পরিবারের সাথে কিছু চমৎকার মুহূর্ত কাটানো।

in hive-129948 •  2 years ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


দীর্ঘ একমাস পর আবার বাড়িতে এসেছি । ঢাকায় যে কাজে গিয়েছিলাম সে কাজ এখনো শেষ হয়নি। আপাতত কাজটি কয়েকদিন বন্ধ আছে। সেজন্য সময় পেতেই চিন্তা করলাম একবার বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। পরিবারের জন্য মনটা অস্থির হয়েছিলো। তাই সুযোগ পাওয়ার সাথেই আর দেরি না করে বাড়ি চলে এলাম। নিজের বাড়ির বাইরে অন্য কোথাও থাকতে আমার মোটেও ভালো লাগেনা। দু চার দিনের জন্য কোথাও ঘুরতে গেলে সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু বাড়ি ছেড়ে এত দীর্ঘদিন বাইরে থাকতে আমার একেবারেই ভালো লাগেনি।

IMG_20221026_165011.jpg

কিন্তু জীবনে আপনাকে এমন অনেক কাজ করতে হবে যে কাজ আপনার পছন্দ নয়। এবার বাড়ির বাইরে থাকাটাকে আমি তেমন একটি কাজ হিসেবে মেনে নিয়েছি। গত দুদিন হয়ে গেল বাড়িতে এসেছি। এর ভেতরে বাইরে কোথাও যাওয়া হয়নি। সারাদিন কমিউনিটির কাজ করছি আর পরিবারের সাথে সময় কাটাচ্ছি। যদিও প্রথম দিন যখন এলাম সেদিন রীতিমতো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ছিলো। তবে পরদিন সকাল থেকেই আবহাওয়া অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল। তারপরেও বাইরে কোথাও যাওয়া হয়নি। তাই চিন্তা করছিলাম পরিবারকে নিয়ে একবার বাইরে থেকে ঘুরে এলে মন্দ হয় না। সেজন্য আজ পরিকল্পনা করেছিলাম আমার স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে দুপুরে বাইরে খাব। তারপর পদ্মার পাড়ে ঘুরতে যাবো।

IMG_20221026_165648.jpg

কিন্তু পরিকল্পনা করার আগে আমার আরো একটু ভালোভাবে চিন্তা ভাবনা করা উচিত ছিলো। কারণ আজ কমিউনিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমার করার কথা। সেই কাজটি করতে করতে আমার বেলা গড়িয়ে প্রায় বিকাল হয়ে গেলো। এদিকে আমার কাজ আর শেষ হয় না। আর ওদিকে পরিবারের সকলের প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে। শেষ পর্যন্ত কাজটি শেষ হওয়ার সাথেই আমি গোসল সেরে পরিবারকে নিয়ে রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ততক্ষণে বেলা প্রায় চারটা বেজে গিয়েছে। আজকে চিন্তা করেছিলাম শহরের সবচাইতে সুন্দর ডেকোরেশন করা রেস্টুরেন্টে যাবো। এই রেস্টুরেন্টে এর আগে পরিবার নিয়ে কখনো যাওয়া হয়নি। আমি নিজেও এ রেস্টুরেন্টে এর আগে শুধু একবারই গিয়েছি।

IMG_20221026_165636.jpg

এই রেস্টুরেন্টে নিয়ে কাস্টমারদের একটা কমন অভিযোগ হচ্ছে এখানকার খাবারের দাম অনেক বেশি। তবে অনেকে আবার এই রেস্টুরেন্টের বেশ প্রশংসা করেন। কারণ রেস্টুরেন্টের ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন। রেস্টুরেন্টের ভেতরটা বেশ চমৎকার করে তারা সাজিয়েছে। সময় কাটানোর জন্য একটি চমৎকার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই রেস্টুরেন্ট। যাইহোক আমরা বাসা থেকে রওনা দেয়ার ১০-১৫ মিনিটের ভেতরেই সেই রেস্টুরেন্টে পৌঁছে গেলাম। পৌঁছে ওয়েটারকে ইশারায় মেনু কার্ড দিতে বললাম। মেনু কার্ড থেকে পছন্দ করে আমরা দু রকমের দুটি সেট মেনু অর্ডার করলাম। সাথে অর্ডার করলাম ড্রিঙ্কস।

IMG_20221026_165619.jpg

অর্ডার করার পর তাদের কাছে জানতে চাইলাম খাবার পরিবেশন করতে কত সময় লাগবে? তারা বলল ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগবে। এত সময়ের কথা শুনে আমার কিছুটা খারাপ লাগলো। কারণ ততক্ষণে পেটের ভিতর ছুঁচো দৌড়াদৌড়ি করতে শুরু করে দিয়েছে। পরিবারের সকলেই ক্ষুধার্ত হয়ে ছিলাম। তাই ওয়েটারকে বললাম ভাই প্লিজ একটু তাড়াতাড়ি করার চেষ্টা করবেন। ওয়েটার বলল জী স্যার আমি শেফকে বলে দিচ্ছি। ক্ষুধা পেটে বসে থাকতে মোটেও ভালো লাগছিল না। কিন্তু কিছুই করার নেই। খাবার আসার আগ পর্যন্ত আমাদের কিছুই করার ছিল না। আমি এর ভেতর মোবাইল থেকে কমিউনিটির কিছু কাজ করতে লাগলাম। আর এর ফাঁকে কয়েকটি ছবিও তুললাম।

IMG_20221026_155542.jpg

IMG_20221026_155528.jpg

ঠিক ২৫ মিনিট পর আমাদের টেবিলে তারা খাবার পরিবেশন করল। খাবার দেখে খুব একটা আনন্দিত হতে পারলাম না। কারণ অন্যান্য রেস্টুরেন্টে যেখানে সেট মেনু গুলি ২০০ থেকে ২৫০ টাকার ভেতরে হয়ে থাকে। সেখানে এখানে প্রত্যেকটি সেট মেনু ড্রিংস ছাড়াই ৪০০ টাকা। ড্রিংস সহ ৪৫০ টাকা দাম পড়ে। কিন্তু সেখানে খাবারের পরিমাণ খুব একটা আহামরি না। তাছাড়া খাবার স্বাদও যে অন্যদের থেকে আলাদা সেটাও নয়। বুঝতে পারলাম এত দাম রাখার একটাই উদ্দেশ্য। সেটা হচ্ছে এদের ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন। শহরের পয়সাওয়ালা কিছু লোকজন এটাকে তাদের আড্ডা খানা বানিয়েছে। আর তাদের উপর নির্ভর করেই এই রেস্টুরেন্টটি চলছে। তাছাড়া এখানে সাধারণ মানুষ এর খেতে আসার কোন কারণ নেই। এদের কাছ থেকে অনেক ভালো মানের খাবার আশা করেছিলাম। কিন্তু খাবারের মান ছিল খুবই সাধারণ।

IMG_20221026_162331.jpg

IMG_20221026_162222.jpg

যাইহোক টেবিলে খাবার পরিবেশন করার পর আমরা খেতে শুরু করলাম। আমার স্ত্রী বলল এখানকার খাবারের সাদ তো অন্যদের থেকে ভালো না। তাহলে এরা এত দাম রাখে কেন? আমি তাকে বললাম এই দাম রাখার কারণ হচ্ছে এদের ডেকোরেশন। যাইহোক খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমি ওদেরকে বসিয়ে রেখে পাশের একটি মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে আসলাম। আমি এসে দেখি তখনও আমার মেয়ের খাওয়া হয়নি। আমি তখন তাকে বললাম তুমি ধীরে সুস্থে খাও। আর আমরা বসে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম। শেষ পর্যন্ত যখন আমার মেয়ের খাওয়া শেষ হল ততক্ষণে প্রায় পাঁচটা বেজে গিয়েছে। আমি আমার স্ত্রীকে বললাম আজ আর পদ্মার পাড়ে গিয়ে কাজ নেই। কারণ প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। এখন যদি সেখানে যাই তাহলে অল্প কিছুক্ষণের ভেতরেই সেখান থেকে চলে আসতে হবে। আমরা আজকে আপাতত বাসায় চলে যায়। দু-একদিনের ভেতরে আমরা একটু সময় হাতে নিয়ে পদ্মার পাড়ে ঘুরতে যাবো। আমার প্রস্তাবে সে সম্মতি জ্ঞাপন করলো। তারপর আমরা বাড়ির পথে রওনা দিলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানসেরিন গার্ডেন, ফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

জি ভাই পরিবার ছেড়ে দুরে থাকা যে কতটা কষ্টের তা আসলে বুঝি ভাই ৷ যা হোক অনেক দিন পর হলেও বাড়ি গিয়েছেন যেটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো ৷ আর গিয়েই পরিবারের সাথে বেশ সুন্দর আনন্দে পড়ছেন ৷ পরিবার মিলে বাইরে রেস্টুরেন্ট খেতে গিয়েছেন ৷ যেমনটা বলে না যে চকচক করলে সোনা হয় না ৷ আপনারা খুব সুন্দর ভালো রেস্টুরেন্টে গেছেন কিন্তু অথচ খাবার গুলো ভালো হয়নি ৷ কারণ তারা জাকজমকপূর্ণ করে শুধু এই রেস্টুরেন্টে বানিয়েছে৷ সেই খাবারগুলোকে ভালোভাবে আকর্ষণ করতে পারে নি ৷

দীর্ঘ একটি মাস পরিবারকে ছেড়ে আপনি ঢাকায় ছিলেন এবং যখন বাড়িতে আসলেন, তখন অনেক ভালো লাগলো।কিন্তু কমিউনিটির ব্যস্ততার কারণে আপনি বাসায় ছিলেন। আজকে পরিবারের সকলকে নিয়ে আপনি খুবই সুন্দর একটি রেস্টুরেন্টে খেতে এসেছে। রেস্টুরেন্টের খাবারের অন্য রেস্টুরেন্ট এর মতই কিন্তু এখানে দাম বেশী তার কারণ হলো ডিকরেশন খুবি ভালো। যাইহোক ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো।

আপনার মত আমিও । নিজের বাড়ি ছাড়া অন্য কোথাও খুব একটা ভালো লাগে না। পরিবারকে নিয়ে সময় কাটানোর মত তৃপ্তি আর অন্য কিছুতে যেন নেই। কাজটাকে গুরুত্ব দিয়ে তারপর সবাইকে নিয়ে বেড়িয়েছেন এই জিনিসটা দারুন লাগলো ভাই। যদিও পুরোপুরি ঘোরা হলো না, আশা করি অন্যদিন ঠিক হয়ে যাবে। আর খাবারের দামের সাথে পরিমাণ দেখে সত্যিই কেমন যেন বেমানান লাগলো। তবে ভেতরের ডেকোরেশন টা বেশ চমৎকার ছিল।

পরিবারের সঙ্গে কাটানোর মজাই আলাদা।কিন্তু কর্মসূত্রে মানুষকে ছুটে যেতে হয় বাইরে বারবার।এটাই নিয়ম জগতের।রেস্টুরেন্টে সবাই মিলে দারুণ সময় উপভোগ করেছেন।কিন্তু খাবারের মান ভালো না জেনে খারাপ লাগলো।যাইহোক সন্ধ্যায় পদ্মার পাড়ে না গিয়ে ভালো করেছেন ভাইয়া, ধন্যবাদ আপনাকে।

বড় বড় হোটেল বা রেস্তোরাঁ গুলো তাদের ডেকোরেশন দিয়েই সাধারণ লোকদের গলা কাটে। আসলেই তাদের খাবারের মান যে খুবই উন্নত তা নয়। এইতো আমাদের দেশের কৃষ্টি কালচার। যাইহোক ভাই পরিবারকে নিয়ে সময় দিয়েছেন এটাই বড় কথা। আপনার পরিবারের জন্য শুভকামনা রইল।

পরিবারের সাথে সময় কাটানো কথাগুলো শুনলে আমার বেশ ভাল লাগে।পরিবারের প্রতি আপনার ফিলিং আমার পড়ে সব সময়ই ভাল লাগে।আর খাবারের মান মোটামুটি হলেও রেষ্টুরেন্টটা কিন্তু সুন্দর।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।