হঠাৎ বিপত্তি।

in hive-129948 •  last year 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত কয়েকদিন থেকেই চিন্তা করছিলাম সকালে ঘুম থেকে উঠে বাজারে যাবো। মূলত বাজারে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল মাছ কেনার জন্য। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন কারনে আর সকালে বাজারে যাওয়া হচ্ছিলো না। তবে আজ সকালে আমি আটটার দিকে এলার্ম দিয়ে রেখেছিলাম যাতে ওই সময় ঘুম থেকে উঠে বাজারে যেতে পারি। অ্যালার্ম ঠিক সময়মতোই বেজেছিলো। কিন্তু আমি উঠতে পারিনি তখন। আমি যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন দেখি নটা বেজে গিয়েছে। যাই হোক তড়িঘড়ি করে তৈরি হয়ে বাজারে চলে গেলাম।

IMG_20230817_173008.jpg

বাজারে গিয়ে মাছ সবজি আর আম কিনে যখন বাসায় ফিরলাম বাসায় ঢুকেই দেখি কারেন্ট নেই। গত ২-৩ দিন থেকে লোডশেডিং আবার অনেকটা বেড়েছে। বাসায় ঢুকেই মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো। কারণ এমনিতেই বাইরে বেশ গরম। আমি পুরো ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে বাসায় ফিরেছি। চিন্তা করেছিলাম বাসায় ঢুকে আগে ফ্যানের নিচে বসতে হবে। কিন্তু এই অবস্থায় বাসায় ঢুকে যখন দেখলাম কারেন্ট নেই তখন কেমন লেগেছে সেটা আপনারা বুঝতেই পারছেন। তবে তখনও আমি বুঝতে পারিনি সমস্যার কেবল এখানে শুরু। যাই হোক প্রায় ঘন্টাখানেক পর কারেন্ট এলো। তখন চিন্তা করছিলাম যাক এবারের মত বাঁচা গেলো।

IMG_20230817_174117.jpg

কিন্তু এক ঘন্টা পার না হতেই আবার কারেন্ট চলে গেলো। এদিকে আমি কম্পিউটারে কাজ করতে বসেছিলাম। কাজের মাঝে কারেন্ট চলে গেলে মেজাজটা মারাত্মক খারাপ হলো। কিন্তু খারাপ লাগলেও কিছুই করার নেই। এভাবে একসময় একটা বেজে গেলো। ততক্ষণে জোহরের আজান হয়ে গিয়েছে। আমি বাথরুমে অজু করতে গিয়ে দেখি কলে পানি আসছে না। আমি কিছুটা অবাক হলাম। কারণ আমাদের মোটরের সাথে একটা অটো মেশিন লাগানো রয়েছে। সেই কারনে মোটর নিজেদের ছাড়তে বা বন্ধ করতে হয় না। ট্যাংকির পানি কমে গেলে অটোমেটিক মটর চালু হয়ে যায় ট্যাংকি ভরে গেলে অটোমেটিক মটর বন্ধ হয়ে যায়। যখন দেখলাম কলে পানি নেই তখনই মনে হল মোটরে কোন সমস্যা হয়েছে। সবকিছু চেক করার পরে ট্যাংকির ভেতরে যে মেশিনটা দেয়া ছিল সেটা একটু নাড়াচাড়া দিতে আবার পানি আসতে শুরু করল। তখন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। মনে করলাম যাক এ যাত্রা বাঁচা গিয়েছে।

IMG_20230817_231800.jpg

তারপর আমি অজু করে নামাজ পড়তে চলে গেলাম। নামাজ পড়ে এসে খাওয়া-দাওয়া করে আবার কাজ করতে বসেছি এর ভেতরে আমাদের এক ভাড়াটিয়া এসে বলল ট্যাংকি ভরে দীর্ঘক্ষণ ধরে পানি পড়ছে। মোটর বন্ধ হচ্ছে না কেন? আমি আবার চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমি দ্রুত ছাদে উঠে দেখলাম কি সমস্যা হচ্ছে। গিয়ে খেয়াল করে দেখি মোটর ভরে অনেকক্ষণ ধরে পানি পড়ছিলো। আমি তখন বুঝতে পারলাম অটো মেশিনটাতে বোধহয় কোন সমস্যা হয়েছে। তারপর আমি দ্রুত নিচে নেমে গিয়ে মটরের সুইচটা বন্ধ করে দিলাম। এরপরে যথারীতি যা হওয়ার সেটাই হলো। ইলেকট্রিক মিস্ত্রির শরণাপন্ন হতে হলো। আমাদের এক পরিচিত মিস্ত্রি আছে। ছেলেটা দীর্ঘদিন থেকেই আমাদের বাসায় কাজ করে। তাকে ফোন দিলে সে জানালো সে একটি বাড়িতে কাজ করছে। হাতের কাজটা শেষ হলে তারপর আমাদের বাসায় আসবে। এদিকে আমি বিকালে ফেরদৌসের সাথে বাইরে বের হতে চেয়েছিলাম। ছেলেটার সাথে কথা বলার পর বুঝতে পারলাম আজকে আর বাইরে যাওয়া সম্ভব না। তাই আমি ফেরদৌস কে ফোন দিয়ে মানা করে দিলাম।

বিদ্যুৎ মিস্ত্রি যখন আমাদের বাসায় আসলো সে সব কিছু দেখে বলল অটো মেশিনটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে এটা পাল্টাতে হবে। আমি তখন তাকে বললাম ঠিক আছে আমি কিছুক্ষণ পরে গিয়ে মেশিনটা নিয়ে আসি। তোমাকে ফোন দিলে তুমি এসে লাগিয়ে দিয়ে যেও। ছেলেটা আমাকে বলল ঠিক আছে ভাই। তারপর আমি আসরের নামাজ পড়ে বাজারে গিয়ে নতুন আর একটা অটো মেশিন কিনলাম। সাথে আরো সুইচ সকেট কিছু টুকিটাকি জিনিসও কিনলাম। সবকিছু কিনে আমি যখন বাসায় ফিরছিলাম তখন ছেলেটাকে ফোন দিয়ে বললাম আমার কেনাকাটা হয়ে গিয়েছে তুমি এক্ষুনি আমাদের বাসার দিকে রওনা দাও। তবে আমি বাসায় পৌঁছতে পৌঁছতে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। বৃষ্টিটা হঠাৎ করেই এলো।

বৃষ্টির কারণে ছেলেটা বাসায় আসলো প্রায় সন্ধ্যার দিকে। অবশ্য তার কাজ করতে বেশি সময় লাগেনি। মাত্র ৫-৬ মিনিট সময় লেগেছিল মেশিনটা রিপ্লেস করতে। মেশিনটা রিপ্লেস করার পর আবার অটোমেটিক মটরটা চালু হয়ে গেলো। এই ধরনের সমস্যা হলে বেশ বিরক্ত লাগে। তবে বিরক্ত লাগলেও মাঝে মাঝেই আমাকে এই ধরনের সমস্যার ভিতরে পড়তে হয়। অবশ্য শুধু আমাকে নয় প্রত্যেকটা মানুষকেই এমন অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার ভেতরে পড়তে হয়। সেজন্য এসব পরিস্থিতিতে সব সময় মাথা ঠান্ডা রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যাই হোক আজকের মত এই বিপত্তি থেকে মুক্তি পেয়ে মোটামুটি ভালো বোধ করছি। যদিও আজকে বারবার কারেন্ট যাওয়ার কারণে কাজের অনেক সমস্যা হয়েছে। তবে আশা করছি অতি দ্রুত বিদ্যুতের এই সমস্যাটাও ঠিক হয়ে যাবে।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপনার বিপত্তির কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো।আর এটা ঠিক ভাইয়া ঝামেলা একটা হলে সঙ্গে সঙ্গে আরো অনেক ঝামেলা চলে আসে।তবে সবকিছুতে ধৈর্য ধারন করা খুব জরুরী।রেগে গেলে হেরে যেতে হয়।যাক শেষ পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হলো, জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।

লোডশেডিং এর জন্য মাঝেমধ্যে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। বিশেষ করে বাহিরে থেকে আসার পর, বাসায় এসে কারেন্ট না থাকলে অতিরিক্ত রাগ লাগে। অটো মেশিনটা আমিও কয়দিন ধরে লাগাবো বলে ভুলে গিয়েছিলাম। আপনার পোস্ট দেখে মনে পড়ে গেল। যাইহোক শেষপর্যন্ত নতুন অটো মেশিন লাগিয়ে সমস্যার সমাধান করা হলো। তবে ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে বের হতে পারলেন না। যাইহোক পরবর্তীতে বের হবেন। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

হ্যাঁ ভাই হঠাৎ দুইদিন ধরে প্রচন্ড লোডশেডিং শুরু হয়েছে আর সেই সাথে প্রচন্ড গরম। বাইরে থেকে কাজ শেষ করে বাসায় ঢোকার পরে এমনিতেই গরমে গা ঘেমে যায় আর তখন যদি বিদ্যুৎ না থাকে তাহলে মেজাজটা খারাপ হওয়া স্বাভাবিক আবার কাজের মাঝে এভাবে বিদ্যুৎ ঝামেলা করলে আসলেই মেজাজটা খারাপ হয়। আর ইলেকট্রনিক্সের জিনিস যেকোনো সময় ঝামেলা করতেই পারে। মেশিনটা একটু ডিস্টার্ব দেওয়ার কারণে যেহেতু রিপ্লেস করেছেন তাই আপাতত আর কোন ঝামেলা হবে না আশা করছি যাইহোক আপনার বিপত্তির কথা গুলো তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।

আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখেছি যখন সমস্যা আসতে থাকে যেন চারিদিক থেকেই আসতে থাকে। এই সময়টাতে আমাদের সকলেরই ধৈর্য ধারণ করাটা খুবই প্রয়োজন। খুবই ভালো লাগলো এটা জানতে পেরে যে শেষ পর্যন্ত সমস্যাটার সমাধান হয়েছে।

অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু সমস্যা যখন সামনে চলে আসে তখন সত্যি অনেক বিরক্ত লাগে। ভাইয়া আপনি একটার পর একটা বিপদের মধ্যে পড়েছেন। একদিকে কারেন্টের সমস্যা অন্যদিকে আবার মিস্ত্রি ডাকতে হয়েছে। যাই হোক অবশেষে সব সমস্যার সমাধান হয়েছে জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। মাঝে মাঝে বিপদে পড়লেও ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযোগ হয়।