেই সাপ্লাই দেওয়া হয়।

IMG_20221004_124122.jpg

IMG_20221004_124157.jpg

যাই হোক বেশ কিছুদিন পর যেহেতু গুলিস্তান গিয়েছি। তাই চিন্তা করলাম কিছু ছবি তুলে নেই। একটি সময় ছিল যখন গুলিস্তান নিয়ে মনে এক ধরনের ভীতি কাজ করতো। গুলিস্তানকে বলা হত পকেটমারের স্বর্গরাজ্য। তাই আমি যখন প্রথম প্রথম গুলিস্তান আসতাম তখন আমার মানি ব্যাগের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতাম। তবে ভাগ্য ভালই বলতে হবে। গুলিস্তান থেকে কখনো আমার পকেটমার হয়নি অবশ্য। তবে গুলিস্তান কিন্তু হকারদের জন্য অনেক বিখ্যাত। কারণ এখানে রাস্তার দুপাশ দিয়ে অসংখ্য হকার স্বল্প মূল্যে বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র বিক্রি করছে। মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে জামা কাপড় সবই আপনি তাদের কাছে পাবেন। তবে দাম অল্প হলেও আপনাকে খুব খেয়াল করে জিনিসপত্র বেছে নিতে হবে। না হলে হয়তো আপনাকে এমন জিনিস তারা গুছিয়ে দেবে যেটা আপনি কোনভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন না।

IMG_20221004_124757.jpg

IMG_20221004_123717.jpg

গুলিস্তানের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন আগের থেকে অনেকটাই পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। বেলা ১১ টার দিকে আমি শান্তিনগর থেকে গুলিস্তানের দিকে রওনা দিলাম। শান্তিনগর থেকে গুলিস্তানের দূরত্ব একেবারেই কম। যার ফলে অল্প সময়ে সেখানে পৌঁছে গেলাম। গুলিস্তান গোলাপ শাহর মাজারে নেমে আমি প্রথমে আশেপাশের কিছু ছবি তুললাম। গুলিস্তানে একটি পার্ক রয়েছে ইচ্ছা ছিল সেখানে গিয়ে কিছু ছবি তোলার। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম পার্কটির রক্ষণাবেক্ষণের কাজে চলছে। যার ফলে সেখানে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। তাই আর পার্কে ঢোকা হলো না।

IMG_20221004_124845.jpg

IMG_20221004_123647.jpg

সেই পার্কে শুনেছি মুঘল আমলের একটি বড় কামান রয়েছে। আমি অনেক আগে একবার সেই কামানটি দেখেছিলাম। এখন আর সেই কামানটি আছে কিনা সেটা জানিনা। যেহেতু পার্কের ভেতরে ঢুকতে পারিনি তাই আর সেটা দেখতেও পায়নি। আজকে বেশ গরম পড়েছিল। তাই গুলিস্তান নামার পরেই মনে হল ঠান্ডা এক গ্লাস শরবত খেতে পারলে মন্দ হয় না। যদিও এই শরবত গুলি কতটা স্বাস্থ্যসম্মত এটা নিয়ে মনে যথেষ্ট সন্দেহ ছিলো। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে স্বাস্থ্য ঝুকি কিছুটা উপেক্ষা করেই এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত খেলাম।

IMG_20221004_125523.jpg

IMG_20221004_123647.jpg

তারপর শুরু করলাম আমার যে কাজে এসেছিলাম সেই কাজের উদ্দেশ্যে যাত্রা। আমি যে জিনিসটি কিনতে এসেছিলাম সেটি বেশ কিছুক্ষণ ধরে খুঁজতে লাগলাম। তবে আমার মন মত জিনিসটি পেলাম না। তবে কাছাকাছি একটি জিনিস আমি পছন্দ করেছি। যদিও সেটা আজ কিনি নাই। আমি যখন গুলিস্তানে ঘোরাফেরা করছিলাম। তখন হঠাৎ করে দেখলাম এক লোক ভেলপুরি বিক্রি করছে। ঢাকার রাস্তাঘাটে প্রচুর ভেলপুরি বিক্রেতা দেখা যায়। তবে এই লোকের ভেলপুরি আমার কাছে কিছুটা অন্যরকম লাগলো। দেখে মনে হচ্ছিল খেতে বেশ মজা হবে। যদিও এখন রাস্তার পাশের খাবার কিছুটা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। তবে এই ভেলপুরি দেখে আর সেই নিষেধাজ্ঞা মানতে পারলাম না। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পরপর কয়েকটি ভেলপুরি খেয়ে নিলাম। তারপর আরো কিছুক্ষণ আমার কাজের জন্য ঘোরাফেরা করে বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানগুলিস্তান

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

নিরিবিলি জায়গায় যেতে ইচ্ছে করছিল কিন্তু চলে গেলেন বেশ ভিড়ের মধ্যে। গুলিস্থান একটু সাবধানে চলাফেরা করতে হয় তবে এখানে পাওয়া যায়না এমন জিনিস হয় না, সব ধরনের জিনিস কম দামে পাওয়া যায়, তবে ঠিক বলেছেন একটু যাচাই করে না নিলে খারাপ জিনিস টিও এইখানে খুব সহজেই দোকানদাররা বিক্রি করে দিবে আপনার কাছে।

গুলিস্তান গেলে আমার মনের ভেতরে এক অদ্ভুত অবস্থা বিরাজ করে। কিছুটা শংকা থাকলেও চারপাশটা ঘুরে ফিরে দেখতে মন্দ লাগে না।

আসলে ভাই ঠিক বলেছেন গুলিস্তানে অনেক কম দামে জিনিস পাওয়া যায় কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে সেটা বাসায় আনার পর সেটা ব্যবহার যোগ্য না। আর অনেক ভিড়ের মধ্যে পকেটমারের আসলে ভয় থাকে। ছবিসহ খুব সুন্দরভাবে অনেকদিন পর গুলিস্তান যাওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন দেখে ভালই লাগলো।

যদিও আমার এখন পর্যন্ত কখনো গুলিস্তান থেকে পকেটমার হয়নি। তবে সেখানে গেলে সব সময় সতর্ক হয়ে থাকতে হয়।

আশা করি ভাইয়া, ভালো আছেন? গুলিস্তান যাওয়ার অভিজ্ঞতা খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আসলে আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। গুলিস্তানে সকল কিছু তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায়। তবে ভালো খারাপ দেখে নিতে পারলে খুবই ভালো হয় ‌‌। গুলিস্তান খুবই ব্যস্ততম এলাকায় সেখানে পকেটমার থাকবে না এটা তো হয় না। তাই আমাদের পকেটমার এবং বিভিন্ন ধরনের চক্র থেকে সাবধান থাকতে হয় গুলিস্তানে গেলে। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। ভালো থাকবেন ভাইয়া।

পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

গুলিস্তানের চিত্র এখন পুরাই পাল্টে গেছে। আমি কাল গিয়েছিলাম। পকেটমার এখন কমেছে বোধহয়। ট্রাফিক পুলিশ যথেষ্ট সোচ্চার। গুলিস্তানের জিনিসপত্র শুনেছিলাম বেশিদিন টিকে না। তবে পাইকারী দামে ভালো ভালো জিনিস পাওয়া যায়। আর ঢাকার ভেলপুরি খেতে ভালোই লাগে।

আসলেই ঠিক বলেছেন। গুলিস্তানের চিত্র এখন অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে।

গুলিস্তান খুবই কোলাহলপূর্ণ জায়গা। আপনি যেসব জায়গা দিয়ে গিয়েছেন সে সব জায়গায় দিয়ে কোন না কোন এক সময় আমিও গিয়েছি। একবার না বেশ কয়েকবারই। সেখানে পুরাতন মোবাইল বিক্রি করে ব্যাটারি বিক্রি করে এসব জায়গায় আমার খুব চেনা।

শুরুতে লিখাটি পড়ে একটু চমকে গিয়েছিলাম।যাবেন নিরিবিলি জায়গায় কিন্তু গেলেন গুলিস্তানে।যাকে সবচেয়ে যানজট পূর্ণ এলাকা বলা হয়।পরে অবশ্য পুরোটা পড়ে বুঝতে পারলাম পুরান ঢাকায় দরকারী কিছু কিনার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন।অবশ্য সেখানে প্রায় সবকিছু পাওয়া যায়। তবে দেখে কিনতে হয়।আর পকেট মারের কথা বলছেন। সেটা তো ঐ এলাকায় পকেট মারদের জন্য স্বর্গরাজ্য।বছরখানেক আগে আমার এক বন্ধু গুলিস্তানের মাজারের সামনে বাসে বসা ছিল এবং জানালার পাশে বসে মোবাইলে গেইম খেলছিল।বাহির থেকে একটা ছেলে মোবাইলটা নিয়ে দৌড়ঁ। বাসের কোন চিপা দিয়ে কোথায় চলে গেল।আর মোবাইলটা পাওয়া গেল না।আপনার লেখাটি পড়ে গুলিস্তানের সেই কথাটি মনে পরে গেল ভাই।

ঢাকা গুলিস্তান বেশ নামকরা একটি জায়গা। বেশ অনেক কিছুই জানেন দেখছি ভাই গুলিস্তান সম্পর্কে। যেখানে জনসমাগম বেশা সেখানেই তো পকেটমারের সংখ্যা বেশি হবে। তারপর জায়গা টা যখন গুলিস্তান।।

প্রায় দুই বছর আগে যখন গুলিস্তানে গিয়েছিলাম তখন এর অবস্থা আর এখন গুলিস্তানের অবস্থা অনেক পরিবর্তন হয়েছে ভাইয়া। তাছাড়া গুলিস্তানে যাওয়ার আপনার অভিজ্ঞতা গুলো অনেক ভালো লাগলো। সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটানো পাশাপাশি অনেক সুন্দর ভাবে কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল

ঠিক বলেছেন ভাই, গুলিস্তান পকেটমারদের স্বর্গরাজ্য এটা আমিও শুনেছিলাম। যাইহোক আপনার মাধ্যমে এই বিষয়টি যাদের জানা নেই তারা জেনে অনেক উপকৃত হবেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।