হ্যালো বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি। আপনাদের দোয়ায় এবং সৃষ্টিকর্তার অসীম অশেষ রহমতে। আজকে তো বৃহস্পতিবার হবে গান, আড্ডা, কবিতা আবৃত্তি ও বিভিন্ন ধরনের তথ্য আদান প্রদান। আজকের সময়টা অনেক ভালো যাবে এই প্রত্যাশা করতেছি। তো বন্ধুরা আজকে আবারও চলে এসেছি নতুন একটি বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আশা করি আমার আজকের বিষয়টি আপনাদের ভালো লাগবে। প্রতিদিন পোস্টের ভিন্নতা আনার জন্য ভিন্ন ধরনের কিছু শেয়ার করার চেষ্টা করি। সেই ধারাবাহিকতায় আজকে আবার উপস্থিত হয়েছি আপনাদের সাথে।
ছোট বেলায় টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার একটি মজার ঘটনা।
সত্যি ছোট বেলার ঘটনা গুলো খুবই মজার। ছোট বেলার কিংবা শৈশবের স্মৃতি গুলো মনে করলে অনেক সময় হাসি পায়। আবার অনেক সময় খুবই দুঃখ প্রকাশ করি আমরা। আমাদের ছোট বেলার এমন কিছু কিছু স্মৃতি আমাদের মনের মধ্যে জড়িয়ে থাকে। তার থেকে অনেক কিছু শিক্ষনীয় বিষয় আছে। আমাদের সকলের কাছে এমন ঘটনা জড়িত আছে। তবে যারা গ্রামে বড় হয়েছেন তাদের শৈশবের স্মৃতি গুলো কিন্তু ভিন্ন মাত্রার। অনেক আনন্দের কিংবা কষ্টের হয়ে থাকে সেই শৈশবের স্মৃতিগুলো। কারণ গ্রামে অনেক হৈ হুল্লোড় করে বড় হওয়া বেশ মজার। তাছাড়া এদিক ওদিক ছুটে বেড়ানো ভীষণ মজার। গ্রামের বিলেতে গিয়ে মাছ ধরা, পুকুরে গোসল করা, বৃষ্টির পানিতে ভেজা, এছাড়াও রয়েছে অনেক মজার মজার গল্প।
তো এখান আমি যে স্মৃতিটা শেয়ার করব আপনাদের সাথে সেটা ভিন্ন একটি স্মৃতি। আমি যেহেতু গ্রামের মেয়ে ছোট বেলায় মা বিভিন্ন কাজে আমাকে বাজারে কিংবা দোকানে পাঠাতো। বলতে পারেন একটু ছটপটে ছিলাম তাই আমাকে পাঠাতো বেশি। তো একদিন বাজারে কি একটা কাজে পাঠালো। বাজার টা আমাদের গ্রাম থেকে বেশি দূরে না। পাশাপাশি বলতে পারেন যাওয়া আসা আধা ঘন্টার ব্যাপার। তো আমি বাজারে গেলাম প্রয়োজনীয় জিনিসটা নিয়ে চলে আসতেছি রাস্তা দিয়ে। পাশাপাশি মসজিদ ছিল এবং সেখানে একটা কবরস্থান ছিল। কিন্তু সেই মসজিদের পাশ দিয়া আসতাম না। কারণ কবরস্থান দেখলে অনেক ভয় পেতাম। মাঝখানে একটি ছোট নালা ছিল। এবং দুই পাশে দুইটি বড় বড় রাস্তা ছিল।
তো এক পাশে মসজিদ নিয়ে রাস্তা। নালার অন্য পাশে অন্য একটি ইউনিয়নের রাস্তা। তবে দুই ইউনিয়নের তফাৎ হল মাঝখানে নালা থাকার কারণে। কিন্তু জুরে লাফ দিলে নালা থেকে অন্য রাস্তায় পার হওয়া যায়। তো মজার বিষয়টা হচ্ছে যে এখন আমি রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসছিলাম। তখন দেখতে পেলাম রাস্তার মধ্যে একটা দুই টাকার নোট পড়ে আছে। বুঝতে তো পারছেন ছোট বেলায় টাকার প্রতি সবার অনেক বেশি আকর্ষণ থাকে। তখন দুই টাকার নোট মানে হচ্ছে অনেক কিছু। তবে মা টাকা দিছিল জিনিস কেনার জন্য এবং হাতেও বাড়তি কিছু টাকা ছিল আমার জিনিস কেনার পরে। তারপরও কেমন জানি দুই টাকার নোট টা দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগছিল।
তখন আমি দুই টাকার নোট টা হাতে নিলাম। নিয়ে অনেক বেশি খুশি হয়ে গেছি। অত বেশি ভালো-মন্দ বুঝতাম না টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার নিয়ে। বুঝতাম না কুড়িয়ে পাওয়া সেই টাকা মসজিদের দান বক্সে দিয়ে ফেলতে হবে। কিংবা অন্য কোন মিসকিনকে দিয়ে ফেলতে হবে। সেই ভালো মন্দ বুঝার বয়স আমার ছিল না। তো টাকা যে কুড়িয়ে পেয়েছি সেই ঘটনা মাকে বলি নাই। এখন মজার ব্যাপারটা হচ্ছে যে টাকা তো নিলাম। সেই টাকা নিয়ে দোকান থেকে বেশ মজার করে খাওয়া দাওয়া করলাম। তখনকার দুই টাকার নোট মানে তো অনেক কিছু পাওয়া যেত বুঝতে পারছেন হা হা হা। খাওয়া দাওয়া করে শেষ ২ টাকা।
এখন আবারো কি একটা কারণে আমাকে বাজারে পাঠালো। তখন আমার হাতে দুই টাকার দুইটা নোট ছিল। অথাৎ আমার মোট ছিল চার টাকা। তখন দুই টাকার নোট দুইটি আমার হাতে মুটি মেরে খুব শক্ত করে ধরে রাখছিলাম। এক হাতে বাজার থেকে কেনা জিনিস গুলো নিয়েছি। অন্য হাতে টাকা গুলো ধরে রেখেছি। এখন চলতে চলতে কিছু পথ হেঁটে আসলাম। হঠাৎ করে দেখি আমার হাতে টাকা গুলো নেই। খুব আফসোস হচ্ছিল এবং অনেক দূর পিছনে হেটেও গেছিলাম। কিন্তু টাকা গুলো কোথাও পাওয়া গেল না। টাকা গুলো আমার ছিল মা আমাকে দিয়েছিল খাওয়ার জন্য। যেহেতু হারিয়ে গেছে তখন আর আফসোসের কারণ ছাড়া কিছু খুঁজে পাইনি।
তখন আমার কাছে সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেল সেই মুহূর্তে। যেদিন আমি দুই টাকার নোট কুড়িয়ে পেয়েছিলাম বুঝতে পারছেন সে দিনের কথা। কিন্তু আমার করা উচিত ছিল টাকা গুলো মসজিদের দান বক্সে ঢুকায় দেওয়া। অথবা কোন মিসকিনকে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমি তা না করে টাকা গুরু আমি খরচ করে ফেলেছিলাম। তার বিনিময়ে আমার কাছ থেকে দুই টাকার বাবদ চার টাকা হারিয়ে গেল। সেই ছোটবেলা থেকে আমার খুব সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা হল। আমি কখনো কুড়িয়ে পাওয়া টাকা হাতে ধরতাম না যদি সম্ভব হয়। আর নেহাত যদি ধরতে হয় সেই টাকা সোজা আমি কোন দান বক্সে দিয়ে দিতাম। অথাবা কোন পরিস্কার জায়গায় তুলে রাখতাম যাতে কারো চোখে পড়ে।
এর মাধ্যমে আমি অনেক সুন্দর একটা শিক্ষা পেয়েছি। সেটা হচ্ছে যে কারো হক সেটা কুড়িয়ে পাওয়া হোক কিংবা সরাসরি হোক ভোগ করলে তার দ্বিগুণ ত্যাগ করতে হবে। তাই বাস্তব জীবনে আর কখনো কোনদিন আমার এমন কোন কাজে ভুল হয়নি। তাছাড়া আমি টাকা দেখলেও সরাসরি নিয়ে কোন মিসকিনকে দিয়ে দিই। অথবা কোন পরিষ্কার জায়গায় তুলে রাখি। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে অনেক ধরনের পরীক্ষা করে দেখেন। কাউকে কোন কিছু দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন। অন্যের হক হজম করে পার পাওয়া যায় না। আসলেই তা কখনো সম্ভব নয়।
অন্যের হক কেউ কখনো হজম করতে পারে না। তার দ্বিগুন তাকে মাশুল দিতে হবে। সেই ছোট কালের স্মৃতি আমার বারবার ভেসে বেড়ায় মনের মধ্যে। যদিও ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা ভালো মন্দ বুঝে করি নাই বলতে গেলে। সেই ঘটনা থেকে আমার জীবনে অনেক সুন্দর একটি শিক্ষা হয়। সৃষ্টিকর্তা যখন যা করেন সব মঙ্গলের জন্যই করে। মানুষের শিক্ষার জন্যই করেন। আশা করি আমার লেখা গুলো পড়ে সকলের ভালো লাগবে। আমার সেই ছোট বেলার স্মৃতি আপনাদের পড়ে অনেক ভালো লাগবে এই আশা রাখি।
লেখার উৎস | ছোট বেলার স্মৃতি শেয়ার |
---|---|
ইমেজ সোর্স | ভিক্টিজি ডট কম |
অবস্থান | কক্সবাজার, বাংলাদেশ |
রাইটিং ক্রিয়েটিভিটি | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
https://steemit.com/hive-129948/@samhunnahar/2c576y
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Twitter
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আপনার ছোটবেলার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো।সত্যি আপু ছোটবেলা না বুঝে সবাই অনেক কিছু করে কিন্তু বুদ্ধি হওয়ার পরে করলে সেটা অন্যায়।সবচেয়ে বড় কথা হলো অন্যের হক মারা সবচেয়ে খারাপ কাজ।এটা আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন না।যাইহোক আপু আপনার ছোটবেলায় দারুণ একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ আপু আমার পোস্ট পড়ে অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সব বয়সেই টাকা কুড়িয়ে পাইলে ঈদের দিনের মত আনন্দ লাগে। তবে ফলাফল খুব খারাপ হয়,আমার একবার আপনার মতই ঘটনা ঘটেছিল।তবে আমার গেছিল ২০০টাকা। শেষের শিক্ষামুলক কথা গুলো ভাল ছিল। ধন্যবাদ গল্পটি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ভাইয়া ১০০ টাকার বাবদ ২০০ টাকা চলে যায়😂😂।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit