নরেশ ডাকাত গল্পের দ্বিতীয় পর্ব

in hive-129948 •  3 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে গল্পের আরেকটি নতুন পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-jason-negonga-195925990-11491602 (1).jpg
সোর্স



ডাকাতের অত্যাচার দিনে দিনে বাড়তে শুরু করে। গ্রামবাসীরা তাদের আর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে। গ্রামের সবাই একত্রিত হয়ে রাজ্যের রাজার কাছে উপস্থিত হয়। রাজা তখন সভায় ব্যস্ত ছিলেন।প্রহরীরা গ্রামবাসীদের রাজার কাছে যেতে বাধা দেয়। তখন গ্রামবাসীরা চিৎকার করে মহারাজ মহারাজ বলে ডাকতে থাকে। তাদের এই চিৎকার মহারাজ শুনতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে রাজা প্রহরীকে ডাক দিয়ে বলে বাইরে কিসের চিৎকার হচ্ছে। তখন প্রহরী রাজাকে বলে কিছু গ্রামবাসী আপনারা সঙ্গে দেখা করতে চায়। রাজা প্রজাদের উপর খুব দয়াশীল ছিল প্রজাদের দুঃখ-কষ্ট রাজা সহ্য করতে পারত না। রাজা সঙ্গে সঙ্গে সভা ছেড়ে নিজেই পৌঁছে যায় গ্রামবাসীদের কাছে।রাজা গ্রামবাসীদের কে বলে তোমাদের কি সমস্যা হয়েছে? তখন গ্রামবাসীরা হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে। রাজা বলে তোমরা কান্না কেন করছ? কি হয়েছে তোমাদের আমাকে খুলে বল। তখন গ্রামবাসীরা রাজাকে বলে ডাকাতের অত্যাচার দিনে দিনে বেড়ে চলেছে মহারাজ। প্রতিদিন আমাদের ঘর থেকে একজন করে লোক নিয়ে চলে যায়। তাদেরকে বাধা দিলে আমাদেরকে মেরে ফেলে আমরা খুব অসহায় মহারাজ আমাদের রক্ষা করুন।


মহারাজ গ্রামবাসীদের মুখে কথাটি শোনার পর রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে সেনাপতিকে হুকুম দেয় ডাকাত দলকে ধরে বন্দি করতে। রাজার হুকুম পেয়ে সেনাপতি সৈন্য নিয়ে রওনা করে কুয়াশা জঙ্গলের দিকে। মহারাজ গ্রামবাসীদের শান্তনা দিয়ে যার যার ঘরে ফিরে যেতে বলেন। গ্রামবাসীরা রাজার কথা মেনে নিয়ে তারা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যায়। সৈন্যদল যখন কুয়াশা জঙ্গলের ভেতর প্রবেশ করে তখন ডাকাত দল বুঝতে পারে কেউ তাদেরকে হামলা করতে আসছে। তারাও প্রস্তুত হয়ে যায় দলে দলে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। এরপর শুরু হয় ডাকাত দলের সঙ্গে যুদ্ধ। ডাকাত দলের অনেক সদস্য মারা যায়। ডাকাত দল যখন দেখলো তারা আর যুদ্ধ করে পারছে না তখন তাদের পোষা হিংস্র পশু গুলো খাচা থেকে ছেড়ে দেয়। পশুগুলো এতটাই হিংস্র ছিল সামনে যাকে পাচ্ছিল তাকেই হত্যা করছিল। সেনাপতি দেখলেন এখান থেকে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তাই সেনাপতি সবাইকে রাজ্যে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়।


রাজ্যে ফিরে এসে মহারাজের কাছে মাথা নত করে সেনাপতি রাজা কে বলে আমরা ব্যর্থ হয়েছি ডাকাত দলকে বন্দী করতে। সেনাপতির মুখে কথাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে মহারাজ রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে সেনাপতির মুখে চড় মারে মহারাজ। মহারাজ সেনাপতিকে বলে এত সৈন্য থাকতে কিভাবে ব্যর্থ হলে ডাকাত দলকে বন্দী করতে? সেনাপতি মহারাজ কে বলে আমরা তাদেরকে বন্দী করে ফেলেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে কোথা থেকে হিংস্র পশু আমাদের উপর হামলা করতে শুরু করে। অনেক শূন্য আমাদের শহীদ হয়েছে। পশুগুলো এতটাই হিংস্র ছিল যার কারণে আমরা পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি। মহারাজ আমাকে আরেকটিবার সুযোগ দিন। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি ডাকাত দলকে বন্দী করে আপনার পায়ের কাছে এনে ফেলব। মহারাজ সেনাপতিকে বলে ঠিক আছে আমি তোমাকে আরেকটি সুযোগ দিলাম।কিন্তু মনে রেখ এবার যদি তুমি খালি হাতে ফিরে আসো তাহলে আমি তোমাকে সুরে চড়াবো। যেভাবে হোক এই ডাকাত দলকে বন্দী করতেই হবে। আমার প্রজারা দুঃখ কষ্টে থাকবে আর আমি এখানে সিংহাসনে বসে আয়েশ করব সেটা কোনদিন হতে পারে না। আমি তাদেরকে কথা দিয়েছি ডাকাত দলের প্রতিটি সদস্যকে আমি আমার প্রজাদের সামনে সুরে চড়াবো। সেনাপতি মহারাজ কাছে প্রতিজ্ঞা করে। মহারাজ আমি আপনার কাছে প্রতিজ্ঞা করছি যেভাবেই হোক আমি ডাকাত দলকে অবশ্যই বন্দী করব। আর যদি তাদেরকে বন্দী করতে না পারি তাহলে আমার এই মুখ আমি আপনাকে দেখাবো না।

আজ গল্পের পর্বটি এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী পর্বটি খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। সেই পর্যন্ত আপনারা সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!