ভাগ্নেকে সাথে নিয়ে কাচ্চি খাওয়ার গল্প।

in hive-129948 •  5 months ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


এবার কক্সবাজার ট্যুর শেষ করে আসার আগে একদিন ঢাকা ছিলাম। মূলত ঢাকায় গিয়েছিলাম মোবাইল কেনার জন্য। পরিকল্পনা করেছিলাম ফেরার পথে ঢাকা থেকে মোবাইল কিনে তারপর ফরিদপুরে যাবো। পরিকল্পনা মোতাবেক কক্সবাজার থেকে ফিরে আমি গিয়েছিলাম আমার বোনের বাসায়। প্রথমে চিন্তা করেছিলাম পরদিন সকালে মোবাইল কিনে তারপর বিকালের দিকে বাড়ির দিকে রওনা দেবো। তবে যেদিন ঢাকা পৌছালাম সেদিন দুপুরের পর দেখলাম শরীরটা বেশ ঝরঝরে লাগছে। তাই আর দেরি না করে সেদিন বিকালেই মোবাইল কিনতে চলে গিয়েছিলাম। মোবাইল কেনা হলে একটা বড় ঝামেলা শেষ হলো। পরদিন পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক পরদিন সকালে মোবাইল কিনে বাড়ি রওনা দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। তবে রাতে আমার ভাগ্নে জানালো সেও আমার সাথে ফরিদপুরে যাবে। আসলে ও দীর্ঘদিন থেকে ওর নানাবাড়ি বেড়াতে যেতে চাইছে। কিন্তু নানা রকম ব্যস্ততার কারণে আর সেই সময় সুযোগ হয়ে উঠছিলো না।

1000001158.jpg

এবার আমাকে পেয়ে সে ফরিদপুর যাওয়ার বাইনা ধরলো। যদিও আমার বোন আর দুলাভাই এই সময়ে ভাগ্নেকে ফরিদপুর পাঠাতে রাজি ছিলো না। পরবর্তীতে আমার ভাগ্নের আগ্রহের কারণে শেষ পর্যন্ত তারা রাজি হয়েছিলো। যথারীতি পরদিন সকালে আমি আমার ভাগ্নেকে নিয়ে ফরিদপুর রওনা দিয়েছিলাম। আমার ভাগ্নে ও আমার মত খুবই ভোজন রসিক। যার ফলে আমি তার খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর রাখছিলাম। ভাগ্নে আসার দু-তিনদিন পরে শুক্রবারে আমি আমার মাকে রান্না করতে নিষেধ করলাম। কারণ আমি জানি আমার ভাগ্নের শুক্রবারে দুপুরে তার ভালোমন্দ খাওয়া না হলে চলেই না। এই কারণে আমি আমার মাকে বলেছিলাম দুপুরে আমরা বাইরে খেতে যাবো। জুমার নামাজ পড়ে যখন বাসায় ফিরলাম। তখন আমার মাকে বলতে সে আর বাইরে যেতে রাজি হলো না। সে বলল বাইরের খাবার খেতে তার একেবারেই ভালো লাগেনা। পরবর্তীতে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যেহেতু আম্মা যেতে চাচ্ছে না। তাই তার জন্য বাসায় পার্সেল নিয়ে আসবো।


1000001154.jpg

তারপর আমি ভাগ্নেকে নিয়ে রওনা দিলাম কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে। অবশ্য আমি সকালেই তার কাছে শুনে নিয়েছিলাম সে কোন ধরনের খাবার খেতে চায়? ফ্রাইড রাইস না কাচ্চি? সে কাচ্চি খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলো। সেই কারণে তাকে নিয়ে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি যথারীতি সেদিনও বেশ ভিড়। তারপরও আমরা খোঁজাখুজি করে দুজনে একটা টেবিল ফাঁকা পেয়ে গেলাম। দেরি না করে সাথে সাথে সেই টেবিলে বসে পড়লাম। বসার পর ওয়েইটারের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। তবে পুরো রেস্টুরেন্টে অনেক লোকজন থাকায় ওয়েটারের অর্ডার নিতে বেশ দেরি হোলো। এদিকে অর্ডার দেয়ার পরও দীর্ঘক্ষণ বসে ছিলাম। কিন্তু খাবারের কোনো দেখা পাচ্ছিলাম না। খাবার দিতে দেরি হওয়ায় আমি আর আমার ভাগ্নে দুজনে ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়েছিলাম।


1000001153.jpg

অবশেষে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমাদের সামনে খাবার এলো। তবে সেখানেও একটা ঝামেলা থেকে গেলো।ওয়েইটার আমাকে প্লেট দিলেও আমার ভাগ্নের সামনে তখনো প্লেট দেয়নি। তখন আমি আমার ভাগ্নেকে পরামর্শ দিলাম যেটাতে করে সার্ভ করেছে সেখান থেকে খাওয়া শুরু করতে। যাইহোক সেদিনের কাচ্চিটা আমার কাছে দারুন লেগেছিলো। এর আগে যে দুইবার আমি কাচ্চি ভাই থেকে কাচ্চি খেয়েছিলাম। সেই দুইবারই কাচ্চির ভেতরের মাংস কিছুটা শক্ত পেয়েছিলাম। তবে এবারে মাংস পেয়েছিলাম একেবারেই সফট। কাচ্চির ভেতরের মাংস যদি সফট হয় তাহলে কাচ্চির টেস্ট অনেক বেড়ে যায়। সেদিন কাচ্চিটা আমার কাছে আসলেই দারুন লেগেছিলো। এদিকে আমরা খাওয়া-দাওয়া করার সময় দেখলাম আরো কিছু মানুষ রেস্টুরেন্টের ভেতর ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছে সিট পাওয়ার জন্য। যেহেতু আমরা দুজন ছিলাম তাই আমি আমার ভাগ্নেকে পরামর্শ দিলাম আমার পাশে বসতে। তাতে করে সামনে দুজনে বসার ব্যবস্থা হয়ে গেলো। দুজন লোক সেখানে বসতে পেরে আমাদের উপর খুব খুশি হয়েছিলো। যাইহোক খাওয়া-দাওয়া শেষ করে একটা কাচ্চি পার্সেল নিয়ে আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসSamsung s24 ultra
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png



PUSS_Banner2.png



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @rupok,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

কারণ আমি জানি আমার ভাগ্নের শুক্রবারে দুপুরে তার ভালোমন্দ খাওয়া না হলে চলেই না।

ভাই এই অভ্যাসটা আমারও আছে। জুমার নামাজ শেষ করে ভালো খাবার না পেলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। যাইহোক আগের দুইবারের মতো এবারের কাচ্চির মাংস শক্ত ছিলো না,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। সবমিলিয়ে ভালোই খাওয়া দাওয়া করেছেন তাহলে। যাইহোক এতো চমৎকার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আমার নিজের ও একই অবস্থা। শুক্রবার দুপুরে টেবিলে ভালো কিছু না থাকলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।

এরকম রেস্টুরেন্ট গুলোতে মানুষ একটু বেশি যায়। কাচ্চি খেতে তো আমি অনেক বেশি ভালোবাসি। ভাগ্নেকে নিয়ে কাচ্চি খেতে গিয়েছিলেন শুনে অনেক ভালো লাগলো। অন্যবারের তুলনায় এবারের মাংসগুলো সফট ছিল শুনে অনেক ভালো লেগেছে। বুঝতে পারছি মজা করে খেয়েছেন দুজনে মিলে খাবার গুলো। বাড়িতে নিয়ে আসার পর আপনার আম্মুও নিশ্চয়ই মজা করে খেয়েছে।

আমার বাসাতে ও শুক্রবার ভালো মন্দ কিছু থাকতেই হয় ছেলের জন্য। আপনি আপনার ভাগ্নের জন্য ভাগ্নের পছন্দের আইটেম খাওয়াতে নিয়ে গেলেন।আর আগের চেয়ে সেদিন কাচ্চি খেতে খুব ভালো লেগেছিল জেনে ভালো লাগলো। অন্তত ভাগ্নে তো প্রশংসা করতে পাবরে খাবারটা বেস্ট ছিল। সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।