আসসালামুআলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের সামনে একটি জেনারেল টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি। তা হচ্ছে, সবার কাছে সবকিছু আশা করা যায় না।
বছর তিনেক আগে আমার এক বড় ভাই মালয়েশিয়া থেকে দেশে এসেছেন। উনি মালয়েশিয়ায় একটানা সাত-আট বছর ছিলেন। তিনি যখন গিয়েছিলেন বাংলাদেশ থেকে, তখন বাংলাদেশে অটো-রিক্সার এত প্রচলন ছিল না। এই কনসেপ্টে আমাদের দেশ তখন নতুন ছিল এবং গুটি কয়েক লোক অটো-রিক্সা চালাত। তার বেশিরভাগই ছিল শহরে।
ভাই বাংলাদেশ আসার পর ভাবলেন কোথাও ঘুরতে যাবেন। উনার সাথে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, এবং উনি আমাকে বেশ পছন্দ করতেন। তিনি আমাকে সাথে নিয়ে ঘুরতে বের হলেন। উনি নতুন একটা বাইক নিয়েছিলেন এবং সেটা নিয়ে আমরা ঘুরতে বের হলাম। ভাই খুব ভালো বাইক ড্রাইভ করতো। আমার বয়সী কমবেশি সবাই তার কাছ থেকেই বাইকের হাতেখড়ি নিয়েছি। কিন্তু সেদিন আমি তাকে সাবধান করলাম। বললাম,
ভাই আপনি তো অনেকদিন বাংলাদেশের ছিলেন না। এখন বাংলাদেশের নিয়ম কানুন পরিবর্তন হয়েছে। আপনার কিছু বিষয় মানতে হবে।
উনি আমার কথায় পাত্তা দিলেন না। বললেন,
ওঠ তুই।
আমি বললাম,
আপনাকে শুনতেই হবে, আর একটি নিয়ম ফলো করলেই হবে। সেটা হচ্ছে কখনোই অটো ড্রাইভারদেরকে বিশ্বাস করবেন না। তারা যে কোন সময় যে কোন কিছু করতে পারে।
ভাই আমাকে আশ্বাস দিয়ে বলেন,
ওঠ তুই। অসুবিধা নাই আমি জানি কি করতে হবে।
ভাই মোটামুটি ৩/৪ কিলোমিটার বাইক ড্রাইভ করলেন এবং শেষ পর্যন্ত থেমে গিয়ে বললেন,
আমি আর পারব না তুই ড্রাইভ কর। বাংলাদেশের অটো ড্রাইভাররা যে এত খারাপ, এত বাজে এটা আমি জানতাম না।
আমি তখন তাকে বললাম,
ভাই আপনাকে শুরুতেই এ বিষয়ে সাবধান করেছিলাম, যে অটো ড্রাইভারদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করবেন না। তারা যেকোনো সময় যে কোন কিছু করতে পারে।
সবার কাছে সবকিছু আশা করা যায় না। তেমনি রাস্তার নিয়ম-কানুন অটোরিকশা ড্রাইভারদের কাছে আশা করবেন না। আমাদের দেশের বেশিরভাগ অটো ড্রাইভার রাস্তার নিয়ম কানুন জানেনা। বেশিরভাগ অটো ড্রাইভার এর বয়স ১৮ এর নিচে। বয়স্ক যারা আছে তারা যে নিয়ম কানুন খুব জানে এমনটাও না। এ কারণে দেখা যায় অটো ড্রাইভাররা যেখানে সেখানে তাদের অটোরিকশা পার্ক করে রাখে। টার্নিং এর সময় কিংবা ডানে বামে যাওয়ার সময় যে ইন্ডিকেটর জ্বালাতে হয় এটা তারা জানেই না। হুটহাট করে রাস্তায় ইউটার্ন নিয়ে নেয়। অপর দিক থেকে আসা কোন বাইকার বা গাড়ি যদি তাদেরকে ডিপার সিগনাল দেয়, তারা বুঝতে পারে না যে এখন কি করতে হবে। রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলে এবং যাত্রী নামায়। বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে উল্লেখযোগ্য হারে যে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে তার অন্যতম কারণ এই অটো রিকশাগুলো।
অটোরিকশা গাড়ি হিসেবে খুবই পাতলা এবং তারা যে গতিতে গাড়ি চালায়, গাড়ির ওজন অনুপাতে সেই গতি খুবই বেশি। যার কারণে অটো রিক্সা যখন তখন উল্টে যায়। এ কারণে অটোরিকশায় হতাহতের পরিমাণও বেশি হয়। ব্রেক খুবই দুর্বল। যার কারণে অতিরিক্ত গতি তারা কন্ট্রোল করতে পারেনা। তাই এক্সিডেন্টও বেশি হয়। তাই, অটো রিক্সায় চলাচলে সাবধান থাকবেন। নিজ দায়িত্বে চালককে বুঝাবেন।