'তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য আমার নেই' গল্পের চতুর্থ পর্ব।

in hive-129948 •  4 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য আমার নেই' গল্পের চতুর্থ পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের চতুর্থ পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-vjapratama-935824.jpg

সোর্স


রাজু তার মায়ের হাতে খাবার খেতে খেতে তার মাকে বলে,আমার আর খেতে ইচ্ছা করছে না। তার মা রাজুকে জোর না করে সে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। মা রাজুর রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজু রুমে দরজাটি আটকে দেয়। রাজু এরপর ব্যাগ থেকে ড্রাগস বের করে শরীরে প্রয়োগ করে। রাজুর শরীর নেশা করতে করতে এমন একটা পর্যায়ে চলে গিয়েছে। সময়মতো ড্রাগস শরীরে প্রয়োগ না করলে সে পশুর মত আচরণ করতে থাকে। ড্রাগস নেওয়ার পর রাজু বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম ভাঙতেই তার রুমের বাইরে অনেক লোকের আওয়াজ শুনতে পায়। সে সঙ্গে সঙ্গে বিছানা থেকে উঠে রুমে দরজা খুলতেই দেখে তার বাড়িতে অনেক মানুষ। রাজু অনেক মানুষ দেখে অবাক হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তার মাকে ডাক দিয়ে তার মায়ের কাছে জিজ্ঞাসা করে। মা আমাদের বাড়িতে এত মানুষ কি করছে কার কি হয়েছে? তার মা বলে, তোর বোনের জন্মদিন তুই কি ভুলে গিয়েছিস। বোনের জন্মদিন আমি জানিনা। তুই জানবি কি করে তুই তো বাড়িতে সময় দিতে পারিস না আমাদের কথা তোর মনেই থাকে না। রাজু তোর মনে আছে তুই বাইরে গেলে বাইরে থেকে তোর বোনের জন্য খাবার নিয়ে আসতিস। কিন্তু এখন তুই আর তোর বোনের জন্য কিছুই আনিস না। রাজু তুই অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছিস আজ তোর ছোট বনের জন্মদিন তুই ভুলে গিয়েছিস।


কথা বলতে বলতে রাজুর ছোট বোন রাজুর কাছে এসে রাজুকে প্রণাম করে। রাজু তার ছোট বোনকে বলে আমাকে ক্ষমা করে দে তোর জন্মদিনের কথা আমি ভুলে গিয়েছি। বোন বলে, দাদা আমি তোকে খুব ভালোবাসি রে। আজ আমার জন্মদিন তুই আমার জন্য কি এনেছিস। রাজু চুপ থাকে কিছুই বলতে পারে না। বোন বলে, আচ্ছা দাদা ঠিক আছে তুই আমার কাছে আছিস এটাই আমার বড় পাওয়া।আয় দাদা সবাই মিলে একসঙ্গে কেক কাটি। তখন রাজু বলে, একটু সময় দে আমাকে আমি বাইরে যাব আর আসব। বোন বলে, এখন আর বাইরে যেতে হবে না সবাই চলে এসেছে চল কেকটা কেটে ফেলি। রাজু বলে, বোন পাঁচটা মিনিট সময় দে আমাকে আমি বাইরে যাব আর আসব। এই বলে রাজু বাইরে চলে যায়। দোকান থেকে একটি টেডি বিয়ার কিনে আনে জন্মদিনে বোনকে গিফট দেওয়ার জন্য। রাজু তার ছোট বোনকে টেডি বিয়ার গিফট দেয় টেডি বিয়ার পেয়ে তার বোন খুবই খুশি হয়। এরপর তারা সবাই মিলে কেক কাটে। কেক কাটা হয়ে যাওয়ার পর রাজুর ছোট বোনকে একজন পেছন থেকে চোখটি চেপে ধরে। রাজুর ছোট বোন সঙ্গে সঙ্গে বলে আমি জানি তুই সৃষ্টি। এত দেরি করলি কেন তোকে রেখেই আমাদেরকে কেক কাটতে হল। সৃষ্টি বলে, রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিল রে তাই সময় মত পৌঁছাতে পারিনি সরি। রাজুর ছোট বোন বলে, ভালো হয়েছে এখন কেক খা।


রাজু ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দেখতে পায় তার ছোট বোনের কাছে তার পরিচিত এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে। ব্যক্তিটি আর কেউ ছিল না যাকে নিয়ে রাজু বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছিল। তাকে দেখেই রাজু চলে যায় তার বোনের কাছে। বোনের কাছে যে রাজু বলে, তুমি এখানে? মেয়েটি বলে আপনি এখানে? তখন রাজুর ছোট বোন রাজুকে বলে,দাদা তুই সৃষ্টিকে চিনিস? রাজু বলে, হ্যাঁ আমি একে চিনি কিন্তু তুমি এখানে? রাজুর ছোট বোনের নাম ছিল মেঘা। মেঘা বলে, দাদা ও আমার বন্ধু আমরা একই কলেজে পড়াশোনা করি। রাজু বলে, তোমাকে এভাবে সামনাসামনি আবারও দেখতে পাবো আমি কখনো চিন্তাও করিনি। সেদিনের পর থেকে আমি শুধু তোমার কথাই ভাবছি। সৃষ্টি বলে, একি বলছেন আপনি।আমি ঠিক কথাই বলছি। শাড়িতে তোমাকে অপরূপ সুন্দর লাগছে। সত্যি কথা বলতে তোমার থেকে চোখ নামাতে পারছি না। মেঘা বলে, কি হচ্ছে কি দাদা ও আমার ফ্রেন্ড হয়। তখন রাজু বলে, তোর ফ্রেন্ড কি তোর বৌদি হতে পারে না। সৃষ্টি বলে, আপনি কিন্তু একটু বেশি বেশি বলছেন আমি এসব কথা পছন্দ করি না। রাজু বলে, আমি তোমাকে পছন্দ করি। তুমি আমাকে পছন্দ করো কিনা সেটা মেঘা কে জানিয়ে দিও। এই বলে রাজু সেখান থেকে চলে যায়। এরপর মেঘা সৃষ্টিকে বলে দাদাকে তুই আগে থেকে চিনিস? এরপর সৃষ্টি মেঘাকে সব কথা খুলে বলে। মেঘা সব কথা শুনে বুঝতে পারে। এরপর মেঘা সৃষ্টিকে বলে, দাদা আগে এমনটি ছিল না সে খুব ভালো ছেলে। পরিবারকে সময় দিত আমাকে সময় দিত নিজের কাজগুলো সঠিকভাবে করত। কিন্তু কোথা থেকে কি হয়ে গেল কিছুই বুঝলাম না।এখন দাদাকে আমি আর চিনতে পারি না। আমি আজ পর্যন্ত দাদার মুখে কোন মেয়ের কথা শুনিনি। সে কাউকে পছন্দ করে এটাও শুনিনি কিন্তু আজ শুনলাম। আমি তোর বন্ধু হয়ে তোর কাছে একটি অনুরোধ করছি। আমার দাদাকে অন্ধকারের পথ থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে আন। আমার বিশ্বাস তুই পারবি আমার দাদাকে ফিরিয়ে আনতে।

আজ এখানে শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সৃষ্টি যেহেতু রাজু’র ছোট বোন অর্থাৎ মেঘার বান্ধবী, তাহলে তো সবকিছুই সহজ হয়ে গেলো। আশা করি সৃষ্টি ও রাজু’র মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হবে। সৃষ্টি অবশ্যই রাজুকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

আজকের পর্বটা অনেক সুন্দর ছিল এই গল্পের। ওই মেয়েটা দেখছি রাজুর ছোট বোনের ফ্রেন্ড। আর রাজু নিজের মনের কথা মেয়েটাকে বলে দিয়েছে তার বোনের সামনে। অন্যদিকে আবার তার বোন ও তার ফ্রেন্ডকে অনুরোধ করছে তার ভাইকে অন্ধকার জগত থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য। এখন দেখা যাক পরবর্তীতে কি হবে। মেয়েটা কি করে এটা দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

এই গল্পটা কিন্তু অনেক সুন্দর আর আমার কাছেও পড়তে খুব ভালো লাগে। এই গল্পের সবগুলো পর্ব আমার পড়া হয়েছে। রাজুর সাথে এখন দেখছি মেয়েটার তাদের বাড়িতেই দেখা হয়ে গেল। আর এই মেয়েটা রাজুর ফ্রেন্ড হয়। এখন তো সবকিছু তার জন্য আরও বেশি সহজ হয়ে গিয়েছে। দেখা যাক মেয়েটা তার প্রস্তাবে রাজি হয় কিনা। তার বোনও তাকে রাজি করানোর চেষ্টা করছে। বিশেষ করে তার ভাইকে ভালো পথে আবারও নিয়ে আসার জন্য।